ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি ও চিকিৎসকদের নৈতিকতা
ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বেশ কিছুদিন আগে একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক বলেছিলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নেওয়া বন্ধ করলে চিকিৎসাব্যয় ৪০ শতাংশ কমে যাবে। এর অর্থ হলো, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চিকিৎসকদের ঘুস বা কমিশন না দিলে মানুষের ১০০ টাকার চিকিৎসাব্যয় ৬০ টাকায় নেমে আসত। চিকিৎসকরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো থেকে কমিশন বা ঘুস নেন শুধু তাই নয়, তারা দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো থেকেও কমিশন নেন। ঔষধ প্রশাসনের সাবেক এক পরিচালকের তথ্য মোতাবেক, বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের মোট বিক্রির ১০ শতাংশ অর্থ চিকিৎসকদের ঘুস বা কমিশন দেওয়া বাবদ ব্যয় করেন। ২০১৫ সালে দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো ১৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি করেছে। ১০ শতাংশ হিসাবে প্রদত্ত কমিশনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো ৩১ হাজার কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি করেছে। ১০ শতাংশ হিসাবে প্রদত্ত কমিশনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। ভাবা যায়, কী পরিমাণ অর্থ ওষুধ কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের পেছনে খরচ করছে!
চিকিৎসকদের বিভিন্নভাবে কমিশন দেয় ওষুধ কোম্পানিগুলো। উদ্বেগের ব্যাপার হলো, চিকিৎসকরা ওষুধ কোম্পানি থেকে কমিশন পেলেও ওষুধ কোম্পানিগুলো কমিশন বাবদ প্রদত্ত সব টাকা তুলে নেয় নিরীহ মানুষের পকেট থেকে। প্রায় সব চিকিৎসক রোগীকে অসংখ্য অপ্রয়োজনীয় ডায়াগনস্টিক টেস্টের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কোনো কোনো ডায়াগনস্টিক টেস্টের পেছনে অসহায় দরিদ্র রোগীদের হাজার হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, চিকিৎসকদের এ ধরনের ঘুস বা কমিশন বাণিজ্যের কারণে মানুষের চিকিৎসাব্যয় দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে ঢালাওভাবে সব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ প্রযোজ্য নয়। আমার জানাশোনা অনেক চিকিৎসক আছেন, যারা এ কমিশন বাণিজ্যকে সম্পূর্ণ অনৈতিক হিসাবে আখ্যায়িত করেন।
ওষুধ কোম্পানিগুলোর অনৈতিক ওষুধ বিপণন বহুকাল ধরে জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এ অনৈতিক ওষুধ বিপণনে চিকিৎসকদের পাশাপাশি সহায়ক শক্তির ভূমিকা পালন করে থাকে ওষুধ বিক্রেতা ও বিক্রয় প্রতিনিধিরা। ওষুধ বিপণনের উদ্দেশ্য যদি হয় স্রেফ মুনাফা, তবে এর কারণে বড় ধরনের খেসারত দিতে হয় রোগীকে। বহু চিকিৎসক ওষুধ কোম্পানি কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে অনেক সময় সুস্থ মানুষকে রোগী বানিয়ে ওষুধ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আবার অনেক সুস্থ-সবল মানুষ ওষুধ কোম্পানির প্ররোচনায় পড়ে আরও বেশি সুস্থ, সবল ও সুন্দর জীবনের জন্য অপ্রয়োজনীয় ও অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকর ওষুধ গ্রহণ করে। এসব ওষুধকে বলা হয় লাইফস্টাইল ড্রাগ। ফুড সাপ্লিমেন্ট, ভিটামিন, টনিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, স্থূলতা কমানোর ওষুধ, মাথার টাক সারানোর ওষুধ, মন চাঙা করার ওষুধ এসব ড্রাগের অন্তর্ভুক্ত। দেশে ওষুধের বিজ্ঞাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিজ্ঞাপন বৈধ হলে দেশে দেদারসে ওষুধ বিক্রি হতো।
আমাদের মনে রাখা দরকার, ভোগ্যপণ্য আর ওষুধ এক জিনিস নয়। ভোগ্যপণ্য জীবন রক্ষাকারী অত্যাবশ্যকীয় বস্তু নয়। ওষুধ অত্যাবশ্যকীয় জীবন রক্ষাকারী বস্তু। সঠিক সময়, সঠিক মাত্রায়, সঠিক ওষুধটি প্রয়োগ না করলে কোনো কোনো অবস্থায় মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে। মারাত্মক ও জটিল সংক্রামক রোগের কথাই ধরা যাক। জটিল সংক্রামক রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংসের জন্য আমাদের প্রয়োজন সঠিক মাত্রার গুণগতমানসম্পন্ন সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক। অ্যান্টিবায়োটিক নির্বাচনে ভুল হলে রোগ ভালো হবে না, রোগীর ভোগান্তি বাড়বে, একসময় হয়তো রোগী মারাও যাবে। সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবকাশ নেই। সংক্রামক রোগের ধরন যেমন ভিন্ন হয়, তেমনি অ্যান্টিবায়োটিকের ধরনও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে সব ক্ষেত্রেই উৎপাদকের জোরালো বিপণন ও চিকিৎসকদের অনৈতিক আচরণের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগের মাত্রা অতীতের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। শুধু ব্যবসায়িক কারণে আজকাল চিকিৎসকরা সাধারণ সংক্রামক রোগেও সস্তা ও ন্যারো স্পেক্ট্রাম অ্যান্টিবায়োটিকের (যেসব অ্যান্টিবায়োটিক বিস্তৃত পদের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে না) পরিবর্তে নামিদামি ও পেটেন্টেড ব্রড স্পেক্ট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক রোগীকে প্রদান করছেন। কোনো কোনো সংক্রামক রোগে ন্যারো স্পেক্ট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক কাজ না করলে ব্রড স্পেক্ট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক (যেসব অ্যান্টিবায়োটিক বিস্তৃত পদের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে) প্রদান করে রোগ সরানোর সুযোগ থাকে। কিন্তু রোগীকে শুরুতেই ব্রড স্পেক্ট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক প্রদান করা হলে এবং সে ওষুধ কাজ না করলে তখন হাতে আর কোনো বিকল্প থাকে না। সেজন্য আমরা বলে থাকি, কার্যকর ও অব্যর্থ অ্যান্টিবায়োটিকগুলো রোগীর দুঃসময়ের জন্য মজুত রাখুন। কিন্তু চিকিৎসকরা অতি দ্রুত রোগ সারিয়ে রোগীর আস্থা ও সুনাম অর্জনের মাধ্যমে ব্যবসার প্রসার বাড়ানোর জন্য ও কমিশন বাণিজ্যের কারণে অত্যন্ত দামি ও ব্রড স্পেক্ট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে থাকেন। তারা খুব কমই ভাবেন, ভুল ও নির্বিচার অপব্যবহারের কারণে জীবাণুর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেলে শেষ সম্বল হিসাবে তারা কোন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন। ওষুধ কোম্পানিগুলোর আক্রমণাত্মক প্রমোশন, চিকিৎসকের অনৈতিক ও অবিবেচনাপ্রসূত প্রেসক্রাইবিং ও রোগীর আত্মচিকিৎসায় নির্বিচারে ব্যবহারের কারণে ইতোমধ্যে বহু অ্যান্টিবায়োটিক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকারিতা হারিয়ে রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে। এটি মানবসভ্যতার জন্য একটি মারাত্মক দুঃসংবাদ। ভবিষ্যতে হয়তো এমন একদিন আসবে, যখন অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে অসহায়ভাবে রোগী মৃত্যুবরণ করবে। আর চিকিৎসকদের অসহায়ভাবে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না।
ওষুধ কোম্পানিগুলো বাজারজাত করার সময় ওষুধের ওপর বিভিন্ন তথ্যাবলি দিয়ে লিফলেট বা আকর্ষণীয় ফোল্ডার প্রকাশ করে। ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধি এসব তথ্যসংবলিত কাগজপত্র চিকিৎসকদের মধ্যে বিলি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা এসব বিজ্ঞাপনের ফিরিস্তি পড়ার সময় ও সুযোগ পান না। বিক্রয় প্রতিনিধিরাই চিকিৎসকদের কাছে তাদের কোম্পানির ওষুধের গুণাবলি ও কার্যকারিতার ফিরিস্তি উপস্থাপন করেন। ওষুধের লিফলেট বা বিজ্ঞাপনে প্রায়ই অতিরঞ্জিতভাবে ওষুধের গুণাবলি তুলে ধরা হয়। কার্যকর না হওয়া সত্ত্বেও কোনো কোনো রোগে ওষুধটির খুব ভালো কাজ করে বলে দাবি করা হয়। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা বিষক্রিয়া সম্পর্কে খুব কমই লেখা থাকে, বলাও হয়ে থাকে অতি অল্প। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকরা যাচাই-বাছাই না করেই এসব ওষুধ প্রেসক্রাইব করা শুরু করেন। এতে রোগী বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমত, ওষুধটি দামি হলে রোগীকে বেশি পয়সা ব্যয় করতে হয়, যেখানে সস্তায় একই মানের একই ওষুধ পাওয়া সম্ভব। দ্বিতীয়ত, সব কোম্পানির ওষুধের গুণগত মান সমান নয়। অর্থ বা ঘুসের বিনিময়ে চিকিৎসক গুণগত মান যাচাই না করে কোনো ওষুধ প্রেসক্রাইব করলে রোগী শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসাশাস্ত্র বিক্রয় প্রতিনিধি বা চিকিৎসকদের এসব অপকর্ম সমর্থন করে না। কিন্তু আমরা করি এবং অতিমাত্রায় করি। কারণ, দেশে রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে চিকিৎসা, হাসপাতাল, ফার্মেসি, ওষুধ কেনাকাটা, আদান-প্রদান ও নিয়ন্ত্রণ-সবকিছুতেই রয়েছে চিকিৎসকদের একচেটিয়া প্রভাব।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, রোগী চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা প্রয়োজনীয় ওষুধের সঙ্গে প্রেসক্রিপশনে একাধিক অপ্রয়োজনীয় ওষুধ জুড়ে দেন। চিকিৎসকদের এ অনৈতিক মানসিকতার পেছনে কাজ করে লোভ এবং নিজের ব্যক্তিত্ব, মানবিকতা, নৈতিকতা ও আত্মমর্যাদাবোধের কাছে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অধিক উপার্জনের মনোবৃত্তি। তা না হলে একজন চিকিৎসক কী করে একটি ওষুধ প্রেসক্রাইব করার বিনিময়ে ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে স্ত্রীর জন্য একটি শাড়ি বা গহনা গ্রহণ করতে পারেন! একটি পারফিউম বা ফুলদানির লোভে কী করে একজন চিকিৎসক রোগীর ক্ষতি করতে পারেন। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা যায়, ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে চিকিৎসকরা (সব চিকিৎসক নয়) যেসব উপঢৌকন পান, তার মধ্যে রয়েছে টাকা, বড় অঙ্কের টাকার চেক, গহনা, দামি কাপড়-চোপড়, পারফিউম, অফিস ভাড়া, অফিস ডেকোরেশনের খরচ, চেম্বারের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি, বিদেশ ভ্রমণের টিকিট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, টেলিফোন, ফ্রিজ, টেলিভিশন ইত্যাদি। আমার সামনে ঘটে যাওয়া আরও একটি ঘটনা উল্লেখ করার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। বেশ কয়েক বছর আগে এক চিকিৎসক এক বিক্রয় প্রতিনিধির কাছ থেকে একটি ক্রিস্টাল ফুলদানি গ্রহণ করে সঙ্গে সঙ্গে সেই কোম্পানির লোসার্টান পটাসিয়ামের ব্র্যান্ড নামটি (উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ) লিখে দিলেন এক রোগীর প্রেসক্রিপশনে। আমি হতবাক হয়ে গেলাম। সেই ওষুধের ব্র্যান্ড নামটিও চিকিৎসক জানতেন না। বিক্রয় প্রতিনিধির কাছ থেকে জেনে নিয়ে নামটি প্রেসক্রিপশনে লিখলেন। উপরে উল্লেখিত লোভনীয় জিনিসপত্র ছাড়াও বহু চিকিৎসক ওষুধ কোম্পানি থেকে ফ্রি স্যাম্পল হিসাবে অসংখ্য ওষুধ পেয়ে থাকেন। তারা এসব ওষুধ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। তবে অনেক চিকিৎসক গরিব রোগীদের এসব ওষুধ দান করেন বলেও শোনা যায়।
ওষুধ কোম্পানি, চিকিৎসক, বিক্রয় প্রতিনিধিদের এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হওয়া দরকার। ওষুধ প্রমোশনে কোটি কোটি টাকা খরচের ভারটা রোগী বা ওষুধ ক্রেতাকেই বহন করতে হয়। এতে ওষুধের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। চিকিৎসকদের অজ্ঞতা, অবহেলা বা পড়াশোনার অভাবে নকল, ভেজাল ও ক্ষতিকর ওষুধ রোগীর হাতে পৌঁছে যায় ওষুধ কোম্পানি ও বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে অসংখ্য বিক্রয় প্রতিনিধির তৎপরতা আমার চোখে পড়ে। দেশজুড়েই একই অবস্থা বিরাজ করছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের চেম্বারগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টিটিভদের। এদের মাধ্যমেই ওষুধ কোম্পানিগুলো হাত করে চিকিৎসকদের। ওষুধ কোম্পানি, চিকিৎসক ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের এ অশুভ ও অনৈতিক তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। কোনো চিকিৎসক উপহার নিলে তার চিকিৎসা সনদ বাতিল করার বিধান রাখা দরকার। যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে-ওষুধ বিজ্ঞাপনে ওষুধ কোম্পানিগুলো বছরে কত অর্থ খরচ করে তা প্রকাশ করতে হবে, ভূতুড়ে লেখক দিয়ে কোনো ওষুধের ওপর প্রবন্ধ লেখা হয় কিনা তা জানাতে হবে। এছাড়া গবেষণার নামে ওষুধ কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের কত টাকা প্রদান করেন, কনসালটেশন ফি বাবদ ব্যয় কত, যাতায়াত ও আপ্যায়নে কত খরচ হয় তা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা বহাল করার ব্যবস্থা রয়েছে।
অনৈতিক ওষুধ বিপণন বন্ধে সরকারের কোনো উদ্যোগ আছে বলে অতীতে দেখা যায়নি। দেশের বহু পত্রপত্রিকায় এ ব্যাপারে অনেক প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছে; প্রতিকারের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ অরাজকতা বেশিদিন চলতে দেওয়া যায় না। চিকিৎসা ব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতি অনুধাবন করে সরকার জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে-এ প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ফার্মেসি বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
drmuniruddin@gmail.com