শতফুল ফুটতে দাও
বিত্তের সন্ধানে মগ্ন থেকে চিত্তের উৎকর্ষ হচ্ছে না
ড. মাহবুব উল্লাহ্
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
এখন জাতিসংঘ এবং জাতিসংঘসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নানা বিষয়ে দিবস পালিত হয়। মনে হচ্ছে, বছরের ৩৬৫ দিনের তুলনায় দিবসের সংখ্যা কিছু বেশিই হবে। এসব দিবসের মধ্যে কিছু কিছু আছে, যে দিবসগুলো রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে পালিত হয়। তবে বেশ কিছু দিবস আছে, যেগুলো সম্পর্কে আমরা সামাজিক গণমাধ্যম থেকে জানতে পারি। যেসব দিবস ব্যক্তি পরিবার ও সামাজিক জীবনের ক্ষেত্রে তাৎপর্যময়, সেসব দিবস নিয়ে নানামুখী চিন্তাভাবনা সামাজিক গণমাধ্যমে প্রতিফলিত হতে দেখি।
২৩ এপ্রিল ছিল বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস। এ দিবসটি উপলক্ষ্যে আমাদের দেশে কেউ কেউ বা কোনো কোনো গণমাধ্যম সময় উপযোগী চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। বই সম্পর্কে বাংলাদেশের এক মনীষী বলেছেন, ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না’। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন, হে প্রভু আমার হায়াত আরও কটা দিন বাড়িয়ে দাও, যাতে আমি আরও বই পড়তে পারি। জানি না, দেশে এখন এমন কোনো মনীষী আছেন কিনা, যিনি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতো আরও অধিক বই পড়ার জন্য আয়ু বাড়িয়ে দিতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন। পৃথিবীর নামকরা সভ্যতাসমূহে গ্রন্থপাঠের বিশাল চর্চা হতো। মিসরীয় সভ্যতার অন্যতম অবদান আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগার। বাগদাদে বাইতুল হিকমায় জ্ঞানী-গুণীরা বই পড়তেন, জ্ঞানের নানা শাখার ওপর আলাপ-আলোচনা করতেন এবং জ্ঞানের নতুন নতুন দ্বার উন্মোচন করতেন। চৈনিক সভ্যতায়ও অনেক প্রাচীন গ্রন্থের নিদর্শন পাওয়া যায়। চীনের দার্শনিকরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় গ্রন্থ রচনা করেছেন। গ্রিসেও জ্ঞানচর্চার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল এবং দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অনেক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন গ্রিক পণ্ডিতরা। দেখা যায়, যেসব জাতি সভ্যতার উচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল তারা পাঠাভ্যাসকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিত। বই না পড়ে, জ্ঞানচর্চা না করে কোনো জাতি সভ্যতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারে না। এখনো আমরা দেখতে পাই, পৃথিবীর উন্নত রাষ্ট্রগুলো গ্রন্থ মজুতের দিক থেকে ঈর্ষণীয় অবস্থায় রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লাইবেরি অব কংগ্রেস, ব্রিটেনে ব্রিটিশ মিউজিয়াম লাইব্রেরি ও ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরি এবং ফ্রান্সে বিবিলিউথেক লাইব্রেরি কত সমৃদ্ধ, তা আমাদের কল্পনারও অতীত। রাশিয়াতে একই ধরনের সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার রয়েছে। কিছু গ্রন্থাগার নিছকই গ্রন্থাগার। আবার কিছু গ্রন্থাগার বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক। বাংলাদেশের গ্রন্থাগারগুলো, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার বইয়ের মজুতের দিক থেকে মোটেও সমৃদ্ধ নয়। ঢাকায় জাতীয় গণ-গ্রন্থাগারে বইয়ের মজুত ২ লাখ ৭০ হাজার। এর পাশাপাশি নিয়মিত ১৩টি পত্রিকা ও কিছু বিদেশি সাময়িকী এ গ্রন্থাগারে রাখা হয়।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পর্যায়ক্রম চালু রয়েছে। নির্মাণ কাজ চলমান থাকতে ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের কার্যক্রম সাময়িকভাবে শাহবাগ থেকে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থানগত কারণে পাঠক উপস্থিতিতে ভাটা পড়েছে। যদিও একটা সময় জাতীয় গণগ্রন্থাগারে বেশ ভালো উপস্থিতি ছিল। তবে উপস্থিতি থাকলেও সে সময়ও চাকরিপ্রত্যাশীদের উপস্থিতিই ছিল বেশি। এ কথা জানা গেছে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের কর্মরত ব্যক্তি ও বর্তমান পাঠকদের কাছ থেকে। এ তথ্যগুলো পাওয়া গেছে ২৩ এপ্রিল ২০২৪-এর দৈনিক খবরের কাগজ থেকে। পাঠাগারে পাঠকরা কী ধরনের বই পড়ছেন তা থেকে বোঝা যায় পাঠকরা কতটা জ্ঞানসমৃদ্ধ হচ্ছেন। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার ও জাতীয় গণগ্রন্থাগার যারা ব্যবহার করেন, তাদের বেশির ভাগই চাকরির পরীক্ষা, বিশেষ করে বিসিএস পরীক্ষার গাইড বুক পড়ার জন্য ব্যবহার করেন। চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্ততিমূলক পড়াশোনা করা দোষের কিছু নয়। তবে এটাই যদি বেশিরভাগ পাঠকের চর্চা হয়, তাহলে প্রমাদ গুনতে হবে। রেফারেন্স বইতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা জাতির জন্য অশনিসংকেত! যান্ত্রিকভাবে গাইড বই পড়ে চাকরির পরীক্ষার বৈতরণী পার হওয়ার মধ্যে আশু সুবিধা অর্জনের লক্ষ্য ক্রিয়াশীল থাকলেও এ দিয়ে সুদূরপ্রসারী মহৎ কোনো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। পাকিস্তান আমলে দেখেছি, যারা সিএসএস পরীক্ষা দিতেন তারা অনেক মৌলিক রেফারেন্স গ্রন্থ পাঠ করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতেন। সাধারণ জ্ঞানের জন্য এসব পরীক্ষার্থী রীতিমতো পিয়ার্স অ্যান্ড সাইক্লোপেডিয়া মুখস্থ করতেন। গভীর মনোনিবেশসহকারে পাঠ করেও অনেকে পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। আমাদের ধারণা আমলারা জ্ঞান-চর্চায় মনোযোগী নন। সব আমলার ব্যাপারে একথা বলা যায় না। প্রয়াত ড. আকবর আলি খান ডজনখানেক গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা করে প্রমাণ করেছেন আমলাতন্ত্রের উচ্চপদে থাকার ব্যস্ততা সত্ত্বেও তিনি পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছিলেন না। আরও কয়েকজন আমলা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আকবর আলি খানের সমপর্যায়ের না হলেও কিছু কিছু মৌলিক গ্রন্থ রচনা করে তাদের প্রতিভা ও একাগ্রতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজ আমলারা মূল্যবান অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। এদের রচিত গ্রন্থগুলোর বেশির ভাগই ক্লাসিক গ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত হয়। অবশ্য এসব আমলা ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের মিশন সফল করতে চেয়েছেন। ব্রিটিশ শাসকদের প্রয়োজন ছিল ভারতীয় সমাজ, ভারতীয় জীবনযাত্রা, ভারতীয় জীবনাচার এবং ভারতের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও গোত্রের পরিচয় আবিষ্কার করা। বিদেশি শাসক ভালো করেই জানত অধীনতায় আবদ্ধ জাতিগোষ্ঠীর ওপর শাসন বহাল রাখতে হলে জানা প্রয়োজন শাসিত জাতির জীবনাচার ও অতীত ইতিহাস সম্পর্কে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসবেত্তা ভিনসেন্ট এ স্মিথের দৃষ্টান্ত দেওয়া যায়। তিনি ছিলেন একজন ব্রিটিশ আমলা। উত্তর ভারতে সরকারি কার্য উপলক্ষ্যে তিনি বেশ কিছু এলাকায় সফরে যেতেন। এসব সফরের সময় তার বিশেষ কৌতূহল ছিল ভারতের প্রাচীন ও মধ্যযুগের নিদর্শনাদি সংগ্রহ করা কিংবা তার ছবি তোলা এবং তার ওপর ফিল্ড নোট প্রস্তুত করা। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাস রচনা করেছেন। আজও ইতিহাসের উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য ভিনসেন্ট স্মিথ রচিত প্রাচীন ও মধ্য যুগীয় ভারতের ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য হিসাবে বিবেচিত হয়। ছোটখাটো নিদর্শনগুলোও তার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। চলার পথে তিনি যদি অতি পুরোনো ইস্টক খণ্ড দেখতে পেতেন, তার মধ্যেও তিনি ইতিহাসের উপাদান খুঁজে বের করার চেষ্টা করতেন। বাংলদেশের আনাচে-কানাচে প্রাচীন যুগের না হলেও মধ্য যুগের ব্রিটিশ শাসনামলের বহু নিদর্শন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এগুলোর ইতিবৃত্ত অনুসন্ধান করাও জাতীয় পরিচয় নির্ণয়ে মূল্যবান নিদর্শন। এগুলো নিয়ে তেমন কোনো গবেষণার প্রয়াস দেখি না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এ ধরনের গবেষণাচর্চাকে উৎসাহিতও করা হয় না। খুবই পরিতাপের বিষয়। যদি লক্ষ-কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে জাতির স্বরূপ সন্ধানে অর্থ বরাদ্দে এত কার্পণ্য কেন? হাজার বছরের বাঙালির জিকির তোলা হলেও এই এক হাজার বছরে জাতি প্রকৃষ্টভাবে কেমন ছিল, তার বিবরণ রচনায় উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ লক্ষ করা যায় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি তুলনামূলকভাবে অন্য গ্রন্থাগারের তুলনায় সমৃদ্ধ হলেও এর অধিকতর উন্নয়নের প্রয়াস স্থবির হয়ে আছে। ষাটের দশকের শেষ ভাগে নির্মিত গ্রন্থাগারটি সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। ফলে স্থানাভাবের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এ গ্রন্থাগারে পরলোকগত কোনো শিক্ষাবিদের পুরো জীবনের সংগ্রহ করা গ্রন্থ তাদের পরিবার যদি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের কাছে হস্তান্তর করতে চায়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনীহাবোধ করে। কারণ দেখানো হয়, গ্রন্থাগারে পরিসরের অভাব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে, তাদের আগ্রহ সিলেবাসে নির্ধারিত বইপত্র ও জার্নালের প্রতি খুব একটা দেখা যায় না। প্রথম বর্ষের পর তাদের বেশিরভাগই চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গাইডবুকের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। খবরের কাগজের প্রতিবেদক লিখেছেন, ‘ঢাবির গ্রন্থাগারে ৩৬ বছর ধরে কাজ করে আসছেন সাইফুল ইসলাম মোল্লা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দায়িত্বে থাকা এ উপ-গ্রন্থাগারিক বলেন, ‘পাঠক আগের তুলনায় অবশ্যই বেড়েছে, তবে সেটি চাকরি-প্রত্যাশীদের সংখ্যা। আগে যেমন টেক্সট্ বই পড়তে এখানে আসত, এখন সেটি আর আগের মতো নেই। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় যে সেমিস্টার সিস্টেম, সেখানে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক বইমুখী হয়ে লাইব্রেরিতে আসা-যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে এখন তারা চাকরির পড়াশোনা করছে। ক্লাসে যা পড়ানো হয় তার শিট দেওয়া হয়, আর এ শিট পড়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অনায়াসে পাশ করছেন। ফলে এটিও শিক্ষার্থীদের এ লাইব্রেরি বিমুখতার কারণ।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের বইয়ের শেল্ফগুলো এতই ধুলামলিন যে, তাতে হাত দেওয়া যায় না। যে কেউ বই নাড়াচাড়া করতে গিয়ে একরাশ ধুলো নিশ্বাসের মধ্য দিয়ে ফুসফুসে পুরে ফেলা থেকে কিছুতেই নিষ্কৃতি পান না। অথচ নিয়মিত ব্লোয়ার ও সাকার মেশিন দিয়ে গ্রন্থাগারে রক্ষিত বইগুলো পরিচ্ছন্ন করা সম্ভব। কিন্তু কে করবে? দেখার তো কেউ নেই। এমনকি কী করা যায়, তাও দায়িত্বশীলরা বোঝেন কিনা বলা মুশকিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষক হিসাবে আমার এমন অভিজ্ঞতাই হয়েছে। ভারতে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি একটি ১৬ তলা ভবন। পুরো ভবনটি রেফারেন্স গ্রন্থ ও জার্নাল দিয়ে ঠাসা। সেখানে রক্ষিত বইগুলো ধুলোমলিন নয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। আমি যে সময়ের কথা বলছি, সেটা আশির দশকের শেষ দিকের কথা। এ অল্প সময়ের মধ্যে গ্রন্থাগারটি সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার সম্পর্কে এমন গর্বের সঙ্গে কিছু বলা যায় কি?
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের হিসাবে সারা বাংলাদেশে এখন ৯২৪টি বেসরকারি পাঠাগার রয়েছে। জেলা-উপজেলার সরকারি গ্রন্থাগারগুলোর পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগে গড়ে ওঠা এ পাঠাগারগুলোই সৃজনশীল বই ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা দেশে। তবে দুঃখের বিষয়, ক ক্যাটাগরির পাঠাগারগুলো সরকারের কাছ থেকে অনুদান হিসাবে পাচ্ছে ৭০ হাজার টাকা, একইভাবে খ ও গ ক্যাটাগরির পাঠাগারগুলো পাচ্ছে যথাক্রমে ৫৫ হাজার ও ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা। নিয়মানুযায়ী পাঠাগারগুলোকে অনুদানের ৫০ শতাংশ টাকায় বই কিনতে হয়, বাকি ৫০ শতাংশ টাকা তারা পাঠাগারের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করে থাকেন। বর্তমান বাজার দরের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সাধারণভাবেও বলা যায়, পাঠাগারগুলোর জন্য সরকারের বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। বই পড়ার অভ্যাস ও আকর্ষণ বাড়াতে পারলে আমরা অনেক বিপত্তি থেকে মুক্ত থাকতে পারতাম। বিশেষ করে আজকের দিনে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে যেভাবে মাদকাসক্তি ও কিশোর গ্যাং তৈরি করার আত্মঘাতী প্রবণতা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, তাতে বই পড়ার আন্দোলন সমাজে সুস্থ পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে পারত। জাতিকে নোংরা বৃত্তের সন্ধানে লিপ্ত রাখার অনেক অবকাশই সৃষ্টি করা হচ্ছে, কিন্তু চিত্তের উৎকর্ষ বিধানে তেমন মনোযোগ দেখা যায় না। হতাশবোধ করার এটি একটি বড় কারণ।
ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ