Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

খেলাপি ঋণ রোধে ‘হার্ড বাজেট লাইন’ পদ্ধতিতে যেতে হবে

Icon

ড. এম এম আকাশ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খেলাপি ঋণ রোধে ‘হার্ড বাজেট লাইন’ পদ্ধতিতে যেতে হবে

আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণ একটি ধারাবাহিক সংকট। কোনোভাবেই এ থেকে উত্তরণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বহুদিন ধরেই ব্যাংক ও আর্থিক খাত খেলাপি ঋণভারে জর্জরিত হয়ে আছে। খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ কত তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এমনকি খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা কী হবে তা নিয়েও আছে বিতর্ক। বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার মতো। কিন্তু অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও অনেক বেশি। খেলাপি ঋণের ব্যাপারে আইএমএফের সংজ্ঞা যদি আমরা গ্রহণ করি, তাহলেও এর পরিমাণ অনেক বেশি হবে। যেসব ঋণ হিসাব পুনঃতফশিলিকরণ করা হয়েছে; যেসব প্রকল্পের ঋণ হিসাব অবলোপন করা হয়েছে এবং মামলাধীন প্রকল্পের কাছে পাওনা অর্থকেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) খেলাপি ঋণ হিসাবে চিহ্নিত করছে। সংস্থাটির মতে, সব ধরনের নন-পারফর্মিং লোনই খেলাপি ঋণ হিসাবে সংজ্ঞায়িত হবে।

আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭৫ লাখ কোটি বা পৌনে ৪ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ২৫ শতাংশই খেলাপি ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক অবলোপনকৃত ঋণ হিসাব, পুনঃতফশিলিকৃত ঋণ হিসাব এবং মামলাধীন প্রকল্পের কাছে দাবিকৃত ঋণের পরিমাণ বাদ দিয়ে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রদর্শন করছে। ফলে সার্বিকভাবে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম মনে হচ্ছে। ব্যাংক খাতের সংকট বোঝার জন্য খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ নিয়েই হিসাব করা উচিত। আইনি মারপ্যাঁচে হয়তো খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দেখানো যাবে; কিন্তু সেটা বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন নয়। আমরা আইএমএফের ঋণ নিয়েছি। তাদের দেখানো পদ্ধতিও আমরা গ্রহণ করেছি। কাজেই আইএমএফ যেভাবে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে, আমাদের সেটাই শর্তানুসারে আপাতত মেনে নিতে হবে। কিস্তি আদায়ের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে না আনা গেলে খেলাপি ঋণ আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে এটা বলা যাবে না। আইএমএফের সংজ্ঞানুযায়ী, দেশের ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছাড়কৃত ঋণের ২৫ শতাংশ। কিন্তু সব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের আপেক্ষিক পরিমাণ একই রকম নয়। কোনো কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ সহনীয় মাত্রায় রয়েছে। কিছুদিন আগে পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখলাম, দেশের ১৩টি ব্যাংকের নন-পারফর্মিং লোনের পরিমাণ ৩ শতাংশের নিচে। এ ১৩টি ব্যাংকের মধ্যে ৬টি বিদেশি এবং ৭টি ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংক। এ ১৩টি ব্যাংকের বাইরে যেসব ব্যাংক আছে, তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের বিচারে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বেসিক ব্যাংক। এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ সর্বশেষ হিসাবে কারও কারও মতে প্রায় ৬৬ শতাংশ।

বেসিক ব্যাংক একসময় বেশ ভালো একটি ব্যাংক ছিল। সেই বেসিক ব্যাংকে এত বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ কীভাবে সৃষ্টি হলো, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বটে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণের অর্থ পুরোটাই খেলাপি হয়েছে। এক ব্যক্তি যখন কোনো ব্যাংক থেকে এত বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে যায়, তখন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সেই ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে হয়তো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। তাকে জেলে দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু ঋণের নামে নিয়ে যাওয়া টাকা তো আর ফেরত আসে না। ব্যাংক বিপাকে পতিত হয়। এ ধরনের ব্যবস্থাকে মিউচুয়াল হোস্টেজ বলা হয়। ব্যাংক জিম্মি হয়ে গেছে বৃহৎ ঋণগ্রহীতার কাছে আর বৃহৎ ঋণগ্রহীতা জিম্মি হয়ে গেছে ব্যাংকের কাছে।

এ রকম পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি কঠিন উপায় আছে। উপায়টি হচ্ছে এ রকম : যিনি ঋণখেলাপি হয়েছেন, তার যদি অন্য কোনো সম্পত্তি থাকে, তাহলে সেই সম্পত্তি থেকে যতটুকু পারা যায় ব্যাংকে দিয়ে ব্যাংকটিকে ভায়াবল করে তোলা। কিন্তু সরকার কি খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য এ কঠিন পথে যাবে? যিনি ঋণখেলাপি হয়েছেন, যদি প্রতীয়মান হয় তিনি ঋণের অর্থ ফেরতদানের সামর্থ্য রাখেন কিন্তু ইচ্ছে করেই তা পরিশোধ করছেন না, তাহলে তার কাছ থেকে পাওনা খেলাপি ঋণের অর্থ জোর করে আদায় করে নেওয়া যেতে পারে। এ ধরনের ঋণখেলাপি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে থাকেন। কাজেই তার কাছ থেকে জোর করে খেলাপি ঋণের কিস্তি আদায় করতে গেলে রাজনৈতিকভাবে অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে। তিনি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ধরনা দিয়ে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করবেন। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা অত্যন্ত ক্ষমতাবান। কাজেই চাইলেই ব্যাংকের পক্ষে তাদের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায় করা সম্ভব হবে না। এজন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা একান্ত প্রয়োজন। বড় ঋণখেলাপিরা সরকারের বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্পের সঙ্গেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিলে তারা সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেন। এতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে। এক্ষেত্রে এমনকি রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। তাই সরকার চাইলেই ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাৎক্ষণিক নানা অসুবিধা বা গভীর কোনো সংকট সৃষ্টি হলেও তারা লুটেরা ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে নীতি ও সত্যের জন্য কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কিনা। এক্ষেত্রে জনগণকেও বোঝাতে হবে, তাদের সাময়িক অসুবিধা হলেও দেশের ব্যাংক খাত তথা অর্থনীতির মঙ্গলের জন্যই এমন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

ঋণগ্রহীতাদের আইনি সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি এমন একটি শর্ত দেওয়া প্রয়োজন-আপনি আগে যে ঋণ নিয়েছেন এবং খেলাপি হয়েছেন, তার কিছু কিস্তি পরিশোধ করুন। অর্থাৎ আপনি যে ব্যাংক থেকে গৃহীত ঋণের কিস্তি পরিশোধে আগ্রহী তা প্রমাণ করুন। অথবা আপনার প্রকল্প থেকে যে মুনাফা অর্জিত হয় তার পুরোটা ব্যাংকের ফান্ডে জমা দিতে হবে-এ শর্ত আগে মেনে নিন। তাহলেই আপনার অন্যসব প্রকল্পে নতুন করে ঋণ দেওয়া হবে। আপনাকে যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, সেই ঋণের এবং অতীত ঋণের কিস্তি পরিশোধে আপনি বাধ্য। এটা না করে ঢালাওভাবে ক্রমাগত নতুন ঋণ দেওয়া হলে খেলাপি ঋণের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে একটি সংক্রমিত ব্যবসাকে রক্ষা করতে গিয়ে ভালো ব্যবসাকে সংক্রমিত করা হবে। শিশুকে সাবসিডি দিতে হয়, কিন্তু দামড়া শিশুকে প্রশ্রয় দিয়ে তাকে ঠিক করা যায় না।

২ শতাংশ নগদ ডাউন পেমেন্ট ব্যাংকে জমা দিয়ে এক বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরের জন্য খেলাপি ঋণ হিসাব পুনঃতফশিলিকরণের সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এতে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বর্তমানে এ সুযোগটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেই জানি। অতীতে যারা এ সুযোগ নিয়েছেন, তারা যেন কোনো অজুহাতেই ঋণের কিস্তি ফেরতদানের শর্ত ভঙ্গ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি, ভবিষ্যতে আর কখনোই এমন সুবিধা দেওয়া ঠিক হবে না। আর যাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন প্রাপ্ত সুযোগের কোনো অপব্যবহার করতে না পারেন। যারা এ সুযোগ নিয়েছেন, তারা আগামীতে যদি একটি কিস্তিও নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের নতুন করে আর কোনো পুনঃতফশিলিকরণের সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না। অর্থনীতির পরিভাষায় একে ‘হার্ড বাজেট লাইন’ দ্বারা ‘সফট বাজেট লাইন’ প্রতিস্থাপন বলা হয়। কারও সঙ্গে যদি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় এবং চুক্তিভুক্ত ব্যক্তি যদি জানতে পারেন এটা ‘সফট বাজেট লাইন’, তাহলে তিনি প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করবেন। কারণ তিনি জানতে পারবেন কোনো কারণে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি হলেও কর্তৃপক্ষ ব্যয়িত বর্ধিত অর্থ প্রদান করবেন। কিন্তু যদি ‘হার্ড বাজেট লাইন’ হয়, তাহলে সেই অবস্থায় যদি প্রাক্কলিত ব্যয় অতিক্রম করে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। তাহলে যিনি কাজ করবেন, তিনি বুঝতে পারবেন, নির্ধারিত ব্যয়ে কাজটি সম্পন্ন করতে না পারলে বাড়তি টাকা তো পাওয়া যাবেই না, বরং তাকে কঠোর জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রেও আমরা যদি হার্ড বাজেট লাইনের পদ্ধতিতে যেতে না পারি, তাহলে পরিস্থিতির কোনো দৃশ্যমান উন্নতি হবে না। কারণ আমাদের দেশে যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, তারা জানেন ব্যাংকের ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও কোনো অসুবিধা হবে না। তাই তারা কিস্তি পরিশোধের ব্যাপারে সবসময়ই উদাসীন থাকেন। যারা ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করবেন, তাদের এই মর্মে বার্তা দিতে হবে যে, ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে কোনোভাবেই পার পাওয়া যাবে না।

যখন ব্যাংক একীভূতকরণের কথা শোনা যাচ্ছিল তখনই আমি বলেছি, এর উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়। হয়তো আইএমএফ বলেছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে হবে, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৬ শতাংশ আর যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ শতাংশ এমন দুটি ব্যাংক একীভূত করা হলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কাগজে-কলমে ব্যালেন্স শিটে ধরা যাক ৩১ শতাংশে নেমে এলো। এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে হয়তো স্বল্প মেয়াদে আইএমএফের শর্ত পরিপালনে অগ্রগতি দেখানো যাবে। এটা অনেকটা আইওয়াশের মতো ব্যাপার। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এ উদ্যোগ কোনো সুফল দেবে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সত্যি সত্যি খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায়, তাহলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ কত, কারা ঋণ নিয়ে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ফেরত দিচ্ছে না, ঋণদানকালে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দায় কতটুকু ছিল, যারা মনিটরিংয়ের দায়িত্বে ছিল, তাদের ব্যক্তিগত আয় ও সম্পদের মধ্যে কোনো অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবধান আছে কিনা-এসব মৌলিক বিষয় ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করতে হবে। এসব ছাড়া সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করা হলে সুফল পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ একটি ব্যাংক দক্ষ আর অন্যটি অদক্ষ। এখন অদক্ষ ব্যাংকের দায়িত্ব গ্রহণ করতে গিয়ে দক্ষ ব্যাংকটিও তার দক্ষতা হারিয়ে ফেলতে পারে।

যেসব ব্যাংক একীভূত করা হচ্ছে, তাদের নেচারও এক রকম নয়। কোনো কোনোটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক আবার কোনোটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংক। একীভূতকরণের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যক্তিমালিকানায় দেওয়া ঠিক হবে না। এছাড়া ব্যাংকগুলোর কাজের মধ্যেও ভিন্নতা রয়েছে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক যদি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হয়, তাহলে খুব একটা সমস্যা হবে না। কারণ দুটি ব্যাংকই কৃষি ঋণ নিয়ে কাজ করে। কিন্তু বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক যদি সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হয়, তাহলে কাক্সিক্ষত সুফল নাও পাওয়া যেতে পারে। কারণ বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক একটি বিশেষায়িত ব্যাংক, যারা মূলত দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে। আর সোনালী ব্যাংক নানা ধরনের মেয়াদি ঋণ প্রদান করে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য সচেষ্ট থাকতে হয়। কাজেই তাদের সঙ্গে ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের তুলনা চলে না। (অনুলিখন : এম এ খালেক)

ড. এম এম আকাশ : অর্থনীতিবিদ; অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম