শতফুল ফুটতে দাও
সংযম ও ধৈর্যের কোনো বিকল্প নেই
ড. মাহবুব উল্লাহ্
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর, দেশের রাজনীতিতে স্থবিরতা নেমে আসে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচন বর্জন করে এবং জনগণকেও নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানায়। তবে বর্জনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের সহিংসতার খবর সংবাদ মাধ্যম দেখা যায়নি। নির্বাচন কমিশন দাবি করেছিল ৪০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, ভোট প্রদানের হার ১০-১৫ শতাংশের বেশি নয়। শাসক দল আইনের উসিলায় জয়লাভ করে নতুন সরকার গঠন করলেও একে বিজয় না বলে পরাজয় বলাই শ্রেয়। পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শিথিল হয়ে পড়ে। এ বছর রমজানে রাজনৈতিক উদ্যোগে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্তভাবে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও অন্য বছরগুলোর তুলনায় এ ইফতার মাহফিলগুলো ছিল অনেকটা নিষ্প্রভ। এদেশে সত্যিকারের রাজনীতি ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে, দেশে বিরাজনীতিকরণের শৈত্য প্রবাহ চলছে। এমনই এক পরিবেশে আমরা লক্ষ করলাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে।
৩০ মার্চের পত্রিকাগুলো থেকে জানা যায়, তার আগের গভীর রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে গত শুক্রবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বুধবার মধ্যরাতের পর বহিরাগত কিছু নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালান। এর প্রতিবাদে ৫ দফা দাবিতে শুক্রবার বেলা আড়াইটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ শেষে শনিবার আবারও বিক্ষোভের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছে, বুধবার মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র এমতিয়াজ হোসেন। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তাই তাকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তার হলের সিট বাতিলসহ তার সহযোগীদের বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া ‘বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তিরা’ কেন ও কীভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার অনুমতি পেলেন, সে ব্যাপারে বুয়েট প্রশাসনের সুস্পষ্ট জবাব ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডি এস ডব্লিউ) পদত্যাগ এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এরপর শুক্রবার বিকালে বুয়েট শহিদ মিনারে শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। তারা দাবি আদায়ে ৩০ ও ৩১ মার্চ পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাত সাড়ে ১০টার পর নিরাপত্তার কারণে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি নেই। অথচ বুধবার রাত ১টার দিকে ‘একটি বিশেষ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের’ বেশ কজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বুয়েট ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢোকেন। শুধু তারাই নন, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক বহিরাগত রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে আসতে থাকে। রাত ২টার পর মিছিলের মতো করে বিশাল একটি বহর ফুলের তোড়া নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। সেই জনবহরের সবাই বহিরাগত এবং রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ছিল। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বুয়েটের নীতিমালা অনুযায়ী, এখানে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ। ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীকে বুয়েটের হলে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা ঘটে। আবরার ফাহাদের অপরাধ ছিল, সে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিল। সেই পোস্টে তার অকৃত্রিম দেশাত্মবোধের প্রতিফলন ঘটেছিল। আমার এ ৭৯ বছর বয়সে আবরার ফাহাদের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা যখন মনে হয়, তখন অশ্রু সংবরণ করতে পারি না। আবরার ফাহাদের হত্যাকে কেন্দ্র করে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
সংবাদপত্র থেকে জানা যায়, আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সবাই ছিলেন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতাকর্মী। এ ঘটনায় করা মামলার রায় হয় ২০২১ সালে। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘আবরার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। তারা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দেন।
৩১ মার্চ রোববারের সংবাদপত্র থেকে জানা যায়, দাবি আদায়ে অনড় রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই দিনে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে ছাত্রলীগ সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। গত শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেনের হলের সিট বাতিলের কথা জানায়। একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি গঠন ও কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানানো হয়।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছেলে’ দাবি করে গত শনিবার বেলা ৩টার দিকে বুয়েটের শহিদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করেন ৫ ছাত্র। তারা শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে একটি ‘অন্ধকার’ সংগঠনের ইন্ধন দেখছেন বলে জানান। তারা বলেন, ইসলামি ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের মতো সংগঠন বুয়েটে কার্যক্রম চালাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তানভির মাহবুব স্বপ্লীল নামের এক বুয়েট ছাত্র। আরেক ছাত্র আশিক আলম বলেন, ‘বুয়েটে আবরার ফাহাদ ভাইয়ের সঙ্গে খুব খারাপ একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই’। কিন্তু হিজবুত তাহরির ও ছাত্রশিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ আবেগকে পুঁজি করে প্রকাশ্যেই নিজেদের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হয়ে যিনি কথা বলবেন তাকেই ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করছে।
গত রোববার বুয়েটে অবিলম্বে ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলটিমেটাম দিয়েছে ছাত্রলীগ। পাশাপাশি বুয়েট শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিন রাব্বির আবাসিক সিট ফিরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে ছাত্রলীগের সমাবেশ থেকে। রোববার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এ দাবি জানান। নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি ফেরানোর দাবিতে এবং বুয়েটে অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে-অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগ সমাবেশ করে। ২ এপ্রিল মঙ্গলবারের সংবাদপত্র থেকে জানা যায়, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকছে না। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সাড়ে ৪ বছর আগে বুয়েট কর্তৃপক্ষের জারি করা ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত সোমাবর রুলসহ এ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর ওই ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করেছিল বুয়েট কর্তৃপক্ষ। এর বৈধতা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন গতকাল রিটটি করেন। হাইকোর্টে ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার ফলে ‘বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি করতে বাধা নেই’ বলে গত মঙ্গলবারের সংবাদপত্রগুলো শিরোনাম করেছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে বুয়েটের উপাচার্যের কাছে আর্জি জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। এরপর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আশিক আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জয় বাংলা স্লোগান ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আমরা এ রায়কে সাধুবাদ জানালাম। প্রগতিশীল সব সংগঠনকে আমরা স্বাগত জানাই। অন্ধকার কোনো সংগঠন এবং স্বাধীনতাবিরোধী কোনো চেতনা বুয়েটে ঠাঁই পাবে না।’ এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হাসিন আজফার বলেন, ‘বুয়েট ক্যাম্পাসে সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু এখানে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো মতাদর্শের উত্থান আমরা হতে দেবে না।’
বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত কি না, এ নিয়ে অনেকদিন ধরে বিতর্ক চলছে। মাঝেমধ্যে বৃহত্তর রাজনৈতিক এজেন্ডা সামনে আসার ফলে ছাত্র রাজনীতির বিষয়টি সাময়িকভাবে ধামাচাপা পড়ে যায়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমরা আজ পর্যন্ত জাতি হিসাবে কোনো সহমতে পৌঁছাতে পারিনি, বুয়েটের সাম্প্রতিকতম ঘটনাবলি তাই প্রমাণ করে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সাড়ে ৪ বছর আগে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ নির্মমভাবে খুন হওয়ার পর। এই সাড়ে ৪ বছর সময়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে কাউকে উচ্চবাচ্য করতে দেখিনি। হঠাৎ করে বুয়েটে ছাত্রলীগ সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করলে বুয়েট অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, কাদের ইঙ্গিতে উসকানি দিয়ে বুয়েটকে অস্থিতিশীল করা হলো? এর আগে সাড়ে ৪ বছর ছাত্র রাজনীতি যে একটি শাসনতান্ত্রিক অধিকার, সে ব্যাপারে আজ যারা সরব হয়েছেন, তারা নিশ্চুপ ছিলেন।
বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। ছাত্রসমাজের আদর্শবাদিতা ও সংগ্রামশীলতার ফলে দেশের স্বাধীনতাসহ অনেক ন্যায্য গণতান্ত্রিক দাবি আদায় করা সম্ভব হয়েছে। কেন ছাত্র রাজনীতি এত মালিন্যে ভরে উঠল। কেন গেস্টরুম কালচারের চর্চা হয়? কেন বড় ভাইদের কথা না শোনার কারণে একজন ছাত্রকে শীতের কুয়াশার রাতে নির্যাতন করে নিওমোনিয়া বাধিয়ে হত্যা করা হয়, কেন বিরোধী দলের হরতালের দিনে অভিজিৎ নামে একজন নিরীহ দর্জি শ্রমিককে জঙ্গি তকমা দিয়ে কথিত শিক্ষার্থীরা কুপিয়ে হত্যা করে, আবরার ফাহাদের খুনের ঘটনাটি বিশাল শোকাবহ ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত হয়? এসব কারণেই ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়। আজ প্রশ্ন জাগে, কী ধরনের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ছাত্র রাজনীতি অকল্যাণের আবাহনি হয়ে উঠেছে? ছাত্র রাজনীতি যদি সুস্থ ও স্বাভাবিক ধারায় চলত, তাহলে এ নিয়ে কারোরই নেতিবাচক ধারণা পোষণ করার কথা ছিল না। কথায় কথায় স্বাধীনতাবিরোধী ও অন্ধকারের শক্তির অজুহাত তুলে ন্যায়সংগত দাবির বিরোধিতা করা কোনো কাজের কথা নয়। কারা স্বাধীনতার পক্ষে এবং কারা স্বাধীনতার বিপক্ষে সেসব নির্ধারিত হয় বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে। এ কারণে স্বাধীনতার নতুন শত্রু সৃষ্টি হতে পারে এবং তা নিয়ে কথা বলা স্বাধীনতাবিরোধিতার শামিল হবে কেন? উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সব পক্ষকে সংযমী হতে হবে। সংযম ও ধৈর্যের কোনো বিকল্প নেই।
ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ