Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

বাইফোকাল লেন্স

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাজাকারের তালিকা তৈরি হোক

Icon

একেএম শামসুদ্দিন

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাজাকারের তালিকা তৈরি হোক

রাজাকারের তালিকা তৈরি নিয়ে সরকার যে জটিলতার মধ্যে পড়েছে, তা সংবাদপত্রের পাতায় চোখ বুলালেই বোঝা যায়। গত কয়েক দিনে পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে প্রচুর শিরোনাম হয়েছে। ‘আর হচ্ছে না রাজাকারের তালিকা’, ‘রাজাকারের তালিকা প্রণয়ন অনিশ্চিত’, ‘রাজাকারের তালিকা করতে এগোনোর সাহস পাচ্ছে না জামুকা’, ‘রাজনীতির ঘেরাটোপে রাজাকারের তালিকা’ ইত্যাদি। রাজাকারের তালিকা তৈরি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ তালিকা প্রণয়ন নিয়ে হইচইও কম হয়নি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তাড়াহুড়ো করে যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, তা সবাইকে হতবাক করে দিয়েছিল। সে তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করায় এক লজ্জাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে তালিকাটি দ্রুত ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলেছিলেন এবং নতুন একটি তালিকা তৈরি করবেন বলে জানিয়েছিলেন।

তারপর চার বছর পার হয়ে গেলেও সে তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে তালিকা তৈরির দায়িত্ব এসে পড়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বা জামুকার ওপর। ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০২২’ সংসদে পাশ করিয়ে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এ আইনে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা রাজাকার, আলবদর, আল শামস্ বাহিনীর সদস্য হিসাবে কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য হিসাবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন বা খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধমূলক ঘৃণ্য কার্যকলাপ দ্বারা নিরীহ মানুষকে হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ করেছেন অথবা একক, যৌথ বা দলীয় সিদ্ধান্তে প্রত্যক্ষ, পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, তাদের তালিকা প্রণয়ন এবং গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে কাউন্সিল।

রাজাকারের তালিকা তৈরি একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে তা নয়। এরই মধ্যে কিছু কাজ এগিয়েছে। কিন্তু তালিকা তৈরি করতে গিয়ে তারা যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন, তাতে বেশকিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। জামুকার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি, তা সত্যিই দুঃখজনক। তবে এমন পরিস্থিতি যে হতে পারে তা আগে থেকেই অনুমান করা গিয়েছিল। তালিকা তৈরি করতে গিয়ে জামুকার সদস্যরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তার কিছু কিছু তথ্য ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। জামুকার সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তালিকা তৈরি করতে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম চলে এসেছে। যাচাই-বাছাই করে তাদের রাজাকার হিসাবেই চিহ্নিত করা গেছে। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এসব ব্যক্তি ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের অনেক আত্মীয়স্বজনের নামও এ তালিকায় চলে এসেছে। এরা সবাই খুব প্রভাবশালী এবং বড় বড় অবস্থানে আছেন। প্রশাসনেও এরা দাপটের সঙ্গেই অবস্থান করছেন। এসব বলতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করতে গিয়ে যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে তিনি তারও উল্লেখ করেন। বর্তমান মন্ত্রিসভার একজন সদস্যের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ না দিয়ে যে ব্যক্তি পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার শপথ নিয়ে একজন খাঁটি পাকিস্তানি কমিশন অফিসার হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন, সে ব্যক্তিই মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার ৩/৪ দিন আগে ঘটনাচক্রে পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বসেন। জামুকার সদস্য খেদ ও হতাশার সঙ্গে বলেন, সেই ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র দেওয়া ঠেকাতে গিয়ে যে গলদঘর্ম হতে হয়েছে, এখন রাজাকারের তালিকায় প্রভাবশালীদের অন্তর্ভুক্ত করতে গিয়ে না জানি আরও কত ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। এজন্যই তালিকা তৈরির কাজ আর এগোচ্ছে না।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কণ্ঠেও আমরা একই ধরনের কথা শুনতে পেয়েছি। তিনি উদাহরণ দিয়ে খুব সুন্দর করে সংবাদকর্মীদের বলেছেন, ‘ধরুন আমরা এমন কাউকে পেলাম যিনি নামকরা রাজাকার ছিলেন, আবার তিনি আমাদের মতো কারও ভগ্নিপতি, তাই তিনি বাদ। আবার আমি আপনাকে অপছন্দ করি, তাই তালিকায় আপনার নাম ঢুকিয়ে দিতে পারি। এভাবে তো তালিকা করা সম্ভব নয়।’ মন্ত্রীর শেষোক্ত উক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রভাব ও শঙ্কামুক্ত না হলে প্রকৃত রাজাকারদের তালিকা তৈরি করা যে সম্ভব নয়, তিনি সে ইঙ্গিতই দিয়েছেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত আমার একটি লেখায় এ সম্পর্কে আমি কিছুটা আলোকপাত করার চেষ্টা করেছিলাম। লেখাটির শিরোনাম ছিল, ‘রাজাকারের তালিকা যেন বিতর্কিত না হয়।’ নিবন্ধের এক জায়গায় লেখা আছে, বর্তমানে বাংলাদেশে যে একচ্ছত্র রাজনৈতিক ধারা এবং শাসনব্যবস্থা চালু আছে, তাতে রাজাকারের তালিকা প্রণয়নে পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, মুক্তিযোদ্ধা, অমুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা পক্ষের মানুষ, এমনকি ক্ষমতাসীন দলের অধিকাংশ সদস্যও একটি নির্ভেজাল, নিরপেক্ষ ও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাজাকারের তালিকা আশা করে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভেতর যাতে ভুল ধারণার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। রাজনৈতিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে কেউ যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো অশুভ পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করে, তখন তাকে প্রতিহত করতে হবে। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কেউ যেন কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে ফাঁসাতে না পারে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। তা না হলে সরকারের এমন একটি ভালো উদ্যোগ ভেস্তে যাবে। ফলে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা গ্রহণযোগ্যতাও হারাবে।’ এ প্রসঙ্গে বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক মুনতাসীর মামুনের একটি মন্তব্য উল্লেখ করা যায়, তিনি বলেছেন, রাজাকারের তালিকা কখনো হবে না। কারণ, এখন সমন্বয়ের রাজনীতি চলছে। এ সময়ের রাজনীতিতে রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা সব মিলেমিশে থাকে। সুতরাং, এটা হবে না। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের কাজে তারা কখনো গবেষক রাখেননি। কারণ, আজকালকার রাজনীতিকরা সব কিছু বোঝেন। তারা যেহেতু সব কিছু বোঝেন, তাই অন্য কোনো লোক দরকার নেই।’

এ কথা ঠিক, তালিকা তৈরি করতে গিয়ে একজন রাজাকারের নাম বাদ যাক তা যেমন কাম্য নয়, তেমনই একজন ভালো মানুষের নাম যেন রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয়, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এ তালিকা তৈরি করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রাজাকার চিহ্নিত করতে গিয়ে কতগুলো বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। এমনও অনেক রাজাকার ছিলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে সহায়কের ভূমিকা পালন করেছেন। এ প্রসঙ্গে ঢাকার একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত আমার বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা এএমএম রশিদউদ্দিনের একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করতে চাই। তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে আগরতলা সীমান্তের কাছাকাছি চারঘাট নামক একটি গ্রামে যখন পৌঁছান, তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে আরও অনেকেই ছিলেন। তারা যার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন চারঘাট এলাকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। ওই বাড়িতে তখন শিশুসহ আরও অনেক নারী-পুরুষ সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। সেখান থেকে নৌকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা রোড যা সিএন্ডবি রোড নামে পরিচিত ছিল, সেই রোডের ব্রিজের নিচ দিয়ে আগরতলার দিকে যেতে হবে। সে ব্রিজটি পাহারা দিত একদল রাজাকার। মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীরা বড় কয়েকটি নৌকায় রওয়ানা দিতেই হঠাৎ বিরাট হেডলাইট জ্বালিয়ে পাকিস্তানি একটি মিলিটারি ভেহিক্যাল কনভয় সেখানে এসে হাজির। নৌকাগুলো তৎক্ষণাৎ গ্রামের বড় বড় গাছের নিচে অন্ধকারে আশ্রয় নেয়। রাজাকারদের সঙ্গে কথা বলে পাকিস্তানিরা চলে যেতেই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছোট একটি নৌকা নিয়ে দ্রুত রাজাকারদের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ‘রোড ক্লিয়ারেন্স’ দেন। রোড ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থী বহনকারী নৌকাগুলো নিরাপদে ব্রিজ অতিক্রম করে দ্রুত আগরতলার দিকে এগিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চারঘাট এলাকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকাররা এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করে গেছেন।

সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলামেরও এমন অভিজ্ঞতা আছে। দৈনিক যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য ডিউটির মধ্যে ব্রিজ পাহারা দেওয়া রাজাকারদের অন্যতম ডিউটি ছিল। তিনি যখন কাওরানের ব্রিজ উড়িয়ে দিতে যান, তখন সেখানে পাহারারত রাজাকাররা সাহায্য করেছিলেন। পাকিস্তানি গাড়ি আসার এবং চলে যাওয়ার বিভিন্ন সিগন্যাল দিয়ে ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলামকে অপারেশন সাফল্যমণ্ডিত করতে এগিয়ে এসেছিলেন। এমন অভিজ্ঞতার কথা আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধার মুখেই শুনেতে পাই। প্রশ্ন হচ্ছে, এদের আমরা কী বলে ডাকব; রাজাকার? না ‘ডাবল এজেন্ট’! যে কোনো যুদ্ধেই ডাবল এজেন্টদের ভূমিকা খুবই বিপজ্জনক হয়ে থাকে। ধরা পড়লে যে কোনো পক্ষ থেকেই তাদের জীবননাশ হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব রাজাকার এমন ভূমিকা পালন করেছিলেন, তাদের নামও তো পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা বেতনভুক্ত রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। তাদের ব্যাপারে কী করা উচিত, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি মনে করি, তাদের সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধারাই সঠিক তথ্য দিতে পারবেন। এখনো সময় আছে, যে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা আজও বেঁচে আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব রাজাকার সদস্য সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য সংগ্রহ করে একটি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তে আসা উচিত। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেছেন, রাজাকারের তালিকা দুই পদ্ধতিতে হবে। যারা সক্রিয়ভাবে পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন তাদের একটি তালিকা করা হবে, আরেকটি হবে যারা জীবন বাঁচাতে রাজাকার হিসাবে নাম লিখিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষকরা অবশ্য মন্ত্রীর এ বক্তব্যের মধ্যে পক্ষপাতিত্বের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন। তারা মনে করেন, প্রভাবশালীদের রক্ষা করতেই দুই পদ্ধতিতে তালিকা করার কথা বলা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, জীবন বাঁচাতে তারা যে রাজাকারে নাম লিখিয়েছেন, সেটি নির্ধারণ করবে কে? ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যাবে, এ তালিকার অন্তরালেই প্রভাবশালী মহলটি পার পেয়ে গেছেন।

রাজাকারদের নামীয় তালিকা তৈরি করতে মাঠ পর্যায়ে সৎ, নিরপেক্ষ ও নিবেদিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সদস্যসহ দল-মত নির্বিশেষে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবারের সদস্য ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উপজেলাভিত্তিক কমিটি গঠন করা যেতে পারে। একইভাবে জেলা কমিটিও গঠন করা হবে। উপজেলা কমিটির সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাজাকার কর্তৃক ভুক্তভোগী জীবিত ব্যক্তি, মৃত হলে তাদের পরিবারের সদস্যদের, শহিদ পরিবারের সদস্য, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর সেসব তথ্য সততার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি রাজাকারের তালিকা তৈরি করতে হবে। তারপর জেলা কমিটির মাধ্যমে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে সেই তালিকা প্রেরণ করতে হবে। অতঃপর এ পর্যায়ে, আবারও যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। এভাবে হয়তো সময় বেশি লাগবে। তবুও প্রকৃত রাজাকারের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হোক, এটি সবারই প্রত্যাশা।

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম