বাইফোকাল লেন্স
এমন আত্মহত্যায় কি সংকট মিটবে?
একেএম শামসুদ্দিন
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য অ্যারন বুশনেল নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের মদদে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে ২৫ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য অ্যারন বুশনেল নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। দিনটি ছিল রোববার। ইসরাইলি দূতাবাস ছিল বন্ধ। লোকজনের আনাগোনাও ছিল কম। অনেকটা নিরিবিলি পরিবেশে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। বুশনেল যখন নিজের গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন, তখন লাইভ ভিডিওতে তার কথা ও দৃশ্যাবলি ধারণ করা হয়েছিল। আত্মহত্যার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে বুশনেলকে বলতে শোনা যায়, এ গণহত্যায় তিনি নিজেকে আর জড়াতে চান না। এ কারণে প্রতিবাদের চরম ভাষা হিসাবে এ পথ তিনি বেছে নিয়েছেন। তবে উপনিবেশকারীদের (ইসরাইলি) হাতে ফিলিস্তিনিরা প্রতিনিয়ত যে যন্ত্রণার শিকার হচ্ছেন, সে তুলনায় তার এ যন্ত্রণা কিছুই না। নিজের দেহে আগুন দেওয়ার পর যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিলেন, তখন তাকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘ফিলিস্তিনিকে মুক্ত করো।’ এর পরপরই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরদিন হাসপাতালে যখন বুশনেলের মৃত্যু হয়, তখনো গাজায় চলছিল ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকাণ্ড। গত অক্টোবরে ফিলিস্তিনের গাজায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলের দূতাবাসের সামনে একের পর এক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনপন্থি দুপক্ষই সেখানে বিক্ষোভ করেছেন। তবে বুশনেল গায়ে আগুন লাগিয়ে যে আত্মহত্যা করেছেন, এমন তীব্র প্রতিবাদের ঘটনা ঘটেনি। ২০২০ সালে অ্যারন বুশনেল একজন সাইবার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা হিসাবে মার্কিন বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি বিমানবাহিনীর ৭০তম গোয়েন্দা, নজরদারি ও অনুসন্ধান শাখায় কর্মরত ছিলেন।
ফিলিস্তিনের গাজায় ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর, এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বর্বর বাহিনী অন্তত ৩০ হাজার ৩৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন ৭০ হাজার ৪৫৭। নিহত পুরুষ ছাড়াও ২৫ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এছাড়া ৩৪০ জন চিকিৎসাকর্মী ও ১৩২ জন সাংবাদিককেও হত্যা করা হয়। ইসরাইলের গণহত্যার যে পরিসংখ্যান দেওয়া হলো, তা হামাসের দেওয়া কোনো তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নয়, এটি খোদ যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিুকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের হাউজ আর্মড সার্ভিসেস কমিটির এক শুনানিতে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সে দেশের আইনপ্রণেতাদের এ তথ্য দেন। নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হবে মনে করা হচ্ছে। কারণ, হাসপাতালে আসা মরদেহ হিসাব করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতদের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তারই ওপর ভিত্তি করে এ তথ্য জানানো হয়। এখানে ইসরাইলের হামলায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর ও স্থাপনার ধ্বংস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা আরও হাজার হাজার মরদেহ এ হিসাবে ধরা হয়নি।
গাজাবাসীর ওপর নৃশংসতার আরও একটি নিষ্ঠুর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইসরাইল। তাদের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, পেটের দায়ে খাদ্যের সন্ধানে থাকা মানুষও পরিত্রাণ পাচ্ছে না। এতদিন গাজাবাসীদের বাড়িঘর, দোকানপাট, অফিস-আদালত, বাজারঘাট ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মাটির সঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েও তারা শান্ত হচ্ছে না। ২৯ ফেব্রুয়ারি খাদ্যের অভাবে ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত মানুষের ওপরও তারা বিমান হামলা ও ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করে সাড়ে আট শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হতাহত করেছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ১১২ জন নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ গাজায় বর্তমানে এক-চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে আছে। উত্তরাঞ্চলে দুই বছরের কম বয়সি প্রতি ছয় শিশুর একজন মারাত্মক অপুষ্টিত ভুগছে। হাসপাতালগুলোতে পানিশূন্যতা ও অপুষ্টিতে শিশুমৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। ওই অঞ্চলে নিয়মিত ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। তাই ত্রাণবাহী গাড়ি দেখলেই ক্ষুধার্ত মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ২৯ ফেব্রুয়ারি ভোরেও গাজানগরীর দক্ষিণে আল-রশিদ সড়কে ত্রাণের জন্য আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন হাজারও ক্ষুধার্ত মানুষ। ত্রাণের গাড়ি আসা শুরু হলে ছুটে যান তারা। এ সময় ত্রাণের জন্য মরিয়া এ ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর বিমান হামলা ও ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করে হত্যাকাণ্ড চালায় ইসরাইলি বাহিনী। হামলা চালানোর পর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকা আহত ও মৃতদের ঘাড়ের ওপর দিয়ে ট্যাংক চালিয়ে ইসরাইল পৈশাচিকতার চরম রূপ দেখিয়েছে বিশ্ববাসীকে।
এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশ নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান ও তাদের প্রতিনিধিরা ইসরাইলের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণী বক্তব্য দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো। তিনি ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর বিমান হামলাকে গণহত্যার শামিল বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা গণহত্যা, যা হলোকাস্টের কথা মনে করিয়ে দেয়। বিশ্বের উচিত নেতানিয়াহুকে (ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী) বর্জন করা।’ গুস্তাভো ইসরাইল থেকে কলম্বিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অস্ত্র না কেনার ঘোষণা দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইসরাইল কলম্বিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হিসাবে বিবেচিত। ইসরাইল যে ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, মানবাধিকার ও মানবতাবিরোধী পৈশাচিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, তা মাঝেমধ্যে বিশ্ববিবেককে নাড়া দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে বক্তৃতা ও বিবৃতিতেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখে। জাতিসংঘ কিংবা আন্তর্জাতিক আদালতেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
ইসরাইলের প্রতি পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তারাও বিক্ষুব্ধ। সম্প্রতি এক অভূতপূর্ব প্রতিবাদের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ২৮ জনেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তা ইসরাইলের গণহত্যার বিষয়ে নিজ নিজ দেশের সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। বিবৃতিতে তাদের সরকারের গৃহিত নীতি আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, গাজায় ইসরাইলের সামরিক হামলার কোনো সীমা নেই। হাজার হাজার মানুষের যে মৃত্যু হয়েছে তা ঠেকানো সম্ভব ছিল। এ ছাড়া, গাজায় ইসরাইলের ইচ্ছামাফিক মৌলিক সাহায্য বন্ধ রাখার জন্য আরও হাজার হাজার মানুষের অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। ফলে তাদের প্রশাসন শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনায় সহযোগী হয়েছে। তাদের দেশের সরকার এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পরামর্শকে আমলেই নিচ্ছে না। সরকার তাদের উদ্বেগও বিবেচনাতেই নিচ্ছে না। যারা ওই অঞ্চল এবং সেখানকার গতিপ্রকৃতিকে বোঝেন, তাদের কণ্ঠও শোনা যাচ্ছে না। অথচ ইসরাইলের এ বর্বর কর্মকাণ্ড যে বন্ধ করা যেত না, তেমন নয়। বরং এসব দেশ, সক্রিয়ভাবে ইসরাইলের দুষ্কর্মে জড়িত হয়েছে। শক্তিধর দেশগুলো ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে, যা যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যায় অংশগ্রহণের শামিল।
আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারি ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা। ২৬ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়ে তুরস্ক ও কয়েকটি সংগঠনও এ ধরনের কথা বলেছে। এটি সত্য হলেও পুরোপুরি সত্য নয়। এ কথা ঠিক, ইসরাইল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলে রাখতে চায়। এজন্য তারা আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। তবে তাদের এ দুষ্কর্মে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র যে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, সে বিষয়টিও মনে রাখতে হবে। তাদের অন্ধ সাপোর্ট ইসরাইলকে আজ বেপরোয়া করে তুলেছে। সে বিবেচনায় ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধান বাধা যদি কাউকে করতে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকেই করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এযাবৎ অর্ধশতাধিক দেশ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারত্বের অবসানের যুক্তি তুলে ধরে দাবি জানিয়েছেন যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের অন্যতম উপায়। ফিলিস্তিনি ভূমি দখলে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইল যেভাবে জুলুম ও অত্যাচার চালাচ্ছে, কোনোকিছু দিয়েই তার বৈধতা দেওয়া যাবে না। শুনানিতে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রই যে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধান বাধা, তা আরও একবার প্রমাণিত হলো। আদালতকে তারা বলেছেন, ইসরাইলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে দেশটিকে বাধ্য করা যাবে না। গাজায় ইসরাইল ‘যুদ্ধাপরাধ ও ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশে দেশে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদী কণ্ঠও শোনা গেছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে বিভোক্ষও হয়েছে। এসব উপেক্ষা করে সম্প্রতি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য ইসরাইলকে ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মার্কিন সিনেট। এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে তারা। এমনকি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একমাত্র দেশ হিসাবে যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এ একচোখা নীতি নিজ দেশের মানুষও মেনে নিতে পারছে না। তারা ইসরাইলের এ গণহত্যায় নিজেদের নাম লেখাতে চাচ্ছেন না। কারণ, তারা মনে করেন, তাদের ট্যাক্সের পয়সায় মানুষ মারার অস্ত্র সাপ্লাই দিয়ে বাইডেন সরকার ইসরাইলকে গণহত্যায় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তাদের দেশের এ নীতি বদলাতে হবে। অ্যারন বুশনেলের আত্মহত্যার কারণও তাই। দেশের নীতিনির্ধারকদের ইসরাইলের গণহত্যাকে ‘স্বাভাবিক ঘটনা’ হিসাবে দেখার মনোভাবকে মেনে নিতে পারেননি বলেই এর প্রতিবাদে বুশনেল আত্মাহুতি দিলেন। কিন্তু তাতে কি গণহত্যা বন্ধ হবে? সে সম্ভাবনাও খুব কম। কারণ, তার আত্মহত্যার বিষয়টি মার্কিন প্রশাসনের কাছে খুব গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে হয় না। ইহুদিদের অর্থে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক গণমাধ্যমগুলো তার এ আত্মহত্যার ঘটনাটিকে বেশ হালকাভাবেই প্রচার করেছে। তারা তাকে পরোক্ষভাবে মানসিক সমস্যাক্লিষ্ট ব্যক্তি হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। এসব গণমাধ্যম ইউনিফর্ম পরে প্রকাশ্যে আত্মহত্যা করে অ্যারন বুশনেল মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন বলে ইঙ্গিতও দিয়েছে। অ্যারন বুশনেলের আত্মহত্যার পরও তাদের এ ধরনের মনোভাবই বলে দেয়, ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র এখন কোনো ভূমিকাই রাখবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসও তাই বলে। ১৯৭১ সালেও যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করে বাঙালিদের গণহত্যায় দখলদার পাকিস্তানিদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তারও অনেক আগে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই যেখানে স্থানীয় নেটিভ আমেরিকান উপজাতিদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে তাদের জমি দখল করে নিয়েছে, সেখানে দখলদার ইসরাইলের সব অপকর্মে প্রধান সহায়তাকারী দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই!
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা