স্বদেশ ভাবনা
দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের অবনতি কেন
আবদুল লতিফ মণ্ডল
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সদ্য বিদায়ি ২০২৩ সালের দুর্নীতির ধারণাসূচক (করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স-সিপিআই) প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। বিশ্বের ১৮০টি দেশের দুর্নীতি পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত সিপিআই রিপোর্ট ২০২৩-এর শুরুতে বলা হয়েছে, ‘The 2023 Corruption Perception Index (CPI) shows that corruption is thriving across the world. The global trend of weakening justice systems is reducing accountability for public officials, which allows corruption to thrive’, যার অর্থ দাঁড়ায়-বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির প্রসার ঘটছে। বিশ্বব্যাপী বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করার প্রবণতা সরকারি কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা হ্রাস করছে, যা দুর্নীতি প্রসারে সহায়ক হচ্ছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অধিকাংশ দেশ সরকারি খাতে দুর্নীতি মোকাবিলায় অতি সামান্য থেকে শূন্য অগ্রগতি সাধন করেছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে মাত্র ২৮টি দেশ তাদের দুর্নীতি সূচককে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে এবং ৩৪টি দেশের দুর্নীতি সূচকের অবনতি হয়েছে। রিপোর্টে উঠে আসা বাংলাদেশ সম্পর্কিত তথ্যাদি থেকে জানা যায়, গতবারের তুলনায় দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের অবনতি হয়েছে। কেন এ অবনতি তা পর্যালোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।
বিশ্বের ১৮০টি দেশের দুর্নীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রকাশিত সিপিআই সূচক ২০২৩-এ দুর্নীতির ধারণার মাত্রাকে ০ থেকে ১০০-এর স্কেলে নির্ধারণ করা হয়। ‘০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বাধিক সুশাসিত বলে ধারণা করা হয়। সর্বোচ্চ ৯০ স্কোর নিয়ে সিপিআই সূচক ২০২৩-এ সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে ডেনমার্ক। দেশটি সিপিআই সূচক ২০২২-এ একই অবস্থানে ছিল। পরের চারটি অবস্থান ২, ৩, ৪ ও ৫-এ রয়েছে যথাক্রমে ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ও সিঙ্গাপুর। তাদের স্কোর যথাক্রমে ৮৭, ৮৫, ৮৪ ও ৮৩। সিপিআই সূচক ২০২২-এ তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ সোমালিয়া। ১১ স্কোর নিয়ে ১৮০তে তার অবস্থান। এর পরের চারটি অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভেনিজুয়েলা, সিরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও ইয়েমেন। ১৩ স্কোর নিয়ে ভেনিজুয়েলা, সিরিয়া, দক্ষিণ সুদানের অবস্থান ১৭৭তম। আর ১৬ স্কোর নিয়ে ইয়েমেনের অবস্থান ১৭৬তম।
এখন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আসা যাক। টিআই’র প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল টানা পাঁচ বছর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ছিল। এর মধ্যে ২০০১ সাল ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদের শেষ বছর। অপরদিকে ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের সময়কাল। বর্তমানে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন না হলেও বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর সারিতে রয়েছে। সিপিআই সূচক ২০২৩-এ ২৪ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯। সিপিআই সূচক ২০২২ ও ২০২১-এ ২৫ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৭। সে বিবেচনায় সিপিআই সূচক ২০২৩-এ বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনমন ঘটেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘সিপিআই অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৫ থেকে ২৮-এর মধ্যে আবর্তিত ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় আরও এক পয়েন্ট কমে এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৪ স্কোর এবং নিম্নক্রম ও ঊর্ধ্বক্রম উভয় দিক থেকেই দুই ধাপ অবনমন হয়ে যথাক্রমে ১০ম ও ১৪৯তম অবস্থানে রয়েছে। টিআই কর্তৃক ২০১২ থেকে ২০২৩ মেয়াদের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশের এবারের স্কোর সার্বিক ১২ বছরের গড় স্কোর ২৬-এর তুলনায় দুই পয়েন্ট কম এবং এ মেয়াদে সর্বনিম্ন।’ টিআই’র প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতির হার বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটানের স্কোর ৬৮, ভারত ও মালদ্বীপের ৩৯, নেপালের ৩৫, শ্রীলংকার ৩৪, পাকিস্তানের ২৯ ও আফগানিস্তানের ২০।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতির প্রধান কারণ হলো দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। দেশে দুর্নীতি দমনের উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনপি সরকার ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠা করলেও তারা সংস্থাটিকে পুরোপুরি কার্যকর করতে তেমন উৎসাহী ছিল না। তাছাড়া দলীয় স্বার্থরক্ষার জন্য এমনসব ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান ও কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা বিএনপির আদর্শ ও ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিলেন। ক্ষমতাসীন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে চুপ করে থাকাকেই তারা শ্রেয় মনে করেছেন। চেয়ারম্যান ও একজন কমিশনারের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে দুদকের কার্যক্রম অনেকটা মুখথুবড়ে পড়েছিল।
আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে বলা হয়, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। ক্ষমতাধরদের বার্ষিক সম্পদ বিবরণ দিতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তরের ঘুস, দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনুপার্জিত আয়, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতি দপ্তরে গণঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিক সনদ উপস্থাপন করা হবে। সরকারি কর্মকাণ্ডের ব্যাপকভাবে কম্পিউটারায়ন করে দুর্নীতির পথ বন্ধ করা হবে।’ কিন্তু এসব প্রতিশ্রুতির খুব কমই বাস্তবায়িত হয়। ফলে ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ১২, ১৩, ১৩, ১৬ ও ১৪তম। দুর্নীতি প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ দশম সংসদ নির্বাচনি ইশতেহার ২০১৪-এ রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেয়। এসব প্রতিশ্রুতির যথাযথ বাস্তবায়নের অভাবে ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ১৩, ১৫ ও ১৭তম। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারেও আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের ঘোষণা দেয়। অথচ সিপিআই সূচকে এক ধাপ অবনতি হয়ে ২০২১ সালে বিশ্বে ১৩তম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ থেকে বাংলাদেশ ২০২২ সালে নিম্নক্রম অনুযায়ী ১২তম অবস্থানে আসে। একাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারের মতো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারেও আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার জন্য পাঠক্রমে দুর্নীতির কুফল ও দুর্নীতি রোধে করণীয় বিষয়ে অধ্যায় সংযোজন করা হবে। দুর্নীতি দমনে নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিগুলোর তেমন একটা বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। তাই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা মোটেই অমূলক হবে না।
আমাদের দেশে নির্বাচনব্যবস্থা, তা জাতীয় বা স্থানীয় যে পর্যায়েই হোক, অর্থ ও পেশিশক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচনে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর যে ব্যয়সীমা আইনে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তা মেনে চলার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। টিআইবির এক জরিপমতে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা গড়ে নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত ব্যয়ের অধিক ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেন। জরিপ মোতাবেক এরূপ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। নির্বাচিত হলে ব্যয়িত অঢেল অর্থ তারা যে কোনো উপায়ে তুলে নেবেন-এই ছিল তাদের আশা। তাই নির্বাচিত হওয়ার এসব জনপ্রতিনিধির লক্ষ্য থাকে নির্বাচনে ব্যয়িত টাকা আয় করা ও পরবর্তী নির্বাচনের জন্য টাকা জোগাড় করা। এজন্য তারা দুর্নীতির আশ্রয় নেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (ডিসেম্বর ২০১৮) আগে যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের নির্বাচনে কী পরিমাণ ব্যয় হয়, সে ব্যাপারে সরকারি কোনো গবেষণা নেই। তবে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার গবেষণা বলছে, নির্বাচনি অর্থনীতির আকার ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রতি নির্বাচনেই এ হার ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ছে। মনোনয়ন পাওয়ার আগেই বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেন প্রার্থীরা। মনোনয়ন পেতে প্রকাশ্য ও গোপনে নানা ধরনের তৎপরতা চলে। এক্ষেত্রে দলের শীর্ষ পর্যায়ে দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা। উন্নয়নের জন্য ব্যক্তি বা দলীয় পরিসরে করা হয় অর্থায়ন। এছাড়াও ক্লাব, সমিতি, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে দিতে হচ্ছে অর্থ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টিআইবি ৫০টি আসনের ১৪৯ প্রার্থীর নির্বাচনি ব্যয় নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, এসব প্রার্থীর গড় ব্যয় দেড় কোটি টাকার বেশি ছিল।
দেশের দুর্নীতি চক্রে সরকারি কর্মচারীদের ভূমিকা অত্যন্ত শক্তিশালী। এখানে সরকারি কর্মচারী বলতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে বা কোনো করপোরেশন বা তার অধীন সেবা প্রদানকারী বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। প্রশ্ন হলো, সরকার সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অনেকগুণ বাড়িয়ে দিলেও তারা সরকারি চাকরি আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন কেন? দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব এবং আইনের দুর্বলতার কারণে দুর্নীতিবাজদের শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়াকে মূলত এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। গত তিন দশকে সরকারি কর্মচারীদের দলীয়করণকেও এর জন্য অনেকটা দায়ী করা যায়। দলবাজ সরকারি কর্মচারীরা হয়ে উঠেছেন দুর্নীতিবাজ।
বেসরকারি খাত, বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা দুর্নীতির জন্য কম দায়ী নন। বেসরকারি খাত বিভিন্নভাবে দুর্নীতি করে। কর ফাঁকি দিতে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের প্রকৃত সম্পদ ও লাভের পরিমাণ কর কর্মকর্তাদের দেখায় না। আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে কর ফাঁকি দেওয়া একটি মামুলি ব্যাপার। এ সম্পর্কিত খবর আমরা পত্র-পত্রিকায় প্রায় দেখে থাকি। সংক্ষেপে বলতে গেলে, দুর্নীতিতে রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা ও বেসামরিক খাত ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কানাডা ও দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে বাড়ি কেনাসহ সম্পদ গড়ে তোলার খবর মিডিয়ায় গুরুত্বসহ প্রকাশিত হচ্ছে। এরা মূলত রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং ক্ষমতাসীন দলের আদর্শ ও ভাবধারায় বিশ্বাসী কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা।
সবশেষে যা বলতে চাই তা হলো, একটানা পনেরো বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ দুর্নীতি দমনে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কোনো সফলতা দেখাতে পারেনি। মিডিয়ার খবরে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে যে ১১টি বিষয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দুর্নীতি দমন নেই। সরকার তাদের চলতি মেয়াদে দুর্নীতি দমনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করবে বলে জনগণের প্রত্যাশা। কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেলে সিপিআই সূচকে বাংলাদেশ সম্মানজনক অবস্থানে চলে আসবে।
আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক সচিব, কলাম লেখক
latifm43@gmail.com