নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি
এবার ব্যাংক খাতে সুশাসন আনুন
ড. আর এম দেবনাথ
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা যার যার কাজে ইতোমধ্যেই মনোনিবেশ করেছেন। নতুন মন্ত্রীরা এমন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। সেটা বুঝেই সম্ভবত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধান মন্ত্রণালয়গুলোতে বিরাট পরিবর্তন এনেছেন। অর্থ, বাণিজ্য, কৃষি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বড় বড় ব্যবসায়ী সংসদ-সদস্যদের বাদ দিয়ে বসিয়েছেন নতুন মুখ; যাদের কেউ কিছুটা পরিচিত, বাকিরা সেভাবে নয়। মন্ত্রিসভা গঠনে এই পরিবর্তনকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। তবে শুধু নির্বাচন প্রক্রিয়া নয়, দরকার এখন সুষ্ঠু পদক্ষেপের। সমস্যাগুলো মোটামুটি বহুল আলোচিত এবং সবার জানা, যার কয়েকটির স্বীকৃতি আছে সরকারি দলের নির্বাচনি ঘোষণাপত্রেও। সব সমস্যার কথা এই ছোট কলামে আলোচনা করা সম্ভব নয়। আমি শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কথাই আজ আলোচনা করব।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমন সময়ে কার্যভার নিয়েছেন, যখন এ মন্ত্রণালয়টি কার্যত অকেজো। ‘নয়-ছয়’ খ্যাত সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলা যায় তার কার্যকালে মন্ত্রণালয়ে প্রায় অনুপস্থিতই ছিলেন। তার জায়গায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ কে করেছেন তা আমরা জানি না। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, তার অনুপস্থিতির সুযোগে মন্ত্রণালয়টি কার্যত রাজনৈতিকভাবে অভিভাবকহীন ছিল। মন্ত্রণালয় হয়ে ওঠে আমলানির্ভর। বিগত ৫ বছরে এ মন্ত্রণালয় অনেক সমস্যাপীড়িত হয়েছে। প্রথমেই যে সমস্যাটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা হচ্ছে, অর্থ খাতটি বাজার অর্থনীতির বাইরে কাজ করতে শুরু করে। এর শুরু সুদের হার নির্ণয়ের মাধ্যমে। কথা নেই বার্তা নেই সাবেক মন্ত্রী হোটেলে বসে ঠিক করে দিলেন ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের হার। ব্যবসার কথা বলে, বিনিয়োগের কথা বলে তিনি ঋণের ওপর সুদের হার ঠিক করলেন ৯ শতাংশ আর আমানতের ওপর ৬ শতাংশ, যা থেকে ‘নয়-ছয় সুদনীতি’ কথাটি চালু হয়। ব্যাংক বোর্ডের পরিচালক নিযুক্তির নিয়ম পরিবর্তন, ঋণখেলাপির সংজ্ঞায় ঘন ঘন পরিবর্তন, বড় বড় ঋণগ্রহীতার পক্ষে সুবিধাজনক নিয়মনীতি চালু করা, বেসরকারি খাতকে বিদেশি ঋণ নিতে উৎসাহ প্রদান, ডলারের মূল্য বেঁধে রাখা ইত্যাদি নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি ব্যাংক খাতকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রিত খাত করে ফেলেন। অথচ সরকারের ঘোষিত নীতি হলো ‘মার্কেট ইকোনমি’। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকার নিতে শুরু করে ঋণ। এসব সমস্যার আশু সমাধান দরকার। আমরা এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের খবরদারিতে। রিজার্ভ বাড়ানো, ডলারের মূল্য বাজারভিত্তিক করা, বিদেশি ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ করা, রাজস্ব বাড়ানো, সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো রক্ষা করা এখন আমাদের প্রধান কাজ। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বিষয়টি জরুরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। কঠোর নির্দেশনা দেওয়ারই কথা। ১৮-১৯ লাখ টন খাদ্যশস্য সরকারি গুদামে থাকা সত্ত্বেও, ভরা আমন মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদনের পরও জানুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে চালের দাম বাড়ছে। বাড়ছে যখন সারা বিশ্বে খাদ্যশস্যের দাম কমছে। শাকসবজি, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, ফলমূল কোনোটার দামেই স্বস্তির লক্ষণ নেই। অথচ শীতকালেই মানুষের একটু স্বস্তিতে এসব ভোগ করার কথা। না, তা হচ্ছে না। সামনে পবিত্র রমজান মাস। ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ এখনই নিতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতেই অর্থমন্ত্রী তার দায়িত্ব নিয়েছেন। মূল্যস্ফীতি শুধু অর্থমন্ত্রী তার এখতিয়ারভুক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি দিয়ে রোধ করতে পারবেন না। এখানে বাণিজ্য নীতিমালা জড়িত, জড়িত রাজস্বনীতি, ট্যারিফ কমিশন। জড়িত বহুল আলোচিত ‘সিন্ডিকেট’। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি রোধে ব্যর্থ হলে সবাই দায়ী করবে অর্থমন্ত্রীকে। অতএব, অচিরেই তাকে সিন্ডিকেট দমনসহ আরও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বায়ত্তশাসন না হোক, দৈনন্দিন কাজের স্বাধীনতা দেওয়া দরকার। মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন ঝামেলা থেকে এই ব্যাংক মুক্ত হোক, তা সবাই চায়। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন ‘স্বৈরাচারী’ না হয়, তার জন্য এর ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণও দরকার। পুরো ব্যাংক খাত যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুশাসনের মধ্যে থাকে, তার জন্য অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দরকার। অর্থনীতি, ব্যাংকিংয়ে সুশাসনের আইনি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরে আসবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই হালের মধ্যেই সরকারি ব্যাংকগুলো এখন দ্বৈতশাসনের শিকার। অথচ দুই দশকেরও আগে সরকারি ব্যাংকগুলোকে ‘পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে’ রূপান্তরিত করা হয়। উদ্দেশ্য, বেসরকারি খাতের সঙ্গে প্রতিযোগিতা। বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা চলে ‘কোম্পানি আইন-১৯৯৪’ অনুসারে। সরকারি ব্যাংকেও তা-ই চলার কথা। সরকার মালিক হিসাবে শুধু ‘বোর্ড’ গঠন করে দেবে। তারপরের সব কাজ বোর্ডের। ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপকসহ সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিযুক্তি, পদায়ন, শৃঙ্খলাজনিত অনুশাসন, কর্মপরিকল্পনা স্বাধীনভাবে করার কথা বোর্ডের। দুঃখের বিষয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংকিং বিভাগ সৃষ্টি করে এসব ক্ষমতা সরকারি ব্যাংকের হাত থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি সরকারি ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান কীভাবে পরিচালিত হবে, তাও ব্যাংকিং বিভাগ স্থির করে। ফলে সরকারি ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতোই দ্বৈতশাসনের শিকার। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সর্বত্র। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের একবার যেতে হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে, আরেকবার মন্ত্রণালয়ে। বোর্ডের দুই পয়সা মূল্য নেই। বোর্ডকে কেউ ‘কেয়ার’ করে না। অথচ আওয়ামী লীগের প্রথম শাসনামলে এ ব্যবস্থা ছিল না। কার মাথা থেকে ‘বিভাগ’ সৃষ্টির বুদ্ধি এলো জানা নেই। কিন্তু এটা ব্যাংকের ক্ষেত্রে সুশাসনের বড় বাধা। এটি দূর করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বাধা আসবে এবং তা নিরসনের বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে হবে।
একটা বড় সমস্যা হচ্ছে খেলাপি ঋণ। বড় বড় গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়ার জন্য ‘ক্লাসিফায়েড লোন’র (খেলাপি ঋণ) সংজ্ঞা ঘন ঘন পরিবর্তন করা হচ্ছে। প্রথমদিকে এটা স্থির করত ব্যাংকগুলো নিজেরা। পরে ধীরে ধীরে ক্লাসিফায়েড লোনের সংজ্ঞা এমনভাবে পবিরর্তন করা শুরু হয় যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকই কার্যত হয়ে পড়ে ঋণদাতা এবং খেলাপি ঋণ নির্ণয়ের প্রধান কর্তা। ঘন ঘন পুনঃতফশিলকরণ, ঋণ পুনর্গঠন ইত্যাদি করে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট করা হয়েছে। বড় বড় গ্রাহকরা ভাবেনই না যে, তাদের ঋণের টাকা ফেরত দিতে হবে। শুধু খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পরিবর্তন নয়, সুদের হার পরিবর্তন, ‘লার্জ’ লোনের সংজ্ঞা নির্ণয়, সুদে ভর্তুকি ইত্যাদি সমস্যা এখন ব্যাংকগুলোকে ভেতর থেকে নিঃশেষ করছে। বড় বড় গ্রাহকদের এত বিশাল পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়েছে যে, ওই ঋণের সঙ্গে ‘ক্যাশ ফ্লো’র কোনো সম্পর্ক নেই। পাঁচ, দশ, পনেরো, কুড়ি হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তারা দিব্যি আরামে আছেন। অথচ ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের কোনো ঋণ সুবিধা নেই। বড়রা বড় বড় প্রকল্প করে ওভার-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করছে বলে অভিযোগ আছে, যার প্রমাণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে আছে। বিশ্বাস করা হয়, এদের আর টাকার দরকার নেই। তারা এখন ‘সাবালক’। কঠোর ঋণনীতির মাধ্যমে বড়দের বড় বড় ঋণ সীমিত করা দরকার। তাদের বলা দরকার স্টক মার্কেট থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে। এতে তারাও লাভবান হবে, স্টক মার্কেটও লাভবান হবে, লাভবান হবে ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলোর খেলাপি সমস্যা অনেকটা কমবে। এক্ষেত্রে বলা দরকার, হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ আদায় আটকে আছে উচ্চ আদালতে। বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে, বিশেষভাবে বেঞ্চ সৃষ্টি করে এসব ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করা দরকার। এতে প্রচুর টাকা ব্যাংক খাতে ফিরে আসবে। এখানে আরও বলা দরকার, ব্যাংকগুলো হয়ে উঠেছে বৈষম্য সৃষ্টি ও টাকা পাচারের বড় মাধ্যম। ‘ওভার-ইনভয়েসিং’, ‘আন্ডার-ইনভয়েসিং’ করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাচার করছে। এর ফলে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে, ডলার সংকট তৈরি হয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, নানা অজুহাতে বড় বড় ব্যবসায়ীরা রপ্তানির টাকা দেশে ফিরিয়ে আনছেন না। এ কারণে রপ্তানির তথ্যে বিশাল গড়মিল দেখা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যের মধ্যে বিশাল ফারাক। একই সমস্যা রাজস্ব আদায়ের হিসাবেও। একেক প্রতিষ্ঠানের কাছে একেক হিসাব। একবার এ ব্যাপারে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত জোর সমালোচনা করেছিলেন। আমি এখানে বলতে চাইছি, হিসাব রক্ষণের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্য এটা দরকার।
সুশাসনের জন্য আারেকটি অবশ্যকরণীয় আছে। আমরা জানি, দৈনন্দিন ব্যাংকিং কাজের জন্য দায়ী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বোর্ড দৈনন্দিন ব্যাংক পরিচালনায় জড়িত নয়। তারা জড়িত নীতিনির্ধারণী কাজে। অথচ বদনাম হয় বোর্ডের। নানাভাবে সব অপকর্মের জন্য বোর্ডকে দায়ী করা হয়। এটা হতে পারে একমাত্র এমডি সাহেবের সহযোগিতায়। ঋণ বিতরণ, পদায়ন, পদোন্নতিসহ যাবতীয় কাজ করেন এমডি সাহেব। তার সইয়েই বোর্ডে মেমো যায়। এ মেমোতে অনেক কর্মকর্তার সই থাকে। কোনো কাজই এমডি সাহেবের মেমো ছাড়া সম্ভব নয়, বিশেষ করে বড় বড় সিদ্ধান্ত। ছোট ও মাঝারি সিদ্ধান্তগুলো এমডি সাহেব নিজেই গ্রহণ করেন। কিছু ক্ষমতা তিনি নিচের স্তরে প্রত্যর্পণ করেন। এই কাঠামোতে এমডির সহযোগিতা, যোগসাজশ, সহমর্মিতা ছাড়া কোনো অনিয়মই করা সম্ভব নয়। এমডি যাতে বোর্ডের অথবা প্রভাবশালী পরিচালকদের কথায় কর্ণপাত না করেন, সেজন্য তাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ প্রোটেকশন দেওয়ার কথা। সম্প্রতি দু-একটি উদাহরণ আমরা পেয়েছি। পরিচালকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে এমডি মহোদয় পদত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অন্তত দুজনকে ‘প্রটেকশন’ দিয়ে স্বপদে বহাল রেখেছে। তবে এটাও ঠিক যে, চতুর এমডি সাহেবরা মালিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করেন। অনেকে চেয়ারম্যানের অফিসে ফাইল নিয়ে যান, যা তার করার কথা নয়। এর বিনিময়ে তারা বিশেষ সুবিধা পান, নেন। কেউ কেউ দীর্ঘদিন স্বপদে বহল থাকেন। অথবা কেউ অবসরের পর সুবিধাপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোতে চাকরি নেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এমডি ও প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া ব্যাংকে কোনো অনিয়ম সংঘঠিত হতে পারে না। এ কারণে নতুন অর্থমন্ত্রী মহোদয়কে বলব বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। সাধারণ আমানতকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থে তিনি ভেবে দেখবেন কীভাবে বোর্ড ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশ বন্ধ করা যায়। আমি মনে করি, সব বড় অনিয়মের ক্ষেত্রে এমডি হওয়া উচিত এক নম্বর দায়ী ব্যক্তি।
অনেক সমস্যা, কত লিখব? তবে তামাদি হয়ে যাওয়া বহুদিনের একটা বিষয়ের উল্লেখ করে আজকের নিবন্ধ শেষ করতে চাই। ব্যাংক খাতে, আর্থিক খাতে অনেক আবর্জনা জমেছে। এসব আবর্জনা চিহ্নিত করতে এবং এসবের সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ দরকার। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এত কাজ করতে পারবে না। দরকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। এক্ষেত্রে অনেকদিনের দাবি একটি ‘ব্যাংকিং কমিশনে’র। সাহস নিয়ে এটি গঠন করে সমস্যা চিহ্নিত এবং সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। আইএমএফ বলার আগে আমরা নিজেরা করে ফেললে ভালো হয় না কি? বিশেষ করে যখন আমাদের আর্থিক খাত ‘মরণব্যাধি’ সমস্যায় আক্রান্ত।
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়