Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

স্বদেশ ভাবনা

আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার একটি পর্যালোচনা

Icon

আবদুল লতিফ মণ্ডল

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নির্বাচনি ইশতেহার-২০২৪ ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২৭ ডিসেম্বর দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগানসংবলিত ইশতেহারটিতে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা, ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা, লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমন্বিত কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলা, শিক্ষার উন্নয়ন, দৃশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো, দারিদ্র্যবিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস করা, নিম্ন-আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা, ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু করা, গণতান্ত্রিক চর্চার প্রসার ঘটানো, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা, শ্রমিক কল্যাণ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয় স্থান পেয়েছে।

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নবম (ডিসেম্বর ২০০৮), দশম (জানুয়ারি ২০১৪) ও একাদশ (ডিসেম্বর ২০১৮) সংসদ নির্বাচনেও ইশতেহার প্রকাশ করেছিল আওয়ামী লীগ। ওইসব ইশতেহারের অনেক বিষয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে স্থান পেয়েছে। এ ইশতেহারের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক।

দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হলে আওয়ামী লীগ দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা ছিল একটি। এতে বলা হয়, দ্রব্যমূল্যের দুঃসহ চাপ প্রশমনের লক্ষ্যে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা করা হবে। অথচ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার দুই অর্থবছর পার হতে না হতেই সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১১.১১ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১.৫২ শতাংশে দাঁড়ায় (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১২)। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমানে ধস, আমদানিনির্ভর দ্বিতীয় খাদ্যশস্য গমের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, নিম্নমুখী রেমিট্যান্স, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা’ ইত্যাদি কারণে দ্রব্যমূল্যের চলমান ঊর্ধ্বগতি (নভেম্বরে ১০.৭৬ শতাংশ) আগামী দিনে হ্রাস পাবে না বৃদ্ধি পাবে, তা সময়ই বলে দেবে।

নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি : আওয়ামী লীগের ইশতেহার ২০২৪-এ বলা হয়েছে, নির্বাচিত হলে দেশের রূপান্তর ও উন্নয়নে আমরা তরুণ ও যুবসমাজকে সম্পৃক্ত রাখব। কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ, জেলা ও উপজেলায় ৩১ লাখ যুবকের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে তিন কোটি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সমীক্ষায় দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতিবছর ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় দেড় কোটি বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ : আওয়ামী লীগের নবম সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ছিল সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া পাঁচটি বিষয়ের একটি। নবম সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দেয়, নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারেও আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের ঘোষণা দেয়। অথচ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচকে এক ধাপ অবনতি হয়ে ২০২১ সালে বিশ্বে ১৩তম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ থেকে বাংলাদেশ ২০২২ সালে নিম্নক্রম অনুযায়ী ১২তম অবস্থানে এসেছে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ২০০১ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদের শেষ বছরে। পরবর্তী টানা চার বছর (২০০২-২০০৫) খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের সময়কালে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিল। বর্তমানে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন না হলেও বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর সারিতে রয়েছে। তাই নির্বাচনি ইশতেহার ২০২৪-এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নতুন করে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা অমূলক নয়।

জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা : আওয়ামী লীগের ইশতেহার ২০২৪-এ বলা হয়েছে, নাগরিককেন্দ্রিক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, কল্যাণমুখী, সমন্বিত দক্ষ স্মার্ট প্রশাসন গড়ার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত ও মানসম্মত সেবা প্রদান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারবদ্ধ। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে দক্ষ, উদ্যোগী, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর, দুর্নীতিমুক্ত, দেশপ্রেমিক ও জনকল্যাণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলমান থাকবে। আওয়ামী লীগের নবম নির্বাচনি ইশতেহারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া পাঁচটি বিষয়ের একটি ছিল। দলটির একাদশ নির্বাচনি ইশতেহারেও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের একটানা ১৫ বছরের শাসনামলে প্রশাসনকে প্রায় পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনের একটি অংশ এতটাই প্রভাবশালী হয়ে পড়েছে যে, তারা সরকারি কর্মচারী আচরণবিধির তোয়াক্কা করেন না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনাকারী মাঠ প্রশাসনের একাধিক জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আওয়ামী লীগ যেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে, সেজন্য দলটির অনুকূলে ভোট প্রদানের জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছেন। মিডিয়া ও সচেতন জনগণের সমালোচনা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেবল নিরপেক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমেই জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা সম্ভব।

দারিদ্র্যবিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস : আওয়ামী লীগের নবম নির্বাচনি ইশতেহারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে একটি ছিল দারিদ্র্য ঘোচানো। নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের ২০০৯-১৩ মেয়াদে দারিদ্রহার কিছুটা কমলেও আয়-বৈষম্য কমেনি। সরকারি হিসাবে ২০১৬ সালের ২৪.৩ শতাংশ দারিদ্র্যহার বর্তমানে ১৮.৭ শতাংশে নেমে এলেও মোট জনসংখ্যার (১৭ কোটি) একটি বিরাট অংশ (৩ কোটির বেশি) দারিদ্র্যসীমার নিচেই রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফনে (নভেম্বরে ৯.৪৯ শতাংশ) সমাজে শ্রেণিবিন্যাসে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ মধ্যবিত্তের নিম্ন-মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তের দরিদ্র এবং দরিদ্রের অতিদরিদ্র স্তরে নেমে যাওয়ার জোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাবে। এদিকে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক সাম্প্রতিক তথ্যে জানা যায়, দেশের প্রতি পাঁচজন মানুষের একজন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাছাড়া বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে আয়বৈষম্য কমার পরিবর্তে বেড়েছে। আয়বৈষম্য পরিমাপকারী গিনি সহগ ২০২২ সালে বেড়ে ০.৪৯৯ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০১৬ সালে এটি ছিল ০.৪৮২ এবং ২০১০ সালে ০.৪৫৮। অর্থাৎ দেশে আয়ের ক্ষেত্রে বৈষম্য বেড়েছে। যারা আয়ের নিম্নসীমায় আছেন, তাদের সম্পদের পরিমাণ আগের চেয়ে আরও কমে গেছে। আগের মতো আগামী মেয়াদেও আওয়ামী লীগ সরকার (বর্তমান পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ নির্বাচনে দলটির জয় নিশ্চিত ধরে) আয়বৈষম্য হ্রাসে সক্ষম হবে বলে মনে হয় না।

গণতান্ত্রিক চর্চার প্রসার ঘটানো : আওয়ামী লীগের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে দেশে গণতন্ত্র চর্চার প্রসার ঘটানোর বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’ তাদের ‘ওপেন সোসাইটি ব্যারোমিটার : ক্যান ডেমোক্রেসি ডেলিভার?’ শীর্ষক জরিপটি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশের ৩৬ হাজার ৩৪৪ জনের অংশগ্রহণে উপর্যুক্ত জরিপটি করা হয়েছে। জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৯১ শতাংশ মানুষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পক্ষে। এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন: যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন, সুইডেনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসি, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শ প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউজ পরিচালিত বৈশ্বিক গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অনেকটা তলানিতে।

আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা : আইনের শাসন সুদৃঢ়করণ আওয়ামী লীগের একাদশ সংসদ নির্বাচনি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিরোধী দলের জন্য স্পেস না থাকা, গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের কর্মী এবং মুক্তচিন্তার মানুষের ওপর নিপীড়ন, বিচারব্যবস্থায় মামলাজট ও বিচারে দীর্ঘসূত্রতা ইত্যাদি কারণে বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অনেকটা তলানিতে। ২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট প্রকাশিত বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪০টি দেশের মধ্যে ১২৭তম। আর গত এক যুগে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনের অভিযোগ থাকলেও এসব বিষয়ে জবাবদিহিতার অভাব আছে বলে মন্তব্য করেন ২০২২ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সফরকারী জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।

ইতঃপূর্বেকার ইশতেহারগুলোর সব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ সরকার সফল না হলেও বেশকিছু অঙ্গীকার পূরণে কম-বেশি সফল হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন এর একটি। আগামী দিনে ক্ষমতায় এলে এ অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে সরকার শিল্পের প্রসার ঘটাতে পারবে। তাছাড়া গ্রামে-নগরের সুবিধা সম্প্রসারণ, নারীর ক্ষমতায়ন, ছেলেমেয়ের শিক্ষা বৈষম্য হ্রাস, সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা, সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাভিত্তিক যান্ত্রিকীকরণ ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। অনেকটা একদলীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে এবার ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের উচিত হবে আগের অবাস্তবায়িত প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়নসহ নতুন অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া।

আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক সচিব, কলাম লেখক

latifm43@gmail.com

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম