নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি
অর্জন বিশাল, চ্যালেঞ্জও আছে
ড. আর এম দেবনাথ
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আগামীকাল মহান বিজয় দিবস। এই তো সেদিনের ঘটনা। দেখতে দেখতে ৫২ বছর কেটে গেল। বাংলাদেশ এখন এক নতুন দেশ। ‘মঙ্গামুক্ত’ বাংলাদেশ। অতীতে এই মঙ্গায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে ভাতের অভাবে, ভিক্ষার অভাবে, এমনকি ভাতের ‘ফ্যানের’ অভাবে। আর আজ? যুবকরা কি ‘মঙ্গা’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত? না। বিশাল পরিবর্তন। কৃষির পরিবর্তন। স্বাধীনতার আগে আমরা ছিলাম খাদ্য ঘাটতির দেশ, চালের ঘাটতির দেশ। তখন এ ভূখণ্ডে ১ কোটি টন চালও উৎপন্ন হতো না। এখন মোট খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় পৌনে ৫ কোটি টন। ভাবা যায়! মানুষের ভাতের অভাব নেই। গায়ে কাপড় আছে। পায়ে জুতা আছে। সারে ভর্তুকি; সেচের পানি, বিদ্যুৎ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃষিঋণ ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দেওয়ার ফলে আমাদের পরিশ্রমী কৃষকরা বাংলাদেশকে শস্যের দেশে পরিণত করেছেন। ১৯৭১-এর বাংলাদেশ আর ২০২৩ সালের বাংলাদেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন বাংলাদেশ। ধান উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনেও তৃতীয়, গোল আলু উৎপাদনে আমরা বিশ্বে সপ্তম, ইলিশ মাছ উৎপাদনে প্রথম, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, জামজাতীয় ফল উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ, ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ ছাগল উৎপাদনে আমরা চতুর্থ।
কৃষিতে এই যে সাফল্য-অগ্রগতি-যা আমরা দেখছি-তা গ্রামবাংলার চিত্রকে সমূলে পরিবর্তন করে দিয়েছে। পাকা বাড়ি, পাকা রাস্তা, বিশুদ্ধ পানীয় জল, পরিষ্কার পয়ঃব্যবস্থা, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, উন্নত আর্থিক অবকাঠামো-ব্যাংকিং সেবা, মোবাইল-কম্পিউটার সেবায় ভরপুর গ্রাম। প্রায় দেড় কোটি বাঙালি থাকে বিদেশে। মাসে মাসে পাঠায় প্রায় দুই বিলিয়ন (এক বিলিয়ন সমান শত কোটি) ডলার। কত টাকা, কত ক্যাশ! হাট-বাজারে ভর্তি গ্রামগঞ্জ। আগে ছিল নদীভিত্তিক বাজার-গঞ্জ-বন্দর। আর এখন সব আন্তঃজেলা সড়ককেন্দ্রিক। নতুন গঞ্জ, বাজার গড়ে উঠেছে। দোকানিদের শহরে যেতে হয় না। সাপ্লাই নেটওয়ার্ক চমৎকার। দোকানে দোকানে পণ্য পৌঁছে যায়। পেমেন্টের জন্য ব্যাংকে গিয়ে ‘ড্রাফট, পে-অর্ডার’ করতে হয় না। ‘ক্যাশ’ নিয়ে চলতে হয় না। ‘বিকাশ’, ‘নগদ’সহ আরও কত ব্যবস্থা। নিরাপদ রেমিট্যান্স ব্যবস্থা। সহজ ব্যবস্থা। ‘ট্রেড ক্রেডিট’ অফুরন্ত। লাখ লাখ দোকান। উপজেলাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন ছোট ছোট ঢাকা। ঢাকার বাজারে যা পাওয়া যায়, উপজেলার বাজারেও তা পাওয়া যায়। ঝলমলে সব দোকান। হ্যাজাক দ্বারা দোকান আলোকিত নয়, নয় হারিকেন দ্বারাও। দোকানে দোকানে বিদ্যুৎ। রাতের বাজার ছিল সীমিত। সপ্তাহে একদিন ছিল রাতের বাজার। এখন দিনরাত বাজার। আলোর কোনো অভাব নেই। চলাচলের কোনো সমস্যা নেই। বাস, থ্রি হুইলার, ব্যাটারিচালিত গাড়ি-সস্তা, সাশ্রয়ী, সুলভ। বিয়ে বাড়ির নেমন্তন্ন খেয়ে এখন ১৫-২০ কিলোমিটার দূর থেকে রাতের বেলা বাড়ি ফেরা যায় পরিবারসহ।
লাখ লাখ দোকানি, যাদের বলা যায় নতুন উদ্যোক্তা, ‘স্মল এন্টারপ্রাইজ’। রেমিট্যান্সের টাকায় গ্রামে গ্রামে, বাজারে বাজারে গড়ে উঠছে ছোট কারিগরি শপ। গ্যারেজ, মেরামত কারখানা, উৎপাদন কারখানা-সবই এখন গ্রামে। কৃষি ধীরে ধীরে হয়ে গেছে ‘মেকানাইজ্ড’। শ্রমিকের অভাব মিটেছে। ‘অ্যাবসেন্টি ল্যান্ডলর্ড’ সমস্যার সমাধান হয়েছে। শ্রমিকের জমি এখন ‘লিজে’ নিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকায়। জমি পতিত নেই। ফসল লাগানো, নিড়ানি, কীটনাশক ছিটানো, ফসল কাটা, ঘরে তোলা, ধান শুকানো, ধান ভাঙানো ইত্যাদি কাজ এখন হাতে হয় না। সব মেশিনে। গ্রামের বিপুলসংখ্যক নারী এখন শ্রম থেকে মুক্ত। কর্ম থেকে ব্যবস্থাপনায় তারা ব্যস্ত। সুদের ব্যবসা, ধানের ব্যবসা, অর্থের ব্যবসার পরিসর বৃদ্ধি পেয়েছে। এনজিওর ছড়াছড়ি। হাত বাড়ালেই সুলভে ঋণ পাওয়া যায়। সোনার দোকান ছিল না আগে। এখন উপজেলা শহরে ডজন ডজন ‘এয়ারকন্ডিশন্ড’ সোনার দোকান। রাতদিন খোলা। পর্দানশীন মহিলারা অবাধে ঘুরে ঘুরে বাজার করেন, স্বর্ণালঙ্কার ক্রয় করেন। জমির চেয়ে সোনার কদর বেশি। যেহেতু উপজেলা এখন জবরদস্ত প্রশাসনকেন্দ্র, তাই সেখানে সরকারি অফিসই আছে ডজন ডজন। শত শত অফিসার-কর্মী, তাদের পরিবার বসবাস করে সেখানে। ভালো ভালো স্কুল হয়েছে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলও আছে। টিউশনি করে চলছে অনেক যুবক। স্বাধীনতার আগে একটা থানায় কেন, পাঁচটা থানা মিলেও একটা কলেজ ছিল না। এখন উপজেলায় কলেজ একাধিক, মহিলা কলেজও আছে। মেয়েরা, পর্দানশীন মেয়েরা কাজ করছে। দোকান চালাচ্ছে। নানা কুটিরশিল্পে ব্যস্ত আছে। ঢাকাসহ বড় বড় শহরে সাপ্লাই দেওয়ার জন্য তৈরি করছে মালামাল। টুপি, কম্বল, নকশিকাঁথা, শীতল পাটি তৈরির কাজ চলছে গ্রাম-গ্রামান্তরে।
মাছের চাষ হয় এখন গ্রামে। স্বাধীনতার আগে দেখতাম নিজস্ব পুকুর পর্যন্ত মজা পড়ে আছে। এখন মালিকরা মাছ চাষ করছে, লিজ দিয়ে দিচ্ছে, সেই মাছ শহরে চালান দিচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে নতুন নতুন ফসল উৎপাদন করছেন কৃষকরা। নতুন জাতের ফল করছেন। ঢাকার আশপাশ অঞ্চলে গড়ে উঠছে বিপুলসংখ্যক সবজি বাগান। সবজি চাষ হয় সেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। মুড়ি, খই, মোয়া, নাড়ু ইত্যাদি খাবার গ্রামে এখন চুক্তির ভিত্তিতে তৈরি হয়। পাইকাররা কিনে এসব শহরে পাঠায়। সবই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে, আগে যা কেউ ভাবতেই পারত না। স্বাধীনতার আগে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ-মাংস, ডিম, দুধের বাজার ছিল সীমিত। মানুষের হাতে টাকা ছিল না। এখন হাতে হাতে টাকা। মানুষ কিনে খায়। গ্রামের মানুষ এখন ২০-৩০ টাকায় এক কাপ কফিও খায়। স্যান্ডউইচ খায়। বিশাল পরিবর্তন।
গ্রামীণ অর্থনীতির এই যে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিলাম, তা ঘটেছে ৫২-৫৩ বছরে। শুধু গ্রামীণ অর্থনীতি, গ্রামীণ সমাজের রূপান্তর ঘটেছে বললে সব কথা শেষ হয় না। এক কথায় বলতে গেলে, বিগত ৫২-৫৩ বছরে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। তার বাজেটের আকার বড় হয়েছে। রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। মিডিয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে। সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ অনেক দেশের তুলনায় অগ্রগামী। সারা বিশ্বে প্রশংসিত। পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটেছে। ঢাকার আশপাশের অঞ্চলে গড়ে উঠেছে ডজন ডজন ‘রিসোর্ট’। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, সিলেট, কুয়াকাটা, খুলনা ইত্যাদি অঞ্চলে গড়ে উঠেছে পর্যটন স্পট। পরিবহণ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। ঢাকায় মেট্রোরেল হয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল ৩০-৪০ মিনিটে যাওয়া যায়। এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে। ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেললাইন হয়েছে। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। সেতুর উপর রেললাইন বসেছে। এসব বিশাল কর্মকাণ্ডের ফল হচ্ছে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি।
স্বাধীনতার পর আমাদের অর্থনীতি ছিল বিধ্বস্ত। সব জিনিসেরই ছিল অভাব। ৯ মাস ছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ। তখনকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল নামমাত্র। আমরা ৩ থেকে ৪, ৪ থেকে ৫, ৫ থেকে ৬ শতাংশ, শেষে এসে সাড়ে ৭ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করেছি, যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনা মহামারি আমাদের পেছনে ফেলেছে।
আগে অর্থনীতির আকার ছিল এক বিলিয়ন ডলারের নিচে। আর এখন তা সাড়ে তিনশ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় সোয়া দুই হাজার ডলারের উপরে। বাজেটের আকার এখন প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা। ১৯৭২-৭৩ সালের দিকে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭০০-৮০০ কোটি টাকা। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে ঘটেছে বিপুল প্রসার। আমদানির পরিমাণ এখন ৬০ বিলিয়ন ডলার। স্বাধীনতার পরপর ছিল মাত্র ২৫-৩০ কোটি ডলার। রপ্তানির পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে আমাদের দারিদ্র্যবিমোচনে। স্বাধীনতার আগে দারিদ্র্যসীমার নিচে লোক বাস করত ৭০-৮০ শতাংশ। সাদা চোখেই বোঝা যেত দারিদ্র্যের অবস্থা। আজ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে মাত্র ২০ শতাংশ লোক। অবশ্য অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে লোকের বাস মাত্র ১০ শতাংশ। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে প্রশংসাজনক হারে। স্বাধীনতার আগে আমাদের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৪৭ বছর। কুড়িতেই মেয়েরা হয়ে যেত বুড়ি। আজ গড় আয়ু ৭২-এর উপরে। মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। আন্তর্জাতিকভাবে তা প্রশংসিত। দেশে হাসপাতালের সংখ্যা বেড়েছে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেড়েছে বেসরকারি হাসপাতাল। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা বেড়েছে। ব্যাংকের সংখ্যাই এখন ৬০-এর অধিক! স্বাধীনতাকালে আমাদের বাণিজ্যিক ব্যাংক ছিল দেশীয় মাত্র ছয়টি। শতাধিক বিমা কোম্পানি কাজ করছে। ডজনাধিক নন-ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন কাজ করছে। স্বাধীনতার সময় যেখানে ব্যাংকে আমানত ছিল মাত্র ৪০০ কোটি টাকার মতো, সেখানে এখন ব্যাংকে আমানত ১৪-১৫ লাখ কোটি টাকা।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন অসামান্য, যদিও করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের সাময়িকভাবে পেছনে ফেলে দিয়েছে। এ দুইয়ের ফলে অর্থনীতি এখন মূল্যস্ফীতি দ্বারা আক্রান্ত। আমাদের অর্থনীতিতেও কতগুলো কাঠামোগত সমস্যার জন্ম হয়েছে। অনেক পুঞ্জীভূত সমস্যা আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্জনের পাশাপাশি আমরা দেখতে পাচ্ছি বৈষম্য। অর্থনৈতিক বৈষম্য দিন দিনই বাড়ছে। অনেকেরই ধারণা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা স্তর পর্যন্ত এটা ঘটে, পরে আস্তে আস্তে তা কমে আসে। হয়তো তাই। তবে বৈষম্যে মানুষ যাতে ভাতে কষ্ট না পায়, তার জন্য আমাদের রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের সংখ্যাগত উন্নতি অভাবনীয়। আগে এলাকায় যেখানে একটি-দুটি কলেজ ছিল, এখন সেখানে ডজন ডজন। কিন্তু আমাদের সমস্যা হয়ে গেছে গুণগত মানে। এক্ষেত্রে এখন আমাদের মনোনিবেশ করতে হচ্ছে। গুণগত মানের ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা হয়ে গেছে রাজস্ব ব্যয়ে। আমাদের অনেক কাজ এখনো এক টাকার স্থলে দুই টাকায় করতে হচ্ছে। আর্থিক খাতে সংস্কার আমাদের ‘ওভার ডিউ’ কাজ। ধীরে ধীরে সংস্কার চলছে। খেলাপি ঋণই আমাদের প্রধান সমস্যা। সমস্যা হয়ে যাচ্ছে ঋণে। বিদেশি ঋণের পরিমাণ সহ্যসীমার মধ্যে। কিন্তু এর পরিমাণ ক্রমবর্ধমান।
সবচেয়ে বড় সমস্যা আমাদের আমদানিনির্ভরতা। আমরা আমদানিনির্ভর দেশে পরিণত হয়েছি। চাল, ডাল, নুন, তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, এমনকি কাঁচামরিচ, আলু, ডিম ইত্যাদিতেও আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছি। এতে অসুবিধে হচ্ছে ডলারের প্রাপ্যতায়। আমাদের রপ্তানির চেয়ে আমদানি অনেক বেশি। রেমিট্যান্স কিছুটা ‘কভার’ দেয়। কিন্তু এরপরও বছরে ১০-১৫ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়ে যায়। রপ্তানি পণ্য দুই-তিনটিই বড়। ছোট ছোট কিছু পণ্য আছে। কিন্তু তার পরিমাণ খুবই কম। আমদানির তালিকা খুবই বড়। কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্য, মূলধনী যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ-সবই আমাদের আমদানি।
মোট কথা, ৫২-৫৩ বছরে আমাদের অর্জন যেমন বিশাল, প্রশংসনীয়; তেমনি এ সময়ের মধ্যে আমরা কিছু চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন হয়েছি। এখন দরকার স্থিতিশীলতা, দৃঢ় নেতৃত্ব, নীতিগুলোর ধারাবাহিকতা এবং রাজস্ব বৃদ্ধি। ঈর্ষাকাতর দেশি-বিদেশিরা যাতে আমাদের অর্জন বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে নজর দেওয়া দরকার।
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়