ইউরোপের শিল্পবিপ্লবের (১৭৬০) পর থেকেই মূলত পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ শুরু হয়, যা বাতাসের উষ্ণতা ও বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শুধু গত এক শতকেই পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, জলবায়ুর এ পরিবর্তনের প্রভাব হিসাবে ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বেড়ে যাবে, যদিও সাম্প্রতিক গবেষণায় আশঙ্কা করা হচ্ছে এ উচ্চতা অন্তত ৬২ সেমি. অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এ ধারা অব্যাহত থাকলে একবিংশ শতাব্দী শেষে বিশ্ব থেকে ৪৩ দেশ সমুদ্রপৃষ্ঠে হারিয়ে যাবে! বাংলাদেশেরও একটা উলেখযোগ্য অংশ ডুবে যাবে। অথচ এজন্য যেসব দেশ প্রধানত দায়ী তারা এখনো নির্বিকার। পরিসংখ্যানে জানা যায় যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও রাশিয়া পৃথিবীব্যাপী ৫৫ শতাংশেরও বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে। আর অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর এতে ভ‚মিকা একেবারেই নগণ্য। বাংলাদেশের ভ‚মিকা এক্ষেত্রে মাত্র ০.৪৭ ভাগেরও কম।
১৯৯২ সালে জাতিসংঘের প্রস্তাব পাশ হলে ১৯৯৫ সালে জার্মানিতে প্রথম সম্মেলন দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মানুষের উদ্বেগ ও কীভাবে এর প্রতিঘাত থেকে প্রতিকার পাওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এটিই বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন বা কপ (কনফারেন্স অব পার্টিস) নামে অধিক পরিচিত। সেই ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে শুরু হয়েছে ২৮তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২৮) যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র/সরকারপ্রধানসহ বিভিন্ন পেশার ৭০ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করছেন। এ মহাসম্মেলনকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বের মানুষ অপেক্ষায় আছে জলবায়ুর অভিঘাত থেকে পরিত্রাণ পেতে কী বার্তা আসবে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী অধিক কার্বন নিঃসরণে প্রভাবশালী দেশ তথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা চীনের রাষ্ট্র/সরকারপ্রধান বা শীর্ষস্থানীয় কেউ এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন না।
জলবায়ু হলো কোন এলাকার ৩০ বছরের গড় তাপমাত্রা। পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন আজ সহজেই দৃশ্যমান যার মধ্যে রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা, খরা, দাবানলের মতো প্রতিঘাত। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার বিরূপ প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার দারনা শহরে সংঘটিত বন্যা এ প্রসঙ্গে উলেখযোগ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাগর অধিক উষ্ণ থাকে বলে সামুদ্রিক ঝড়ের সঙ্গে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটে, যার কারণে তীব্র বন্যা হয়ে থাকে। এবার লিবিয়ায় এমনটাই অর্থাৎ অস্বাভাবিক বন্যা হয়েছে ও এর ফলে অন্তত ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কিছু শিরোনামে জলবায়ুর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের ভাবাচ্ছে যেমন-দক্ষিণ আমেরিকার বিশাল হ্রদ টিটিকাকা ক্রমশই শুকিয়ে যাচ্ছে যা হ্রদের তীরে থাকা ৩০ লাখ মানুষের জীবিকায়নে সংকট সৃষ্টি করছে, বিশ্বব্যাপী এলনিনোর প্রভাবে তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরের আগস্টকে ভারতে ১২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে, জাপানে জুলাইয়ে হিটস্ট্রোকে ৫৩ জন মারা গেছে, জলবায়ুর প্রভাবে ২০২৫ সালের মধ্যেই থেমে যাবে আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোত, অ্যান্টার্কটিকার পৃথিবীর বৃহত্তম বরফখণ্ড গলে ও সরে গিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে, আমাজন শুকিয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি।
জলবায়ু পরিবর্তনের এসব প্রতিঘাত থেকে বাংলাদেশও বাইরে নয়। বাংলাদেশেও কিছু শিরোনাম জলবায়ুর প্রতিঘাত বিষয়ে আমাদের উদগ্রীব করে যেমন-তীব্র দাবদাহে কৃষি উৎপাদন ঘাটতি, ঋতুবৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে, শীতকাল সংক্ষিপ্ত হয়ে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘতর হচ্ছে ও তাপমাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, অতিমাত্রায় লবণাক্ততা বাড়ায় কৃষি উৎপাদন কমছে, কোথাও অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে আবার কোথাও সময়মতো ও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষিকাজে ব্যাঘাত ঘটছে, ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমশই নেমে যাচ্ছে, নদী ভাঙনের ফলে নদী পাড়ের মানুষ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত (আইডিপি) যা নগরায়ণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার বৃদ্ধির ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ ও সাধারণ মানষের জীবিকায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
জলবায়ুর এমন পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এ শতাব্দী শেষে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ বা ২ মিটার বাড়লে এ পরিসংখ্যান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ভাব যায়? ১৯৯৭ সালের কিয়োটো প্রটোকল এবং পরে ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত কপ ২১ এ ২১০০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ বা সর্বোচ্চ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে ১৯৭টি দেশ প্রতিশ্র“তি দেয় যা ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তি হিসাবে গণ্য। সে চুক্তিতে আরও প্রতিশ্র“তি ছিল উন্নত দেশগুলো অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্যে বার্ষিক ১০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে। যদিও উন্নত দেশগুলো সে প্রতিশ্র“তি রক্ষা করেনি। কপ ২৬ (যুক্তরাজ্য ২০২১) এ কিছু উলেখযোগ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেমন ১. ২০৩০ সালের মধ্যে বন নিধন বন্ধের জন্য ১১০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে এবং ২। ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাস মিথেনের নির্গমন ৩০ ভাগের নিচে রাখতে ৯০টি দেশ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া কার্বন নিঃসরণের অন্যতম মাধ্যম কয়লার ব্যবহার শূন্যে কমিয়ে আনতে কিছু দেশ অঙ্গীকার করেছে, যেমন-জার্মানি ২০৪৫ সালের মধ্যে এবং চীন ও রাশিয়া ২০৬০ সালের মধ্যে। ভারত জানিয়েছে তারা ২০৭০ সালের আগে শূন্যে নামিয়ে আনতে পারবে না। আর সর্বশেষ জলবায়ু সম্মেলন অর্থাৎ কপ ২৭ এ (মিশর ২০২২) গুরুত্বপূর্ণ সফলতা ছিল প্রথমবারের মতো একটি লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল গঠনের বিষয়ে একমত হওয়া। এ তহবিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে-জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অধিক বিপদাপন্ন অথবা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহযোগিতা করা। যদিও কপ ২৮ শুরু হতে চললেও এ তহবিল গঠনে উলেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে প্রচেষ্টার অন্ত নেই। রয়েছে অনেক প্রতিবাদ ও সচেতনতা জাগানোর উদ্যোগ। এ বিষয়ে সাম্প্রতিক একটি খবরের কথা উলেখ করা যায়। মহাসাগরগুলোর সুরক্ষা চেয়ে ৯টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্রের নেতারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র আদালতে মামলা করেছেন। সাগরে কার্বন-ডাই অক্সাইড নির্গমনকে দূষণ হিসাবে বিবেচনা ও তা প্রতিরোধ করার বিষয়েই এ মামলা। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ও ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ হলেও এর মধ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী দেশগুলোর উৎকণ্ঠারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসে তার সূচনা বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের তাৎক্ষণিক হুমকি মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। সম্প্রতি অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের এক সমীক্ষায় উলেখ করা হয় যে, ২০১৬ সালে প্যারিস চুক্তির পরও জীবাশ্ম জ্বালানিতে ৩.২ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে যা জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক ভ‚মিকাই রাখছে।
১৭৬০ সালে সূচনা হওয়া প্রথম শিল্পবিপ্লব অনেক পথ পেরিয়ে আজ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে পৌঁছেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সত্তে¡ও শিল্পবিপ্লব থেমে থাকার উপায় নেই, বরং অচিরেই হয়তো আমরা পঞ্চম শিল্পবিপ্লবে পৌঁছাব। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাঁচতে আমাদের প্রশমন (রিডাকশন) এবং অভিযোজনের (অ্যাডাপটেশন) উদ্যোগ নিতে হবে। প্রশমন পদক্ষেপ হিসাবে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। এজন্য বিকল্প জ্বালানি যেমন: প্রাকৃতিক গ্যাস, সৌর ও বায়োবিদ্যুৎ ইত্যাদি ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে আর এক্ষেত্রে উন্নত দেশ এগিয়ে আছে। এছাড়া বিকল্প যানবাহন যেমন সাম্প্র্রতিককালে আবিষ্কৃত বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধি, উন্নত দেশে পরিবেশবান্ধব বাহন হিসাবে বাইসাইকেল ব্যবহার বেড়েছে। ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেলের জন্য রাস্তায় আলাদা লেন দেখেছি। আমাদের দেশে আজকাল যেন ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের প্রতিযোগিতা চলছে। অথচ একটি বাস রাস্তায় নামলে অন্তত ২০টি ছোট গাড়ির জ্বালানি তথা কার্বণ নিঃসরণ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। ইউরোপ ও অনেক উন্নত দেশে দেখেছি ব্যক্তিগত গাড়ি থাকা সত্তে¡ও তারা বাসে করে যাতায়াত করছেন।
কার্বন শোষণের সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ হিসাবে সবুজায়ন তথা বৃক্ষরোপণের তো কোনো বিকল্প নেই, যদিও আমাদের দেশে কারণে অকারণে বৃক্ষ নিধন অহরহ চলছে। বাংলাদেশেও কিছু ভালো উদ্যোগ রয়েছে যেমন-এনডিসি (ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন্স) আপডেট, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট গঠন, ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ–্যৎকেন্দ্র বাতিল, ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কপ ২৬-এর মূল আলোচনা (হাই লেভেল সেগমেন্ট), ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) ও কমনওয়েলথ উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রভাব সম্পর্কে বলেন যে, প্রায় ৬০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার সঙ্গে যোগ হয়েছে দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা-যারা বন উজাড় ও পরিবেশদূষণ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের সামগ্রিক ক্ষতির হিসাবে জিডিপির ২ শতাংশ। তিনি সিভিএফভুক্ত দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় অর্থ চাহিদা পূরণের ওপর গুরুত্বারোপসহ কিছু প্রস্তাব রাখেন যেমন-সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য চেকসই, সবুজ এবং প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান অর্জন, প্যারিস চুক্তিতে প্রদত্ত প্রতিশ্র“তি অনুসারে উন্নত দেশগুলোকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্যে বার্ষিক ১০০ মিলিয়ন ডলার সুরক্ষিত রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হারানো বিভিন্ন পেশাজীবীদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়া, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রিতে সীমিত রাখতে প্রধান নির্গমনকারী দেশগুলোর ওপর চাপ প্রদান, সিভিএফ এবং কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোর উন্নয়ন চাহিদা বিবেচনা ইত্যাদি। এছাড়া তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে এসব প্রস্তাবনা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং জলবায়ু প্রতিঘাত থেকে উত্তরণ সহযোগিতার কথা বলেন। সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো ঢাকা সফরে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল থেকে ১০০ কোটি ডলার অনুদান পাবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
বাংলাদেশ থেকে সরকারি, রেড ক্রিসেন্ট ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি কপ ২৮ এ অংশগ্রহণ করেছে। সম্মেলনে অংশগ্রণের প্রস্তুতি ও বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করতে গত কয়েক মাস ধরেই আমরা বিভিন্ন সভা ও ফোরামে আলোচনা করেছি। কপ ২৮ এ বাংলাদেশের অন্যতম উপস্থাপনা হবে কপ ২৭ এ জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রস্তাবনা অনুসারে সবার জন্য দুর্যোগের পূর্বাভাস (আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল) বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি জানানো। এ বিষয়ে সরকার, রেড ক্রিসেন্ট, জাতিসংঘ ও অন্যান্য জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে ১৭-১৮ নভেম্বর এক জাতীয় পরামর্শক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা ছাড়াও অন্যান্য দুর্যোগে সবার জন্য সংকেত পূর্বাভাস নিশ্চিত করার বিষয়ে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে আলোচনা করা হয়। এছাড়া সরকারি প্রতিনিধি ছাড়াও অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় ছাড়াও পলিসি আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অ্যাডভোকেসি করবে বলে আশা করা যায়।
বরাবরের মতো কপ ২৮ কে ঘিরেও অংশগ্রহণকারী সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান, বিশ্বের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আর আমরা যারা সাধারণ রয়েছে, সবার প্রত্যাশা অনেক। ১২ ডিসেম্বর সম্মেলনের শেষ দিন পর্যন্ত ভবিষ্যৎ রূপরেখা বিষয়ে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা পেতে বিতর্ক চলবে। তাই অপেক্ষা করতে হবে সে পর্যন্ত কী বার্তা নিয়ে যাবে তা দেখার।
এম এ হালিম : বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক, দুর্যোগ ও জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ
halim-64@hotmail.com