উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে কর্মমুখী শিক্ষায় জোর দিন
সালাহ্উদ্দিন নাগরী
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, ৩৫-৪০ বছর আগেও মালয়েশিয়া, ইরান, ইন্দোনেশিয়া থেকে অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (তখন অবশ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ ছিল না) ও মেডিকেল কলেজে পড়তে আসত। এখন আসে না? হ্যাঁ, দু-একটি দেশ থেকে আসে। আগে তো আশপাশের দেশগুলো অপেক্ষা আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মান ভালো ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো এক সময় চতুর্দিকে শিক্ষার আলো ছড়াত। তাহলে এখন কি আমাদের লেখাপড়ার মান কমে যাচ্ছে? নাকি অন্যরা আরও বেশি গতিতে আমাদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে? আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান হয়তো কমে যায়নি, কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যায়-ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় শিক্ষার মান আমাদের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তাই উচ্চশিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ওরা আর আমাদের দেশে আসে না। এই তো কয়েকদিন আগে QS World University Ranking Asia 2024-এর তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এতে প্রথম একশ উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ভারতের ৭টি, পাকিস্তানের ২টি, ইরানের ২টি, ইন্দোনেশিয়ার ৪টি এবং মালয়েশিয়ার ৯টি প্রতিষ্ঠান আছে। অর্থাৎ মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাবিচারে মালয়েশিয়ার ভারতের চেয়েও এগিয়ে।
QS World University Ranking Asia 2024-এর তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কয়েকদিন আগে Times Higher Education পৃথিবীর উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বশেষ যে র্যাংকিং প্রকাশ করেছে, তার প্রথম ১ হাজারটির মধ্যে বাংলাদেশের ব্র্যাক, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির নাম রয়েছে। ৮০০ থেকে ১ হাজার ক্রমের মধ্যে অবস্থান করা; উপরের চারটি প্রতিষ্ঠানের কোনোটিরই অবশ্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারিত হয়নি। উপরোক্ত জরিপ পরিচালনাকারী Times Higher Education (পূর্বনাম The Times Higher Education Supplement) লন্ডনভিত্তিক সাপ্তাহিক একটি ম্যাগাজিন। এটি বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নির্ভরযোগ্য গবেষণা ও রিপোর্ট প্রকাশ করে থাকে।
আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছি। আমাদের উন্নয়নের সূচকগুলো ক্রম ঊর্ধ্বমুখী। মহাকাশেও আমাদের উপস্থিতি জানান দিয়েছি। আমাদেরও দুই, চার, পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করে নেবে, বিশ্বের সবাই ওসব প্রতিষ্ঠানের নাম জানবে, এ প্রত্যাশা তো আমরা করতেই পারি। যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত-বহু পুরোনো ও নির্ভেজাল একটি কথা। আমাদের দেশে শিক্ষিতের হার ৭২.৯। স্কুলে শিক্ষার্থীর এনরোলমেন্ট বেড়েছে। নারী শিক্ষায় অগ্রগতি এসেছে। দিন দিন স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেড়ে চলেছে। কিন্তু যত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে, সেগুলো শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখতে পারছে বলে মনে হয় না। সেজন্য কোয়ালিটি এডুকেশনের চিত্র হয়তো খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। উদ্ভাবনী কার্যক্রমেও প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমরা পিছিয়ে, আমাদের মৌলিক গবেষণা ধর্তব্যে আসে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো কোনো মেধাবী ব্যক্তির অসাধারণ কৃতিত্বের বিপরীতে আমাদের সমষ্টিগত উৎকর্ষ এখনো সন্তোষজনক পর্যায়ে উপনীত হয়নি। তাই হাজার বছরের সভ্যতার আমাদের এ জনপদের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওপরের তালিকায় গর্ব করার মতো কোনো স্থান অধিকার করতে পারেনি। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিতের হার বহু উন্নত দেশ অপেক্ষা অনেক বেশি। অথচ জ্ঞান, বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও প্রযুক্তিতে ওসব দেশ কত এগিয়ে গেছে। সরকারি-বেসরকারি ১০৩টি মেডিকেল কলেজসমৃদ্ধ আমাদের দেশের মানুষকে চিকিৎসার জন্য ২৩টি মেডিকেল কলেজের দেশ থাইল্যান্ড গমন ঠেকানো যায়নি। এর জন্য কি এককভাবে কোনো কারণ দায়ী? নাকি বহুবিধ কারণের সঙ্গে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ‘মনোযোগ’ ও ‘অগ্রাধিকারে’র জায়গাটিকে সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে না পারার জন্য এ পিছিয়ে পড়া।
প্রশ্ন জাগে, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কি যুগ-চাহিদানির্ভর শিক্ষা কার্যক্রমে প্রস্তুত হতে পারেনি? কোয়ালিটি এডুকেশনের ক্ষেত্র তৈরিতে আমাদের নীতি প্রণয়ন, উপস্থাপন ও প্রয়োগে কি অধিকতর সমন্বয়ের দাবি রাখে? পরবর্তী প্রজন্মকে যথোপযুক্ত শিক্ষা প্রদানে আমরা কি ব্যর্থ হচ্ছি?
আবাসিক হলগুলোতে অনেক শিক্ষার্থীকে একরুমে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। যাদের তা-ও জোটে না, তাদের বিভিন্ন মেস, আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়ি বা অন্যভাবে ব্যবস্থা করতে হয়, যেটি লেখাপড়ার জন্য খুব একটা অনুকূল নয়।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক ক্ষেত্রেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্স ও সেমিস্টার সম্পন্ন করিয়ে থাকেন। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে ক্লাস নিতে প্রস্তুতি ও মনোসংযোগঘটিত কোনো অসুবিধা হয় কিনা তা-ও বিবেচনা করা যেতে পারে।
আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান যথাযথ না হওয়ার বহু কারণের একটি হলো-আমাদের এখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, আর আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ঢাকা ও বড় বড় শহরকেন্দ্রিক। এ শহর ছেড়ে যেতে চায় না শিক্ষক ও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাই অভিজ্ঞ শিক্ষকের সংকটে ভুগছে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বহু প্রাইভেট উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব টিচিং স্টাফ নেই, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে পার্টটাইম টিচার নিয়ে কাজ চালাতে হয়, তাতে সংগত কারণেই লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে।
ঢাকাকেন্দ্রিক অনেক পরিবার/অভিভাবক আছেন, তারা মেয়ে সন্তান তো দূরের কথা, ছেলে সন্তানকেও ঢাকার বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান, তা যত ভালোই হোক না কেন, পাঠাতে চান না, এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভালো/মনোযোগী শিক্ষার্থী সংকটে ভুগে থাকতে পারে।
এই তো কয়েকদিন আগে কোনো এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক সাবেক এক ভিসির নিয়োগকৃত বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তার নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে নির্মোহভাবে মেধার ভিত্তিতে। স্বজনপ্রীতি, লোভ-লালসা ও ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিয়োগ দিতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান সন্তোষজনক পর্যায়ে আসবে না।
আন্তর্জাতিক র্যাংকিং প্রতিযোগিতায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে উঠে আসতে হলে শিক্ষার সব স্তরে পাঠক্রম (সিলেবাস), গবেষণা কার্যক্রম, পরীক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষা/জ্ঞানচর্চা, ভৌত অবকাঠামো, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া, পদোন্নতি ও বেতন ভাতাদি, শিক্ষার্থীদের হলে আবাসনের সুযোগ ও পরিবেশ, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজ (খেলাধুলা, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি) ব্যতীত অন্যান্য কার্যক্রম বিশ্বের র্যাংকিংপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকরণে নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চয়তা পেতে প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে লেখাপড়ার পরিবেশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর তৎপরতা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস্রে জোগান অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগ আরও বাড়াতে হবে।
ইংরেজি ভাষাজ্ঞানে দক্ষতা উচ্চশিক্ষায় বড় বেশি অনুভূত হচ্ছে। ইংরেজিতে লিখিত বইয়ের পাঠ বুঝতে ও হৃদয়ঙ্গম করতে শিক্ষার্থীদের ভীষণ বেগ পেতে হয়, দীর্ঘ সময় ব্যয় করেও কনসেপশন ক্লিয়ার করতে পারে না। ফলে রেজাল্ট আশানুরূপ হয় না। উচ্চশিক্ষায় সবার জন্য ইংরেজি শেখার ব্যবস্থা করে অনায়াসে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করা যায়।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির পর থেকেই বিসিএস ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এতে অনেক ক্ষেত্রে ক্লাসের লেখাপড়ায় মনোযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে, প্রকারান্তরে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সার্বিক একাডেমিক পারফরম্যান্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থার উত্তরণে চাকরির সব পরীক্ষায় প্রত্যেক প্রার্থীর একাডেমিক অ্যাটেনমেন্টের প্রতিফলন আরও জোরালেভাবে প্রবর্তনের চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক শিক্ষার্থী লেখাপড়ার বাইরে এমন অনেক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে, যা একজন ছাত্রের কাজের সঙ্গে কোনোভাবেই খাপ খায় না। ছাত্রদের যদি ওইসব কাজ থেকে ফিরিয়ে আনা না যায়, তবে শিক্ষার মান বাড়ানো যাবে না।
আমাদের দেশে প্রচুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে। মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন না করা পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ হয়েছে মনে করা হচ্ছে না। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা বা গবেষণাধর্মী কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের চাকরি ব্যতীত এমএ, পিএইচডি বা উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। ইউরোপ, আমেরিকা ও পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষার ধারণাটি একেবারে ভিন্ন ধরনের। ওদের গ্র্যাজুয়েশন হয়ে গেল তো লেখাপড়া শেষ। গ্র্যাজুয়েশনকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার চূড়ান্ত ধাপ হিসাবে গ্রহণের মানসিকতা তৈরির উদ্যোগ আমাদেরও গ্রহণ করতে হবে। দেশের শিক্ষিত সচেতন সমাজ এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে। যাদের প্রয়োজন, উচ্চশিক্ষা শুধু তাদের জন্য উন্মুক্ত রাখার পদ্ধতি বের করে উচ্চশিক্ষার মান বাড়ানোর চেষ্টা করা যেতে পারে।
জীবনে চলার মতো, বিশ্বকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করার জন্য যুগ চাহিদানির্ভর শক্তিশালী বেসিক এডুকেশন সবার দরকার। সেটার জন্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও কলেবর বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। দেশ ও জাতি গঠনের পাশাপাশি প্রতিযোগিতার বিশ্বে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য শক্তিশালী মানবসম্পদ তৈরিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিকল্প নেই। কর্মমুখী শিক্ষার বিস্তার এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র এমনভাবে বিস্তৃত করতে হবে, যেন বেসিক এডুকেশন গ্রহণের পর ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এতে শিল্প-প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হবে এবং শিক্ষার্থীরাও স্বল্প সময়ে কর্মজীবন শুরু করে দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। ফলে সবাই আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেও চাইবে না, শুধু গবেষণায় আগ্রহী ও মনোযোগী শিক্ষার্থীরাই উচ্চশিক্ষায় আসবে। এতে উচ্চশিক্ষার মানও বাড়বে। চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর ব্যবহারিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং উচ্চশিক্ষাকে অনেক দিনের জন্য নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছিল। ওই পদক্ষেপের কারণেই হয়তো তারা আজকে বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক ও প্রযুক্তি চর্চার মোড়লে পরিণত হতে পেরেছে। দেশের দ্রুত উন্নয়ন ও স্বয়ম্ভরতা অর্জনে আমাদের সবার শিক্ষাভাবনাও তো এরকমই হওয়া দরকার।
সালাহ্উদ্দিন নাগরী : কলাম লেখক
snagari2012@gmail.com