Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

খাদ্যের অপচয় রোধ করা কেন জরুরি

Icon

ডা. এবিএম আবদুল্লাহ

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একটি ঐতিহাসিক ঘটনার অবতারণা করছি। একইসঙ্গে বিখ্যাত ও প্রবল সমালোচিত এক শিশুর ছবি তুলেছিলেন বিশ্বখ্যাত আলোকচিত্র শিল্পী কেভিন কার্টার ১৯৯৩ সালে সুদানে দুর্ভিক্ষের সময়। দুর্ভিক্ষে খেতে না পেয়ে হাড্ডিচর্মসার একটি শিশু মাটিতে পড়ে আছে, মৃত্যুর অপেক্ষায়। আর তার অদূরেই দাঁড়িয়ে আছে একটি শকুন, খাদ্যের অপেক্ষায়। শিশুটি মুমূর্ষু, কোনো শক্তি নেই। শকুনটি ধীরস্থির, কোনো তাড়া নেই। শিশুটির মৃত্যু হলো বলে, শকুনের খাবারও এলো বলে। একইসঙ্গে বিখ্যাত আর প্রবল সমালোচিত এ ছবিটি ১৯৯৩ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপা হয়, আর ১৯৯৪ সালে জিতে নেয় পুলিৎজার পুরস্কার। কিন্তু ভয়াবহ বিতর্ক তৈরি হয় ছবিটি নিয়ে। প্রশ্ন ওঠে, সেদিন ছবি না তুলে কেভিন শিশুটিকে বাঁচানোর কোনো চেষ্টা করেছিলেন কিনা। একসময় কেভিন নিজেও নিজেকে এ প্রশ্ন করা শুরু করেন। নিজেকে অপরাধী মনে করে কেভিন প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণায় নিমজ্জিত হয়ে ১৯৯৪ সালেই আত্মহত্যা করেন। যদিও নিয়ং কিং নামের শিশুটি মারা গিয়েছিল আরও পরে, ২০০৭ সালে।

ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা। পূর্ণিমার চাঁদও হয়ে যায় ‘ঝলসানো রুটি’। কিন্তু সবাইকে তো আর এ যন্ত্রণার মুখোমুখি হতে হয় না। তাই সমাজের একদিকে যখন খাবারের জন্য হাহাকার, অন্যদিকে পাকস্থলী উপচে খাবার আস্তাকুঁড়ে পড়ে যাওয়ার নিদর্শনও কম নয়। খাদ্যের এমন অপচয় আজ এক সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাকে খাদ্যের অপচয় বলব? সাধারণ অর্থে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার নিয়ে তা খেতে না পেরে ফেলে দেওয়াকেই অপচয় বলা যায়। কিন্তু বড় পরিসরে চিন্তা করলে দেখব, খাদ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার প্লেটে যাওয়া পর্যন্ত যে কোনো স্তরে, যদি তা আর খাবার যোগ্য না থাকে, সেটিও আসলে অপচয়।

ব্যক্তিপর্যায়ে খাবার অপচয়ের সবচেয়ে নগ্ন উদাহরণ বিভিন্ন দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাদ্য প্লেটে নেওয়া, আত্মীয়স্বজন বা অনেকের প্লেটে জোর করে বেশি খাবার দেওয়া, পরে অল্প খেয়ে বা খেতে না পেরে বাকিগুলো রেখে দেওয়া, যার স্থান হয় ডাস্টবিনে। বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পারিবারিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে; উৎসব, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কনফারেন্স, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে; বড় বড় রেস্টুরেন্ট-হোটেলে দেখা যায় প্রত্যেকের প্লেটে খাবারের পাহাড়, সেই এভারেস্ট জয় করে সে সাধ্য কার! তাই এর সিংহভাগেরই গন্তব্য হয় ভাগাড়। এসব নানারকম উৎসবের দিনগুলোতে খাবার অপচয়ের প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। দেখা যায়, অপরিকল্পিত খাবার ব্যবস্থাপনায় প্রচুর খাবার অপচয় হয়। রান্না করা হয় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাদ্য। মানুষ যতটুকু খেতে পারবে, প্লেটে নিচ্ছে তার চেয়ে বেশি। অনেক সময় প্লেটে অতিরিক্ত খাবার দেওয়া হয় এবং ওয়েটারদের মধ্যে জোর করে অতিরিক্ত খাবার তুলে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে বিশেষ করে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবসহ অতিথিদের প্লেটে জোর করে বেশি বেশি খাবার তুলে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দেখা যায়, ব্যক্তিটি এত বেশি পরিমাণ খাবার না খেতে পারায় সেই খাবার চলে যাচ্ছে ডাস্টবিনে, এতে অযথাই খাবারের অপচয় হয়।

একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল। অনেকদিন আগে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। খাবার টেবিলে আমার পাশে এক ভদ্রলোক তার ৮-১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে বসেছেন। ছেলেটি ছোট বলে বেয়ারা তার প্লেটে খাবার একটু কম দেওয়ায় ভদ্রলোক রেগেই গেলেন, বেয়ারাকে রাগতস্বরে আরও খাবার দেওয়ার আদেশ করলেন, তারপর নিজেই বাটি হাতে নিয়ে মাংস আর তরকারি ছেলের প্লেটে ঢেলে দিলেন। বাচ্চা ছেলে সাধ্যমতো খেল। খাওয়া শেষে তারা হাত ধুতে উঠে গেলেন। ছেলেটার প্লেটে তখনো যে খাবার পড়ে রয়েছে, তাতে আরেকজনের খাওয়া হয়ে যাবে, অথচ তা গেল ডাস্টবিনে।

‘পেটে যত জায়গা, প্লেটে তার চেয়ে বেশি’-সামাজিক অনুষ্ঠানে ফ্রি খাবার পেলে এটি আমাদের নীতি। আসলে পেটের নয়, বরং আমরা চোখের ক্ষুধা মেটানোর জন্যই এভাবে বেশি বেশি খাবার নেই। দাওয়াতে গিয়ে পেট ভরে গেলেও দাওয়াতকারী প্রায়ই ‘প্লেট খালি কেন’ বলে জবরদস্তি করে খাবার তুলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত ভুঁড়িতে নয়, যায় ভাগাড়ে। এতে খাবারের অপচয় হলেও আতিথেয়তার ষোলকলা পূর্ণ হয়। মুখে ‘খাব না’ বললেও আমরা মনে মনে জানি আরও খাবার আসছে। আয়োজনকারীও তাই জোর করে একের পর এক খাবার তুলে দেন মেহমানের পাতে, সামাজিকতা রক্ষার আনন্দ লাভ করেন। এর মধ্যে এক ধরনের প্রদর্শনবাদিতাও কাজ করে। অগুনতি পদের খাবার আর মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণের আয়োজন যেন ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে আর্থিক সামর্থ্য আর খানদানি ঐতিহ্য-দুই-ই প্রকাশ পায়।

শুধু শহরে নয়, গ্রামগঞ্জেও আজকাল গায়ে হলুদ, বিয়ে, জন্মদিন, আকিকা, কুলখানি ইত্যাদি অনুষ্ঠানে প্রচুর খাবারের অপচয় হয়। গ্রামের মানুষও তথাকথিত আধুনিকতার পেছনে ছুটছে। প্রচুর আয়োজন আর অপচয় খুবই সাধারণ দৃশ্য হয়ে উঠেছে। মানুষ আর এতে বিচলিত হয় না, বরং স্বাভাবিক মনে করে। খাবারের অপচয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিলাসিতা। একদিকে খাবার অপচয়ের উৎসব হয়, আর অন্যদিকে গরিব প্রতিবেশীরা খাবারের মিষ্টি ঘ্রাণ শুঁকে একটুকরা মাংসের অপেক্ষায় থাকে। মানবতার কী নির্মম পরিহাস!

হোটেলগুলোতে দেখা যায় আরেক দৃশ্য, কতটুকু খেতে পারব তা আমরা অনেকেই বুঝি না, প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্ডার করে ফেলি, কিছুটা খাই, বাকিটা ফেলে দেই। বুফে পেলে বিভিন্ন জানা-অজানা খাবারের আইটেম নিয়ে প্লেটে খাবারের পিরামিড তৈরি করি, শেষমেশ তার অল্পই গলাধঃকরণ করতে পারি, বাকিটা যায় ডাস্টবিনে।

খাবার ফেলে দেওয়ার এ মচ্ছবের পাশাপাশি একই সমাজে এর বিপরীত রূপটাও দেখি। যে ডাস্টবিনে খাবার ফেলছে, সেখান থেকেই সম্বলহীন ক্ষুধার্ত মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে খাবার জোগাড় করছে। একদিকে ভূরিভোজ করেও খাবার শেষ হচ্ছে না, অন্যদিকে গরিব প্রতিবেশী খাবারের ঘ্রাণ দিয়ে ‘অর্ধভোজনে’ বাধ্য হচ্ছে, পেটে কিছুই পড়ছে না। প্রায়ই দেখা যায়, রাস্তার পাশের ডাস্টবিন থেকে বেশকিছু ক্ষুধার্ত মানুষ ফেলে দেওয়া খাবারগুলো জোগাড় করছে, আর সেগুলোই তৃপ্তিসহকারে খেয়ে তাদের জঠরজ্বালা নিবারণ করছে। সম্প্রতি এক বুফেতে হিসাব করে দেখা গেছে, ফেলে দেওয়া খাবারের পরিমাণ এত বেশি যে তা দিয়ে ৮০-৯০ জন মানুষকে খাওয়ানো যেত।

আরেকটা অদ্ভুত রীতি আছে আমাদের। কোথাও গেলে কিছু খেতে দিলে পুরোটা খাওয়া যাবে না, কিছুটা রেখে দিতে হবে-এটাকেই আমরা মনে করি ভদ্রতা (আসলে মূর্খতা)। পুরোটা খেলে লোকে কী বলবে! কিন্তু প্লেটে রেখে দেওয়া সেই খাবার আর কেউ কি খায়? সেটা যায় ডাস্টবিনে। অন্যদিকে নিজ বাসায় খাওয়ার সময় বাচ্চাদের শেখানো হয়, খাবার ফেলে দেওয়া অন্যায়, তাই যতটুকু নেওয়া হয়েছে তার পুরোটাই খেতে হবে, তা সে পেটে জায়গা হোক বা না হোক। দেখা যায়, ছোট বাচ্চা পারছে না, তবু তাকে জোর করে খাওয়ানো হচ্ছে। এটাও এক ধরনের অপচয় বৈকি, খাবার নেওয়ার সময় সংযমী হলে এ খাবারটুকুও বেঁচে যেত।

আরেকটা কথা বলা দরকার। রান্না করা খাবারেই শুধু অপচয় হয়, তা নয়। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে রান্না পর্যন্ত সব স্তরেই অপচয় হয়ে থাকে। জমিতে চাষাবাদের সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার না করা, ফসল বা খাদ্যশস্য তোলার পর তা যথার্থভাবে সংরক্ষণ, সঠিকভাবে সরবরাহ এবং প্রয়োজন আর সমন্বয় না করতে পারলে খাবার অপচয় হওয়ার ঝুঁকি থাকে। দেখা যায়, দেশের এক এলাকায় খাবার উদ্বৃত্ত, চাষি ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না, আর অন্য এলাকায় সেই খাবারই সোনার দামে কিনতে হচ্ছে। কোথাও মানুষ খেতে পাচ্ছে না, কোথাও ফসল গুদামে নষ্ট হচ্ছে। এসব অপচয়েরই নামান্তর।

বিভিন্ন পরিসংখানে দেখা গেছে, পৃথিবীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ খাবার উৎপাদন হয়, তার একটি বড় অংশ মাঠ থেকে আর খাবার টেবিল পর্যন্ত পৌঁছায় না। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘ফুড ওয়েস্টেজ ফুটপ্রিন্ট : ইমপ্যাক্টস অন ন্যাচারাল রিসোর্সেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে বছরে প্রায় ১৩০ কোটি টন খাদ্য নষ্ট হয়, যা বিশ্বের মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। খাদ্যের এ অপচয়ে উন্নত দেশ আর উন্নয়নশীল দেশ কেউই বাদ যায় না।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ‘ইউনেপ’ ২০২১ সালে ‘ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স’ নামে রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বছরে ১ কোটি ৬ লাখ টন খাদ্য অপচয় হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত আর পাকিস্তানের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ খাদ্য অপচয় হয় বাংলাদেশে। শুধু খাবার টেবিলের অপচয় রোধ হলেই ৪২ লাখ ৬২ হাজার মানুষের সারা বছরের ভাতের চাহিদা মিটত।

আজ দুনিয়াব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে, অথচ অপচয় কমছে না। নাকি অপচয়ের কারণেই খাদ্যে টান পড়ছে, মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে? মানবতার প্রতি এ কী নির্মম পরিহাস! খাদ্যের অপচয় খাদ্য সংকটকে তীব্রতর করে তোলে, দুর্ভিক্ষ হয় আসন্ন।

ইসলাম কী বলে

খাবার অপচয়কে ইসলাম মোটেও সমর্থন করে না। বিশ্বনবি রাসুলুল্লাহ (সা.) খাবার অপচয় রোধে খুব শক্ত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। খাবার নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে দস্তরখানা বিছিয়ে খাওয়ার কথা বলেছেন, যা সুন্নত। তিনি নিজেও দস্তরখানা বিছিয়ে খাবার গ্রহণ করতেন, যাতে খাবার পাত্র থেকে পড়ে নষ্ট না হয়। কারণ খাবার হলো মহান আল্লাহর নেয়ামত। এর অপচয় কোনোভাবেই কাম্য নয়। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবিজি (সা.) খাওয়ার পর তার তিনটি আঙুল চেটে নিতেন। তিনি বলতেন, তোমাদের কারও খাবারের লোকমা নিচে পড়ে গেলে সে যেন তার ময়লা দূর করে তা খেয়ে নেয় এবং শয়তানের জন্য তা ফেলে না রাখে। বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের তিনি থালাও চেটে খাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, খাদ্যের কোন্ অংশে বরকত রয়েছে, তা তোমাদের জানা নেই (তিরমিজি : ১৮০৩)। খাবার নষ্ট করা যেমন অন্যায়, তেমনি গুনাহর কাজ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কুরআন কারিমে ইরশাদ করেছেন, (তোমরা) খাও, পান করো ও অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না (সূরা আরাফ : ৩১)। আল্লাহতায়ালা আরও বলেছেন, নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই (সূরা ইসরাইল : ২৭)।

আমাদের করণীয় কী

খাদ্যাভাবে কত মানুষ মারা যায় তার সঠিক হিসাব করা দুষ্কর। ২০২০ সালে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের এক হিসাব অনুযায়ী, বছরে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা যান। অন্য আরেক তথ্যে জানা যায়, প্রতিদিন বিশ্বে গড়ে ৮ হাজার ৬৪০ জন মারা যায় খাদ্যাভাবে, যার বেশিরভাগই শিশু। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, এভাবে খাবার অপচয় রোধে আমাদের করণীয় কী? আমরা কি এমনটাই চলতে দেব? টাকা থাকলেই কি অতিরিক্ত খাওয়া আর খাবার ফেলে দেওয়ার অধিকার জন্মায়? সমাজবদ্ধ জীব হিসাবে আমাদের দায়িত্ব আছে সমাজের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। নিজেদের সচেতন হতে হবে, আত্মীয়স্বজন-প্রতিবেশীদের সচেতন করতে হবে। ছোটদের শেখাতে হবে-খাবার শেষ করাই শুধু নয়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার পাতে না নেওয়াও একটা দায়িত্ব। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাড়াবাড়ির যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা পরিহার করা উচিত। আমাদের সবার প্রতিজ্ঞা করতে হবে, জীবনে যতদিন বেঁচে আছি, একটা দানাও অপচয় করব না, যতটুকু পারি ক্ষুধার্তকে খাওয়াব। যদি খাওয়াতে না পারি, অন্তত নিজের খাবারের ব্যাপারে মিতব্যয়ী হব। একইসঙ্গে খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ আর বণ্টনে যেন অপচয় না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। চাষির ন্যায্যমূল্যপ্রাপ্তি আর দরিদ্রদের সুলভে পর্যাপ্ত খাবার প্রাপ্তি-দুই-ই নিশ্চিত করতে হবে। আর অপচয় রোধে উদ্যোগ না নিয়ে যদি তামাশাই দেখি, তাহলে অভুক্ত মানুষের কষ্টের দায়ভার আমাদের কাঁধেই এসে পড়বে। পুলিতজার জয়ী আলোকচিত্রীর মতো আমরাও কি তখন আত্মহত্যা করব? আল্লাহ আমাদের বোঝার তৌফিক দান করুন, যাতে আমরা খাদ্য অপচয় না করে পরিমিত ভোগে সন্তুষ্টচিত্তে তার শুকরিয়া আদায় করি।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ : প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম