Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

অশান্ত মিয়ানমার, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ কী?

Icon

ব্রি. জে. (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অশান্ত মিয়ানমার, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ কী?

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বর্তমানে চরম সংকটময় সময় পার করছে। ২০২৩ এর অক্টোবরের শেষভাগে জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি গোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) একত্রে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে জোট গঠন করে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত হামলা শুরু করে। এর পরপরই অক্টোবর থেকে মিয়ানমারজুড়ে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের তীব্রতা বেড়ে গেছে। বর্তমানে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ এক নতুন মাত্রা লাভ করেছে এবং সেনা-বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে পিছু হঠতে শুরু করেছে জান্তা বাহিনী।

ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে তাদের এ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ২৭ অক্টোবর চীনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী শান রাজ্যে হামলা চালিয়ে কয়েকটি শহর ও শতাধিক সামরিক চৌকি দখল করে। ২৭ অক্টোবর চীন সীমান্তের কাছে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের একটি অংশে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স যৌথ অভিযান চালিয়ে চীন-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্য নগরী হিসাবে পরিচিত চিন শওয়ে হাও শহর দখল করে নেয়। সেখানে কয়েকটি চীনা বাণিজ্যিক সংস্থার দপ্তরেও তারা হামলা চালায়। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স চীনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ বন্ধ করে দেয় এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং দখল করে। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে উত্তরাঞ্চলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে ৫০ হাজারেরও বেশি বেসামরিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মিয়ানমার-চীন সীমান্তের একটা বড় অংশ এখন বিদ্রোহীদের দখলে। মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা শান প্রদেশে তাদের মূল ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। সেখানে তারা একের পর এক সামরিক ঘাঁটি দখল করছে। মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সেনাবাহিনী। বিমান হামলা চালিয়েও বিদ্রোহীদের অগ্রগতি ঠেকানো যাচ্ছে না। চীন সীমান্তবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মিয়ানমার-চীন সংযোগরক্ষাকারী সড়কও এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। এমএনডিএএ অপারেশন ১০২৭-এর অংশ হিসাবে প্রথম ১৯ দিনে ১৪৪টি সরকারি ঘাঁটি দখল করা হয়েছে। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু করার পর এ পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা নয়টি শহর হারিয়েছে। জান্তা উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের পাঁচটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

বর্তমানে পশ্চিমের রাখাইন রাজ্য এবং চিন রাজ্যে নতুন করে আরও দুই জায়গায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য এএ রাখাইনের রাথেডাং এবং মিনবিয়ার মাঝামাঝি অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর কয়েকটি চৌকি দখল করে। এএ-এর হামলায় জান্তা বাহিনী ও পুলিশ ৪০টি অবস্থান হারিয়েছে। নভেম্বরে ২০২২ থেকে চলমান অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এএ রাখাইনের তিনটি জনপদের পাঁচটি স্থানে হামলা চালায়। বর্তমানে রাখাইনের রাজধানী সিটওয়েতে রাস্তায় নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাখাইনের রাথেডং, মংডু ও মিনবাইয়া শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এএ-এর যোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়েছে। জান্তা সরকার ১৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিটওয়ে শহরে কারফিউ জারি করেছে। সেনাবাহিনী ও জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের পর জান্তা সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স ও সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে দেশটির ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঝুঁকিতে পড়েছে। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বিদ্রোহ কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হলে মিয়ানমার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভারতের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের চিন রাজ্যে বিদ্রোহীরা দুটি সামরিক শিবিরে হামলা চালানোর পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যাপক বিমান হামলা ও ভারী আর্টিলারি দিয়ে পালটা আক্রমণ চালায়। এর ফলে সীমান্তবর্তী এলাকার পাঁচ হাজারের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য মিয়ানমার থেকে ভারতের মিজোরামে ঢুকে পড়ে। মিয়ানমারের পরিস্থিতি খারাপ হলে এ বিশাল সীমান্ত এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমার থেকে প্রায় ৩২ হাজার মানুষ মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছে। অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও মিজোরামের সঙ্গে মিয়ানমারের ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। ২০১৮ সালের মে মাসে ভারত ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফ্রি মুভমেন্ট’ চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার থেকে প্রায় বিনা বাধায় মিয়ানমারের নাগরিকরা ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোয় ঢুকতে পারত। মণিপুরে গোষ্ঠী হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর ভারত এ চুক্তি স্থগিত রাখে। মিয়ানমার সামরিক সরকার বিদ্র্রোহীদের দমন করতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভারত সীমান্তের কাছে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ) ১২ নভেম্বর ফালাম টাউনশিপের ভারতীয় সীমান্ত শহর রেহ খাও দাহ শহরটি দখল করে। রেহ খাও দাহ উত্তর চিন রাজ্যে ভারতের প্রধান বাণিজ্য রুটে অবস্থিত। ভারতের একটি শরণার্থী শিবিরে মিয়ানমার থেকে আসা গোলার আঘাতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স থাই সীমান্তের পাশে পূর্ব কায়াহ রাজ্যের রাজধানীর কাছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। ১৩ নভেম্বর মন রাজ্যের কায়িকমায়াউ টাউনশিপে সংঘর্ষের পর ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স সেখানকার পুলিশ স্টেশন ও সামরিক ফাঁড়ি দখল করে। ১২ নভেম্বর লাশিও জেলা জান্তা প্রশাসনের কার্যালয় কুনলংয়ের পতন ঘটে। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স কর্তৃক দখল করা এ শহরটি ৭৫ বছর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। মিয়ানমার-চীন সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য নগরী মুসের কাছে নামখাম শহরটিও তারা দখলে নিয়েছে। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স কিউগোক এবং উত্তর শান রাজ্যের কৌশলগত শহর সেনির প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। ৩ নভেম্বর পিডিএফসহ একটি প্রতিরোধ জোট সাগাইং অঞ্চলের কাওলিন শহর দখল করে। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের আক্রমণে ৭ নভেম্বর সাগাইংয়ের তামু জেলার কাম্পাটের পতন ঘটে। কায়াহ (কারেনি) রাজ্যে কারেনি প্রতিরোধ বাহিনী লোইকাও নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে, যেখানে তারা জান্তার প্রায় নয়টি অবস্থান দখল করে। চলমান সেনা-বিদ্রোহী সংঘর্ষের জেরে প্রায় ১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ‘মিয়ানমারে সংঘাতের বিস্তারে’ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মিয়ানমারের সংঘাতময় অঞ্চল আন্তর্দেশীয় যোগাযোগ ও বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এ সীমান্ত অঞ্চলে সমস্যা যত বাড়বে, এ অঞ্চলের দেশগুলোর উন্নয়ন ততই ধীরগতিতে হবে। গ্লোবাল সাউথের অন্তর্গত দ্রুত উদীয়মান এ অঞ্চলের উন্নয়নে এ ধরনের সংঘাত নিরসন ও শান্তিপ্রতিষ্ঠা জরুরি। এর ফলে প্রতিটি দেশের নিজস্ব উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি বাড়বে এবং সার্বিকভাবে বিশ্বপরিমণ্ডলে নতুন আঙ্গিকে এ অঞ্চল নিজেকে উপস্থাপনে সক্ষম হবে। মিয়ানমার, দুটি আঞ্চলিক শক্তি চীন ও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পুরো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে নিবিড় সংযোগ ও উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। এ অঞ্চল ঐক্যবদ্ধভাবে যে কোনো সমস্যা মোকাবিলা করে উন্নয়ন ও সফলতা অর্জনে সক্ষম হবে। ক্ষুদ্র স্বার্থগুলো দূরে রেখে বৃহত্তর ঐক্য ও উৎকর্ষ অর্জনে এটা অপরিহার্য।

চলমান এ সংঘর্ষের মধ্যেও চীনের মধ্যস্থতায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে রাখাইনে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এর ধারাবাহিকতায় ৩১ অক্টোবর, ৩২ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মতবিনিময় করতে টেকনাফে আসে। প্রতিনিধিদলটি ১৮০ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে আলোচনা করে। রোহিঙ্গা নেতারা জানায়, রাখাইন রাজ্যের স্বাধীনভাবে বসবাসের নিরাপত্তা ও সুযোগ দেওয়া হলে তারা ফিরে যেতে রাজি, তবে রাখাইন রাজ্যের আশ্রয়শিবিরে থাকতে হলে তারা ফিরবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কিছু রোহিঙ্গাকে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইনে পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করা হবে, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, তবে কাজে অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে চীন মনে করে এবং তারা এর সফলতার বিষয়ে আশাবাদী। চীনের উদ্দেশ্য হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিছু রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। ১৫ নভেম্বর মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার নিয়ে ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) উত্থাপিত প্রস্তাবটি জাতিসংঘে গৃহীত হয়। এ প্রস্তাবে ১১৪টি দেশ সমর্থন দিয়েছে। প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকারের উদারতা ও মানবিক সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, সব সদস্য দেশকে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে এবং বাংলাদেশের ওপর আসা চাপকে ভাগ করে নিতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ এবং আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।

যতদিন রোহিঙ্গা সংকটের পূর্ণাঙ্গ সমাধান না হবে, ততদিন বাংলাদেশের ও আন্তর্জাতিক সব মাধ্যমকে এ সমস্যার অগ্রগতি ও উদ্যোগগুলো তুলে ধরে সমাধানের প্রচেষ্টা চালু রাখতে হবে। এশিয়ার দেশগুলোর সামগ্রিক উন্নয়নে এ অঞ্চলের জনগণকেই ভূমিকা রাখতে হবে, বাইরের কেউ এসে এখানকার উন্নয়ন নিশ্চিত করবে না। ইউরোপীয় দেশগুলোর উন্নয়নে এ বোধ প্রাধান্য পাওয়াতে তারা নিজেদের মধ্যকার যুগ যুগ চলা বিভেদ ও সংঘাত থামিয়ে নতুন চিন্তায় উন্নত হয়েছে এবং বিশ্বে তাদের জোরালো ভূমিকা রাখছে। এ অঞ্চলের নেতৃত্বও একত্রে এ ধরনের চিন্তাচেতনার বাস্তবায়ন করলে উন্নয়ন অধরা থাকবে না।

ব্রি. জে. (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন : মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম