Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে পিপিপি : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

Icon

মো. ফারুক আহমেদ

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে পিপিপি : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

২০১৯ সালে কোভিড মহামারির আগমন এবং দেশে দেশে লকডাউন দেওয়ার শুরু থেকে অর্থনীতিবিদরা একটা অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কার কথা বলে আসছিলেন। বস্তুত তাই-ই ঘটেছে; ২০২০ থেকে বিশ্ব অর্থনীতি সংকুচিত হওয়া শুরু করে।

উন্নত দেশগুলো থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। কোভিডজনিত অর্থনৈতিক সংকটে ধনী দেশগুলোর তুলনায় স্বল্পোন্নত দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, জ্বালানির ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি স্বল্পোন্নত দেশগুলোয় অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে, যা প্রায় সব দেশের প্রবৃদ্ধিকে ক্রমাগত নিম্নমুখী অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এ সংকটের আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। উল্লিখিত কারণের পাশাপাশি বিনিয়োগের হার কমে যাওয়া এবং যুদ্ধজনিত কারণে সাপ্লাই চেইন ভেঙে যাওয়ায় একের পর এক দেশ দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। ২০২৩-এর শুরুতে আইএমএফ কোভিড মহামারির প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ দেশ মন্দার কবলে পড়বে মর্মে পূর্বাভাস দেয়।

এর সপ্তাহখানেকের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেকটাসে’ সতর্ক করে বলেছে যে, বিশ্ব একটি বড় অর্থনৈতিক মন্দার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে এবং এটি ২০২৩ সাল থেকে শুরু হবে, যার ফলে বিশ্বের প্রবৃদ্ধি ১.৭ শতাংশে নেমে যাবে। গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে সংস্থাটি ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করেছিল। মন্দা শুরু হলে বিনিয়োগ হ্রাস পাওয়ায় উৎপাদনও হ্রাস পাবে, বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতার কারণে দ্রুত রিজার্ভ কমতে থাকবে, জীবনদায়ী ওষুধ এবং খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি করা দুষ্কর হবে। ফলে কোনো কোনো দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।

নতুন করে করোনা ছড়িয়ে পড়লে এবং চলমান যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে কিংবা ইউরোপ ও এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে গেলে বিশ্বমন্দার তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে বিশ্বব্যাংক আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিশ্বব্যাপী এ অর্থনৈতিক সংকট বিকাশমান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে শ্ল­থ করে দেবে বলে সবাই আশঙ্কায় আছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির গতিধারাসহ বিকাশমান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির গতিপ্রকৃতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জিডিপির পরিমাণ আগের প্রক্ষেপণের চেয়ে ৬ শতাংশ কম হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশ্বমন্দার প্রভাব কেমন হবে?

বিশ্বব্যাপী যে মন্দা দেখা দেবে, তার কমবেশি কিছু আঁচড় আমাদের অর্থনীতির ওপর পড়বে এটি অস্বাভাবিক নয়। বিশ্বব্যাংকের মতে, মন্দার প্রভাবে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার হবে ৫.২ শতাংশ, ২০২৪ সালে তা হবে ৬.২ শতাংশ। তবে এটিও স্বীকৃত যে, বাংলাদেশ বিশ্বসংস্থাগুলোর প্রক্ষেপণের তুলনায় সব সময় ভালো করেছে। এসব সংস্থার প্রক্ষেপণকে ভুল প্রমাণিত করে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭.২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

২০০৮-২০০৯ সালে সংঘটিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। অর্থনীতিতে কোভিড-১৯-এর প্রভাবও যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়ে প্রবৃদ্ধির উচ্চহার ধরে রেখেছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির এ হার বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। এ অর্জন ও সফলতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্ত এবং প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের ফসল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে কোভিডের অভিঘাত থেকে অর্থনীতি যখন সামলে উঠে অগ্রগতির ধারায় এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সেই অগ্রগতির ধারাকে ব্যাহত করছে।

এ কথা অনস্বীকার্য, যদি কোভিড মহামারি দ্বারা বিশ্ব আক্রান্ত না হতো এবং যুদ্ধ এসে বিশ্ব অর্থনীতিকে টালমাটাল না করত, তাহলে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের ওপরে অর্জন করতে সক্ষম হতো।

মন্দার মোকাবিলায় সর্বাগ্রে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে কী কী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন বাংলাদেশকে হতে হবে, সেটি চিহ্নিত করতে হবে এবং সেগুলো থেকে পরিত্রাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের তরফে বলা হচ্ছে, উন্নয়নশীল ও বিকাশমান দেশগুলো তাদের অগ্রগতির ধারা ধরে রাখতে সক্ষম হবে না। অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান থাকবে না, যে কারণে উৎপাদন হ্রাস পাবে। কোভিডের শুরু থেকে এসব দেশে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় এবং বিনিয়োগ সংকটের কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা আসন্ন সংকটের কারণে আরও প্রকট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এ বিশ্বমন্দার ক্ষতিকর আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়, যদিও এখন পর্যন্ত আমাদের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি ধনাত্মক ধারায় প্রবহমান। জানুয়ারি ২০২৩-এ রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, যা রিজার্ভের পরিমাণ বৃদ্ধি করছে।

এখানে উল্লেখ্য, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে আমাদের রিজার্ভ সংকটের অভিঘাতে নিপতিত হতে হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্জিত সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব অটোয়া, কানাডার সিনিয়র ফেলো সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান ‘ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ অ্যান্ড মিডল ইনকাম কান্ট্রিজ’ শীর্ষক এক গবেষণায় টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশের সামনে কয়েক ধরনের চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেছেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম-অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানো, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও অভিযোজন ইত্যাদি। এ চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেকটাসে’ বর্ণিত চ্যালেঞ্জের মিল দেখা যায়। বিশ্বব্যাংকের প্রক্ষেপণ অথবা গবেষণাপত্রে বর্ণিত চ্যালেঞ্জগুলো সর্বাংশে বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এমন নয়।

তবে আসন্ন মন্দা আমাদের অর্থনীতিকে ধাক্কা দেবে সেটা অনুমেয় এবং এটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, ২০৩০-এর মধ্যে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশে পরিণত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। উল্লিখিত প্রতিবেদন ও গবেষণাপত্রে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য কিছু সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে। এসব সুপারিশের মধ্যে অন্যতম হলো-বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা, উৎপাদন বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং কূটনীতির মধ্যে সমন্বয়সাধন, বেসরকারি খাতের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, ঋণ সহায়তার পরিবর্তে অংশীদারত্ব এবং উন্নয়ন বিনিময়। ব্যবসায়ী সমাজ এবং অর্থনীতিবিদরাও নানারকম পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করছেন। ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে এ সংকট মোকাবিলায় বেসরকারি বিনিয়োগ ও অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্ব প্রদানের জন্য সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতির এ সংকটকালে সরকারের পক্ষ থেকে নানারূপ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ ও অংশীদারত্বের বিষয়টি উঠে এসেছে। অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একথা অনস্বীকার্য, সরকারের একক বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টার মাধ্যমে চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা একটি অসম্ভব চিন্তা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব এবং বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ নানাবিধ অর্থনৈতিক সূচকে দেশকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রিজার্ভের ওপর একটি বড় চাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করে মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আইএমএফ থেকে ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে। এফডিআই বৃদ্ধি করেও ডলার প্রবাহ বাড়ানো যায়। এফডিআই বাড়ানোর ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। বড় বড় বিনিয়োগ প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ দ্রুত রিজার্ভ বৃদ্ধির সহায়ক। পিপিপি পাইপলাইনে বেশকিছু প্রকল্প চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে নিয়ে আসা গেলে দেশে ডলার প্রবাহ বাড়বে। কিছু প্রকল্প থমকে আছে, যা বেগবান করা গেলে দ্রুতই বাস্তবায়ন সম্ভব। ভৌত অবকাঠামোসহ বেশকিছু বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতায় ধনাত্মক প্রকল্প রয়েছে, যেগুলো পিপিপিতে বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের বাজেট কিংবা উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ সহায়তার বাইরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, দেশের জন্য মঙ্গলজনক।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের দ্বিতীয় বোর্ড সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক প্রকল্পগুলো পিপিপিতে বাস্তবায়নের জন্য অনুশাসন দিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে সেভাবে আশানুরূপ প্রকল্প পিপিপি পাইপলাইনে যুক্ত হয়নি। বিটিএমসি থেকে কেবল দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পর্যটন খাতে পিপিপির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা গেলে খাতটি অর্থনীতিতে ভালো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হতো। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ লোকসানের ঘানি টানছে। এগুলোর একটা অংশ পিপিপিতে পুনঃচালু করা গেলে উৎপাদন, কর্মসংস্থান, এমনকি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক হতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ইউনিটের বেশকিছু অব্যবহৃত জমি পড়ে আছে। এসব জমি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পিপিপির আওতায় শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার জন্য দেওয়া যেতে পারে। আমাদের দেশে ব্যবহৃত কৃষি যন্ত্রপাতির বড় অংশ আমদানি করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন কোনো সংস্থার অব্যবহৃত জমিতে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির শিল্প গড়ে তোলা গেলে তা দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অব্যবহৃত জমিতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে পিপিপির আওতায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এভাবে অন্যান্য সংস্থার লোকসানি প্রতিষ্ঠান ও অব্যবহৃত জমি ব্যবহারের আওতায় নিয়ে আসা যায়। এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাস্তবায়ন করা যায়। সংকটের শুরুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতি ইঞ্চি জায়গা ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় সরকারি-বেসরকারি খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আছে, যা আমাদের দেশে বিনিয়োগ হতে পারে। আমাদের বৈদেশিক মিশন এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থাগুলো এগুলো এক্সপ্লোর করতে পারে। দেশে দ্রুত বিনিয়োগ নিয়ে আসার জন্য পিপিপিতে নীতিমালা ও বিধি রয়েছে, এ দুটি ব্যবহার করে অল্প সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। এগুলো হলো ১. '‌Policy for Implementing PPP Projects through Government to Government (G2G) Partnership, 2017(Amended)', ২. জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প বিধিমালা, ২০১৮। এ দুটির আওতায় সরাসরি দেশি-বিদেশি অংশীদার নির্বাচন করা যায় বিধায় অংশীদারি চুক্তি কম সময়ে সম্পাদন করা সম্ভব। বর্তমান সময়ে এ দুটির ব্যবহার করা যেতে পারে।

অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও উৎপাদন, রপ্তানি এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য এ সময়ে পিপিপি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, ২০৩০-এর মধ্যে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশে পরিণত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নে পিপিপিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

মো. ফারুক আহমেদ : অতিরিক্ত সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

অর্থনৈতিক সংকট

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম