চেতনায় বুদ্বুদ
দেনমোহরে টাকার বদলে বই!

বদিউর রহমান
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বই কাকে বলে? যে কোনো ভাষার অক্ষরে কিছু লেখা হলেই কি তা বই হয়ে যাবে? ভাব প্রকাশ করতে পারার মাধ্যমে আমরা কতকিছু বলতে চাই, তার কি ইয়ত্তা আছে? আমাদের এ প্রকাশগুলোই অর্থবহ হতে পারলে ওগুলোর সমাহারে বই হয়-এটা আমাদের সাধারণ ধারণা। কিন্তু অর্থবহেরও অনেক অর্থ রয়েছে। মনের মধ্যে কিছুটা আনন্দ দিলেও এটা কিছুটা অর্থবহ, কষ্ট দিলেও তাও না হয় অর্থবহের পর্যায়ে পড়ে; কিন্তু সাময়িক একটু সুড়সুড়ি দিয়ে পরে আর যার কোনো আবেদন থাকবে না, কোনো স্থায়িত্ব থাকবে না তেমন লেখা-সমাহারকে কি বই বলা চলে? আমাদের অনেক কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, প্রবন্ধকার, ছড়াকার, রম্য লেখক-কত যে লিখে ফেলেন তার হিসাব কে রাখে? কিন্তু সময়ের পরীক্ষায়, বিষয়বস্তুর আবেদনে, মানুষের হৃদয়গ্রাহী হওয়ার আবেদনে কয়টি টিকে থাকে? অতএব সাপ, ব্যাঙ, কচু-একটা কিছু দিয়ে কিছু পৃষ্ঠা ভরে ফেললেই তা বই হয় না, তাকে বই বলা যায় না। বই হতে হলে আমি বুঝি, যা একবার পড়ার পর আবার পড়তে মন চায়, যা পড়তে শুরু করলে পড়ে যেতেই ইচ্ছা হয়, যা পড়ার সময় যেমন নিজে তার ভেতর ডুবে যাওয়া যায়, তেমনই পড়া শেষেও যেন তার আবেশ থেকেই যায়, এখানে বছরের কোনো সীমারেখা থাকে না, এর আবেদন কালোত্তীর্ণ-তবে তা হবে বই। ফলে কেউ দিস্তায়-দিস্তায় লিখেও, ডজনে ডজনে বই লিখেও হয়তো একটাও বই দিতে সক্ষম হলো না, আবার বিপরীতে কেউ হয়তো একটা মত্র বই লিখেও কবি, লেখক, সাহিত্যিক হয়ে গেলেন। প্রথমজনের ক্ষেত্রে সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু বই হয়নি; দ্বিতীয়জনেরটি বই হয়েছে, সংখ্যা না বাড়ার মাঝেও তিনি অসংখ্য হয়ে গেলেন। এতদ্বিষয়ে এক সাংবাদিক আমাকে একবার শওকত ওসমানের একটা গল্প শুনিয়েছিলেন। ওই সাংবাদিকের ভাষ্যমতে, শওকত ওসমানকে এক সাংবাদিক না কে যেন প্রশ্ন করেছিলেন, ওমুক (এখানে সংগত কারণেই নাম উল্লেখ করলাম না) তো বছরে এত এত বই লেখেন, তার বইয়ের জন্য তো অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে, আপনি তো অনেক সময়ে বছরেও একটাও লিখতে পারেন না, কিন্তু লোকে বলে আপনি নাকি বড় সাহিত্যিক, এর কারণটা কী? শওকত ওসমান নাকি সহজভাবে জবাব দিয়ে ছিলেন-একটা প্রাণী বছরে একসঙ্গে ৭-৮টা বাচ্চাও দেয়, প্রতিবছরেই দেয়, কিন্তু মানুষ কবছরে একটা দেয়? ও প্রাণীগুলোর কয়টা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে?
আমি ছাত্রাবস্থা থেকে বাচ্চাদের ছোট অনুষ্ঠানে, সুন্নাতে খতনায়, নাক ফোঁড়ানো, কান ফোঁড়ানোতে, আকিকায়, বড়দের বিয়েতে উপহার হিসাবে অ্যালবাম এবং বই দিতাম। অ্যালবাম এখনো আমার প্রিয়। জীবনে প্রথম দক্ষিণ কোরিয়া গিয়েই বড়-সুন্দর অ্যালবাম কিনেছিলাম। এতে জীবনটা স্তরে স্তরে ধরে রাখা যায়। জীবনের বিবর্তনের ছবি এতে ঠাঁই পায়, অবসরে কিংবা বিষাদগ্রস্ত অবস্থায় এটা আবার জীবন দেয়। মনে খোরাক জোগায়-আমি কখনো এমন ছিলাম, আবার কখনো এমন হয়েছি। অ্যালবাম জীবনের একটা জীবন্ত প্রতীক। আর বই-সে তো আলাদা একটা জগৎ সৃষ্টি করে। বইয়ের সমাহারে সৃষ্ট লাইব্রেরিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেয়ে আর সুন্দর করে কে বলতে পেরেছেন-মহাসমুদ্রের শতবর্ষের গর্জনকে কেউ যদি...। বিয়ের অনুষ্ঠানে আমার বই উপহার দেওয়াকে বন্ধু-সঙ্গীদের কেউ কেউ আমার আর্থিক অসচ্ছলতার প্রতি ইঙ্গিত করত। হতে পারে, সোনা-রুপার চেয়ে তাদের বিবেচনায় বইয়ের দাম কম। পরে আমি অনেক বছর বিয়েশাদিতে কোনো উপহারই দিইনি। আমাদের সমাজব্যবস্থাটাই হয়তো এমন হয়েছে যে, আমি কার কার সন্তানের বিয়েতে কী কী দিয়েছিলাম, এখন আমার সন্তানের বিয়েতে তারা কে কী দিলেন-তা যেন উপহার-প্রাপ্তির তালিকা দেখে মিলিয়ে দেখতেই হবে। গরিবজনরা না হয় তার খরচ পোষাতে এমন ভাবতে পারে, কিন্তু সামর্থ্যবানরাও কেন যে দাওয়াত দিয়ে ভাতের পয়সা ওঠানোর জন্য উপহার-টেবিল বসায় আমার মাথায় ধরে না। আমি বলি এদের অর্থবিত্ত হয়েছে, সমাজে তথাকথিত জাতে উঠেছে, গাড়ি-বাড়ি সব হয়েছে, কিন্তু মন তাদের ছোটই রয়ে গেছে, এদের খাই খাই আর পাই-পাই ভাব কখনো যাবে না। এখন আমিও বুদ্ধিমান হয়েছি, নগদ টাকা দিয়ে দিই, ভালো করছি না? এক বন্ধুকে দেখেছি, সে তার সন্তানের বিয়েতে প্রাপ্ত ক্রোকারিজ, শাড়ি, ঘড়ি-এসব নতুন রঙিন মোড়কে অন্যের অনুষ্ঠানে চালিয়ে দিচ্ছে। বুদ্ধি থাকলে...। আজ মনে পড়ে, অনেক বছর আগে, আমার প্রিয় ছাত্র অধ্যাপক ডা. আবু হানিফের (বর্তমানে পরিচালক, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট) বিয়েতে আমি নিজে নিউমার্কেট থেকে কবি শামসুর রাহমান এবং আরও দুজন কবির কবিতার বই উপহার দিয়েছিলাম। বিয়ের কয়েকদিন পর এ ছাত্রটাই বই দেওয়ার জন্য আমাকে ধন্যবাদ দিলেন। জীবনে বই উপহার দেওয়ার জন্য আর কারও কাছ থেকে একবারও ধন্যবাদ পাইনি। বড় বোনের বিয়েতে (১৯৬০) প্রাপ্ত উপহারের আকবর হোসেনের অবাঞ্ছিত, কী পাইনি, ঢেউ জাগে উপন্যাস আমার তখন বেশ ভালো লেগেছিল।
বই লেখা যেমন কষ্ট, বই পড়া তারচেয়ে বেশি কষ্ট। বই লিখতে গেলে নিজেকে হয়তো প্রকাশ করা যায়, কিন্তু বই পড়তে গেলে অন্যের লেখাটা বুঝে নিতে বোধকরি বেশি কষ্ট হয়। লেখকের, কবির মনটাতে কী সোনাদানা ছিল তখন, তিনি কীভাবে তা আমাদের জন্য সাজালেন, তার হয়ে তার মনকে বুঝতে পারা কি অত সহজ? তাই আমি বলি, নিজে লেখার চেয়ে অন্যেরটা পড়া সত্যিই বড় কষ্ট। পড়া মানে তো আর রিডিং নয়, পড়া মানে তো বোঝা, উপলব্ধি করা, ভেতরে প্রবেশ, লেখার রসটা, লেখার সারটা নিংড়িয়ে বের করা, নিজের মতো করে আস্বাদন করা। তবেই তো বই পড়া হলো, নাকি? আমার পত্রিকার কলাম এবং বই-কেউ কেউ পড়েছেন, পড়েনও; কেউ কেউ প্রশংসাও করেন। কিন্তু তেলমারা কিছু পাঠক অযথা তোষামোদি করেন, আবার ধরাও পড়ে যান। কী দরকার ছিল এর? একজন টেলিফোন করলেন, আপনার এ লেখাটা খুব চমৎকার হয়েছে, ভালো লেগেছে। জিজ্ঞেস করলাম, কোন অংশটা বা কোন বাক্যটা? উত্তর-সবটাই তো চমৎকার। আবার বিজ্ঞাসা-একটু অন্তত বলুন না। বলতে পারেন না। কী প্রয়োজন ছিল না পড়ে এভাবে তেল মারার? আমি বলি, অন্তত এক অনুচ্ছেদ পড়ে না হয় সেটুকু বললেও তো হয়! আসলে আমিই খারাপ-পাঠককে কেউ এভাবে জিজ্ঞেস করে? তবে আমার ভালো লেগেছে-এক কাজে গিয়ে ব্যাংকের এক কর্তাবাবুকে আমার দুটো বই দিয়ে বললাম, সময় পেলে পড়ে দেখবেন। উত্তর-আপনি দিয়ে গেলেন রেখে দেব, কিন্তু পড়ব না, আমার বই পড়তে ভালো লাগে না। সত্যি বলার জন্য তাকে সালাম। বিনামূল্যে বই দিয়ে দেখেছি-কদর থাকে না। এবার আত্মজীবনী ‘ডোমুরুয়া থেকে সচিবালয়’ সৌজন্য খুবই কম দিয়েছি। কিনে কেউ না পড়ে যদি টয়লেট-টিসু করে, তা-ই করুক। ভালো করেছি না, কী বলেন?
কিন্তু বই নিয়ে এবারের দুটো খবর আমাকে অবাক করেছে। একটা অনেকটা ‘শিক্ষাদান দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত’ অনুসরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য বই কেনার তালিকা নিয়ে। ভালো, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বই পড়াতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য এ প্রচেষ্টা। হাতের কাছে পেয়ে গেলে কেউ না কেউ হয়তো একটা বই পড়ে ফেলতে পারেন-এমনটা ভাবা অমূলক হবে না বোধ করি। আমলারা এমনিতেই পড়ে কম, লিখে আরও কম। আমি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব থাকতে অনুজপ্রতিমদের পড়ায় আগ্রহী করার জন্য বলেছিলাম, অফিসের নথি ছাড়া সপ্তাহে মাত্র ৪ দিন, দৈনিক মাত্র আধা ঘণ্টা করে সংবাদপত্র ছাড়া অন্য যে কোনো বই এক বছর পড়ে দেখুন না কত পড়া হয়ে যাবে। ৪xঘণ্টাx৫২ = ১০৪ ঘণ্টা বছরে! ১০ বছর পড়লে তো অনেক পড়া হবে, তবে ৪ দিনের কোনোদিন ঘণ্টায় কম পড়বেন না। উদ্দেশ্য অভ্যাসটা হয়ে যাবে, তখন মজা পাওয়া যাবে। এক বছর পর কেউই রিপোর্ট করেননি। কোনো কোনো আমলা এখন লেখেন, আসরে এলে অনেকেই এটাতে সময়ও কাটাতে চান, কদিন পর থেমে যান। এক অতিরিক্ত সচিব যে তার ২৯টি বই তালিকাভুক্ত করেছেন-সেগুলোর কয়টা বই হয়েছে? অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম তো কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন। আমাদের আরেক সহকর্মী তো টয়লেটে গেলেও কবিতা লিখে ফেলতেন, নিজে ছাপালে নিষেধ করে কে? আমিও তো সে শ্রেণিরই একজন, অতএব, ওপরে থুতু ফেললে যে নিজের গায়েই পড়ে। এরশাদের আমলে ‘সব শালা কবি হতে চায়...’ কী আলোড়নই না সৃষ্টি করেছিল, মনে পড়ে?
দেনমোহর মুসলমানের জন্য ধর্মীয় বিধান। বিয়ে করতে স্ত্রীকে সামর্থ্য অনুযায়ী দেনমোহর দিতে হয়। পবিত্র কুরআনের সুরা নিসার ৪নং আয়াতে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে-তোমরা নারীদেরকে তাদের মোহর স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে প্রদান করবে; সন্তুষ্টচিত্তে তারা মোহরের কিয়দংশ ছেড়ে দিলে তোমরা তা স্বচ্ছন্দে ভোগ করবে। জীবনের পরিপূর্ণ বিধান হিসাবে পবিত্র কুরআনে প্রাত্যহিক, জাগতিক, পারলৌকিক-কোন বিষয়ের ফয়সালা করে দেওয়া হয়নি? অথচ এ দেনমোহর নিয়ে আমরা বিয়েতে বড় ঝামেলায় পড়ে যাই অনেক সময়। বিয়েতে আমাদের সমাজে তিনটা বিষয় অন্তত আগেভাগে স্থির করা না হলে সমস্যা হয়। এক. দেনমোহর, দুই. অতিথি আপ্যায়ন, তিন. গেটমানি। আমার এক বন্ধুর বিয়েতে দেনমোহরের এক অবাক কাণ্ড দেখেছিলাম। পাত্রীর বাপ মৃত, বড় ভাই অভিভাবক, তিনি বলে দিলেন দেনমোহর হবে পাঁচ হাজার টাকা, সত্তরের দশক। বন্ধু বললেন, অসম্ভব, পঞ্চাশ হাজারের কম হতে পারবে না। পাত্রীর ভাইয়ের এককথা, পাঁচ হাজারে রাজি না হলে বিয়ে হবে না, বোনের কপালে থাকলে পরে হবে, কপাল খারাপ হলে ৫০ লাখ করলেও তার জীবন সুখী হবে না। আমরা বাধ্য হলাম। পরে বন্ধুটির জীবনে গাড়ি-বাড়ি সব হলো, তার বাচ্চা অসুস্থ হলে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের ১নং ভিআইপি রুমে থাকত, আমাদের সাধারণ নাশতাও তাদের আর রুচিতে যেত না। পরের ইতিহাস অবশ্য ভিন্ন। আমার এক জেঠাতো ভাইকে বর সাজানো অবস্থায় পাত্রীর বাড়ি থেকে ফেরত আসতে হলো-এক তর্কাতর্কিতে। যে চাচাতো বোন তাকে সাজিয়ে দিয়েছিল বরসাজে, সেই সাজে বাড়ি এসে তাকেই কনে করে বিয়ে হলো। আমার বড় বোনের তো বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রিই হয়নি, সেই ১৯৬০। আর আমার বিয়ের সময় তো (১৯৭৬) দশ হাজার টাকা বাড়ানোর জন্য তখনকার হবু শাশুড়ির অনড় মনোভাবে বলেই ফেলেছিলাম, চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার জোর করে করাবেন, বিয়ের পরদিন মেয়েটাকে তালাক দিয়ে দিলে টাকাটা উদ্ধার করবেন কীভাবে? হবু শ্বশুর ভদ্রলোক ছিলেন, দৌড়ে এসে হাত ধরে বললেন, আপনি ৫ টাকা বললে তাই দেনমোহর হবে, আমি আপনার আব্বার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার ওয়াদা করেছি।
দেনমোহর নিয়ে আরও কত কত ঘটনা। আমাদের এক বড় চাকুরের মেয়ের বিয়ে, কাবিন চাওয়া হলো এক কোটি টাকা, ছেলের বাবা এক নামকরা প্রতিষ্ঠানের ইনস্পেকটর। আমার সঙ্গে কথাবার্তায় অনুষ্ঠানে, রাজউকের এক স্বনামধন্য চেয়ারম্যানও ছিলেন। ছেলের বাবা বললেন, স্যার, কাবিন হবে পাঁচ লাখ, বাকি টাকা আমরা মেয়েকে নগদ দিয়ে দেব, এক কোটি লিখিত রাখতে আমার অসুবিধে আছে, বুঝেনই তো স্যার।
কিন্তু এবার কী শুনলাম? বিয়েতে দেনমোহর হলো পাত্রীর পছন্দের ১০১টা বই। অদ্ভুত খবর নয়? বাঙালি মেয়েরা শাড়ি আর গয়নায় আসক্ত থাকবে না, এটা কেমন কথা! বগুড়ার দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজির শিক্ষক সান্ত্বনা খাতুন এ কী ইতিহাস সৃষ্টি করলেন? ইসলামের ইতিহাস বা আরবির শিক্ষক হলে না হয় আমরা অবাক হতাম না। খোদ ইংরেজি শিক্ষক হয়ে সান্ত্বনা বই নিয়ে দেনমোহরে এ কী সান্ত্বনা পেলেন? দেশ স্বাধীনের পর শুধু বেলি ফুলের মালা পরে বিয়ের এক চমক আমরা পেয়েছিলাম। এবার কবি নিখিল নওশাদকে বইয়ের দেনমোহরে বিয়ে করে সান্ত্বনা তো অমর ইতিহাস গড়লেন। তবে বাছাই করা বইগুলোতে কি আমাদের ওই অতিরিক্ত সচিবের কোনো বই আছে? থাকলে হয়তো ধন্য হতাম। বইকে যে উঁচু মর্যাদায় সান্ত্বনা নিয়ে গেলেন, তজ্জন্য তাকে সালাম। হ্যাঁ, বই অনেককেই অমর করে দেয়। সান্ত্বনা বইকে সম্মান করেই অমর হলেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর পাশাপাশি প্রথম আলোতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও ড. আকবর আলি খানের মৃত্যু সংবাদ ছবিসহ ছাপা হলো। একজনের রাজত্বের বয়সই অপরজনের মোট বয়সের কাছাকাছি। আমার তো মনে হয় বইয়ের জন্য ২য় জন বেশি অমর হবেন।
বদিউর রহমান : সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান