Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

রাজনীতি ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ

Icon

অমিত রায় চৌধুরী

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনীতি ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ

জনপরিসরে কান পাতলেই শোনা যায় সরকার বা ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিরক্তির সুর। এটা কি সমাজমনের স্বাভাবিক প্রবণতা, নাকি ভূমিবাস্তবতা-বলতে পারি না। কোথাও অসহনীয় দ্রব্যমূল্য, কখনো লাগামহীন দুর্নীতি, অপচয় বা অব্যবস্থা, কখনো বণ্টনে অসমতা আবার কখনো সুশাসনে ঘাটতি। বিষয়বস্তুর অভাব নেই, সাফল্য বা অর্জনের কথা মানুষ কম বলে। কেন তা হয়, তাও বিশ্লেষণসাপেক্ষ। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার জোশই আলাদা, এর শক্তিও হয়তো সবসময়ই বেশি।

তবে এখানে একটা মজা আছে-ক্ষমতার বিরুদ্ধে জনমত আছে নিশ্চয়ই, যা বুঝতে কষ্ট হয় না। কারণ যারা ক্ষমতা থেকে দূরে, তারা সুবিধা-বলয়ে থাকে না। বঞ্চনার কষ্টও আছে। ভোগের অতীত আছে বলে লোভের যাতনা বেশি। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, বিরোধীদের ওপরও জনগণের ভরসা ভঙ্গুর, তাদের ঘিরেও বিরক্তি আর হতাশার কমতি নেই। তাই বিকল্প হিসাবে বর্তমানকেই মানুষ এখনো পছন্দ করে।

বিশ্লেষণটা খুবই নির্মম বা কারও কাছে নির্মোহও মনে হতে পারে। তবে বিষয়টিকে একটু ভেবে দেখা যেতে পারে। প্রথমত, সরকারপক্ষের বড় সুবিধা-তার একটা বড় রাজনৈতিক সংগঠন আছে; যার লড়াই করার ঐতিহ্য আছে। জনসম্পৃক্ততা আছে। দেশ সৃষ্টি, ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা, এগারো দফা-সব পর্বেই দলটির লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা ও সাফল্য আছে। দলের সাংগঠনিক শিকড় এখনো অনেক গভীরে।

তবে নতুন প্রজন্ম, তরুণ জনগোষ্ঠীর আকার এখন অনেক বড়। সে জমিতে ভিত মজবুত করতে গেলে তাদের মনের গড়নটাও বুঝতে হবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ-এসব বিষয়ে তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। জাতির মহান নেতা, বিপ্লবী, বিজ্ঞানী, কবি-সাহিত্যিকদেরও চেনাতে হবে। তা না হলে দেশপ্রেমের আবেগ জাগ্রত হয় না। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের আদর্শিক পুঁজি তো তা-ই। কিন্তু সরকারি দলের নেতাকর্মীর বৃহদাংশে সে তাগিদ আছে বলে মনে হয় না। ভূ-রাজনীতি, অর্থনীতি বা প্রযুক্তি নিয়েও নেতাকর্মীদের বড় একটা আগ্রহ দেখা যায় না। কর্তৃত্ব আর বিত্তই যেন অভীষ্ট।

অন্যদিকে বিরোধী রাজনীতির মূলস্রোতকেও দিশাহীন মনে হয়। মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা ও আদর্শের প্রশ্নে তারা নিজেরাই দ্বিধাগ্রস্ত। ভোগ, কর্তৃত্ব ও সুবিধার রাজ্যে তাদের সুখস্মৃতি এখনো ম্লান হয়নি। অতীতের ভুলের ব্যাপারেও তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। বিশেষ করে বিরোধী কণ্ঠ বলপ্রয়োগে নিশ্চিহ্ন করার কৌশল যে বড্ড আদিম ও বর্বর ছিল, তা উপলব্ধি করতে অনেক দেরি হয়েছে।

মসনদ দখল ছাড়া হাতেও এখন কোনো ইস্যু নেই। শুধুই ক্ষমতা থাকবে, আদর্শের কোনো জায়গাই থাকবে না-এমন নীতি তারুণ্যকে কাছে টানতে পারে না। মনে রাখতে হবে, ডিজিটাল ডিভাইসে নতুন প্রজন্মের বিচরণ জৈবিকভাবেই স্বচ্ছন্দ। তাই জ্ঞানের অসীম ভবন তাদের জন্য উন্মুক্ত। কমিটমেন্টের অভাবে সরকারি দল প্রযুক্তির লভ্যাংশ ঘরে তুলতে পারছে না। তবে দেশবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ নেতিবাচক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে।

প্রধান বিরোধী দলের কৌশলগত মিত্র হওয়ায় পরিকল্পিত গুজব, ঘৃণা ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার ছড়িয়ে একদিকে তারা সরকারকে অজনপ্রিয় করছে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের মনোজগৎও অবলীলায় দখল করছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো, সরকারি দলেই ঘাপটি মেরে থাকা এই চক্র পরিকল্পিত ছকে নানারকম বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যারা আসছেন, তাদের অনেকের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি এ সংশয়কেই আরও ঘনীভূত করছে।

প্রখ্যাত এক গণহত্যা বিশেষজ্ঞ তার গবেষণায় দেখিয়েছেন-কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের কট্টর বিরোধীরা পরিকল্পিতভাবে আত্মীয়তাকে পুঁজি করে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল, যা এখনো হয়তো অব্যাহত আছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির থিংক ট্যাংকের আকার ও গভীরতাও আজ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার পরিসরও এখন সংকুচিত। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা কখনো সুবিধার সঙ্গে আপস বা দুর্নীতির কাছে অবনত কিংবা ভোগবিলাসে মত্ত থেকেছেন। দেখা গেছে, সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এমন ব্যক্তি বসে আছেন, যিনি এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তার বিশ্বাস পাকাপোক্ত করতে পারেননি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার পর থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পাকিস্তানপন্থি আমলা-শিক্ষকরা বঙ্গবন্ধুর ঔদার্যের সুযোগ নিয়েছিলেন। তারাও স্বপদে বহাল হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরই তারা স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করেন।

এখনো তাদের উচ্ছিষ্ট বা আদর্শের উত্তরাধিকার যারা যেখানে আছেন, নিজেদের এজেন্ডাই তারা বাস্তবায়ন করে চলেছেন। সরকারি দলের অনেক ভালো কাজ আছে। সেগুলোকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। দল বা অঙ্গ সংগঠনের তরফ থেকেও তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। অঙ্গীকারের এমন তীব্র আকাল ৭০-পূর্ববর্তী সময়ে রীতিমতো অবিশ্বাস্য ছিল। ছাত্র-যুবকদের সংগঠনগুলোই সব আন্দোলন-সংগ্রামে চালকের আসনে ছিল। দলে বা জোটে এখনো এমন মানুষ আছেন, যারা আদর্শগতভাবে উজ্জ্বল ও মেধাবী; তাদের কাজে লাগানোর সুযোগ এখনো ফুরিয়ে যায়নি।

বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কথাবার্তা ফাঁস বা সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম অপপ্রচার, উসকানি বা অশ্লীলতার স্রোত ভেসে যায় সোশ্যাল মিডিয়ার চিহ্নিত পকেট থেকে। কিন্তু এই দুরভিসন্ধিমূলক অপপ্রচারকে রুখে দিতে রাষ্ট্রকে প্রোঅ্যাকটিভ মনে হয়নি। বরং রাষ্ট্রকে নাজেহাল করতে বিভিন্ন লবি বিদেশে কাজ করছে-এমন অভিযোগ উঠছে জোরেশোরে। তারা সফলও হচ্ছে। অথচ সহজে এড়ানো যায় এমন কিছু ভিন্নমত বা কুৎসার বিষয়ে সরকার অপ্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যার উদ্দেশ্য যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ।

কারণ এই অতিসংবেদনশীলতাকেই অসহিষ্ণুতা বলে সহজেই চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এসব ইস্যুকেই যদি মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় মুক্ত ক্যানভাসে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়, তাতে কী ক্ষতি হয় বোঝা যায় না। বরং মূলধারায় সমালোচনা চললে তা প্রকারান্তরে গুজব ছড়ানো বা অনুমাননির্ভর জল্পনার অবসান ঘটায়। পক্ষান্তরে এসব লুকোছাপার মাঝেই শুধু ব্যক্তি কুৎসা নয়, রাষ্ট্রের অনেক গোপনীয় ও স্পর্শকাতর বিষয়ও প্রচারের আলোয় এসে যায়; যে বিষয়ে সরকার প্রকাশ্য অবস্থান নিতে পারে না। সে কারণেই উচিত মূলধারার গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত রাখা।

সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রয়োগ করে কয়টি রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে দমন করা সম্ভব হয়েছে? কিছু সংবাদকর্মী ও নিরীহ সংখ্যালঘুকে হয়রানি করা ছাড়া এ আইন প্রয়োগে কী সাফল্য এসেছে তা জানা যায় না। বরং মনে হয়-মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যম চাপমুক্ত থাকলে সরকার বা জনস্বার্থে সুবিধাই হয় বেশি। কারণ ঘৃণা ও ষড়যন্ত্রের জাল যারা বোনে, আলো-আঁধারের খেলায় তাদের শক্তিই বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের বিরুদ্ধে সরকারকে ততটা সফল কখনোই মনে হয়নি, যতটা পুলিশ মাঠে সফল হয়েছে।

এখানেও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সদিচ্ছা প্রশ্নের মুখে পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খুনি, জেলহত্যার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বা গণহত্যায় দণ্ডিত ফেরারিদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারেও তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়নি। এমনকি আইনানুগ ধাপগুলোকেও যথাযথভাবে অনুসরণ করা যায়নি। এসব জায়গায় দলের পক্ষে, আদর্শের পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়ার মতো দক্ষ ও যোগ্য মানুষ এখনো আছে। তাদের যথার্থ জায়গায় নেওয়ার বিষয়টি ভাবতে হবে। মুক্তিযুদ্ধোত্তর পর্বে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল তবিয়তে বসে থেকে পাকিস্তানপন্থি আমলারা যেভাবে প্রকৃত পরিস্থিতিকে আড়াল করতে পেরেছিল, ঠিক তেমনি এখনকার সময়টাকেও বেশ অচেনা মনে হচ্ছে।

জঙ্গিবিরোধী অভিযান বর্তমান সরকারের আমলে যথেষ্ট সফল হয়েছে, যা দেশ-বিদেশেও প্রশংসিত। কিন্তু দেশের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমে গলদ আছে কিনা ভাবতে হবে। এদের জেলহাজতে ‘ডি-র‌্যাডিক্যালাইজ’ করা বা নতুন করে তরুণরা যেন এ পথে উদ্বুদ্ধ না হয়, সে লক্ষ্যে তাদের সামনে কার্যকর ‘কাউন্টার ন্যারেটিভ’ হাজির করা জরুরি ছিল। সে প্রক্রিয়াটিও ভালোভাবে হয়নি। বরং দেখা গেছে, অপরাধীরা জেলহাজতে বসেই অন্যদের এই আদর্শে দীক্ষিত করছে। শুধু তাই নয়, জামিনে বাইরে এসে নতুন করে অপরাধ সংঘটিত করছে।

অস্বীকার করার উপায় নেই, সরকারের সাফল্যের খাতাও যথেষ্ট সমৃদ্ধ। অর্থনীতির আকার এখন ক্রমবর্ধমান। প্রযুক্তির নীরব বিপ্লব ছাপ ফেলেছে ভূমি ব্যবস্থাপনা, টেন্ডার, নিবন্ধন, পাসপোর্ট, টাকা লেনদেন, শিক্ষা-কৃষি-স্বাস্থ্যসেবা সর্বত্রই। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টনেও যুগান্তকারী অর্জন।

যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন বিস্ময়কর। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। কোভিড দুর্যোগে ভ্যাকসিন ও আর্থিক স্থিতি মানুষকে সাহস জুগিয়েছে। শিক্ষায় সংখ্যা, পরিধি ও বৈচিত্র্য বেড়েছে। একইসঙ্গে দুর্নীতি, টাকা পাচার ও অনিয়ন্ত্রিত বাজার সরকারের অনেক অর্জনকে ম্লান করেছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নেতৃত্বের সমন্বয়হীনতা জনগণের কাছে ভুল বার্তা দিয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অকল্পনীয় সহিংসতা জনমনে ভালো সংকেত দেয়নি। সরকারি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাও প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ও নির্বাচনি সংঘর্ষের তীব্রতা আবারও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রতীক বরাদ্দের তর্কটিকে সামনে নিয়ে এসেছে।

সবশেষে বলা যায়, দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো ও সংস্কৃতি যেন মজবুতভাবে গড়ে ওঠে, সেজন্য সবাইকে আন্তরিক ও একমত হতে হবে। শুধু ক্ষমতাই যদি গন্তব্য হয়, মসনদ দখল বা আঁকড়ে থাকাই যদি রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য হয়-তাহলে জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত হবে।

নির্বাচনব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য করার চেষ্টা চলছে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে-এটা অবশ্যই ইতিবাচক উদ্যোগ। তবে এর মানে এই নয় যে, একদিনে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গেলেই গণতন্ত্র জয়ী হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই আমাদের শক্তি। জনগণের সুষম বিকাশ, উন্নয়ন ও প্রকৃত ক্ষমতায়নই গণতন্ত্রের দর্শন। জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-শ্রেণি নির্বিশেষে সবার নির্বিঘ্ন মতপ্রকাশের অধিকারকে শ্রদ্ধা করতে হবে। নির্বাচনে টাকা ও পেশিকে নিষ্ক্রিয় করা গেলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে।

ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘু ও নারী ভোটারদের নিরাপত্তা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পূর্বশর্ত। নির্বাচনে বিজয়ী যেন সবটাই দখল না করে বা বিজিত যাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে না যায়-রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে তা নিশ্চিত করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। ক্ষমতাসীনরা ভুল করলে বা প্রত্যাশা পূরণে কিছু ব্যত্যয় ঘটলেই অপেক্ষমাণ দল ভেবে বসে সে জিতে গেছে। তাদের দেহের ভাষাও পালটে যায়। এটা ভালো লক্ষণ নয়। শুধু কৌশল নয়, জনস্বার্থই যে রাজনীতির প্রধান এজেন্ডা, তা ভুললে চলবে না।

রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সহনশীলতা ও পারস্পরিক সহযোগিতার চর্চাকেও ফেরানো প্রয়োজন। জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্যও দরকার। বিদেশনীতি, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বা আঞ্চলিক শান্তি-সব ইস্যুতেই তা প্রয়োজন। রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর, নীতিগত বিষয়ে মন্তব্যের বেলায়ও দায়িত্বশীলতা ও পরিণতমনস্কতা দরকার। বিশ্বের অভিজাত ক্লাবে প্রবেশের অপেক্ষায় উন্মুখ এ রাষ্ট্রের কল্যাণ, শান্তি ও সুশাসনই সবার অভীষ্ট-সব দল, সব সরকার, সব সময়ের জন্য।

অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

archowdhury562@gmail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম