সিনহা হত্যা মামলার রায় দ্রুত কার্যকর হওয়া দরকার
একেএম শামসুদ্দিন
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ড মামলার রায়ের সংবাদটি শোনার পরপরই ‘জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড; জাস্টিস ডিলেড ইজ জাস্টিস ডিনাইড’ এই প্রবাদটির কথা মনে পড়ে গেল। মামলা দায়েরের দেড় বছরের মাথায় রায় হয়ে যাওয়ার পর ভাবছিলাম তাড়াহুড়া হয়ে গেল না তো? বাংলাদেশে অন্যান্য হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া (বিচারিক আদালত পর্যন্ত) শেষ হতে যে সময়ক্ষেপণ হয় সে তুলনায় কিছুটা দ্রুত হয়েছে বলে মনে হয়েছে। আমাদের মতো বাঙালিদের ওই একটিই বদ স্বভাব! সব বিষয় নিয়েই কোনো না কোনো খুঁত ধরা। আবার এ মামলার রায় কার্যকর হতে যদি দেরি হয় তাহলেও হয়তো আমরা সমালোচনামুখর হয়ে পড়ব। এর কারণও আছে। আসলে আমাদের দেশে দুর্নীতি, লুটপাট ও মারাত্মক অপরাধ করেও যেভাবে লোকজন পার পেয়ে যায়, তা দেখে মানুষের মনে এক ধরনের আস্থাহীনতার জন্ম নিয়েছে। অতীতে হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যেভাবে রাষ্ট্রপতির বিশেষ মার্জনা পেয়ে দেশ পাড়ি দিয়েছে, তাতে মানুষের সন্দেহ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মেজর সিনহাকে হত্যার আগে এত কুকর্ম করেও বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপকে যেভাবে ‘ছাড়’ দেওয়া হয়েছে, তাতেও এই মামলা নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহের দানা বেঁধেছিল। এসব ক্ষেত্রে অবশ্য ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ সিস্টেম বেশ কার্যকর। মেজর সিনহা হত্যা মামলা চুজ অ্যান্ড পিক সিস্টেমের অন্যতম একটি উদাহরণ। এ কারণেই এই মামলার রায় প্রত্যাশিত সময়েই ঘোষিত হয়েছে বলে অনেকের ধারণা।
মামলার তদন্ত কাজ চলাকালে র্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার মূল আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেছিলেন, ‘যাতে করে কোনো নির্দোষ ব্যক্তি সাজা না পায়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যতম মূল আসামি ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মেজর সিনহাকে ফায়ার করতে কারা কারা উৎসাহ দিয়েছিল, কীভাবে দিয়েছিল। সবকিছু অ্যানালাইসিস করে আমরা (র্যাব) একটা সন্তোষজনক তদন্ত সম্পন্ন করব, তাড়াহুড়া যেন না হয় এবং দেরিও যেন না হয়। এসব বিবেচনা করে কাজ করছি।’ কর্নেল তোফায়েল মামলায় উল্লেখিত অভিযুক্তরা ছাড়াও সিনহা হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত আছেন কিনা সেদিকেই হয়তো ইঙ্গিত করেছিলেন। তবে তিনি তার বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেননি। মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ডকে জাস্টিফাই করার জন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন লিয়াকতকে মিথ্যা গল্প শিখিয়ে দিয়ে যে অপরাধ করেছেন, এ জন্য তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে কিনা তার বক্তব্যে তা স্পষ্ট করেননি!
মেজর সিনহাকে গুলি করার পর লিয়াকত ও এসপি মাসুদের সেলফোনে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড তখন দেশের সব মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল। ওই অডিও রেকর্ডে শোনা গেছে এসপি মাসুদ লিয়াকতকে শিখিয়ে দিচ্ছেন, ‘তোমাকে গুলি করেছে তা তোমার গায়ে লাগেনি। আত্মরক্ষার্থে তুমি যে গুলি করেছ তা তার গায়ে লেগেছে।’ লিয়াকত সিনহাকে গুলি করে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার পর রাত ৯টা ৩৩ মিনিটে এসপি মাসুদকে সেলফোনে কল দিয়েছিলেন। সিনহা তখনও জীবিত ছিলেন এবং মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধ থেকে অধীনস্থদের অন্যায়ভাবে বাঁচানোর যে কোনো প্রচেষ্টাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ক্ষেত্রে এসপি মাসুদ গুরুতর অপরাধ করেছেন। তাকে আসামি করার জন্য মেজর সিনহার বোন শারমিন ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। আদালত অবশ্য এ ব্যাপারে বলেছে, তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে কেউ প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা তদন্ত কর্মকর্তার হাতে আছে। তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি খাইরুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, মেজর সিনহাকে হত্যার পর এসপি মাসুদ প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় কেবল জড়িত-ই ছিলেন না, তিনি জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসাবে অপেশাদারত্ব ও অবহেলামূলক আচরণও করেছেন। তিনি প্রতিবেদন লিখেছেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর পুলিশ সুপারের এহেন আচরণ প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হয় এবং জনমনে তার পক্ষপাতিত্বমূলক ভাবমূর্তি সৃষ্টি করে বলে মনে হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন ও অপরাধীদের শনাক্ত করার বিষয়ে এসপি মাসুদের দায়িত্ব পালনে আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন ছিল বলে তদন্ত কর্মকর্তার মনে হয়েছে। তারপরও তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদকে মামলার আসামি না করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন। পুলিশের বিভাগীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশের মানুষের কী ধারণা তা এখানে উল্লেখ না করাই ভালো। অনেকেই মনে করেন, তদন্ত কর্মকর্তা চাইলেই আসামি হিসাবে মাসুদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারতেন। মাসুদকে মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড মামলায় আসামি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত না করায় ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন রয়েই গেছে। মাসুদের অধীনে থেকে টেকনাফে ২২ মাসের চাকরিতে ১৪৪টি বন্দুকযুদ্ধে প্রদীপ যে ২০৪ জনকে হত্যা করেছে, তাদের সবাই অপরাধী ছিলেন না। তা ছাড়া নারী ধর্ষণ, নির্যাতন ও অর্থ লোপাটসহ প্রদীপের নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য মাসুদের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জনসম্মুখে প্রকাশ না হওয়ায় মানুষের ভেতর বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই মেজর সিনহাকে হত্যার পর আগস্টের ৫ তারিখ সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের দেড় বছরের মধ্যে ৩১ কার্যদিবসে ৬৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে আদালতের কাছে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত ও আসামি প্রদীপের চরম জিঘাংসার বহিঃপ্রকাশ। আদালতের বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক হত্যাকাণ্ড। প্রদীপ ও লিয়াকত মূল পরিকল্পনাকারী এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল পুরো মামলার আসামি, বাদী ও সাক্ষীদের বক্তব্যে উঠে আসা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন এবং প্রদীপ ও লিয়াকতকে ফাঁসির আদেশ দেন। এ ছাড়াও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বাদবাকি সাতজনকে খালাস দেন।
সিনহা হত্যাকাণ্ড মামলার রায় নিয়ে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অপরাধবিজ্ঞানী অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেউ এ রায়কে যুগান্তকারী বলেছেন, আবার অনেকেই বলেছেন, এ ধরনের রায়ই প্রত্যাশিত ছিল। এত দ্রুত বিচারিক আদালতের রায় পাওয়ার বিষয়ে অনেকেই বলেছেন, সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর তার সহকর্মীদের ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়া এবং রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)-এর ব্যানারে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলন করে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পরই কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। সরকার তাৎক্ষণিক এই ক্ষোভ প্রশমিত করার জন্য নজিরবিহীনভাবে সেনাবাহিনী প্রধান ও পুলিশ সার্ভিসের মহাপরিচালককে ঘটনাস্থলে প্রেরণ করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়। অতঃপর মেজর সিনহার বোন শারমিনের করা মামলার তদন্ত শেষে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে প্রদীপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিট জমা দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর কর্মকর্তারা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করলেন, ‘রাওয়া’র তৎকালীন নির্বাচিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং রাওয়া’র গঠনতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে যিনি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন এবং প্রদীপ, লিয়াকত ও এসপি মাসুদকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করার জন্য সামনে থেকে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই সদ্য বরখাস্তকৃত রাওয়া চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর খন্দকার নুরুল আফসারকে মহাখালী ডিওএইচএস পরিষদের সভাপতির পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আদালতের রায়ের পর্যবেক্ষণে বেশকিছু ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে। মানুষ খুন করা, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করা, এমনকি টাকা নিয়েও ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা করা, টর্চার সেল গঠন করে মানুষ নির্যাতন করা ইত্যাদি। কোনো সুন্দরী নারী পছন্দ হলে ইয়াবা পাচারকারী তকমা লাগানোর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করা, এমনকি কিশোরী মেয়েকে দিনের পর দিন আটকে রেখে ভোগ করার মতো এমন কোনো জঘন্য কাজ নেই, যা প্রদীপ তার টেকনাফে অবস্থানকালে করেনি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে বর্তমানে যে আধুনিক টেকনোলজি আছে তা ব্যবহার করে প্রদীপের এসব অপকর্ম সম্পর্কে অবগত হওয়া কোনো কঠিন কাজ ছিল না। এসব ঘটনা কোনো গোপন বিষয়ও ছিল না, প্রদীপ প্রকাশ্যেই এসব ঘটিয়েছে এবং তার এই কর্মকাণ্ডের সংবাদ নিয়মিতই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও প্রদীপের এত কুকর্মের কোনো তথ্যই কি কর্তৃপক্ষ জানতেন না? এটাও কি এদেশের মানুষকে বিশ্বাস করতে হবে? প্রশ্ন জাগে, এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রদীপের মতো হিংস্র ও দুর্ধর্ষ মানুষ পুলিশ কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় থেকে বছরের পর বছর কীভাবে তার দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন?
ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে হলে উচ্চ আদালতের অনুমোদন নিতে হয়। অর্থাৎ উচ্চ আদালত থেকে সেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিশ্চিত করার আগে তা কার্যকর করা যায় না। কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী নিম্ন আদালতের মামলার রায়, তদন্ত প্রতিবেদন ও এজাহারসহ সব নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে নিয়ে ২০১৯ সাল পর্যন্ত উচ্চ আদালতে মোট ডেথ রেফারেন্স জমা হয়েছে ৬৫০টি। এ সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ২৯৪টি। আর গত বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত উচ্চ আদালতে বিচারাধীন ডেথ রেফারেন্স মামলার সংখ্যা ৭৭৫। উচ্চ আদালতের ডেথ রেফারেন্স শাখা মামলার সব নথি ক্রমানুসারে সাজিয়ে পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলেই ডেথ রেফারেন্স ও আসামির আপিল শুনানি হয় সালের ক্রমানুযায়ী। বর্তমানে ২০১৫/২০১৬ সালের নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল চলছে। সে হিসাবে বছরে গড়পড়তা নিষ্পত্তির হার ও সালের ক্রমানুসারে প্রদীপ ও লিয়াকতের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য আমাদের ২০২৭ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আপাতদৃষ্টিতে এই দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা হতাশাব্যঞ্জক মনে হয়। তবে মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে এ প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে ততই ভালো হবে। তা না হলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপের বিশেষ পরিচয় ও বিশেষ দপ্তর কিংবা জায়গায় যোগাযোগ আছে বলে যে গল্প শোনা যায়, তাতে ফাঁসি কার্যকর সম্ভব হবে কিনা, এ সম্পর্কে মানুষের মনে যে সন্দেহের দানা বেঁধেছে, তা দূর করা যাবে না। আমাদের বিশ্বাস, প্রদীপ ও লিয়াকতের মতো ঘৃণিত ও দুর্ধর্ষ মানুষকে বিশেষ কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মেজর সিনহা হত্যার পর দ্রুততম সময়ে আসামিদের আইনের আওতায় এনে বিচারিক আদালত যেভাবে রায় দিয়েছেন; আমরা আশা করি, আসামিপক্ষ আপিল করলেও সেভাবেই সময়ক্ষেপণ না করে এই রায় যথাসম্ভব দ্রুত কার্যকর করা হবে।
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা