Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

সফটওয়ারের মাধ্যমে ব্যাংক পরিদর্শন কতটা যৌক্তিক?

Icon

এম এ খালেক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০১:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সফটওয়ারের মাধ্যমে ব্যাংক পরিদর্শন কতটা যৌক্তিক?

গত বৃহস্পতিবার যুগান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক শিডিউল ব্যাংকগুলো পরিদর্শন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিডিউল ব্যাংকগুলোতে সীমিত পরিসরে অডিট কার্যক্রম শুরু করেছে। স্বাভাবিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর অন্তত একবার তার চৌকস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত পরিদর্শক দলের মাধ্যমে শিডিউল ব্যাংকগুলোর সম্পাদিত কার্যক্রম অডিট করে থাকে।

এই অডিট কার্যক্রমের মাধ্যমে শিডিউল ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগ অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র প্রতিভাত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক তার অডিট টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিডিউল ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।

বছরের এই একটি নির্দিষ্ট সময় শিডিউল ব্যাংকের কর্মকর্তারা কৃত দুর্নীতি-অনিয়মের ব্যাপারে সন্ত্রস্ত থাকেন। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট প্রতিবেদনে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। করোনার কারণে ২০২০ সালে ব্যাংক পরিদর্শনে কিছুটা হলেও শিথিলতা আনা হয়। কিন্তু এবার বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শক দলের সরাসরি উপস্থিতিতে শিডিউল ব্যাংক পরিদর্শন করে প্রতিবেদন প্রণয়ন করবে না।

শিডিউল ব্যাংকগুলো ‘কোর ব্যাংকিং সলিউশন (সিবিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেসব তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ করবে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা তার ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করবে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় যে অডিট কার্যক্রম পরিচালিত হবে, তার মাধ্যমে শিডিউল ব্যাংকগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি কতটা প্রকাশিত হবে, তা নিয়ে পর্যাপ্ত সংশয় রয়েছে। কারণ কোনো ব্যাংকই স্বপ্রণোদিত হয়ে তার দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য কারও কাছে তুলে ধরবে না।

পরিদর্শক টিমের সরাসরি উপস্থিতিতে যে অডিট কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেখানে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা থাকে বেশি। পরিদর্শক টিমের কাছে কোনো ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টি হলেই তারা ফাইল তলব করতে পারেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। ব্যাংকিং সেক্টরসহ বিভিন্ন খাতে যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তারা অত্যন্ত ট্যালেন্ট অফিসার।

দুর্নীতি যাতে ধরা না পড়ে, তারা সেটি নিশ্চিত করেই কার্য সম্পাদন করেন। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিজ্ঞ ও চৌকস অডিট টিমের কাছে তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়গুলো ধরা পড়ে। কাজেই বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট টিমের উপস্থিতির অর্থই হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়া। সাধারণ মানের একজন কর্মকর্তার পক্ষে ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য খুঁজে বের করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

কাজেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন সব কর্মকর্তার সমন্বয়ে অডিট টিম গঠন করেন, যারা পেশাগত জীবনে অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা অডিট টিমের সদস্য হয়ে বিভিন্ন সিডিউল ব্যাংকে পরিদর্শক রূপে গমন করেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন।

অডিটকালে অনেকেই শিডিউল ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন। কাজেই অডিট কার্যক্রম সফল করতে হলে এমন সব কর্মকর্তা টিমে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো নৈতিক স্খলনের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। কথায় বলে, ‘ডাক্তারের ভুলে একজন রোগীর প্রাণ সংহার হতে পারে; কিন্তু নেতা বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভুলে পুরো ব্যবস্থাটাই ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে।’

ব্যাংকিং সেক্টর বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থা থেকে ব্যাংকিং সেক্টরকে সুরক্ষা দেওয়ার অন্যতম উপায় হতে পারে সঠিক অডিট ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা। অডিটের ক্ষেত্রে কোনো অজুহাতেই ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। ইদানীং বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে বিতর্ক ও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সরাসরি উপস্থিতির পরিবর্তে সফটওয়্যারের মাধ্যমে অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে সংশ্লিষ্ট মহলে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের মাঝে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা হচ্ছে, ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেল কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া। ব্যক্তি মালিকানাধীন শিডিউল ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের শিক্ষানবিশকালে ২৮ হাজার টাকা এবং চাকরি কনফার্ম হওয়ার পর বেতন দাঁড়াবে ৩৯ হাজার টাকার মতো। কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন হবে ২৪ হাজার টাকা।

বলা হয়েছে, ব্যাংকিং সেক্টরে মেধাবীদের আকৃষ্ট করার জন্যই মূলত এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, এর ফলে অধিকতর মেধাবীরা ব্যাংকিং সেক্টরের চাকরির প্রতি আকৃষ্ট হবে। এ ছাড়া ব্যাংকারদের চাকরির নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে একই সার্কুলারে বলা হয়েছে, টার্গেট অর্জনে ব্যর্থতা বা অদক্ষতার অজুহাতে কাউকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী এক ব্যাখ্যায় বলেছে, দুর্নীতি বা অদক্ষতার কারণে চাকরিচ্যুত করা যাবে না-এমন কোনো কথা বলা হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারটি আপাতদৃষ্টিতে ব্যাংক কর্মকর্তাবান্ধব ও মানবহিতৈষী বলেই মনে হয়। কারণ এতে ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরিজীবীদের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে। উল্লেখ্য, করোনাকালে ৩ হাজার ৩১৩ জন কর্মকর্তা চাকরি ছেড়েছেন। এদের বেশিরভাগই আসলে কর্তৃপক্ষের চাপে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সার্কুলার আগামী মার্চ মাস থেকে বাস্তবায়িত হবে।

ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর চাকরি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মতো স্থায়ী নয়। কর্তৃপক্ষ চাইলে যে কোনো সময় অদক্ষতা বা অন্য কোনো অভিযোগে, এমনকি কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই একজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করতে পারেন। অদক্ষতা বা নির্ধারিত টার্গেট অর্জনে ব্যর্থ কর্মকর্তাকেও যদি চাকরিচ্যুত না করা যায়, তাহলে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো অদক্ষ লোকবলে পূর্ণ হয়ে যেতে পারে।

সার্কুলার ইস্যুর কারণ হিসাবে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকে মেধাবীদের আকৃষ্ট করার কথা বলা হয়েছে; কিন্তু সার্কুলার বাস্তবায়িত হলে মেধার প্রয়োজন হবে না। যে কেউ ইচ্ছা করলেই ব্যাংকের চাকরিতে টিকে থাকতে পারবেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে একবার চাকরিতে প্রবেশ করতে পারলে সাধারণত কারও চাকরি চলে যায় না। এ জন্য তাদের মধ্যে এক ধরনের অহমিকা সৃষ্টি হয়।

ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পত্রিকান্তরে অভিযোগ করেছেন, ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিদর্শন, নতুন শাখা খোলা ও বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে কোনো ফাইল পাঠানো হলে একশ্রেণির কর্মকর্তা সেই ফাইল আটকে রেখে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকে চাকরি দিতে বাধ্য করেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংক পরিদর্শনে আসেন, তখনও আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দেওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। নিজের আত্মীয়-স্বজনদের চাকরির নিশ্চয়তা বিধান এবং তাদের বেতন বাড়ানোর লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক পরিকল্পিতভাবে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ছেলে-মেয়ে এবং আত্মীয়-স্বজনরা কত সংখ্যক ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকে চাকরি পেয়েছেন, তা নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে তদন্ত করলেই এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর। তাই এর সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ব্যাংকিং সেক্টর হচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। কাজেই ব্যাংকিং সেক্টরে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। দেশে ব্যাংকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে গেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৬১টি ব্যাংক ব্যবসা করছে।

আরও কয়েকটি ব্যাংক অনুমোদনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারতের মতো বিশাল দেশে ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র ৩২। আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো একই ধরনের প্রডাক্ট নিয়ে বাজারে প্রতিযোগিতা করছে। ফলে এক ধরনের অসম প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে। ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের অধিকাংশই মনে করেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনা প্রয়োজন।

বিশ্বে দুধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করা যায়। এর মধ্যে এক ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা হচ্ছে, ইউনিট ব্যাংকিং এবং অন্যটি ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং। ইউনিট ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটি ব্যাংকের শাখা সংখ্যা থাকে খুবই কম। সামান্য কয়েকটি শাখা নিয়ে একটি ব্যাংক স্থাপিত হয়। কিন্তু ব্যাংকের সংখ্যা থাকে প্রচুর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করা যায়। আর ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং হচ্ছে সেই ব্যাংকিং ব্যবস্থা, যেখানে ব্যাংকের সংখ্যা থাকে কম; কিন্তু তারা প্রচুর সংখ্যক শাখা স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

যুক্তরাজ্যে যে ব্যাংক ব্যবস্থা রয়েছে, তা ব্রাঞ্চ ব্যাংকিংয়ের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশে যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করা যায়, তা ব্রাঞ্চ ব্যাংকিংও নয়; আবার ইউনিট ব্যাংকিংও নয়। এক ধরনের মিশ্র ব্যাংকিং ব্যবস্থা আমাদের দেশে চালু রয়েছে। ইউনিট ব্যাংকিংয়ে এক ধরনের অসম প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকে। বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অসম প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায়।

অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে এনে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর উদ্যোগ নিতে হবে। প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে কীভাবে বিরাষ্ট্রীয়করণ করা যেতে পারে? এক দশকেরও বেশি সময় আগে দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত করা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকর পুরো শেয়ার সরকার নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। সরকার চাইলেই তার নিয়ন্ত্রণে থাকা শেয়ার বাজারে ছেড়ে দিতে পারেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংককে বর্তমান অবস্থায় রাখা যেতে পারে। সোনালী ব্যাংক লিমিটেডকে ট্রেজারি ব্যাংক হিসাবে রেখে অবশিষ্ট রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর শেয়ার বাজারে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের শেয়ার বাজারে ছাড়া হলে শেয়ারবাজারের অবস্থা আরও ভালো হতে পারে। শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে বেসরকারি মালিকানায় হস্তান্তর করা হলে ব্যাংকগুলো প্রতিযোগিতামূলকভাবে পরিচালিত হতে পারে।

দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা বর্তমানে দ্বৈত কর্তৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। কিন্তু দ্বৈত কর্তৃত্ব কখনোই ভালো ফল দিতে পারে না। সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যতটা নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ততটা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ বেশি ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের ওপর। বাংলাদেশ ব্যাংকে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে এতে কর্মরত অসৎ ও অদক্ষ কর্মকর্তাদের বিদায় করে দিয়ে এখানে কার্যকর স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংককে যদি ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর একক কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়, তাহলে সেটাই হবে মঙ্গলজনক। তবে তার আগে যারা বাংলাদেশ ব্যাংকে বসে স্বীয় স্বার্থ হাসিল করছেন, তাদের বিতাড়িত করতে হবে। উল্লেখ্য, সাইফুর রহমান অর্থমন্ত্রী থাকাকালে একবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হয়েছিল। তখন ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনেকটাই ভালো চলছিল। সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা যেতে পারে।

এমএ খালেক : অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড; অর্থনীতি বিষয়ক লেখক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম