সুযোগ সন্ধানী নীতি ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে

অমিত রায় চৌধুরী
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশ যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে। রক্তের সাগর বয়ে গেছে। বহু ত্যাগ ও সংগ্রামের ফসল স্বাধীনতা। শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য সর্বাত্মক জনযুদ্ধ হয়েছে; যেখানে অংশ নিয়েছিল সর্বস্তরের মানুষ। শ্রমিক, কৃষক, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ, সৈনিক-সবাই এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অসম লড়াই। অকল্পনীয় অংশগ্রহণ। সম্মোহনী নেতৃত্ব। যুদ্ধ হয়েছে আত্মপরিচয়, আত্মমর্যাদা ও সমৃদ্ধির জন্য। নিজের ভাষা-সংস্কৃতি, সমাজ-অর্থনীতির সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করে আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক, রাষ্ট্র গঠনের ইচ্ছা থেকেই স্বাধিকার আন্দোলন হয়েছে। এত অল্প সময়ে এত বড় ত্যাগের নিদর্শন বিশ্বে বিরল।
একটি জাতির মুক্তিলাভের সংগ্রামে এত রক্ত, এত নিষ্ঠুরতা, এত অবিচার-আধুনিক সমাজে তো বটেই, সভ্যতার ইতিহাসেও বিরল। অর্থ-সম্পদের ক্ষেত্রে শুধু নয়; চাকরি, ব্যবসায়, শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনা-সবখানেই ছিল প্রকট বৈষম্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বৈদেশিক আক্রমণ মোকাবিলায় বাঙালির জন্য কোনো ব্যবস্থাই পাকিস্তান রাখেনি।
পাক শাসকরা এদেশটাকে শুধু উপনিবেশ বানিয়ে শোষণ করেছে তাই নয়, ভাষা-সংস্কৃতি ও সমাজ বিকাশের পথটাকেও রুদ্ধ করেছিল চরম ঔদ্ধত্য ও দম্ভ নিয়ে। বাঙালি তা সহ্য করেনি। বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সবসময়ই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। ব্যঙ্গ করেছে ভাষা নিয়ে। জন্মসূত্র নিয়ে কটাক্ষ করেছে। বাঙালি এ অপমান মেনে নেয়নি। প্রবল রোষে বিদ্রোহী হয়েছে। বাঙালি নিশ্চিত হয়েছে-এ জাতিকে মুক্ত হতেই হবে। বঙ্গবন্ধু গোটা জাতিকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ করেন। সংগঠিত সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন। বহু রক্তের বিনিময়ে মুক্ত করেন দেশ। একটা আধুনিক ও সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত হওয়ার পথে দেশ এখন এগিয়ে।
সাম্প্রতিককালে সমাজের কিছু আচরণ, কিছু প্রবণতা একটা অস্থির সময়ের ইঙ্গিত করে, যা অবশ্যই আমাদের বিচলিত না করে পারে না। নতুন করে ভাবনার তাড়না সৃষ্টি হয়। আমরা কি পেরেছি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করতে, কষ্টার্জিত রাষ্ট্রের আদর্শিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে? জাতীয় দলের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি পতাকায় শোভিত হয়ে স্বাধীন দেশের মাটিতে দেখেছি বাঙালি তারুণ্যের উল্লাস। কাদের বিরুদ্ধে? নিজ দেশের জাতীয় দলের বিরুদ্ধে। কেন পাকিস্তানের প্রতি এ সহানুভূতি? পাকিস্তান কি বাঙালিদের ওপর সভ্যতার নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞের জন্য ক্ষমা চেয়েছে?
দেশের লুণ্ঠিত ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের টাকা ফেরত দিয়েছে? লাখ লাখ আটকে পড়া পাকিস্তানিকে ফেরত নিয়েছে? উত্তর-এককথায় না। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ায় কি নাগরিকের ক্ষতি হয়েছে? তথ্য-উপাত্ত বলছে-সম্পদ, মর্যাদা, সক্ষমতা-সব মানদণ্ডেই দেশ শুধু পাকিস্তান নয়, অনেক সূচকে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতকেও পেছনে ফেলেছে। এ সবই স্বাধীনতার সুফল। তাহলে কেন এখনো পাকিস্তান আমাদের মগজ ছাড়েনি?
আসলে পাকিস্তানি ক্রিকেট সমাজের কিছু দুর্বলতার সুযোগ ও প্রশ্রয়ের আড়ালে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মনোভাব লালন করতে সাহায্য করেছে। নতুন প্রজন্ম কীভাবে প্রগতি, সামর্থ্য ও ইতিহাস-ঐতিহ্যকে রাতারাতি প্রত্যাখ্যান করতে উৎসাহী হলো, তা বিস্ময়ের। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, তাদের ভেতরেই এক ধরনের বিভ্রান্তি ও পশ্চাৎপদতা বাসা বেঁধেছে কিনা, তা ভাবা দরকার।
সামাজিক আচরণ ও মনস্তত্ত্বে এখন স্ববিরোধিতা প্রকট। রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশলগত বয়ান লক্ষণীয়ভাবে সাংঘর্ষিক। দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। শহিদের সংখ্যা নিয়ে ইচ্ছাকৃত ধোঁয়াশা বা পাকিস্তানি নৃশংসতাকে আড়াল করার মতো অপচেষ্টা মূলধারার রাজনৈতিক কৌশলে জায়গা পেয়েছে। ’৭৫-র পর এভাবেই ন্যায়, সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ আক্রান্ত হয়েছে। জাতিগত ঐক্য ধূলিসাৎ হয়েছে। বিভেদ ও ঘৃণা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ক্ষুণ্ন করেছে। হাজির হয়েছে নতুন ন্যারেটিভ।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নাকি অসাম্প্রদায়িকতা, সমাজতন্ত্র বা বাঙালি জাতীয়তাবাদের চিহ্ন ছিল না। ছিল শুধু গণতন্ত্র। যে ধারণার মাধ্যমে কেবল ক্ষমতার হাতবদল সম্ভব। গণতন্ত্রের অন্তর্গত দর্শনকে চালাকি করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ধর্মের নামে নতুন জাতীয়তাবাদ, অসহিষ্ণুতা, উগ্র ধর্মীয় বিভাজনের বিষ অনুপ্রবেশ করেছে। বাঙালির সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আকাঙ্ক্ষা, সহাবস্থানের ঐতিহ্যকে উৎপাটন করে বিজাতীয় বিভেদ ও উৎকট রক্ষণশীলতা আমদানি করা হয়। একদিকে জাতীয়তাবাদের বুলি, অন্যদিকে টাকা পাচারের হিড়িক। সুযোগ পেলেই সবাই যেন লুটপাটের সাম্রাজ্য দখল করতে চায়। কোনো আদর্শ নেই।
ধর্মের বেলায়ও তাই। অন্যের সম্পদ বা অধিকার হরণে ধর্মের ব্যবহার। অথচ ধর্মের শাশ্বত, অন্তর্নিহিত বাণী উপেক্ষিত। মহাপুরুষের আপ্তবাক্য পদদলিত হয় এ সমাজেই; যেখানে ধর্মের নামে বড়াই চলে সাড়ম্বরে। আবহমান কাল থেকে চলে আসা দুর্গাপূজার মণ্ডপ মিথ্যা অজুহাতে আক্রান্ত হয়, যেখানে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে ওঠে না, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও থাকে নির্লিপ্ত, নির্বিকার। এটি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে সম্ভব হতে পারে, এমনকি ’৭০-পূর্ববর্তী আমলেও এমন ধারণা কেউ পোষণ করতে পারেনি।
সমাজে দাপট বাড়ে লোভ ও কর্তৃত্বের, যা কেবলই ব্যক্তিকে আত্মমগ্ন করে। লুটপাটের সংস্কৃতি জনপ্রিয় হয়। দেশপ্রেম উধাও হতে থাকে। নতুন মধ্যবিত্তের উদ্ভব ঘটে। যারা দেশ ছেড়ে বিদেশে মূল বিস্তারের স্বপ্ন দেখে, তারা বিদেশে প্রাচুর্যের সন্ধান করে। নিজে ভালো থাকতে চায়। কীভাবে মাতৃভূমি বাসযোগ্য হয়ে উঠবে, উন্নত ও টেকসই হবে-সেদিকে তাদের নজর নেই। অন্যকে সংযুক্ত করার আবেগ সমাজের বৃহত্তর অংশ থেকে নির্বাসিত হচ্ছে, যা রীতিমতো বিপজ্জনক। সুবিধাবাদিতা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে, কোনো অন্যায় বা অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠ ক্রমেই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে পড়ছে। পক্ষান্তরে নিজে লাভবান হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আচ্ছন্ন হচ্ছে সমাজ।
অর্থনৈতিক সূচকে সমৃদ্ধি কখনোই মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র লক্ষ্য ছিল না। জাতি হিসাবে কেন আমরা একজন নাগরিককে শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে পারছি না, তা ভাবতে হবে। গভীরভাবে দেখতে হবে ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ায় কারা। মুক্তিযুদ্ধকালেও প্রতিক্রিয়ার এ শক্তি ছিল, অস্তিত্ব ছিল। ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এ শক্তি পুষ্টি পেয়েছে। দেশে সংস্কৃতির অনুশীলন নেই, দেশাত্মবোধের চর্চা নেই। নিজে যা বলি, ব্যক্তিগতভাবে তা চর্চা করি না।
সুযোগ সন্ধানী নীতি ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। গণতন্ত্র মানেই যেন ক্ষমতা দখলের পরিচিত সিঁড়ি। এখানে যেন মহৎ কোনো অঙ্গীকারের জায়গা নেই। একজন নাগরিকের চিন্তাভাবনা, কল্পনার সুযোগ কমে আসছে। ন্যায়বিচার পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই অসহিষ্ণুতা-হিংসার ক্ষেত্র হচ্ছে উন্মুক্ত। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য এমন ছিল না।
বুয়েটের বিশজন শিক্ষার্থী ফাঁসির আসামি হয়েছে। কেন এমন মেধাবী ছেলেরা অপরাধের পথে পা বাড়াল তা অবশ্যই ভাবতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে সতীর্থ শিক্ষার্থীরা তাকে শাস্তি দিয়েছে বলে দাবি অভিযুক্তদের। দেখতে হবে কারা উভয়পক্ষকে হিংস্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আসলে দুদকের চেয়ারম্যান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেছেন।
দুর্নীতি, অন্যায় বা অমানবিক বিচারবোধকে সমাজ ঘৃণা করছে না। বরং উলটোটাই হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। সাবেক এক মন্ত্রীর ক্ষেত্রে যে অভিযোগ আমলে আসছে, বিরোধীদলীয় এক নেতার বেলায় তা প্রযোজ্য হচ্ছে না। এমনকি বুয়েটে প্রকাশ্য দিবালোকে দীপ বা সনি হত্যার বিশ বছর পার হলেও এখনো ভিকটিমরা বিচার পায়নি বা বিচারের পক্ষে সেভাবে জনমতকেও সোচ্চার দেখা যায়নি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র হত্যার বিচার এখনো শেষ হয়নি। সংখ্যালঘু-বুদ্ধিজীবীর বেলায়ও তাই। যেভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বা কুমিল্লায় মৌলবাদীদের হামলায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ হারিয়েছে দেশ, তা নিয়েও তেমন কোনো উচ্চবাচ্য নেই। আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ঘোষণায় দেশে উৎসাহ উপচে উঠতে দেখেছি; কিন্তু একজন জঙ্গিকে গ্রেফতারের আলটিমেটাম শুনে উচ্ছ্বাসের ফানুস চুপসে যেতে দেখে বিস্মিত হয়েছি।
কানাডায় মিডিয়া ট্রায়ালে অভিযুক্ত প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে, কিন্তু সেখানে বঙ্গবন্ধু হত্যা বা যুদ্ধাপরাধ আদালত-সাব্যস্ত খুনির বিরুদ্ধে আওয়াজ শোনা যায় না। এখানে কূটনীতিক বা রাজনীতিক সবাই নীরব। অ্যাক্টিভিস্ট, বাম-ডান রাজনীতিক সবাই চুপ। সমাজমনের এ দ্বৈততা খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।
চীনা বাম রাজনীতির ভাবাদর্শকে এখন ইতিহাসের ইউটার্ন মনে হয়। অনেক পরিচিত মুখের আদর্শগত চরিত্র বদল আমাদের অবাক করে। ধর্মান্ধ ও প্রতিক্রিয়ার রাজনীতি কীভাবে ডালপালা ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। কেবলই তারা খুঁজে বেড়ায় সরকার উৎখাতের পথ। মুক্তিযুদ্ধ বা ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে তারা উদাসীন। অসাম্প্রদায়িক, সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার এজেন্ডাও এখন তাদের হাতে নেই। আত্মবিস্মৃত প্রধান বিরোধী দল কেবলই নেতিবাচক ভোট চায়।
দেশের রাজনীতিতে গঠনমূলক অংশগ্রহণের কোনো অভিপ্রায় আছে কিনা সন্দেহ। কার্যত তারা নিষ্ক্রিয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে মশগুল। নিচু স্তরের কর্মীদের অবস্থা খুবই করুণ। এদের কেউ কেউ রং বদলিয়ে সুবিধার পাইপলাইনে। কেউবা একদম শ্রীহীন, পর্যুদস্ত। ভোগের আশা কম বলে নীতিশূন্য রাজনীতির যে দশা হয়, এখানেও হয়তো তাই। রাজনৈতিক সংগঠন, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নির্বাচিত প্রতিনিধিকে যেভাবে জনসমক্ষে লাঞ্ছিত হতে দেখেছি, তা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। অথচ আমলাদের বেলায় তা হচ্ছে না। ক্ষমা বা আপসের আওতায় অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে।
সরকারদলীয় রাজনৈতিক কর্মীদের একাংশের আচরণেও অস্থিরতা-অপরিপক্বতার চিহ্ন ফুটে উঠছে। সেটি আদর্শহীন, সুযোগ সন্ধানী রাজনৈতিক চর্চার অনিবার্য ফল বলেই মনে হয়। এর সঙ্গে রয়েছে নিয়ম না মানা সংস্কৃতির বিস্তার। ওমিক্রন দেশে বিপুল বিক্রমে ধেয়ে আসছে।
একথা জানার পরও জনমানস ভাবলেশহীন। প্রধান নির্বাহী থেকে তৃণমূল কর্তা-সবাই একবাক্যে বলছেন স্বাস্থ্যবিধি মানতে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। ঠিক যেমন ঘটছে সড়কে। প্রতিদিন দুর্ঘটনার মিছিল। রক্তের স্রোত। কিন্তু কোনো ভয় নেই। এ কেমন একটা অসংবেদী সমাজ আমরা তৈরি করছি। আইন অমান্য করার অভ্যাস সমাজে গেড়ে বসলে কার্যত নৈরাজ্যকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়।
একটি দেশ উন্নত বা সভ্য কিনা, তা পরিমাপ করার মানদণ্ড শুধু অর্থনৈতিক সামর্থ্য নয়। একজন নাগরিকের যদি মৌলিক অধিকার নিশ্চিত থাকে, ন্যায়বিচার প্রাপ্তির কাঠামো শক্তিশালী থাকে, তবেই দেশটিতে সুশাসন আছে ভাবতে হবে। জনসংখ্যা ৭ কোটি থেকে আজ ১৮ কোটি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি-সবখানেই আমরা এগিয়েছি ৫০ বছরে। শুধু সবুজ বিপ্লব নয়, প্রযুক্তির বিপ্লবও ঘটেছে।
দেশ এখন আর বিদেশনির্ভর নয়। নিজের টাকায় আমরা পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল করেছি। মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের দ্বিগুণ, ভারতও পিছিয়ে পড়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির সুফল হয়তো গরিষ্ঠের কাছে পৌঁছছে না। এখানেই হয়তো দুর্বলতা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি কাঠামো এখনো কার্যকর নয়।
আমাদের যেমন উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা আছে, ঠিক তেমনি গণতন্ত্রেরও চাহিদা আছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করছি। এখন জাতীয়তাবাদের শুদ্ধ আবেগে অবগাহন করে নিজেকে পুনর্নির্মাণের সুযোগ এসেছে। সমাজের সব অস্থিরতা, অসুন্দর, অপূর্ণতা ঘুচে যাক। আলোর পথে এগিয়ে চলুক দেশ-এমন প্রত্যাশাই করি।
অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ
principalffmmc@gmail.com