Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

খাবার যেন মৃত্যুর কারণ না হয়

Icon

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খাবার যেন মৃত্যুর কারণ না হয়

মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের জন্য যেসব খাবার হালাল করেছেন, তা কেউ হারাম করার ক্ষমতা রাখে না। জাতি হিসাবে আমরা বাংলাদেশিরা কোনো কোনো ব্যাপারে অতিমাত্রায় রক্ষণশীল ও চরমপন্থি। আমরা ভোজনবিলাসী নই শুধু, আমরা অতিমাত্রায় ভোজনবিলাসী। ভালো খাবার-দাবার পেলে তো কোনো কথাই নেই। কিছু উদাহরণ দিই। কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে একজন মেহমান যদি গুনে গুনে তেল ও চর্বিসমৃদ্ধ দশ টুকরো খাসির মাংস খান বা তিন প্লেট বিরিয়ানি খান, তাহলে তাকে অতিমাত্রায় ভোজনবিলাসী না বলে উপায় আছে? কোনো এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে এক ভদ্রলোক আমার সামনে এক ঘণ্টার মধ্যে এক লিটার কোমলপানীয় সাবাড় করে দিলেন। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম এবং এক সময় জিজ্ঞেস করলাম-আপনি কি বরাবরই এভাবে কোমলপানীয় পান করেন? তিনি গর্বের সঙ্গে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলেন। মনে মনে ভাবলাম, এই ভদ্রলোকের কপালে দুঃখ আছে। আমার জানাশোনা অনেকেই প্রতিযোগিতা করে রসগোল্লা খায়।

উপরে বর্ণিত ভদ্রলোকদের মধ্যে কেউ যদি কোনো না কোনো সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন (পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না), তখন তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক অতিমাত্রায় রক্ষণশীল হয়ে পড়বেন-এতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি তখন চিনিজাতীয় কোনো খাবারই স্পর্শ করবেন না। কোমলপানীয়, মিষ্টি, মাত্রাতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট বা সুগার লেভেল বৃদ্ধি করে এমন খাবার হারাম করে ফেলবেন। এখানেই যত সমস্যা। ডায়াবেটিস হলে বা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কালেভদ্রে একটা-আধটা রসগোল্লা বা দুয়েক টুকরো গরুর গোশত খাওয়া যাবে না-এমন কথা কি কোথাও বলা হয়েছে? ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের অভিজাত এলাকায় অতি ওজন ও স্থূলতার প্রবণতা দেখছি কয়েক বছর ধরে; বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী মানুষের অতি ওজন ও স্থূলতা মহামারি আকারে যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে করে কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ অকর্মণ্য, অথর্ব বা জাতির জন্য বোঝা হয়ে পড়বে।

প্রচুর চর্বি ও চিনিসমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। বাড়তি ওজন শরীরের জন্য কোনো দিক থেকেই ভালো নয়। পশ্চিমা বিশ্বে ক্যান্ডি, আইসক্রিম, প্রচুর চিনিসমৃদ্ধ খাবার, কোমলপানীয় পান, তেল ও চর্বিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কারণে মানুষের, বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওজন বৃদ্ধি এক জাতীয় সমস্যা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। শরীরের মাত্রাতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস জাতীয় বহু রোগের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এসব ভয়ংকর প্রাণঘাতী রোগের কথা ভেবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্থূলকায় লোকদের ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অতিরিক্ত চর্বি ও ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার শরীরের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। কলস্টেরল এক সুপরিচিত লিপিড। স্থূলকায় লোকদের শরীরের শিরা উপশিরার অভ্যন্তরীণ দেওয়ালে চিনি ও ফ্রি রেডিক্যালের কারণে প্রদাহ ও ক্ষত সৃষ্টি হলে ক্ষতিকর কলস্টেরল (পুড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়া), ট্রান্স ফ্যাট, লিপিড বা চর্বি জাতীয় দ্রব্য এবং লাইপোফেইজ পুঞ্জীভূত হওয়ার কারণে শিরা মোটা হয়ে যায় এবং সম্প্রসারণ-সংকোচন ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়। এর ফলে উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।

স্থূলকায় লোকদের একটি বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। স্থূলকায় লোকদের খাওয়ার প্রবণতা স্বাভাবিক আকারের লোকদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। খেতে বসলে এরা লোভ সংবরণ করতে পারে না। তার একটি চমৎকার বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। শরীরের ওজন বাড়ার জন্য গ্লুকোজের চেয়ে ফ্রুকটোজের অবদান বেশি। কারণ, গ্লুকোজ ক্ষুধা উদ্রেককারী হরমোন গ্রেহলিনকে অবদমিত করে এবং লেপটিনকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে ক্ষুধা কমে যায়। অন্যদিকে ফ্রুকটোজের গ্রেহলিনের ওপর কোনো প্রভাব নেই এবং লেপটিনকেও উদ্দীপিত করতে পারে না। ফলে স্থূলকায় লোকদের অতিভোজনের প্রবণতা বেড়ে যায়, যা ওজন বাড়ার অন্যতম এক কারণ। পশ্চিমা বিশ্বে গত ৩০ বছরে শিশুকালীন স্থূলতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশেও এ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। যাদের প্রচুর অর্থবিত্ত আছে, তাদের পরিবারে সমস্যাটা বেশি। শিশুদের শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার পরিণতি খুব ভালো নয়। স্থূলকায় শিশুদের ৫৫ বছর বয়সের আগে মৃত্যুহার দ্বিগুণ। স্বাভাবিক ওজনের অল্পবয়সি মহিলাদের চেয়ে স্থূলকায় মহিলারা ৩৬-৫৬ বছরের মধ্যে বেশি মৃত্যুবরণ করে। গবেষকরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, এই শতাব্দীর মাঝামাঝি ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্যানসারজাতীয় প্রাণঘাতী রোগের ব্যাপকতার কারণে মানুষের গড় আয়ু পাঁচ বছর কমে যাবে। বিশ্বব্যাপী স্থূলতার কারণে লাখ লাখ শিশু বা অল্পবয়সি যুবক-যুবতী বয়স্কদের মতো ক্যানসার, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। মনে রাখবেন, অতি ভোজন যেন আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ না ঘটায়। তাই পরিমিত খান, ব্যায়াম করুন, অলস জীবনযাপন করবেন না; আবার কোনো অজুহাতে পুষ্টিকর খাবার থেকে শরীরকে বঞ্চিত করবেন না।

জেনেটিক বা জৈবিক কারণ ছাড়াও মানুষের লাইফস্টাইল বা জীবনপদ্ধতি স্থূলতার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। সহজ ভাষায় বলি, মানুষ খাবারের মাধ্যমে অতি বেশি পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করে যৎসামান্য ক্যালরি খরচ করলে অর্থাৎ পর্যাপ্ত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করলে মানুষের ওজন বাড়তে শুরু করে। তার মানে ক্যালরি গ্রহণ ও ক্যালরি খরচের মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, স্থূলতার সঙ্গে প্রাচুর্যের একটি নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। যাদের প্রচুর টাকাকড়ি আছে, তারা প্রচুর ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার বেশি খায় এবং ঘনঘন খায়। প্রয়োজনের তুলনায় অতি বেশি ক্যালরি শরীর কাজে লাগাতে পারে না। তাই বাড়তি ক্যালরি শরীর চর্বিতে রূপান্তরিত করে শরীরে পুঞ্জীভূত করে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ঠিক এ কাজটি ঘটে যাচ্ছে আর তা বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অতি স্থূল মানুষ অতি সহজে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করে। অতিকায় দেহ বা ওজন নিয়ে মানুষ বেশি চলাফেরা বা কাজকর্ম করতে পারে না। এতে করে কর্মক্ষমতা ও কর্মদক্ষতা হ্রাস পাওয়ার কারণে শারীরিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। স্থূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মৌলিক পদক্ষেপ হলো, কম খাওয়া ও ওজন কমানোর জন্য বেশি পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা। বেশি থাকতে কম খাওয়া-এটা এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। আমি পৃথিবীর বহু দেশে গেছি। জাপান ছাড়া আর সব উন্নত দেশেই মানুষের লাইফস্টাইল একই রকম। জাপানিদের খাওয়া-দাওয়া সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত বলে সেখানে স্থূলতা এখনো মহামারি আকারে দেখা দেয়নি। কিন্তু অন্যান্য উন্নত দেশে বিশেষ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে খাবার-দাবারের প্রাচুর্য চোখে পড়ার মতো, দামেও সস্তা।

উন্নত বিশ্বে শিশু-কিশোর, এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রিয় ও আকর্ষণীয় খাবারের তালিকায় রয়েছে আইসক্রিম, জাঙ্ক ফুড ও প্রচুর চিনিসমৃদ্ধ কোমল পানীয়। প্রায়ই সব আইটেমই হয় জাম্বো সাইজের। এসব খাবার অত্যন্ত মুখরোচক হয়। খেয়ে অপরিসীম আনন্দ ও তৃপ্তি পাওয়া যায়। ক্যালরিতে ভরপুর এসব খাবার ঘন ঘন খেলে যে কোনো শিশু-কিশোর অল্প সময়ের মধ্যে মোটা হতে শুরু করলেও তাদের খাবারের প্রতি অনীহা থাকে না এবং আকর্ষণ বাড়ে অতি মাত্রায়। খাবারের প্রতি আকর্ষণ মানুষকে আরও বেশি পরিমাণে খেতে প্রলুব্ধ করে। ফলে ওজনও বাড়ে সমান তালে।

শরীরের ওজন স্বাভাবিক না বেশি, তা নির্ণয় করা হয় বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স দিয়ে। বিএমআই নির্ণয়ের নিয়মটা মনে রাখবেন। আমি আগেও এই নিয়মটির কথা বেশ কয়েকবার উল্লেখ করেছি। শরীরের ওজনকে উচ্চতার বর্গফল দিয়ে ভাগ করলে যে ফল পাওয়া যাবে তাকে বিএমআই বলা হয়। স্বাভাবিক বিএমআই স্কেল হলো ১৮.৫ থেকে ২৪.৯। আপনার শরীরের ওজন যদি ৬৮ কেজি এবং উচ্চতা ১.৭৩ মি. হয় তবে আপনার বিএমআই হলো ৬৮ ভাগ (১.৭৩ গুণ ১.৭৩) বা ২:৯৯ এবং ফলাফল ২২.৭৪। ফলাফল অনুসারে আপনার ওজন ঠিক আছে। বিএমআই ২৪.৯-এর বেশি হলে আপনার শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং ১৮.৫-এর কম হলে ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম ধরা হবে। মনে রাখবেন, শরীরের ওজন কমিয়ে বা বাড়িয়ে বিএমআই স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার সুযোগ রয়েছে আপনার।

স্থূলতা কমানোর জন্য ইতোমধ্যে বহু ওষুধ বাজারজাত করা হয়েছে। স্থূলতা কমানোর ওষুধের তালিকায় আরও অনেকগুলো ওষুধ বাজারজাতের অপেক্ষায় আছে, যেগুলো মাত্রাতিরিক্ত ও জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের কারণে ছাড়পত্র পাচ্ছে না। ওজন কমানোর ওষুধগুলো সাধারণত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত হয় না। এ ধরনের বেশ কিছু ওষুধের অতীত ইতিহাস ভালো নয়। এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম হলো যকৃতের ক্ষতিসাধন, কিডনি ধ্বংস, অবসন্নতা, মাথাব্যথা, ক্ষুধামন্দা। ব্রুকহ্যাভেন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির মেডিকেল রিসার্চের চেয়ারম্যান ড. জিন জেক ওয়াং বলেন, ওজন কমানোর জন্য আমাদের কাছে কোনো ম্যাজিক বুলেট নেই। সম্ভবত আমাদের বোমা ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। সমস্যাটি উপলব্ধি করার মতো ক্ষমতা আমাদের থাকা দরকার। এমন কোনো ওষুধ পাওয়ার সম্ভাবনা শূন্য, যা শুধু নিরাপদে ওজন কমাবে; অথচ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকবে না। এত আলোচনার পর বোঝা গেল, ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার অনেকের জন্য এক সমস্যা। ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবারের অতিভোজন আরও বড় সমস্যা। এসব খাবার খেয়ে মোটা হওয়া এক মহা বিড়ম্বনা। আর চিকন হওয়ার জন্য ওষুধ সেবন-সে তো জীবন বিপন্ন করে আপনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। তাহলে উপায়? উপায় একটা আছে। আর তা শক্ত হলেও অসম্ভব নয়। প্রিয় পাঠক, আপনার শরীরে যদি বাড়তি ওজন থাকে তবে দেরি না করে আজই ব্রত গ্রহণ করুন ওজন কমিয়ে আনতে। কীভাবে ওজন কমাবেন? নিচে বর্ণিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

এক. চিনি বা ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপসমৃদ্ধ খাবার যত কম খাবেন, তত ভালো। দুই. শিশুদের চিনি বা ফ্রুকটোজসমৃদ্ধ ফলমূল ও ফলের রস কম খেতে দিন। তিন. চিনি বা কর্ন সিরাপসমৃদ্ধ কোমল পানীয়তে প্রচুর ক্যালরি থাকে। শরীরে বাড়তি ওজন থাকলে কোমল পানীয় বর্জন করুন। চিনি বা ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ ছাড়াও কোলাজাতীয় পানীয়তে বহু ক্ষতিকর উপাদান থাকে। মনে রাখবেন, চিনি বা কর্ন সিরাপসমৃদ্ধ খাবার হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের প্রধান কারণ। চার. শিশুরা জাঙ্কফুড, ফাস্টফুড, ক্যান্ডি, চকোলেট, আইসক্রিম ও প্রচুর চিনিসমৃদ্ধ পানীয়, বিশেষ করে বিভিন্ন কোম্পানির কোমল পানীয় বেশি পছন্দ করে। শিশুর সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে শিশুদের এসব খাবার প্রদানে সতর্ক ও সচেতন হওয়া উচিত। কথাগুলো বয়স্কদের জন্যও প্রযোজ্য। পাঁচ. জাঙ্কফুড ও ফাস্টফুড শরীরের ওজন বাড়ায়। কারণ, এসব খাবারে প্রচুর তেল বা চর্বি থাকে। এসব খাবার বর্জন করুন বা পরিমিত খান। ছয়. অলস জীবনযাপন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। নিয়মিত ব্যায়াম না করার কারণেও আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম বা কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কম বয়সিদেরও ব্যায়ামে উদ্বুদ্ধ করুন। সাত. পরিমিত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, লিপিড, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, বিশুদ্ধ পানীয়, আঁশজাতীয় খাবার স্বাস্থ্যকর খাবারের অন্তর্ভুক্ত। উল্লিখিত খাবারের মধ্যে শাকসবজি ও ফলমূলের আধিক্য থাকা বাঞ্ছনীয়। শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশসমৃদ্ধ সুষম খাবার শরীরের ওজন, রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, কলস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আট. বিয়েশাদি বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশিত তেল, চর্বি ও ঘি সমৃদ্ধ খাবার একান্তই পরিহার করতে না পারলে অল্প খাওয়ার চেষ্টা করুন। এসব অনুষ্ঠানে পরিবেশিত বেশিরভাগ খাবার কারও জন্যই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। নয়. লোভ সংবরণ করতে পারলে বহু স্বাস্থ্য সমস্যা দূর হয়ে যায়। খেতে বসলে লোভ সংবরণ করতে পারি না বলে আমরা অতিভোজনের কারণে মোটা হয়ে যাই এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই। জিহ্বা সংযত করুন, তবেই শুধু আপনার স্বাস্থ্য সুসংহত হবে। আপনি এবং আপনার পরিবারের সব সদস্যের জন্য একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন এবং সুস্থ থাকুন।

লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ফার্মেসি বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

drmuniruddin@gmail.com

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম