Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহ কি কমছে?

Icon

সালমা ইসলাম

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহ কি কমছে?

গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনের সার্বিক অর্জন বিশ্ববাসীর মনে বড় ধরনের হতাশার সৃষ্টি করবে এটাই স্বাভাবিক। কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কিছুদিন আগে প্রকাশিত আইপিসিসির ষষ্ঠ রিপোর্টে বলা হয়েছিল, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে যদি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিয়ন্ত্রণে আনা না যায়, তাহলে বিশ্ববাসীকে বড় বড় বিপদ মোকাবিলা করতে হবে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির চলমান ধারা রোধ করা।

কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা গ্লাসগো বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার মাত্র কিছুদিন আগে এক বিবৃতিতে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের ভবিষ্যৎ নীতিমালা এখানে বিস্তারিত চূড়ান্ত করা হবে।’ তিনি আরও যা বলেছিলেন তাতে এ বিষয়ে তার আন্তরিকতা ও দৃঢ়তা স্পষ্ট হয়েছিল। বস্তুত এসব প্রেক্ষাপটে কপ২৬ সম্মেলন নিয়ে বিশ্ববাসী এবার বিশেষভাবে আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সম্মেলনে প্রত্যাশার তুলনায় অর্জন হয়েছে সামান্যই। এসব অর্জনও আবার নানা শর্তের বেড়াজালে ঘেরা।

অতীতের মতো এবারের কপ২৬ সম্মেলনেও মিলেছে বহু প্রতিশ্রুতি। মানুষ এসব শুনতে শুনতে বড়ই ক্লান্ত। বিশ্বনেতারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলে তার মাশুল গুনতে হবে সমগ্র বিশ্ববাসীকেই। ২০০৯ সালের কোপেনহেগেন সম্মেলনের পর বিশ্ববাসী এবারের সম্মেলন নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী ছিল। কিন্তু স্বল্পোন্নত দেশ এবং সবচেয়ে ভুক্তভোগী দেশের মানুষ এবারও হতাশ হয়েছে।

বস্তুত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সব বিরূপ প্রভাব এখনো দৃশ্যমান নয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এসব বিরূপ প্রভাব বা সমস্যা আগামী কয়েক বছরে সীমিত থাকবে এমনও নয়। কাজেই ঝুঁকি মোকাবিলায় সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কয়েক দশক পর এ বিষয়ক সার্বিক পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা প্রবল, যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ক সমস্যা যখন তীব্র আকার ধারণ করবে, তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অত্যন্ত কঠিন হবে, তাও বহুল আলোচিত। কপ২৬ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যে প্রতিজ্ঞা করেছেন তা বাস্তবায়নে তারা আন্তরিকতার পরিচয় দেবেন, এটাই প্রত্যাশিত।

২.

গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনের আলোচনার গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে জাতিসংঘের মহাসচিবের হতাশাজনিত মন্তব্য শুনে অনেকেই তখন অনেক আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন এই ভেবে, শেষ মুহূর্তে হয়তো নাটকীয়ভাবে বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যা গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনকে বিশেষভাবে স্মরণীয় করে রাখবে। কিন্তু তা আর হলো না। গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলন থেকে বিশ্ববাসী যা পেল তা মন্দের ভালো। সম্মেলনের শেষ মুহূর্তে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আনুষ্ঠানিকভাবে যে চুক্তি হয়েছে তাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তবে উন্নত দেশগুলোকে খুশি করতে গিয়ে চুক্তির ভাষাকে দুর্বল করা হয়েছে, যা বিশ্বের কোটি কোটি জলবায়ু সচেতন মানুষকে হতাশ করেছে।

কপ২৬ সম্মেলনে বন সুরক্ষায় বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো অঙ্গীকার করেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার, তবে তা রক্ষা করা হয় কিনা এটাই বড় প্রশ্ন। শিল্পকারখানা, যানবাহন-এসবের বাইরেও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গত হয়। এ সমস্যার সমাধানে প্রযুক্তি ভাগাভাগির বিষয়েও আশ্বাস মিলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সমগ্র বিশ্বের মানুষের ওপর পড়লেও উন্নত দেশের মানুষ নিজেদের সুক্ষায় যেসব পদক্ষেপ নিতে পারে, দরিদ্রতম জনগোষ্ঠী তা পারে না।

ফলে দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা এবং তাদের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির বিষয়ে গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলন থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আসবে, এটা প্রত্যাশিত হলেও এ সম্মেলন থেকেও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত না আসার বিষয়টি দুঃখজনক। স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার তা পূরণে তারা দীর্ঘদিন দাবি তুলে এলেও এ বিষয়ক অগ্রগতিও সন্তোষজনক নয়। শীর্ষ দূষণকারী শিল্পোন্নত দেশগুলো বিভিন্ন সম্মেলনে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও সেসব পূরণে তাদের আন্তরিকতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এসব কারণে শীর্ষ দূষণকারী এবং কম দূষণকারী ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান আস্থার সংকট কাটাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

৩ .

কপ২৬ সম্মেলনের চূড়ান্ত চুক্তিতে কয়লার ব্যবহার কমানোর (‘ফেজ ডাউন’) ভাষাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়েও মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বস্তুত অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোও এক বড় চ্যালেঞ্জ। উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে পারে এ জন্য ধনী দেশগুলোর পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা অব্যাহত রাখা জরুরি। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ধনী দেশগুলো বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন।

জলবায়ুবিষয়ক সংকটে আকস্মিক বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাও বহুল আলোচিত। এসব সংকটে শস্যের ফলন কমবে; কমবে ফসলের পুষ্টিগুণও। এতে পুষ্টিহীনতার সংকট বাড়বে। এসব তথ্য স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকেই বেশি ভাবিয়ে তুলেছে।

আইপিসিসির হিসাব মতে, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অবকাঠামো নির্মাণ, কৃষিকাজ, ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সংরক্ষণের মতো খাতগুলোতে আগামী এক দশকে ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করলে তা থেকে ৭ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।

সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হয়, তাহলে বিশ্বের বিপুল পরিমাণ কয়লা তেল এবং মিথেন গ্যাসের মজুতকে প্রকৃতিতে যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দিতে হবে। প্রশ্ন হলো এর বিকল্প কী? এর সঠিক উত্তর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরাই দিতে পারবেন। এ কাজের সাফল্য অর্জন মোটেও সহজ নয়। এক বছর আগেও যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য মানতে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে; আইপিসিসির সাম্প্রতিক রিপোর্ট প্রকাশের পর তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন এসেছে। এখন সবাই স্বীকার করছেন আমরা গভীর সংকটের মুখোমুখি। এ স্বীকারোক্তি তাদের দায়িত্বশীল হতে কতটা উদ্বুদ্ধ করে, এটাই এখন দেখার বিষয়।

৪.

কপ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াটি এমন যে, কাউকে জোর করার উপায় নেই। বিভিন্ন পর্যায়ে ন্যায্য দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবি আদায়ে আশা করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ সংশ্লিষ্ট দেশগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবেই বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ঐকমত্যে আসেন। এ প্রেক্ষাপটে শিল্পোন্নত দেশগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেশি দায়িত্ব পালনে যে ভূমিকা রাখার বিষয়টি প্রত্যাশিত ছিল তা এখনো দৃশ্যমান না হওয়ায় বিশ্ববাসীর হতাশা বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য সহায়তা দিতে প্যারিস চুক্তিতে বলা হয়েছিল ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার একটি তহবিলের নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু এখনো সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি।

এবারের সম্মেলনে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো রক্ষা করা হবে কিনা এটাই এখন বড় প্রশ্ন। এবারের সম্মেলনে আলোচনায় এসেছে যে, জলবায়ু তহবিলের অর্থ এমনভাবে খরচ করতে হবে যা হবে ‘মেজারেবল, রিপোর্টেবল এবং ভেরিফাইয়েবল’। বিশ্ব নেতাদের আন্তরিকতা যেন নতুন নতুন শর্তের আড়ালে চলে না যায় সেদিকও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, প্রতিবছরই পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলে জলবায়ু এতটাই পরিবর্তিত হচ্ছে যা আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব নয়।

কপ২৬ থেকে ক্ষতিপূরণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসায় ঝুঁকিপূর্ণ এবং গরিব দেশগুলো হতাশ হয়েছে। এ অবস্থায় স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দাবি আদায়ে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। জলবায়ু তহবিলের অর্থ বিতরণ ও ব্যবহারে বিশ্ব নেতাদের এমন নীতি অবলম্বন করতে হবে যাতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যথাসময়ে তাদের সমস্যা মোকাবিলা করে টিকে থাকতে পারে।

কপ২৬ চলাকালে ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনার বিষয়ে অঙ্গীকার করেছে বহু দেশ। জানা গেছে, মিথেন নিঃসরণ কমিয়ে আনার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনা সম্ভব। অদৃশ্য ও গন্ধহীন মিথেন, কার্বন ডাই-অক্সাইডের তুলনায় ৮০ গুণ উষ্ণায়ন করে থাকে।

৫.

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৪৮টি দেশের জোট ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলার অভিজ্ঞতা আগামী সম্মেলনগুলোতে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের পক্ষ থেকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে লবণাক্ত পানি প্রবেশের ফলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রশ্ন হলো দেশের প্রান্তিক কৃষকদের এ ক্ষতি পূরণের উপায় কী?

জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় সময়োপযোগী প্রযুক্তি আবিষ্কারের কাজটি সহজ নয়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ধনী দেশগুলো যাতে দরিদ্র দেশগুলোকে সহায়তা অব্যাহত রাখে, এ বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। মহামারির কারণে দরিদ্র দেশগুলোর সক্ষমতা আরও কমেছে। এ অবস্থায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় তহবিলের জোগান দেওয়া না হলে দেশগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কতটা হুমকির মুখে পড়বে তা সহজেই অনুমান করা যায়।

জলবায়ু সংকট বিশ্ববাসীকে আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে চলমান উন্নয়ন কার্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার জন্য ঐক্য কতটা জরুরি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, কোনো দেশ নিজেদের অভ্যন্তরীণ অর্থায়নের পথগুলো খুঁজে বের করতে সক্ষম না হলে, পরিবেশ রক্ষায় সচেষ্ট না হলে আগামীতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে।

৬.

জাতিসংঘের আহ্বানে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববাসী এমন এক পৃথিবীর ভিত্তি রচনার স্বপ্ন দেখছে, যার স্থায়িত্ব বংশপরম্পরায় অটুট থাকবে। স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সুলভে প্রযুক্তিপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা না হলে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কী ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে তা বহুল আলোচিত। বর্তমানে সারা বিশ্বে টেকসই উন্নয়নের মডেল নিয়ে বহুমাত্রিক তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের দিকে তাকিয়ে দেখা যায় পোশাকি শব্দের মোড়কে বিশ্ববাসী যে দর্শনের আলোচনা করছে এ দর্শনের চর্চা আমাদের দেশে বহুকাল আগে থেকেই চলমান।

এবারের জলবায়ু সম্মেলন ঘিরে হতাশার পাশাপাশি অগ্রগতিও হয়েছে। তবে প্রতিশ্রুতিগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব পরিলক্ষিত হলে বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসের লক্ষ্য অর্জনে নানারকম অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ অর্থের ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। এখন দাবি আদায়ে সোচ্চার হওয়ার পাশপাাশি নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে।

এখন এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিপর্যয় মোকাবিলায় দরকার ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগাড় হবে কী করে? কোপেনহেগেন-প্যারিস-গ্লাসগো-প্রতিবারের সম্মেলনে মিলেছে বিশেষ বিশেষ প্রতিশ্রুতি। এসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হবে কি? ভুলে গেলে চলবে না, জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় উদাসীনতা ও অদূরদর্শী কৌশল পৃথিবী নামক এ গ্রহকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলবে।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি : মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যুগান্তর প্রকাশক

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম