Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি

‘ভুল সবই ভুল’!

Icon

ড. আর এম দেবনাথ

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২১, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘ভুল সবই ভুল’!

আমাদের অর্থনীতিতে কয়েকটি ঘটনা দেখে আমার ছাত্রজীবনের একটা গানের কথা মনে পড়ে গেল। গানটির প্রথম কলি হচ্ছে ‘ভুল সবই ভুল, এ জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা তা সবই ভুল’। মনে পড়ে এ গানটি খুবই জনপ্রিয় ছিল। একা তো গাইতামই, সম্মিলিতভাবে টেবিল থাপড়িয়েও আমরা গাইতাম। প্রশ্ন : আজ ওই গান মনে পড়ল কেন? পড়ল শেয়ারবাজার, রেমিন্ট্যাস, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও মূল্যস্ফীতির খবর দেখে ও শুনে।

ধরা যাক শেয়ারবাজারের কথা। বাজারটি ‘মরা মরা’ ছিল বহুদিন। দুবার ‘ধরা’ খাওয়ার পর বহুদিন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারের সম্মুখীন হয়নি। অথচ এ বাজারে দেখা যাচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। সূচক বৃদ্ধির রেকর্ড, বেচাকেনার রেকর্ড, বাজে শেয়ার বিক্রি এবং এগুলোর মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড। গত ২৪ আগস্টের একটি খবরের শিরোনাম হচ্ছে : ‘ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে ডিএসই-সিএসইর সূচক’। ২৩ আগস্ট ‘ডিএসই সূচক’ ছিল ৬ হাজার ৮৬২ দশমিক ৪১ পয়েন্ট।

খবরে বলা হচ্ছে. ডিএসই-৩০ এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচকও সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছেছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড হয়েছে। এদিকে শেয়ারবাজারে কত টাকার লেনদেন হয়েছে? সর্বশেষ লেনদেনের পরিমাণ ছিল পৌনে ৩ হাজার কোটি টাকা। এখন প্রশ্ন, এসব দেখে ও শুনে ‘ভুল সবই ভুল’ গানটি মনে পড়ল কেন? এর কারণ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ‘ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে পড়াশোনা করি, তখন স্যারেরা বলতেন, শেয়ারবাজার হচ্ছে অর্থনীতির দর্পণ।

অর্থনীতি ভালো চললে, অর্থনীতির অবস্থা ভালো হলে, এর গতিপ্রকৃতি ভালো হলে শেয়ারবাজারের অবস্থা ভালো হবে। সূচক বাড়বে, বেচাকেনা বাড়বে। বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবে। পুঁজি সরবরাহে গতি আসবে। নতুন নতুন শিল্পোদ্যোক্তারা শেয়ারবাজারে আসবে নতুন নতুন কোম্পানির শেয়ার বিক্রির জন্য। কী মনে হয়-এসব শিক্ষার সঙ্গে আজকের শেয়ারবাজারের কোনো সম্পর্ক আছে?

সবাই জানি, আমাদের অর্থনীতি সারা বিশ্বের অর্থনীতির মতোই নাজুক অবস্থায় আছে। করোনা মহামারি সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। চারদিকে অনিশ্চয়তা। কবে অবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানে না। এসবের প্রতিফলন ঘটেছে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমে হিসাব করা হয় ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু চূড়ান্ত হিসাবে তা হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার আছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। কাগজে দেখলাম তা হবে মাত্র ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

বোঝাই যায় অর্থনীতি ভালো নেই। মানুষের হাতে টাকা নেই। বহু মানুষ চাকরিচ্যুত, কর্মচ্যুত। ছোট-মাঝারি শিল্প-ব্যবসার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। যদি তাই হয়, তাহলে এর ‘আছর’ শেয়ারবাজারে পড়ার কথা। কারণ স্যারেরা বলেছেন, অর্থনীতির দর্পণ হচ্ছে শেয়ারবাজার। কিন্তু পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, স্যারদের কথা ভুল। ভুল না হলে অর্থনীতির মন্দাকালে শেয়ারবাজারে এত উল্লম্ফন ঘটে কীভাবে? কোত্থেকে হঠাৎ করে বাজারে এত চাহিদা (ডিমান্ড) এলো? এসব কি সাধারণ বিনিয়োগাকারীদের টাকা? সাধারণ বিনিয়োগাকারীরা এ মুহূর্তে শেয়ারবাজারে দুই-তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন করবে-এটা এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার।

এটা কি তাহলে ব্যবসায়ীদের জন্য প্রদত্ত ‘প্রণোদনা’র একাংশের টাকা? এটা কি ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্যের লুকোচুরি করা টাকা? এটা কি রেমিট্যান্স প্রাপকদের টাকা? আমরা কেউ এর সঠিক উত্তর জানি না। তবে জানি শেয়ারবাজার চড়া! বাজে শেয়ারের দাম খুবই বেশি। একশ্রেণির কোম্পানি মালিক বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। তবে কি আবার বিপদ সামনে? জানি না। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কথিত শেয়ারবাজারের ‘স্পেকুলেটররা’ আমাদের আরেকটি ধসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি? এর উত্তর ভবিষ্যতেই পাওয়া যাবে। আপাতত গানের প্রথম কলি-‘ভুল সবই ভুল’-একথাই সত্য। স্যারেরা অসত্য!

আসা যাক ‘রেমিট্যান্সের’ প্রশ্নে। সবার ধারণা ছিল করোনার কারণে রেমিট্যান্সের বাজারে ধস নামবে। এর কারণ কী? কারণ, যেসব দেশে বাংলাদেশিরা কাজ করেন এবং সেখান থেকে টাকা পাঠান, সেসব দেশের কোনোটার অবস্থাই ভালো নয়। সেখানে মানুষের চাকরি যাচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য আমাদের মতোই বন্ধ। তাদের নতুন কোনো কাজ নেই। তারা শ্রমিক ছাঁটাই করছে। যাদের চাকরি আছে, তাদের বেতন-ভাতা কমানো হয়েছে!

অনেক দেশে সরকার নানা ধরনের কর বসিয়েছে। আমাদের দেশের মতোই সেসব দেশেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আবার বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। যারা সেখানে চাকরিরত অবস্থায় দেশে বেড়াতে এসেছিলেন, তারা এখানে আটকা পড়েছেন। তারা চাকরিস্থলে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট-ভিসার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন। এসব কারণে এবং আরও নানা কারণে অনেকেই মনে করেছিলেন ‘রেমিট্যান্সে’ ধস আসবে। অথচ কৃষি, তৈরি পোশাকের পর রেমিট্যান্সই আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান শক্তি ও স্তম্ভ। আমরা সবাই যখন অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ, জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের এসব যুক্তি শুনেছি, তখন প্রমাদ গুনেছি। কী হবে তাহলে? শত হোক বিলিয়ন বিলিয়ন (বিলিয়ন সমান শত কোটি) ডলারের প্রশ্ন।

রেমিট্যান্সের টাকায় কোটিখানেক পরিবার সংসার চালায়। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল আছে। সেই রেমিট্যান্সেই যদি খরা দেখা দেয় তাহলে কী হবে? এ ধরনের ধারণা নিয়ে যখন আমরা আশঙ্কায় ভুগছি তখন দেখা গেল-‘ভুল সবই ভুল’। রেমিট্যান্স তো কমেইনি, বরং বড়েছে। বেড়েছে মানে মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে। রেকর্ডের পর রেকর্ড হয়েছে এক্ষেত্রে।

তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার ৮০৩ কোটি ডলার। এই হিসাবে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পরিমাণ ৩৬ শতাংশ। ভাবা যায়! যেখানে কমার আশঙ্কা ছিল, ধস নামার কথা ছিল, সেখানে তা তো হয়ইনি, বরং রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি মাসে তা বেড়েছে। এখনো বেড়ে চলেছে।

এর ফলে দেশীয় বাজারে ব্যাংকে ব্যাংকে তারল্যে বুদবুদ সৃষ্টি হয়েছে। এই বিশাল পরিমাণ রেমিট্যান্সের কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি অক্ষত রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রাপকরা গ্রামের অর্থনীতি ধরে রেখেছেন, বাজার সচল রেখেছেন। তারা নিজের খরচ মিটিয়ে আত্মীয়-স্বজনদেরও এই দুর্দিনে আর্থিক সহায়তা করছেন। এ কারণে করোনা মহামারির ফলে গ্রাম যতটা তছনছ হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। এসব কারণেই বলছিলাম-‘ভুল সবই ভুল’।

তবে প্রশ্ন, কোত্থেকে এত টাকা রেমিট্যান্স হিসাবে এসেছে এবং আসছে। সরকার বলছে, ‘রেমিট্যান্স’ প্রেরকদের ডলারপ্রতি ১-২ টাকা বেশি প্রণোদনা দেওয়াতে প্রবাসীরা দেশে বেশি বেশি টাকা পাঠাচ্ছে। তারা সঞ্চয়ের টাকাও বিদেশে আর রাখছে না। দেশে বিপদের দিনে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি চ্যানেল ‘হুন্ডি’ ব্যবসা সেভাবে চালু নেই করোনা, লকডাউন, শাটডাউন ইত্যাদির কারণে।

এসব যুক্তি দেখিয়ে বলা হচ্ছে, এসব কারণে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে/পাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন, জনশক্তি রপ্তানি কম, উপরন্তু দেশে এসে পড়েছে অনেক শ্রমিক, কর্মস্থলে বেতন-ভাতা কমেছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এমতাবস্থায় কীভাবে রেমিট্যান্সে উল্লম্ফন ঘটে? তবে কি দেশ থেকে পাচার হওয়া কালো টাকা বৈধ হয়ে দেশে আসছে? ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা কি তাদেরই টাকা দেশে আনছে? দেখা যাচ্ছে, অনেকে এ কথা এখন বিশ্বাস করেন।

‘রেমিট্যান্সের’ লেজে লেজে আছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ’। রিজার্ভ ভীষণ জরুরি। আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা রিজার্ভ ছাড়া করা যায় না। পর্যাপ্ত বা যথাযথ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ থাকতে হয়। যথাযথ কত? কমপক্ষে ৩-৪ মাসের আমদানির জন্য যা দরকার, সেই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থাকতে হয়। না থাকলে আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বিদেশিরা ঋণপত্র বা ‘এলসি’ গ্রহণ করে না। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আমাদের দেশে রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক সাহায্য ও সহায়তার টাকা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে ওঠে।

আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা পড়িয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকতে হবে। কমও না, বেশিও না। কম হলে কী হবে তা বলেছি। আবার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হলেও বিপদ। বিপদ বা ঝুঁকি হচ্ছে মূল্যস্ফীতির। বেশি বেশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মানে মূল্যস্ফীতি, বেশি বেশি মূল্যস্ফীতি। এখন দেখা যাচ্ছে, এখানেও ‘ভুল সবই ভুল’।

আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে প্রতিদিন ডলার জমা হচ্ছে। এটা এখন বড় খবর। সর্বশেষ খবরে দেখলাম, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তার টাকা/ডলার যোগ হওয়ায় আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এটা ৮-১০ মাসের আমদানির জন্য যথেষ্ট। অথচ দরকার ৩-৪ মাসের ডলার। এত ডলার! প্রতিদিন রিজার্ভে ডলারের পরিমাণ বাড়ছে। মজার বিষয়, সেই অনুপাতে মূল্যস্ফীতি ঘটছে না।

মূল্যস্ফীতি আছে, যার পরিমাণ স্বাভাবিক। স্বাভাবিকভাবেই কিছু মূল্যস্ফীতি হয়। তা-ই হচ্ছে। অতিরিক্ত ডলার রিজার্ভের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে না। তাহলে স্যারদের কথা ভুল হলো না? ভুল বটে, তবে এর অন্যদিকও আছে। ডলারের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকে ব্যাংকে তারল্যের ঢেউ উঠেছে। ব্যাংকে টাকা রাখার জায়গা নেই। বিনিয়োগ করতে পারছে না ব্যাংক। ‘মানি মার্কেটে’ টাকা ধার নেওয়ার কোনো লোক নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকও এই অতিরিক্ত তারল্য বাজার থেকে তুলে নিতে পারছে না।

ফল? ফল হচ্ছে আমানতকারীদের ‘ফাঁসি’। তাদের আমানতে ব্যাংকগুলো কোনো সুদ/লাভ দিতে নারাজ। কথা ছিল ৯-৬ হবে সুদ হার। ঋণে ৯ শতাংশের বেশি সুদ হবে না। আর আমানতে হবে ৬ শতাংশ। ব্যাংকগুলো এ নিয়ম না মেনে ঋণে ৯ শতাংশ ঠিকই রাখল, কিন্তু আমানতে সুদ দিতে রাজি নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেষ পর্যন্ত সার্কুলার জারি করে ৬ শতাংশ সুদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাংকগুলোকে। তাহলে বোঝা গেল এক সমস্যা আরেক সমস্যার সৃষ্টি করে।

এরপর আসে চাহিদা ও সরবরাহের কথা। ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের কথা। কত পড়লাম, কত শুনলাম যে, সরবরাহ বাড়লে জিনিসপত্রের মূল্য কমে, আর সরবরাহে টান পড়লে মূল্য বাড়ে। অথচ চাহিদা বাড়লে দামও বাড়ে, চাহিদা কমলে দামও কমে। এখন দেখা যাচ্ছে এ কথাও ভুল। ‘ভুল সবই ভুল’। এই যেমন চিনির দাম। সর্বশেষ (২৪.০৮.২১) খবরে দেখা যাচ্ছে, খোলা চিনির দাম কেজিপ্রতি ৭৮-৮০ টাকা। প্যাকেটজাত চিনির দাম কেজিপ্রতি ৮৪ টাকা। হিসাব করে বলা হচ্ছে, এক কেজি চিনির কর হচ্ছে ২৮ টাকা। এই যে মূল্যবৃদ্ধি, এর জন্য কি সরবরাহ দায়ী? মোটেই নয়। চিনির ঘাটতি বাজারে নেই।

আন্তর্জাতিক বাজারে যে চিনির মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, সেই চিনি এখনো আমদানি হয়ে দেশে আসেনি। চাহিদা বেড়েছে? তাও ঠিক নয়। তাহলে কেন বৃদ্ধি? শুধু চিনি নয়-চাল, পেঁয়াজ, ডাল, সয়াবিন ইত্যাদি ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়মিতভাবে বাড়ে, যার সঙ্গে চাহিদা-সরবরাহের কোনো সম্পর্ক নেই। অসাধু ব্যবসায়ী-আমদানিকারকরা নিয়ম করে বছরের একেকটি সময়ে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে তাদের পুঁজি গঠন করে। হতভাগা দেশে ভোগ্যপণ্যের এভাবে দাম বৃদ্ধি করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী হাজার হাজার কোটি টাকা বানিয়েছে। গরিব-মধ্যবিত্ত মারা এ টাকায় তারা করছে সুখ-আনন্দ। অনেকে বিদেশে টাকা পাচার করছে। কেউ কেউ দুই-একটা শিল্পও করছে। আর হতাশায় আমরা বলছি-‘ভুল সবই ভুল’!

ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

rmdebnath@yahoo.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম