
প্রিন্ট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম
মিয়ানমারে জনবিদ্রোহের ইতি টানতে পারবে জান্তা সরকার?

হারুন হাবীব
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে দেশের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার দিন থেকেই বাংলাদেশের পড়শী মিয়ানমার নতুন করে বিশ্ব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ২০১৭ সালে যেমনটা হয়েছিল রাখাইনের মাটি থেকে বর্বরতম পন্থায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বিতাড়নের নির্মমতা দেখিয়ে, এবারে হয়েছে নিজের দেশের গণতান্ত্রিক সরকার হটিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর।
তবে বিগত কয়েক মাসে দেশটির চালচিত্র দেখে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, মিয়ানমার এবার যে সংকটে পড়েছে, তা থেকে সহসাই মুক্তি নেই। কারণ বিগত কয়েক মাসে দুটি বিষয় বেশ স্পষ্ট হয়েছে। প্রথমটি, সেনাবাহিনীর হুমকি-ধমকি সীমা ছাড়িয়ে গেলেও গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দেলনে বিন্দুমাত্র বিরতি নেই; দ্বিতীয়টি, জান্তা সরকারের নিষ্ঠুর আচরণ বা বুলেট-নির্যাতনেরও বিরতি নেই কোনো। এ পর্যন্ত ৩০০-এর ওপর গণতন্ত্রকামী মানুষ সৈন্যদের নির্বিচার গুলিতে নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। সেনাবাহিনী হয়তো ভেবেছিল অতীতের নানা সময়ে যেভাবে তারা গণতন্ত্রপন্থিদের হটিয়ে দিয়ে অব্যাহতভাবে ৫০ বছর ধরে দেশটি শাসন করেছে, এবারও তাই পারবে। কিন্তু পরিস্থিতি মোটেও তা নয়। শত নিবর্তন ও সশস্ত্র প্রতিরোধ সত্ত্বেও হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে। জান্তা সরকার সু চি ও তার সহকর্মীসহ হাজার হাজার গণতন্ত্রকামীকে জেলে ভরেছে, স্বাধীন গণমাধ্যম নিষিদ্ধ করেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অচল করেছে। কিন্তু এমন ব্যাপক নিপীড়ন ও নিবর্তনমূলক ব্যবস্থার পরও দেশটির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সাধারণ মানুষের মিছিল, বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর থামানো যায়নি। বলা বাহুল্য, মিয়ানমারের মানুষ নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
শুধু এই নয়, দেশটির পরিস্থিতি ভিন্ন মাত্রায় অগ্রসরের লক্ষণও ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে। গণতন্ত্রকামী গণমানুষের গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিলে আগে থেকেই সংগ্রামরত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ক্রমান্বয়েই সশস্ত্র আন্দোলনের পথে হাঁটছে। সাধারণ মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে। বার্মা বা মিয়ানমারে এমনিতেই বহুবিধ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র তৎপরতা আছে। তারা বছরের পর বছর নিজস্ব অঞ্চলে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে চলেছে। এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে সর্বস্তরের মানুষের সেনাবাহিনী বিরোধিতা। অতএব, বর্তমান পরিস্থিতিকে সেনাবাহিনী মেরে-পিটিয়ে শান্ত করতে সক্ষম হবে, ভাবার কারণ নেই।
সবাই জানি, বাংলাদেশের সীমানাসংলগ্ন আরাকান বা রাখাইনের ভূমিতে ক্ষুদ্র রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যুগের পর যুগ বার্মা বা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিপীড়ন চালিয়ে গেছে! সে কারণে সত্তর দশকের শেষ থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা তাদের শত বছরের ভিটেমাটি ফেলে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছিল। ২০১৭ সালে সেই উদ্বাস্তু জনস্রোত অতীতের সব সংখ্যা ছাপিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কিছু সমবেদনা, কিছু ত্রাণ এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমালোচনা ছাড়া বিশেষ কিছু পায়নি এ ভাগ্যহত মানুষ। তারা আজও নিজের ঘরবাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। আমেরিকাসহ বিশ্ব মোড়লেরাও এমন কিছু করেনি যাতে বিশ্বের অন্যতম বড় ও দীর্ঘতম এ মানবাধিকার লঙ্ঘনকে রুখে দাঁড়ানো যায়। তবে বাংলাদেশের মতো একটি ক্ষুদ্র দেশ, যার না আছে শক্ত অর্থনীতি, না আছে বাড়তি ভূমি ও সম্পদ, যেভাবে বিপন্ন মানুষকে গ্রহণ করেছে, আশ্রয় দিয়েছে, তাকে মানবতার অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত বলতে হবে।
তবে আমার ধারণা, সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার পরিস্থিতি সবিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্ববাসীকে নাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জো বাইডেন প্রশাসন থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তারাজ্য, জাপান এবং প্রায় প্রতিটি অর্থবহ বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যা কার্যকরভাবে সেনাবাহিনীর অবৈধ লোভ-লালসার প্রতিবন্ধক হতে পারে।
অতিসম্প্রতি দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের দুটি বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানি। এদের একটি ফ্রান্সের ‘টোটাল’ এবং আরেকটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেভরন’। এরা সামরিক আধিপত্যের প্রতিবাদে, মুখ্যতই গণতন্ত্রকামীদের সমর্থনে, মিয়ানমারে তাদের যৌথ মালিকালাধীন কোম্পানির তহবিল বিতরণ বন্ধ করেছে। এ পদক্ষেপকে বিশ্বের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে প্রথম ও কার্যকর পদক্ষেপ বলা যায়, যা মিয়ানমারের জান্তাকে বেকায়দায় ফেলবে। শুধু তাই নয়, এ দুই বহুজাতিক কোম্পানি প্রকাশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে দেশের গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের বিবৃতিতেও সেই মনোভাব তারা সুস্পষ্ট করেছে।
এর বাইরেও এবারকার ঘটনাপ্রবাহে জান্তা সরকার কার্যকর প্রতিরোধের সম্মুখীন হবে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে, আগে যা দেখা যায়নি। দেশকে গণতন্ত্রের পথে নিতে গণতন্ত্রী নেত্রী সু চি সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। যদিও সে হাত মেলানো ছিল কৌশলগত, তথাপি বলতেই হবে বিশ্বজুড়ে যে ইমেজ ও সম্মান তিনি লাভ করেছিলেন, তার সবিশেষ ক্ষতি সু চি নিজেই করেছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। ফলে পৃথিবীর বহু সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সু চিকে তাদের দেওয়া সম্মান ফিরিয়ে নিয়েছে। সু চি গণতন্ত্র ও মানবিকতার নেত্রী থেকে কার্যত এক ‘ভিলেনে’ পরিণত হয়েছেন।
দৃশ্যতই দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগি নীতি ভালো পরিণতি ডেকে আনেনি। সু চি নতুন করে জান্তার আক্রোশে পড়েছেন, তাকে কারারুদ্ধ হতে হয়েছে, এমনকি পরিণতিতে স্মরণাতীতকালের বড় রক্তপাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে মিয়ানমারকে। গণতন্ত্রকামীরা ফুঁসে উঠেছেন। সু চি তার আগের সম্মানে ফিরতে চলেছেন। মধ্যাঞ্চলীয় মাইংইয়ান, অংলান যেমন কেঁপে উঠেছে, তেমনি ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় হাখাসহ প্রায় প্রতিটি শহরাঞ্চল জান্তাবিরোধী জনরোষে ফেটে পড়েছে। সব ধরনের দমন-পীড়ন অগ্রাহ্য করেই জান্তাবিরোধী প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নামছে। এসব তৎপরতায় আরও একটি বিষয় দেখা গেছে, দেশটির যেখানে চীনা-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা কারখানা আছে, সেখানে আগুন ধরিয়েছে গণতন্ত্রকামীরা। মানবাধিকার সংগঠন ‘অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স’ (এএপিপি) সেনাবাহিনীর অব্যাহত হত্যাযজ্ঞের বিস্তারিত প্রতিবেদন দিয়ে চলেছে। মোটকথা, মিয়ানমার হয়ে উঠেছে এক রক্তাক্ত জনপদ।
বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চীনের দিক থেকেও কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। চীনা সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানা ‘ভয়াবহ আক্রমণে লন্ডভন্ড’ হয়েছে। এতে ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি চীনা কর্মী আহত হয়েছে। চীনের দূতাবাস জেনারেলদের সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে চীনের সখ্য সুপ্রাচীন। চীনবিরোধীরা বরাবরই প্রশ্ন তুলেছেন, চীন তার একক আধিপত্য চায় মিয়ানমারে। অতএব, এবারের সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার পর দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের ভূমিকা নিয়ে নানা কথাবার্তা চলবে এটিই স্বাভাবিক। অনেকেই মনে করেন গণতন্ত্রপন্থিদের এবারের বিক্ষোভ চীনকে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেকায়দায় ফেলবে। অনেকে এটিও মনে করেন, সু চি চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে গিয়েছিলেন, যা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে গভীরভাবে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। ফলে এ অভ্যুত্থান ঘটেছে। তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ভাষ্যের সমর্থনে বলা হচ্ছে, সু চির দাতব্য প্রতিষ্ঠান চীনের রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছে।
বিশ্ব গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদনও বেরিয়েছে যে, চীনের মধ্যস্থতায় সু চি বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের আবার মিয়ানমারে ফেরত নিতে রাজি হয়েছিলেন, যা সেনাবাহিনী মেনে নিতে পারেনি। তারা অভ্যুত্থান করেছে।
কথা হচ্ছে, সু চি যদি সত্যি সত্যিই চীনের মধ্যস্থতায় সাড়া দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি হয়ে থাকেন, তাহলে তা ছিল মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় চীনের একটি বড় উদ্যোগ। অতএব, এ অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ওপর চীনের সমর্থন উঠে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনো তেমনটা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। তবে চীনের কথিত ‘অসন্তুষ্টি’ কমানোর জন্য জান্তা সরকার কিছু করে কিনা, তা পর্যবেক্ষণের বিষয়। সব মিলিয়ে মিয়ানমারে চীনের নীতি কী হবে, তা এখনো পর্যন্ত কৌতূহলের বিষয়।
এমনটাও মনে করেন অনেকে যে, চীনের সম্মতি ছাড়া নির্বাচিত সরকার হটানোর মতো একটি কাজ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী করতে পারে না। মিয়ানমারেও এমনটা কেউ বিশ্বাস করে বলে মনে হয় না। অতএব, গণতান্ত্রিক সরকার উলটে দেওয়ার এ অভ্যুত্থান চীনকে সুবিধাজনক অবস্থান দিতে পারেনি। গণমানুষের চীন বিরোধিতা আজ মিয়ানমারের এক প্রকাশ্য ঘটনা। যুবসমাজ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তাতে চীনের ভাবার বিষয় আছে বৈকি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন আদিবাসী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের উত্তেজনা আছে। কেউ কেউ এটিও মনে করেন, এ পরিস্থিতি প্রভাব খাটানোর সুযোগ করে দিয়েছে বেইজিংকে। সত্যাসত্য যাই থাক, মিয়ানমারের আদিবাসী শান্তি প্রক্রিয়ায় চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যদিকে মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশের, এমনকি ভারতের প্রভাবকেও প্রতিহত করতে চায় চীন। এ একক আধিপত্যবাদী মনোভাবকে সবাই যে ভালো চোখে দেখবেন, তা তো নয়।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভ চীনকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলেছে, বলাই বাহুল্য। গণতন্ত্রকামীরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পাশাপাশি চীনকেও গণতন্ত্রের প্রতিবন্ধক হিসাবে তুলে ধরছেন। কোনো কোনো মহল মনে করেন, চীনের দক্ষিণ এশীয় নীতি ক্রমান্বয়েই সংকটের কারণ হচ্ছে। মিয়ানমার ও নেপালের ঘটনাবলিতে দেশটির ভূমিকা দেশ দুটিতে অসন্তোষ বাড়িয়েছে। মালদ্বীপ ও শ্রীলংকায় কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠায় চীনের নীতি ভালো ফলাফল আনেনি। ভারতের জনগণের মধ্যেও চীনবিরোধী মনোভাব অনেক বেড়েছে। শ্রীলংকায় ঋণ-সুনামি বড় এক উদ্বেগের কারণ হয়েছে। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে স্থানীয় বালুচরা ক্ষোভের আগুন ধরিয়েছে।
চীন এমনিতেই পশ্চিমা বিশ্বের ভয়ের কারণ। অর্থনীতি, বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত বিস্ময়কর বিকাশে। বাংলাদেশেও আছে দেশটির বিশাল উন্নয়ন অংশগ্রহণ। কিন্তু অতিসম্প্রতি চীনের পক্ষ থেকে চতুর্রাষ্ট্রীয় ‘কোয়াড’ সহযোগিতায় বাংলাদেশের যোগদানের প্রশ্নে অযাচিতভাবে যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তা জনমতে প্রভাব বিস্তার করেছে। এ উদ্যোগটি কতটা সফল হবে তা নিয়ে নানা মত আছে। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও এ জোটের যৌক্তিকতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছিলেন। প্রায় এক দশক ধরে নামের উপস্থিতি বজায় রাখলেও এর কোনো বাস্তব অগ্রগতি কারও চোখে পড়েনি। তবে নতুন মর্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার পূর্বসূরির চেয়ে এক ধাপ এগিয়েছেন। তিনি কোয়াড নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ন্যাটোর মতো একটি জোট হিসাবে এশিয়ায় কোয়াড হয়তো দাঁড়াতে পারে। হয়তো এসব ভেবে রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে চীন। হয়তো আরেকটি সামরিক বলয় তৈরি হবে এ অঞ্চলে। যদি তা হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই এশিয়াজুড়ে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা হবে, যা শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে বড় প্রতিবন্ধক হতে পারে।
হারুন হাবীব : কথাসাহিত্যিক, পর্যবেক্ষক