পাঠ্যক্রম পরিবর্তনে সচেতন হতে হবে
মাছুম বিল্লাহ
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসছে। বিভিন্ন দেশে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও বাস্তবায়ন সাধারণত দশ থেকে বারো বছর পরপর করা হয়ে থাকে। আর বাংলাদেশে সেটি করা হচ্ছিল অনেক বিলম্বে; তবে এবার যেন করা হচ্ছে একটু বেশি আগে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি ১৯৮১ সালে প্রথম বাস্তবায়ন শুরু হয় ষষ্ঠ শ্রেণিতে। তার পনের বছর পর দ্বিতীয়বার বাস্তবায়ন শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। তৃতীয় আবর্তনের শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয় ২০১১-১২ সালে, যা বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০১৩ সালে। দ্বিতীয়টি থেকে তৃতীয়টির মধ্যে সময়ের পার্থক্য ছিল সতের বছর।
কিন্তু এবার যেটি করা হচ্ছে তা সাত-আট বছর পর। তবে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বিবেচনায় নিলে দ্রুত করাটা অনেকটাই সমীচীন। তবে এটিও মনে রাখতে হবে, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি করার পর পুরো শিক্ষক সমাজকে কোনো না কোনো উপায়ে সেগুলোর সঙ্গে পরিচিত করাতে হয়। তা না হলে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কাক্সিক্ষতভাবে সম্পন্ন হয় না।
তাড়াহুড়ো করে করার জন্য করা কিংবা রাজনৈতিক কোনো কারণে এ বিষয়ে হাত দিলে তার ফল খুব একটা ভালো না হওয়ার সম্ভাবনাই থাকে, যার প্রমাণ আমরা কয়েকবার পেয়েছি। এক্ষেত্রে ২০০৪-০৫ সালে একীভূত শিক্ষা চালু করার কথা হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। সৃজনশীল প্রশ্ন চালু করে ভালো কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করে জিপিএ-৫ এর ছড়াছড়ি অথচ মেধা যাচাই হচ্ছে না।
শিক্ষাব্যবস্থায় যে পরিবর্তন আসছে তাতে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান না অন্য কোনো শাখায় পড়বে, তা ঠিক হবে একাদশ শ্রেণিতে। এর আগে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে অভিন্ন দশটি বিষয় পড়তে হবে। বইয়ের সংখ্যাও এখনকার চেয়ে কমবে। বিষয়বস্তু বদলাবে। আর এসএসসি পরীক্ষা হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক হবে, যার ভিত্তিতে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে।
একাদশে দুটি পরীক্ষা হবে- এটি একটি ভালো প্রস্তাব বলে মনে হচ্ছে। কারণ, প্রথমবর্ষে ঐচ্ছিক সব বিষয়ের প্রথমপত্র পড়ানো হয়, সেগুলোর ওপরে পরীক্ষা নেয়া হলে শিক্ষার্থীরা সেগুলো ভালোভাবে পড়বে। দ্বিতীয় বছরে দ্বিতীয়পত্র পড়ানো হয়, সেগুলোর ওপর আলাদা পরীক্ষা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যক্রমের বই যাবে ২০২১ সালে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নেয়া হবে ২০২৩ সালে, আর মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে ২০২৪ সালে।
২০২৫ সাল থেকে উচ্চমাধ্যমিকে দুটো পাবলিক পরীক্ষা হবে। নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথাগত কোনো পরীক্ষা থাকবে না। এটিও চমৎকার প্রস্তাব যদি বাস্তবায়ন করা যায়। পরিমার্জিত এ শিক্ষাক্রম হবে যোগ্যতা ও দক্ষতাভিত্তিক।
তবে অস্পষ্টতা থেকে যাচ্ছে কয়েকটি ক্ষেত্রে। যেমন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না নিয়ে কীভাবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা যায়, তা পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা হয়নি। শিক্ষা দক্ষতাভিত্তিক হলে হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া উচিত। কিন্তু তার কোনো দিকনির্দেশনা এখন পর্যন্ত প্রকাশিত খবরগুলোয় পাওয়া যায়নি।
বর্তমান পরিকল্পনা পাস হলে ২০২৫ সাল থেকে একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে একজন শিক্ষার্থী কোন শাখায় পড়বে- যেমন বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক ইত্যাদি- তা ঠিক হবে। তখন উচ্চমাধ্যমিকে ছয়টি বিষয়ে ১২টি পত্র থাকবে। এর মধ্যে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি- এ তিন বিষয় সবার জন্য বাধ্যতামূলক হবে। এর সঙ্গে একজন শিক্ষার্থী তার পছন্দের তিনটি বিষয় নেবে, যার প্রতিটির জন্য তিনটি পত্র থাকবে।
বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিকে যে কয়টি বিষয়ের পরীক্ষা একসঙ্গে হয়, সেগুলোই একাদশ ও দ্বাদশে ভাগ করে হবে। দুটো পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির ফল প্রকাশিত হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের চাপ অনেকটা কমে যাবে। এসব প্রস্তাব ও পরিকল্পনা নিয়ে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের কাজ করছে এনসিটিবি। প্রথম, দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে নতুন পাঠ্যবই পাবে।
পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের নতুন বই দেয়া হবে। আগামী মার্চের মধ্যে শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করে পর্যায়ক্রমে ২০২৫ সালে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পুরোপুরি শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হবে। এসএসসির পরীক্ষা হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। এটিকেও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ বলা যায়।
পৃথিবীর অনেক দেশে স্কুল পর্যায়ে পাঠ্যসূচিতে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা, বিরূপ পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাওয়াতে বাস্তব জ্ঞান অর্জনে বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়, পাঠ্যসূচির ব্যবহারিক অংশে সেগুলো সমাধানের উপায় সংযোজিত হতে পারে। সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে।
এটি শুধু যে চালকের অদক্ষতা ও যানবাহনের ত্রুটির কারণেই সংঘটিত হচ্ছে তা নয়, পথচারীদের অসাবধানতা ও আইন না মানাও এর একটি বড় কারণ। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুকে রাস্তায় চলাচল ও পারাপার, ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলার পদ্ধতি রাস্তায় নিয়ে সরেজমিন শেখানোর বিষয়টি প্রাথমিক ও জুনিয়র স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। ইদানীং বজ্রপাতে মৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। গ্রাম-শহর সব জায়গাতেই বজ্রপাতে মৃত্যুর খবর মিডিয়ায় আসছে।
বৃষ্টির দিনে বৈরী আবহাওয়ায় একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সারা দেশে ব্যাপক হারে মানুষ মারা যাচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নিরাপদ ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করা যেতে পারে পাঠ্যসূচির মাধ্যমে।
পাঠ্যসূচি প্রণয়ন ও পরীক্ষা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে অবশ্যই দেশের প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ আমাদের ছেলেমেয়েরা কেমন পরিবেশে বেড়ে উঠছে, সেটি একটি বিবেচ্য বিষয়। তা না হলে বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আওতায় আনার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। দেশীয় ও বৈশ্বিক চাহিদার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। সেই পরিবর্তনের কাজটি গবেষণাভিত্তিক জ্ঞানচর্চার মধ্য দিয়ে হওয়ার কথা।
মালয়েশিয়া তাদের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়কে কিউএস র্যাংকিংয়ে ৩০০-এর মধ্যে আনতে পেরেছে, সেখানে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণাভিত্তিক জ্ঞানচর্চার কাজটি কতটুকু করতে পেরেছে, সেটি ভাববার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর পার হয়ে। এগুলোর সঙ্গে শিক্ষাক্রমের একটি সামঞ্জস্য থাকা উচিত।
আমরা যদি বিগত ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাই গড় পাসের হার ৮৪.৬৮ শতাংশ। এটি দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আওতায় আনার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফসল। কেননা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৯ শতাংশই তরুণ। তাদের যদি শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা না যায়, তাহলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে যে উন্নত দেশে পরিণত করার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। অর্থমন্ত্রী গত বছর বলেছিলেন, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়া সম্ভব নয়।
কারণ এ শিক্ষাব্যবস্থা টেকনোলজি বেজড নয়। এটি অস্বীকার করার উপায় নেই, আমরা যে ডিজিটাল বিপ্লব বা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা ভাবছি, সেটি বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রাইমারি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত পঠন ও পাঠনে পরিবর্তন আনতে হবে, টেকনোলজির সংযোগ ঘটাতে হবে। আমাদের দেশে যেমন শিক্ষিত বেকার আছে, তেমনি আবার দক্ষ জনবলেরও অভাব রয়েছে। কাজেই শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, প্রযুক্তিভিত্তিক করতে হবে; যাতে করে বৈশ্বিক চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা যায়।
আবার শুধু প্রযুক্তিনির্ভর করলেই হবে না, শিক্ষিতদের মানবিক হতে হবে, তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগাতে হবে। কাজেই কারিকুলাম তৈরি করা অত্যন্ত দুরূহ একটি কাজ। এটি হুট করে বা কয়েকজন মিলে তৈরি করলেই হবে না। এখানে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা, পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ ইত্যাদির মাধ্যমে করতে হবে।
১৯৯০ সালে এসএসেতি পাসের হার ছিল মাত্র ৩১.৭৩ শতাংশ এবং ২০০১ সালে ছিল ৩৫.২২ শতাংশ। ১৯৯০ সালের আগে পাসের অবস্থা ছিল আরও নাজুক। এটি প্রমাণ করে যে, দীর্ঘ সময় ধরেই দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যে পরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থার ঘাটতি ছিল। যেসব শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের অনেকেই হয়তো কোনো না কোনো বিষয়ে ভালো ছিল। যদি পরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা থাকত, তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের বিষয়ভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড় তুলতে পারতাম। শিক্ষার বহুবিধ সংজ্ঞার মধ্যে একটি হচ্ছে : Education is the process of facilitating learning or the acquisition of
knowledge, skill, values, beliefs and habits. বর্তমান বিশ্বে ফর্মাল, ইনফর্মাল ও নন-ফর্মাল এ তিন ধরনের শিক্ষাই শিক্ষা হিসেবে স্বীকৃত। শুধু বিদ্যালয়ে যাতায়াত করলে ও পড়লে পুরো বা আদর্শ শিক্ষা অর্জিত হয় না। মানুষ বিভিন্নভাবে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। শিক্ষা ও দক্ষতা একটি অপরটির পরিপূরক। একটি ব্যতীত অন্যটি পঙ্গু। ‘লার্নিং বাই ডুয়িং’ পদ্ধতির প্রবর্তন এ ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনেব বলে আমাদের বিশ্বাস।
বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফর অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। পাঠ্যসূচি মোতাবেক আহরিত তত্ত্বীয় জ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগ দেখানোর জন্য সাধারণত ওইসব সফরের আয়োজন করা হয়। এতে ওরা যা দেখল, বুঝল, শিখল ইত্যাদির ওপর কখনও এককভাবে, কখনও আবার গ্রুপ ভিত্তিতে সার্বিক মতামত, পর্যবেক্ষণসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়, উপস্থাপন করতে বলা হয়।
এটি একটি বাস্তবধর্মী শিক্ষা। নতুন কারিকুলামে এ ধরনের বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে সংযোজন করা উচিত। খেলার ছলে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা গেলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও কর্মে মনোযোগী হবে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সব কাজ ও শিক্ষাকে উপভোগ্য হিসেবে গ্রহণ করবে, কাজ ও মানুষের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মানবোধ জন্ম নেবে, যার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে কাজ ও কাজের মানুষকে ঘৃণা বা অবজ্ঞা করার সংস্কৃতি থেকে ছেলেমেয়েদের বাইরে আনা সম্ভব হবে।
কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ আবদুস সাত্তার মোল্লা বলেছেন, ‘আদর্শ প্রক্রিয়ায় সর্বনিু স্তর থেকে ধাপে ধাপে উপরের শ্রেণিতে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম এভাবে একটি করে ওপরের শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করতে ১২-১৩ বছর সময় লেগে যায়। তাই পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম এবং পুরনো শিক্ষাক্রম একসঙ্গে বাস্তবায়ন করতে গেলে তাড়াহুড়ো করে পাঠ্যপুস্তক রচনা করতে হয়। এভাবে রচিত পাঠ্যপুস্তকের মান ভালো হয় না।
জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ বাস্তবায়নে একসঙ্গে নয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক রচনা করতে গিয়ে তেমনটাই হয়েছিল। পরে শত কেঁচে গণ্ডূষ করেও ঈপ্সিত মানে উন্নীত করা সম্ভব হয়নি।’ কারিকুলাম পরিবর্তন বা পরিমার্জনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের এবং কর্তৃপক্ষের উচিত জনাব মোল্লার উক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখা।
মাছুম বিল্লাহ : ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচিতে কর্মরত, সাবেক ক্যাডেট কলেজ, রাজউক কলেজ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক
masumbillah65@gmail.com