তৃতীয় মত
একুশ শতকের রাজরাজড়ার উপাখ্যান
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের নাতি-দম্পতি এবং প্রিন্স চার্লস ও ডায়ানার পুত্র প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগানকে নিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবার বিপাকে পড়েছে। এটা যে নতুন করে ঘটল তা নয়। লোকে বলে রাজরাজড়ার কাহিনী এমন ধরনেরই হয়। ব্রিটেনের রাজপরিবারে এই বিপত্তি বহুকাল ধরে লেগে আছে। সাম্প্রতিক হ্যারি-মেগান কেচ্ছা নিয়ে ইউরোপিয়ান মিডিয়ায় রীতিমতো হইচই শুরু হয়েছে। হ্যারি ও মেগান এখন প্রায় প্রত্যহ লন্ডনের সংবাদপত্রে সংবাদ শিরোনাম।
শরৎচন্দ্র যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে দেখতেন, তার হিন্দু মধ্যবিত্ত পরিবার নিয়ে লেখা যেসব কাহিনী এখন চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়ে দর্শকের চোখে জল ঝরায়, তা ব্রিটিশ রাজপরিবারে হ্যারি-মেগান কাহিনীরূপে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। শরৎচন্দ্র বেঁচে ছিলেন বিশ শতকে। হ্যারি-মেগান উপকথার জন্ম একুশ শতকে। হ্যারি ও মেগান স্বেচ্ছায় ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে নির্বাসন নিয়েছেন। রাজকীয় সব সুবিধা-সুযোগ ত্যাগ করে কানাডায় সাধারণ নাগরিক হিসেবে বসবাসের ব্যবস্থা নিয়েছেন। রানীর উপস্থিতিতে স্যান্ড্রিংহাম প্যালেসে রাজপরিবারের একত্র হয়ে বৈঠক করা হ্যারির সিদ্ধান্ত টলাতে পারেনি। হ্যারি এখন রাজপুত্র নন, তিনি এখন কানাডায় প্রাইভেট সিটিজেন হতে যাচ্ছেন।
একুশ শতকেও ব্রিটিশ রাজপরিবার টিকে আছে। তাদের প্রতি রয়েছে ব্রিটেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন। এটা এই পরিবারের শক্তির ভিত্তি। সে জন্যই তারা এখনও টিকে আছেন। এ ব্যাপারে বর্তমান রানী এলিজাবেথ কৃতিত্বের দাবি করতে পারেন। একজন নিয়মতান্ত্রিক শাসকের যা ভূমিকা, তা থেকে তিনি একতিল নড়েননি। তার উদারতা, সংযত ও শোভন আচরণ, ব্রিটেনের স্বার্থ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির কাজে সাফল্য তাকে শুধু ব্রিটেনের জনগণের মধ্যে নয়, কমনওয়েলথের ভেতরে এবং বাইরেও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
রানী কমনওয়েলথকে দারুণ ভালোবাসেন। জানা যায়, ব্রিটেন যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়, তখন কমনওয়েলথ গুরুত্ব হারাবে ভেবে দুঃখিত হয়েছিলেন। একবার মার্গারেট থ্যাচারের প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে পাশে বসিয়ে ক্রিসমাসের ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম লন্ডনে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যান, তখন রানী বাকিংহাম প্যালেসে তাকে একক সাক্ষাৎকার দ্বারা বিশেষ সম্মান দেখিয়েছিলেন।
রানী এলিজাবেথের এত সুনাম এবং জনচিত্তজয়ী ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও রাজপরিবার বহুকাল ধরে বিপত্তি এড়াতে পারছে না। রানীর ব্রিটিশ সিংহাসনে বসার কথা ছিল না, তিনি যখন ছোট, তখন সিংহাসনে আসীন ছিলেন তার চাচা অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড। তার বাবা ছিলেন ডিউক অব ইয়র্ক। কিন্তু অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড বা ডিউক এক মার্কিন বিধবা মহিলার প্রেমে পড়ে সিংহাসন ত্যাগ করেন। এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য প্যারিসে চলে যান। তার বিরুদ্ধে নাৎসি কানেকশনের অভিযোগ উঠেছিল।
অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড সিংহাসন ত্যাগ করে বিদেশে চলে যাওয়ায় তার ছোট ভাই ডিউক অব ইয়র্ক কিং জর্জ দ্য সিক্সথ বা রাজা ষষ্ঠ জর্জ নাম নিয়ে সিংহাসনে বসেন। তার মৃত্যুর পর তার কন্যা লিলি এলিজাবেথ কুইন সেকেন্ড এলিজাবেথ পরিচয়ে সিংহাসনে বসেন। তার রাজত্বকাল পারিবারিক সুখের নয়। তার ছোট বোন প্রিন্সেস মার্গারেট তাদেরই অশ্বশালার কর্মচারী টাউনসেন্ডের প্রেমে পড়েন এবং তাকে বিয়ে করতে চান। অষ্টম অ্যাডওয়ার্ডের মতোই ব্রিটিশ সরকার টাউনসেন্ড-মার্গারেটের বিবাহে বাধা দেন। বড় বোন রানীও এই বিয়েতে অনুমোদন দিতে অসম্মতি জানান। মার্গারেট-টাউনসেন্ড সম্পর্ক ভেঙে যায়। পরবর্তীকালে মার্গারেট বিয়ে করলেও এই বিয়ে সুখের হয়নি। অনেকেই মনে করেন, মার্গারেট তার প্রথম প্রেম ভুলতে পারেননি। তার ফলেই তার উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন এবং অকাল মৃত্যু। ছোট বোনের মৃত্যুতে রানী এলিজাবেথ গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছিলেন।
তারপরও ব্রিটিশ রাজপরিবারকে বাম বিধি ছাড়েনি। ছোটখাটো বহু দুর্ঘটনা ঘটেছে এই পরিবারে। কিন্তু রানী গভীর সংকটে পড়েন যখন তার বড় ছেলে, সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস এবং তার স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়ানার বিবাহ সম্পর্ক ভাঙনের মুখে পড়ে। ডায়ানা ছিলেন অপরূপ সুন্দরী। কিন্তু ছিলেন সাধারণ অভিজাত পরিবারের কন্যা। তার বাবা অবশ্য ‘আর্ল’ ছিলেন। তবু ডায়ানা সাধারণ পরিবারের মেয়ে বলে রাজপরিবারে গণ্য হন। রাজকীয় দায়িত্ব পালনে এবং সাধারণ মানুষের সেবাকার্যে আন্তরিকতা দেখিয়ে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ডায়ানা। চার্লস এবং ডায়ানা কোথাও সফরে গেলে মানুষ ডায়ানাকে দেখার জন্য ভিড় জমাত।
রূপ এবং জনপ্রিয়তাই ডায়ানার কাল হয়। ডায়ানা-চার্লসের দুই পুত্র উইলিয়াম এবং হ্যারিকে জন্ম দিলেও চার্লস শিগগির ক্যামেলিয়া নামের এক বয়স্কা ও বিবাহিতা মহিলার দিকে ঝুঁকে পড়েন। ডায়ানা সেটা জানার পর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান। চার্লস ডিভোর্সি ক্যামেলিয়াকে বিয়ে করতে চান। রানী তাতে অনুমোদন দিতে প্রথমে অসম্মত ছিলেন। পরে এই সম্মতি দেন। ডায়ানা মিসরের আল ফায়াদ মুসলিম পরিবারের ডডি ফায়াদের প্রেমে পড়েন এবং প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় উভয়েই মারা যান। ডায়ানার মৃত্যুতে শুধু ব্রিটেন নয়, সারা বিশ্বে যে শোকের মাতম দেখা দিয়েছিল তা অভূতপূর্ব। তখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন টনি ব্লেয়ার। তিনি ডায়ানাকে প্রিন্সেস অব দ্য পিপল বা জনগণের রাজকুমারী বলে অভিহিত করেন।
প্যারিসের এই সড়ক দুর্ঘটনা ডডির পিতা আল ফায়াদ মেনে নেননি। তিনি বলেছেন, এটা পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ জন্য তিনি রাজপরিবার ও ব্রিটিশ এসটাবলিশমেন্টকে সন্দেহ করেছেন এবং আদালতে মামলাও করেছিলেন। আল ফায়াদের অভিযোগ ছিল, ব্রিটেনের রাজপরিবারের এই বধূ এবং ভবিষ্যৎ রাজার মাতা এক অশ্বেতাঙ্গ মুসলমান পরিবারের ছেলেকে বিয়ে করতে যাচ্ছে, এটা তাদের সম্মান ও মর্যাদা হানিকর। তাকে এবং তার প্রেমিককে তাই অত্যন্ত চাতুরীর সঙ্গে হত্যা করানো হয়েছে। এই অভিযোগ ও গুজব এখন পর্যন্ত গুজব হয়েই রয়েছে। ডায়ানার মৃত্যুরহস্য এখন পর্যন্ত উদ্ঘাটিত হয়নি।
ডায়ানার মৃত্যুর এই রহস্যের ছায়াতলেই শিশু উইলিয়াম ও হ্যারি বড় হয়েছেন। পিতার স্নেহ তারা কতটা পেয়েছেন তা জানা যায় না। তবে দাদি রানী এলিজাবেথের স্নেহ পেয়েছেন যথেষ্ট। মায়ের অকাল মৃত্যুতে উইলিয়াম ও হ্যারি দুজনেই আঘাত পেয়েছেন, তবে হ্যারি সেই আঘাতে প্রকাশ্যেই মুষড়ে পড়েছিলেন। মায়ের মৃত্যু বড় ভাই উইলিয়ামের মতো মেনে নিতে পারেননি। ডায়ানার মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনার ফল এটা সম্ভবত তাকে বিশ্বাস করানো যায়নি।
রাজপরিবারের বিরুদ্ধে একটা দারুণ ক্ষোভ মাঝে মাঝে তার কথাবার্তায় প্রকাশ পেত। বাজারে গুজব ছিল, তার দাদা ডিউক অব এডিনবরা ডায়ানাকে পছন্দ করতেন না। তার সঙ্গে সুযোগ পেলে খারাপ ব্যবহার করতেন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের বংশগত ট্র্যাডিশন ছিল তাদের পুত্র যারা রাজা হবেন, তাদের জন্য ইউরোপের অন্য রাজপরিবারের মেয়েকে বধূ করে আনা। ডায়ানা কোনো রাজপরিবারের মেয়ে ছিলেন না; অথচ চার্লসের স্ত্রী হিসেবে ভবিষ্যতে রানী হতে যাচ্ছেন, এ জন্য রাজপরিবারের কেউ কেউ তাকে ঈর্ষা করতেন এবং সাধারণ ঘরের মেয়ে হিসেবে ট্রিট করতেন। এসব খবর অথবা গুজব হয়তো হ্যারি বিশ্বাস করতেন। তাই মাঝে মাঝে রাজপরিবার সম্পর্কে বিরূপ ও স্যাটায়ারমূলক কথা বলতেন।
এটা অনেকের ধারণা, মায়ের মৃত্যুর শোক এবং এ জন্য রাজপরিবারের প্রতি ক্ষোভে হ্যারি কখনোই কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি আরেক দাদা ডিউক অব উইন্ডসরের মতো এক মার্কিন ডিভোর্সি নারীকে বিবাহ করেছেন এবং রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে বহুদূরে কানাডায় চলে গেলেন। ডিউক অব উইন্ডসর গিয়েছিলেন কাছেই প্যারিসে। হ্যারিকে নিয়ে রাজপরিবারের গণ্ডগোলটা বেশি পাকায় হ্যারি মেগানকে বিয়ে করার পর। মেগান একেবারেই অশ্বেতাঙ্গ সাধারণ ঘরের মেয়ে। পেশায় অভিনেত্রী ছিলেন। তার ওপর প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেছে।
বিশ শতকে কিং অষ্টম অ্যাডওয়ার্ড মিসেস সিম্পসন নামে এক আমেরিকান ডিভোর্সি মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। আভিজাত্যগর্বী ব্রিটিশ এসটাবলিশমেন্ট, পার্লামেন্ট তা মেনে নেয়নি। অনুরূপভাবে মার্গারেট-টাউনসেন্ড প্রেমও তারা মেনে নিতে পারেনি। তাদের বিয়ে করতে সম্মতি দেয়নি। কিন্তু একুশ শতকে জগৎ একেবারেই বদলে গেছে। ইউরোপের অধিকাংশ দেশে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর রাজতন্ত্রের উচ্ছেদ ঘটেছে। রাজপরিবারে আর নেই বললেই চলে। তাই রাজকন্যাও খুঁজে পাওয়া যায় না। সুইডেন, হল্যান্ড, জাপানের রাজকন্যারাও এখন সাধারণ ঘরের স্বামী গ্রহণ করে সুখে আছেন। ফলে মেগানের সঙ্গে হ্যারির বিয়েতে অমত থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশ এসটাবলিশমেন্টকে মত দিতে হয়েছে। রানীকেও দ্রুত সম্মতি দিতে হয়েছে। নইলে হ্যারি তাদের অসম্মতি মানতেন, তা মনে হয় না।
হ্যারি-মেগান বিয়ের আরেকটা দিক আছে। এই বিয়েতে রানী এবং প্যালেস অনেক ধুমধাম করেছে, কিন্তু মেগানের পরিবারের সদস্যদের একটু দূরে রাখতে হয়েছে। অভিযোগ, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যও করা হয়েছে। মেগান প্রিন্স হ্যারিকে বিয়ে করে প্রিন্সেস হতে পারেননি, হয়েছেন ডাচেস অব সাসেক্স। রানী প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রীকে ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অব সাসেক্স উপাধি দিয়েছেন। মেগানকে রানী যথেষ্ট স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও মেগান প্যালেসে এবং রাজপরিবারের কাছ থেকে সমমর্যাদা ও সম্মান পাননি বলে গুজব শোনা গেছে বহু সময়।
হ্যারির আগে তার বড় ভাই উইলিয়াম বিয়ে করেন ক্যাথিরিন মিডলটনকে। তাকে সেটি বলে ডাকা হয়। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই তারা এখন ডিউক এবং ডাচেস অব ক্যামব্রিজ। উইলিয়াম ভবিষ্যতের সম্রাটও বটে। উইলিয়াম ও কেটির বিয়ের উৎসবে যতটা জাঁকজমক হয়েছে তার চাইতে বহুগুণ বেশি হয়েছে হ্যারি-মেগান বিয়েতে। এটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়েছে। মিডিয়া মেগানকে ডায়ানার মতো তুলে ধরতে চেয়েছে। মেগানও সেবামূলক কাজে নেমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। যদিও উইলিয়ামের স্ত্রী এটা অস্বীকার করেছেন, তথাপি লোকমুখের রটনা হল, মেগানকে কেটি ঈর্ষা করতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে প্যালেস এবং ব্রিটিশ এসটাবলিশমেন্ট মেগানের দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়া এবং হ্যারির ওপর তার প্রভাব বাড়তে থাকায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।
এটা গুজব। এখন পর্যন্ত এর সত্যতা জানা যায়নি। যদি এই গুজব সঠিক হয়, তাহলে হ্যারি কি মেগানের ওপর কোনো ধরনের প্রাণহানিকর পরিকল্পিত হামলা সম্পর্কে ভীত হয়ে পড়েছিলেন? তাই মেগান শিশুসন্তানসহ আচম্বিতে কানাডায় চলে গেছেন। কানাডায় চ্যারিটি কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। হ্যারি রাজপরিবারের দায়-দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে কানাডায় পত্নী ও সন্তানকে নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? এসব প্রশ্নের জবাব অদূর ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে এমন সম্ভাবনা কম।
গোদের ওপর বিষফোঁড়া। একুশ শতকেও শত প্রশংসিত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের দীর্ঘ জীবনে বিড়ম্বনার অন্ত নেই। হ্যারি-মেগানকে নিয়ে যখন রাজপরিবার বিব্রত, তখন রানীর দ্বিতীয় পুত্র এন্ড্রুজ ঘটিয়েছেন আরেক কাণ্ড। তিনি নিজেকে নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন। ফলে রাজপরিবারের যেসব দায়িত্ব তিনি পালন করেন তা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তাকে আর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দেয়া হবে না। রানীকে তার দ্বিতীয় পুত্র সম্পর্কে এই ধরনের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। একুশ শতকেও ব্রিটেনে রাজতন্ত্র টিকে আছে এই কারণেই।
নারী কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত অভিযোগ মাথায় নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এবং বরিস জনসন এখনও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। আর ব্রিটেনের রাজপুত্র একই অভিযোগে রাজকীয় দায়িত্ব ও সম্মান থেকে বঞ্চিত- এটাই সম্ভবত একুশ শতকের পরিবর্তিত নৈতিকতাবোধ ও রাজনীতির বৈশিষ্ট্য।
[লন্ডন ১৮ জানুয়ারি, শনিবার, ২০২০]