জিডিপি প্রবৃদ্ধি মানেই উন্নয়ন নয়
এম এ খালেক
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০১:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
রাজধানীতে একটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) পরিচালক মারিও পেচ্চানি বলেছেন, গতানুগতিক উন্নয়ন ধারণা এবং প্রবৃদ্ধিমুখী চিন্তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ৬০ বছর আগের উন্নয়ন কৌশল এবং ধারণার সঙ্গে বর্তমান উন্নয়ন কৌশলের কোনো মিল নেই। কারণ এ সময়ে পৃথিবী অনেকটাই বদলে গেছে। নতুন বিশ্ব বাস্তবতায় উন্নয়নের বাস্তবসম্মত ধারণা খুঁজে বের করতে হবে।
ওইসিডি হচ্ছে প্যারিসভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৬১ সালে বিশ্বের ৩৪টি উন্নত দেশের অংশগ্রহণে।
মারিও পেচ্চানি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপীই এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। সর্বত্রই চলছে রাজনৈতিক বিরোধ।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন সেই বিরোধ ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। তিনি বলিভিয়ার উদাহরণ দিয়ে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বলিভিয়া বেশ ভালোই উন্নয়ন করছিল; কিন্তু দেশটির জনগণ এক সময় ভাবতে শুরু করে যে, তারা সরকারের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে।
সরকারের দুর্নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ আর সংশয় দেখা দেয়। দেশটির জনগণ তাদের এই সন্দেহ আর সংশয়ের প্রকাশ খুব ভালোভাবেই দেখিয়ে দেয় জাতীয় নির্বাচনে। চিলির উদাহরণ দিয়ে পেচ্চানি বলেন, দেশটি নিকট অতীতে বেশ ভালো দক্ষতা দেখিয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে।
কিন্তু সেই উন্নয়নের ছোঁয়া সাধারণ মানুষ ন্যায্যতার ভিত্তিতে ভোগ করতে পারেনি, দেশটির মানুষের আয় এবং সম্পদ বৈষম্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে দেশটিতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
অভিজ্ঞতার আলোকে মারিও পেচ্চানি মনে করেন, উন্নয়ন টেকসই ও কার্যকর করতে হলে তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
এই তিনটি বিষয় হচ্ছে, সামাজিক নিরাপত্তা ও পেনশন, উৎপাদনশীলতা এবং সরকারি সেবার মানোন্নয়ন। তিনি আরও বলেন, উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হতে পারছে না। বিশ্বের সর্বত্রই মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তারাই সবচেয়ে বিপদে রয়েছে।
কারণ তারা যে কর্মসংস্থান করছে, তার বেশিরভাগই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান অত্যন্ত ভঙ্গুর এবং তা কোনোভাবেই টেকসই নয়।
ওইসিডি পরিচালক মারিও পেচ্চানির এই বক্তব্য নানা কারণেই উল্লেখের দাবি রাখে। তিনি অত্যন্ত সময়োপযোগী বিষয়ের অবতারণা করেছেন। বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব দেশেই জিডিপি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়নের পরিমাপ করা হচ্ছে। কোনো দেশ বছরে কত শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করল, সেটিকেই উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
কিন্তু সেই উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষ কতটা ভোগ করতে পারল বা তারা উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারল কিনা, তা বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি অথবা মাথাপিছু গড় জাতীয় আয় দিয়ে কোনোভাবেই একটি দেশের সব মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি পরিমাপ করা যায় না। কারণ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে একটি দেশের বছরের গড় আয়। অন্যদিকে দেশের গড় জাতীয় আয় দিয়ে কখনই প্রতিটি মানুষের অর্থনৈতিক সাফল্য বা সমৃদ্ধি পরিমাপ করা যায় না।
কারণ একটি দেশের গড় জাতীয় আয় যদি ৫০ হাজার মার্কিন ডলার হয়, তাহলে এটা ভাবার কোনো অবকাশ নেই যে, দেশটির প্রতিটি মানুষের বার্ষিক আয় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। হয়তো এমন মানুষও সে দেশে আছে যার প্রতিদিনের আয় ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি।
আবার এমনও মানুষ আছে যাদের ৫ বছরে অর্জিত আয়ও ৫০ হাজার মার্কিন ডলার নয়। মাথাপিছু গড় জাতীয় আয় কখনই ব্যক্তি মানুষের সমৃদ্ধির নির্দেশক হতে পারে না।
আমরা যদি বিষয়টি বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করি, তা হলে কী দেখতে পাই? বর্তমানে বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের সেই সামান্য ক’টি দেশের অন্যতম, যারা উচ্চমাত্রায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে।
এ বছর বাংলাদেশ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৫টি উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তালিকায় থাকবে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
কিন্তু তাই বলে এই প্রবৃদ্ধির সুফল কি সবাই ন্যায্যতার ভিত্তিতে ভোগ করতে পারছে? বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে যেখানে মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যা ছিল ১২ শতাংশ, এখন তা ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
বাংলাদেশ এমনই এক দেশ যেখানে সৎপথে টাকা উপার্জন করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। কিন্তু অসৎভাবে অর্থ উপার্জন কোনো ব্যাপারই নয়। এখানে মোট শ্রমশক্তির বেশিরভাগই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। তারা আর্থিক সুবিধা পান খুবই কম।
তাদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রটি খুবই ভঙ্গুর। যে কোনো সময় কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অনেকেই আছেন যারা চাকরিতে নিয়োজিত থেকেও কার্যত বেকারের মতোই বাস করছেন।
অর্থনীতির পরিভাষায় কর্মসংস্থান বলতে যা বোঝায়, তা থেকে তারা অনেক দূরে রয়েছেন। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশের মতো কর্মক্ষম, যাদের বয়স ১৫ থেকে ৬০ বছর।
একটি দেশে এভাবে শ্রমশক্তির প্রাধান্য সৃষ্টি হলে তাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন একটি জাতির জীবনে এই অবস্থা একবারই আসে। যারা এই অবস্থার সুযোগ পরিপূর্ণভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে পারে, তারাই বিশ্ব অর্থনীতিতে মর্যাদার আসনে আসীন হতে পারে।
কিন্তু আমাদের দেশে কর্তৃপক্ষীয় পর্যায়ে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সম্পর্কে সচেতনতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে আমরা এই অবস্থার সুফল ভোগ করতে পারছি না। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুফল কাজে লাগাতে হলে দেশের মানুষের প্রতিটি হাতকে কর্মীর হাতিয়ারে পরিণত করতে হবে।
আর সেটা করতে হলে বেকার সৃষ্টির সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমে সম্ভব নয়। প্রতিটি মানুষকে ট্রেডভিত্তিক উপযুক্ত কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।
সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যাবে না। এ জন্য ব্যক্তি উদ্যোগ সৃষ্টির প্রতি জোর দিতে হবে। ব্যক্তি উদ্যোগ সৃষ্টি করতে হলে প্রয়োজন প্রাথমিক পুঁজির জোগান নিশ্চিত করা। কিন্তু প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্ভাব্য উদ্যোক্তাদের পুঁজির জোগান নিশ্চিত করতে পারছে না।
বাংলাদেশে ব্যাংক রয়েছে প্রায় ৬০টির মতো। আরও কিছু ব্যাংক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ভারতের মতো বিশাল দেশেও আমাদের মতো এত বিপুল সংখ্যক ব্যাংক নেই। তারপরও আমরা এখনও দেশের সব মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসতে পারিনি। ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তি একজন উদ্যোক্তার জন্য দয়া বা করুণা নয়। এটা তার দাবি।
কারণ এই ঋণের বিপরীতে ঋণগ্রহীতা নিয়মিত সুদসহ কিস্তি পরিশোধ করবেন। কিন্তু ব্যাংকে গেলে এক শ্রেণির কর্মকর্তার আচরণ দেখলে মনে হয় তারা বুঝি পৈতৃক সম্পদ থেকে কিছু অংশ ঋণগ্রহীতাকে দিয়ে দিচ্ছেন। প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থা উদ্যোক্তাদের পুঁজির চাহিদা মেটাতে পারছে না বলে তারা বাধ্য হয়েই বেসরকারি সংস্থার ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু সেই ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার হচ্ছে ২৪ শতাংশ বা তারও বেশি। প্রচলিত ব্যাংকগুলো ঋণ চাহিদা পূরণে সক্ষম হচ্ছে না।
অনেকেই মনে করেন, বেশি পরিমাণ ঋণ একটি দেশের অর্থনীতির দুর্বলতা হিসেবেই বিবেচিত হয়। কিন্তু আসলে তা নয়। ঋণ যদি উচ্চ উৎপাদনশীলতার কাজে ব্যবহার করা হয়, তা হলে সেটা কোনোভাবেই খারাপ নয়। বাংলাদেশের জিডিপি-ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট রেশিও দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে জিডিপি-ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট রেশিও সবচেয়ে বেশি হচ্ছে চীনে। তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের হার হচ্ছে ২১৫ শতাংশ। অর্থাৎ চীনের ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট জিডিপির ২১৫ শতাংশ।
জাপানের ক্ষেত্রে এটা ১৫৮ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার ১৪৮ শতাংশ, ভিয়েতনামে ১৩৩ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ১০১ শতাংশ, ভারতে ৭৫ শতাংশ, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এটা ৫২ শতাংশ। বাংলাদেশের জিডিপি-ইনভেস্টমেন্ট রেশিও মাত্র ৩৭ শতাংশ। এরও বেশিরভাগই আবার খেলাপি হয়ে আছে। ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট জিডিপি’র ৭২ শতাংশ হলে তাকে সন্তোষজনক বলে মনে করা হয়।
চীনের সাম্প্রতিক উন্নয়ন এটাই প্রমাণ করে যে, উচ্চমাত্রায় ঋণ গ্রহণ কোনোভাবেই খারাপ নয় যদি সেই অর্থ উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার করা যায়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ব্যাংকিং সেক্টরের ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দেশের ব্যাংকগুলোর ‘কস্ট অব ফান্ড’ বা তহবিল সৃষ্টিতে খরচ অত্যন্ত বেশি। দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ‘কস্ট অব ফান্ড’ বর্তমানে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৮ শতাংশ।
আমানতের ওপর উচ্চহারে সুদ প্রদান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উচ্চ বেতন-ভাতা প্রদান এবং প্রশাসনিক অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের জন্য ব্যাংকগুলোকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এই ব্যয় আরও অনেক বেশি। ব্যাংকগুলো চাইলেই রাতারাতি এ খরচ হ্রাস করতে পারবে না।
তাই তারা চেষ্টা করলেও এ মুহূর্তে কোনোভাবেই ‘কস্ট অব ফান্ড’ যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনতে পারবে না। একটি ব্যাংকের ‘কস্ট অব ফান্ড’ যদি সাড়ে ৮ শতাংশ হয়, তা হলে সেই ব্যাংক কীভাবে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান করবে? বর্তমানে ব্যাংকগুলোর অ্যাডভান্স-ডিপোজিট রেশিও (এডি-রেশিও) প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ৮৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ইসলামী ধারার ব্যাংকের ক্ষেত্রে এটা ৮৯ শতাংশ।
অর্থাৎ প্রচলিত ধারার একটি ব্যাংক যদি সাধারণ আমানতকারীদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগযোগ্য তহবিল সৃষ্টি করে, তা হলে সেই ব্যাংকটি ৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে।
অবশিষ্ট ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা স্ট্যাটুইটরি লিকুইডিটি রিজার্ভ (এসএলআর) এবং ক্যাশ রিজার্ভ রিক্যুয়ারমেন্ট (সিআরআর) বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা এই অর্থ ব্যাংক চাইলেও বিনিয়োগ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত এই ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার জন্যও ব্যাংকটিকে আমানতকারীদের সুদ প্রদান করতে হবে।
ব্যাংক তার ‘কস্ট অব ফান্ড’-এর ওপর কিছু অতিরিক্ত সুদ আরোপ করে মুনাফা অর্জন করতে চাইবে। একটি ব্যাংকের ‘কস্ট অব ফান্ড’ যদি সাড়ে ৮ শতাংশ হয় তাহলে সেই ব্যাংকের ঋণের ওপর আরোপিত সুদের হার হবে কমপক্ষে ১২ অথবা ১৩ শতাংশ।
চাইলেই ব্যাংকটি ৯ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান করতে পারবে না। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ আদায় না করতে পারলে ব্যাংকটি কোনোভাবেই সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দিতে পারবে না।
বর্তমানে খেলাপি ঋণের প্রদর্শিত পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর সঙ্গে অপ্রদর্শিত খেলাপি ঋণ যোগ করলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার মতো। খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা না করে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে সফল হতে পারে না। কৃত্রিমভাবে খেলাপি ঋণ লুকিয়ে রাখার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা হিতে বিপরীত হতে পারে।
এম এ খালেক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, অর্থনীতিবিষয়ক কলাম লেখক