Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

শতফুল ফুটতে দাও

বাংলাদেশের প্রতি ভারতের উদারনীতি অবলম্বন কঠিনই বটে

Icon

ড. মাহবুব উল্লাহ্

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের প্রতি ভারতের উদারনীতি অবলম্বন কঠিনই বটে

ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। যেনতেন প্রতিবেশী নয়, বিশাল শক্তিধর প্রতিবেশী। দেশটি আয়তনে যেমন, জনসংখ্যার দিক থেকেও একই রকম বিশাল।

এ রকম একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শুধু সেদেশের জনগণের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে না, প্রভাবিত করে সমগ্র বিশ্ব অর্থনীতিকে। ভারতের মতো দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির চাকা মন্থর গতিতে চললে বিশ্ব অর্থনীতির ওপরও এর প্রভাব পড়ে।

এ ছাড়া প্রতিবেশী হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিও প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ভারতের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়। আধুনিক অর্থনীতিশাস্ত্রের জনক এডাম স্মিথ বলেছিলেন, একটি দেশ যদি উন্নত হতে থাকে তাহলে তার আশপাশের দেশগুলোও উন্নয়নের স্পর্শ লাভ করবে।

বিশ্ব অর্থনীতির গ্লোবালাইজেশনের ফলে বাণিজ্য, পুঁজির প্রবাহ, বিনিয়োগ এবং অভিবাসন এখন অতীতের তুলনায় অনেক বেশি গতিশীল। এর ফলে এক দেশের অর্থনীতির সঙ্গে অন্য দেশের অর্থনীতির পারস্পরিক নির্ভরশীলতা অতীতের তুলনায় অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অর্থনীতির সাধারণ নিয়মের কথা।

ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয় বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাই, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বিশাল। বস্তুত আমদানি পণ্যের উৎস হিসেবে বাংলাদেশের জন্য ভারতের অবস্থান চীনের পরই। কিন্তু এটা আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের হিসাব।

চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য নেই বললেই চলে। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য, যাকে আমরা স্মাগলিং বলে জানি, তার পরিমাণও আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের কাছাকাছি।

ভারত যদি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করত তাহলে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতি অনেকটাই হ্রাস পেত। কিন্তু তা হচ্ছে না। তদুপরি বাংলাদেশ যে কয়টি পণ্য ভারতে রফতানি করে সেগুলো বিভিন্ন ধরনের শুল্ক ও অশুল্ক বাধার সম্মুখীন হয়। বছরের পর বছর ধরে দুই দেশের বাণিজ্য আলোচনায় এ বিষয়গুলো আলোচিত হচ্ছে, কিন্তু কোনো সমাধানের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

ভারতের একটি কৌশল হল দীর্ঘসূত্রতার আশ্রয় নেয়া। কোনো সিদ্ধান্তকে বিলম্বিত করার জন্য ভারতের অজুহাতের অন্ত নেই। বর্তমান সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা ভারতের কাছ থেকে কী কী সুবিধা আদায় করেছেন তার ফিরিস্তি দিতে থাকেন। যেমন, ভূমিসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন।

চুক্তিটি সম্পাদিত হয়েছিল সত্তরের দশকের প্রথম দিকে। কিন্তু এর বাস্তবায়ন ঝুলে ছিল ৪০ বছরেরও অধিক সময়। তাহলে এ প্রাপ্তিকে কী করে বড় প্রাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করা যায়? ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করল, তখন ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হল।

চুক্তি স্বাক্ষরিত হল বটে, কিন্তু চুক্তির মধ্যে থেকে গেল ভয়াবহ ত্রুটি। এ চুক্তিতে কোনো গ্যারান্টি ক্লজ নেই। সুতরাং চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার জন্য ভারতের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতা থাকল না। ফল হিসেবে দেখা গেল, শুষ্ক মৌসুমের অধিকাংশ বছরগুলোয়ই নির্ধারিত পরিমাণ পানি বাংলাদেশ পায়নি।

গঙ্গা চুক্তির আরও একটি বড় সমস্যা হল, ফারাক্কা পয়েন্টে যে পানি পাওয়া যাবে সেটিই দু’দেশের মধ্যে বণ্টন করা হবে। কিন্তু গঙ্গা নদীর উজানে ভারত অনেক স্থানে পানি প্রত্যাহার করছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি-নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

নৌপরিবহন ছাড়া অন্য কোনো কাজে অভিন্ন নদীর পানি ব্যবহার করতে হলে যেসব দেশের ওপর দিয়ে নদীটি প্রবাহিত সেসব দেশের সম্মতির প্রয়োজন হয়। ভারত এ সম্মতির জন্য থোড়াই তোয়াক্কা করছে। অন্যদিকে গঙ্গা নদীতে বন্যা দেখা দিলে ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়া হয়। এর ফলে বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে বন্যা হয় না সেসব অঞ্চলও প্লাবিত হয়ে যায়।

গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। আবারও নতুন চুক্তির প্রয়োজন হবে। নতুনভাবে চুক্তি করার সময় অভিজ্ঞতার আলোকে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। শুধু গঙ্গার পানি নয়, অভিন্ন আরও ৫৩টি নদীর পানিবণ্টন অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে তিস্তা নিয়েই বেশি কথা হচ্ছে। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে চরম ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

তিস্তা নদীতে ভারত অনেক বাঁধ দিয়েছে। বিশেষ করে সিকিমে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যেসব বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তার প্রভাবে তিস্তার প্রবাহ ক্ষীণ হয়ে গেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি গজলডোবায় রয়েছে আরেকটি বাঁধ।

এ বাঁধের মাধ্যমে তিস্তার অবশিষ্ট প্রবাহ আটকে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। এ কারণে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে চরম অনীহা প্রদর্শন করে যাচ্ছেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের আপত্তির অজুহাত দেখিয়ে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিটি ঝুলিয়ে রেখেছে। এ চুক্তি আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ রয়েছে। পানিবণ্টন নিয়ে এ ধরনের অচলাবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে বাংলাদেশের নিজস্ব নদী ফেনী নদী থেকে পানি তুলে নেয়ার সম্মতি প্রদান করেছে।

বলা হচ্ছে ফেনী নদী থেকে ভারত যে সামান্য পরিমাণ পানি তুলে নেবে তা ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম এলাকায় জলকষ্টে পতিত মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ বিষয়টি সম্পূর্ণ মানবিক।

কিন্তু আবার এ কথাও বলা হচ্ছে, অনেক দিন ধরেই ভারত পাম্পের সাহায্যে এ নদী থেকে পানি তুলে নিত। বর্তমানে চুক্তিটি হওয়ায় বিষয়টি একটি নিয়ম-কাঠামোর মধ্যে আনা হল। প্রশ্ন জাগে, নিয়ম কাঠামোর বাইরে থেকে ভারত কী করে এতদিন ধরে পানি তোলার কাজটি করে যাচ্ছিল? ভারতকে বাধা দেয়ার জন্য বিজিবির কি কোনো দায়িত্ব ছিল না?

পানির প্রশ্নে মানবিক হতে ব্যক্তিগতভাবে আমি আপত্তির কিছু দেখি না। কারণ ইসলামের ইতিহাসে কারবালার প্রান্তরে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে ইমাম হোসেনকে ফোরাত নদীর পানি পান করা থেকে প্রতিপক্ষ বাধা দিয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত ইমাম হোসেনকে হত্যা করেছিল।

ইসলামের ইতিহাসে ইমাম হোসেনের শাহাদাতের দিনটি অত্যন্ত শোকাবহ দিন রূপে পালিত হয়ে আসছে। সুতরাং তৃষ্ণা নিবারণের জন্য তৃষ্ণার্তকে পানি দেয়া মানবিকতার দাবি। কিন্তু গঙ্গাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করা যে গর্হিত অমানবিকতা সেটাও তো মানতে হবে।

বাংলাদেশের উপকূলজুড়ে ভারত রাডার বসাবে। কী শর্তে, কী প্রয়োজনে একটি বিদেশি রাষ্ট্র এ দেশে রাডারের মতো স্পর্শকাতর স্থাপনা নির্মাণ করতে চাচ্ছে তা মোটেও বোধগম্য নয়। এসব রাডার কারা চালাবে? এবং রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য কারা ব্যবহার করবে এসব প্রশ্নের উত্তর জনগণ পায়নি।

শোনা যায়, রাডারগুলো হবে অত্যন্ত শক্তিশালী। এগুলো সমুদ্রের তলদেশেও পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। এ প্রযুক্তি সম্পর্কে আমার তেমন বিশেষ ধারণা নেই। তবে জনমনে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সেই প্রশ্নগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা সরকারের দেয়া উচিত।

নেপালের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন বলতে পারেন, নেপালের সীমান্তে ভারতীয় সৈন্যদের অবস্থান দেখতে চাই না, তখন নেপালের মতো ভূ-বদ্ধ দেশ না হয়েও বাংলাদেশকে কেন এত নমনীয় হতে হচ্ছে। যে দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে সে দেশের জনগণ দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে গর্বিত অবস্থানে থাকবে- এটাই তো স্বাভাবিক।

সম্প্রতি ভারতের ‘দি হিন্দু’ পত্রিকায় ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং The fountainhead of India's economic malaise শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। এ প্রবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ভারতের অর্থনীতির অধোগমন। তিনি মনে করেন, ভারতের নাগরিকরা এর প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সরকারের প্রতি আস্থা পোষণ করে না বলেই একটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক।

ড. মনমোহন সিং একজন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে এসব কথা বলছেন তা মোটেও নয়। তিনি বলতে চাইছেন, তার বক্তব্য ভারতের একজন নাগরিক হিসেবেই তিনি উত্থাপন করেছেন। তদুপরি তিনি নিজে অর্থনীতিশাস্ত্রের একজন ছাত্র। তথ্যগুলো দিবালোকের মতো স্পষ্ট।

গত ১৫ বছরের মধ্যে নামিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন হারে নেমে এসেছে। গত ৪৫ বছরের মধ্যে বেকারত্ব সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গৃহস্থালি ভোগের স্তর গত ৪ দশকে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। ব্যাংকে খেলাপি ঋণ অতীতের সব সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এভাবে সবচেয়ে বেশি এবং সবচেয়ে কমের তালিকা খুবই কষ্টদায়ক। অর্থনীতির অবস্থা পরিসংখ্যানের কারণেই উদ্বেগজনক নয়, যা কিছু প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে তার গভীরে রয়েছে এমন সব ত্রুটি-বিচ্যুতি যা ভারতের অর্থনীতিকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে।

ড. মনমোহন সিং মনে করেন, ভারতের পারস্পরিক আস্থা এবং আত্মবিশ্বাস যা সামাজিক লেনদেনকে মসৃণ করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে তা তছনছ হয়ে গেছে।

সমাজে একটি ভীতির আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। অনেক শিল্পপতি সরকারি কর্তৃপক্ষের হাতে হেনস্থা হওয়ার ভীতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। ব্যাংকাররা নতুন কোনো ঋণ দিচ্ছেন না প্রতিশোধের ভয়ে। উদ্যোক্তারা নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করছেন না, কারণ যদি কোনো ব্যর্থতা দেখা দেয় তাহলে এর জন্য তাদের অসৎ উদ্দেশ্যকে দায়ী করা হবে।

Technology Start-up, যা হতে পারত প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের ইঞ্জিন, তা এখন বিরামহীন নজরদারি ও সন্দেহের মধ্যে পড়ে পথ হারিয়ে ফেলছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা সত্য কথনে বিরত থাকছেন।

ফলে নীতিনির্ধারণে বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো উপাদান যুক্ত হচ্ছে না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে যেসব কারবারিরা যুক্ত তারা ভয়ানক ভয় এবং অবিশ্বাসের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে আছেন। এ রকম অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা থাকলে একটি সমাজে অর্থনৈতিক লেনদেন স্থবির হতে বাধ্য।

এসবের পাশাপাশি কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের শুধু নিরাপত্তা জাল নিশ্ছিদ্র করে যে সমাধান খোঁজা হচ্ছে সেটাও অর্থনীতির রক্তক্ষরণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে যে দেশ নিরাপত্তা সংহত করার নামে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহ করছে এবং অন্যদিকে সামগ্রিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে, সে রকম একটি দেশের পক্ষে প্রতিবেশীর প্রতি উদার আচরণ করা কঠিনই হবে।

যতই বলা হোক না কেন ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, ভেবে দেখতে হবে এর কাঠামোগত ভিত্তি কতটা শক্তিশালী অথবা কতটা নাজুক।

ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম