Logo
Logo
×

খেলা

বাঁচার আকুতি জিল্লুর চোখে-মুখে

Icon

ওমর ফারুক রুবেল

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হাটা-চলাটা স্বাভাবিক নয়। সময়ের চেয়ে দ্রুতই মাথায় টাক পড়ছে। কথাও অতটা স্পষ্ট নয়। দুটো কিডনিই আজ প্রায় অকেজো। কোনো কাজই ঠিকমতো করতে পারছেন না। একসময়কার সুদর্শন ফুটবলার জিলকারনী আল মামুন জিল্লু আজ অনেকটাই বিবর্ণ-অচেনা। চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই তাকে। সংসারের স্ত্রী ও এক ছেলে থাকলেও অসুস্থতার দরুন কাজ করতে না পারায় খুব কষ্টে-সৃষ্টে দিন কাটছে সাবেক এই ফুটবলারের। তাই তো চিকিৎসার সহায়তার জন্য ঘুরছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। ইতিমধ্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন জিল্লু। চিকিৎসার প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য ছুটছেন বিত্তবানদের কাছেও।

১৯৮৯ সালে সিটি ক্লাবে ফুটবলে হাতেখড়ি জিল্লুর। ফুটবল শেখার পর ওই ক্লাবেই খেলতেন। তিন বছর পর মা ও গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে সিলেটের হয়ে খেলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ইস্কাটন সবুজ সংঘের হয়ে খেলে পাইওনিয়ার ফুটবলের সেরা একাদশের ফুটবলার হিসেবে নির্বাচিত হন জিল্লু। এরপর খুলে যায় তার স্বপ্নের দ্বার। সরাসরি প্রথম বিভাগে খেলার সুযোগ পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বেক্সিমকো গোল্ডকাপে কুমিল্লার হয়ে খেলার পর ঢাকার ক্লাবগুলোর চোখ পড়ে জিল্লুর ওপর। পরের বছরই ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর প্রিমিয়ার বিভাগ লিগে খেলেন। একই বছর অনূর্ধ্ব-১৬ দলের প্রথম একাদশে মিডফিল্ডার হিসেবে সুযোগ পান জিলকারনী জিল্লু। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। খুব বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রামে প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে খেলতে যান জিল্লু। সেখানে কল্লোল ক্লাবের হয়ে খেলা চলাকালীন আঘাত পেয়ে তার বাঁ-পায়ের লিগ্যামেন্ট পুরোপুরি ছিঁড়ে যায়। বিছানা নিতে হয় চার ভাই দু’বোনের মধ্যে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিটির। জিল্লুর প্রতি ভাগ্যদেবীর পরিহাস এখানেই শেষ নয়। ২০১০ সালে সরকারিভাবে কোরিয়া গেলে চার বছর পরই কিডনি রোগে অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসতে হয়। এতে বিপদে পড়ে যায় আট সদস্যের পরিবারটি।

কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্স ইন্সটিটিউট প্রফেসর ডা. হারুনুর রশিদের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ বছর। কিন্তু উন্নতি নেই। দুটি কিডনিই এখন অকেজোর পথে। ৯০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর্থিক সংকটের কারণে যোগব্যায়াম (ইয়োগা) করে কিডনি সমস্যার

কিছুটা উন্নতি হয়েছে (ক্রিয়েটেনাইন ৭.১৯ পয়েন্ট)। শুধু তাই নয়, ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালাতে না পেরে পাঞ্জাবে গিয়ে ঘরোয়াভাবে আয়ুর্বেদী চিকিৎসাও নিচ্ছেন জিল্লু। বাঁচার আকুতি তার চোখে-মুখে। সংসারের প্রিয়জনদের সঙ্গেই কাটাতে চান সময়। ছলছল চোখে জিল্লু বলেন, ‘সংসারে বাবা, মা, দু’বোনসহ আরও তিন ভাই, স্ত্রী ও চার বছরের ছেলে জাইওয়ান রয়েছে। খুব কষ্টে দিন গুজরান করছি। অর্থ সংকটের কারণে না পারছি ভালোমতো চিকিৎসা করাতে, না পারছি সংসারের সবাই ভালোভাবে দেখতে।’ তিনি যোগ করেন, ‘সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি বাদল দা’র (বাদল রায়) মাধ্যমে আমি ইতিমধ্যে চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি মহোদয়ের কাছে আবেদন করেছি আর্থিক সাহায্যের জন্য। সাহায্য পেলে উন্নত চিকিৎসা করিয়ে সংসারের হাল ধরতে পারব।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম