তিন ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়েন আন্দোলনকারীরা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান নেন হাজার হাজার ছাত্র-জনতা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নেন প্রায় দুই হাজারের মতো মানুষ। এছাড়া একটি অংশ টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এবং আরেকটি অংশ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান নেন। আন্দোলনকারীরা পৃথকভাবে রাত নয়টার পর পর্যন্ত তিন ঘণ্টার মতো এসব জায়গায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করা হয়। এরপর সেখানে আরও ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর সাড়ে ছয়টার দিকে আন্দোলনকারীরা শহিদ মিনার এলাকা ছাড়তে শুরু করেন। অনেকে নিজ নিজ বাসায় ফিরে যান। এছাড়া আন্দোলনকারীদের অনেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে, শাহবাগে ও শহিদ মিনারে অবস্থান করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আন্দোলনকারীরা শাহবাগ থানার সামনে এলে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা অনেক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পুলিশ শাহবাগ থানার ভেতরে এবং বিজিবির সদস্যরা জাতীয় জাদুঘরের ভেতরে চলে যান। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ সেখানে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছোড়েন। শাহবাগ থানা অতিক্রম করার সময় ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ এবং ‘খুনি’ ‘খুনি’ বলে স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিলে আন্দোলনকারীদের একাংশ শাহবাগ থানার সামনে মানবঢাল তৈরি করে পুলিশের ওপর যে কোনো ধরনের আক্রমণ ঠেকান। পরে শাহবাগ মোড়ের সড়কে গিয়ে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারী। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের দেখা যায়। এ সময় রাস্তার একপাশে যান চলাচল বন্ধ থাকে। রাত ৯টা পর্যন্ত সেখানে থেকে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিক্ষোভ-স্লোগান ও বক্তৃতা দেন তারা।
আন্দোলনকারীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দফা এক-দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘স্বৈরাচার গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, রাত নয়টার দিকে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মাঞ্জুর আল মতিন শাহবাগে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে চলে যান।
এদিকে শাহবাগ ছাড়াও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে হাজারো মানুষ। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহিদ মিনার এলাকা ছাড়েন আন্দোলনকারীরা। তখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মেট্রোরেলের নিচে দুই শতাধিক আন্দোলনকারী সাধারণ মানুষকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। পৌনে দশটার দিকে তারা মিছিল নিয়ে চলে যান।
শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আন্দোলনকারীরা সন্ধ্যার দিকে শাহবাগে অবস্থান নেন। রাত নয়টার দিকে তারা শাহবাগ ছেড়ে চলে যান। এছাড়া শহিদ মিনার ও ক্যাম্পাস থেকেও আন্দোলনকারীরা চলে যান। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।