Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

শ্রম অধিকার ইস্যুতে কল্পনা আক্তার

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার ও মানোন্নয়ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন উদ্যোগে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ দেখছেন না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। এই ইস্যুতে কল্পনা আক্তারের প্রসঙ্গ টানায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ব্যাখ্যা চাইবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিমন্ত্রী।

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সম্প্রতি নতুন এক স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এটি প্রকাশের পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন তার বক্তব্যে কল্পনা আক্তার নামে বাংলাদেশের এক গার্মেন্ট শ্রমিক ও নেত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, এই কমেন্টস গার্মেন্টসকেন্দ্রিক ছিল না। অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ওই বক্তব্য ছিল এপেক (এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন) সামিটে। এটা শুধু গার্মেন্ট শিল্প বা টেক্সটাইল শিল্প বা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কোনো বৈঠকে নয়।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কল্পনা আক্তার বাংলাদেশে একবারই গ্রেফতার হয়েছিলেন ২০১০ সালে। তিনি একা নন, তার সঙ্গে আরও একাধিক শ্রমিক নেতা চাকরিরত অবস্থায় আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হন। পরে তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি তুলে নেওয়া হয়। রানা প্লাজা ধসের পরে পশ্চিমা দেশের কিছু ক্রেতা যখন সেই ফ্যাক্টরিগুলোকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করল, তখন কল্পনা আক্তার এবং আরও দু-একজন মিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেখানেই গ্রেফতার হয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘কল্পনা আক্তার নাকি বলেছেন, তিনি আমাদের কারণে বা অন্য কারও দ্বারা হুমকি পেয়েছিলেন, এই ক্ল্যারিফিকেশনটা (ব্যাখ্যা) আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চাইব। আমরা এটা অবশ্যই পরবর্তী আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞেস করব।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কল্পনা আক্তার খুব সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে তার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ পুলিশের রেকর্ডে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রেকর্ডে এবং আমরা যতদূর খোঁজ নিয়ে দেখেছি, জেনেছি বা আপনাদের ওপেন সোর্সেও, আপনারা এত সাংবাদিক আছেন, আপনারা তাকে গিয়ে যদি জিজ্ঞেস করেন যে, উনি এ কথাটি আদৌ বলেছেন কি-না। বলে থাকলে কিসের ভিত্তিতে বলেছেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (কল্পনা আক্তার) যে হুমকি বোধ করেছেন, এটা অতীতে কখনোই বাংলাদেশের কাউকে জানাননি। অবশ্যই এটার সত্যতা কতটুকু, আমরা সেটা জানতে চাইব।’

কল্পনা আক্তারের নাম উল্লেখ করা হলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশকেন্দ্রিক ছিল না জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বক্তব্যটি মোটেই বাংলাদেশকেন্দ্রিক নয়। কিছু গণমাধ্যমে এসেছে, তার বক্তব্যটি পুরো পড়বেন। তিনি বাংলাদেশ উল্লেখ করে কোনো বক্তব্য দেননি। উনি বলেছেন, বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টস নেতা বা কর্মী কল্পনা আক্তার। দেশ উল্লেখ করে দু-তিনটি আলাদা দেশের নাম বলেছেন, কিন্তু বাংলাদেশের কোনো ইস্যু সেখানে মেনশন করেননি, এটা মোটেই গার্মেন্ট শিল্প বা টেক্সটাইল শিল্প নির্দিষ্ট ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে শ্রম অধিকার আরও শক্তিশালী করার প্রশাসনিক একটা পদক্ষেপ। যেখানে তারা দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতদের অথরাইজ করছেন, শ্রম বিষয়ক ইস্যুতে কান্ট্রিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। যার মাধ্যমে তারা তাদের দূতাবাসগুলোর রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত দায়িত্ব অ্যাসাইন করছেন, কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা সাপেক্ষে একজন লেবার অ্যাটাশে নিয়োগ দিয়েছে। আসলে যে কোনো কিছু সঠিকভাবে উপস্থাপিত না হলে কিছু ভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।’ তিনি জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছে। প্রায় বছরখানেক হয়ে গেল, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একজন লেবার অ্যাটাশে নিয়োগ দিয়েছে, সেই নিয়োগটা দেওয়ার অনুমতি আমরা দিয়েছি এবং ফ্যাসিলিটেড করেছি; এ কারণে বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রায় দিনই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসে। এ বিষয়টি কীভাবে দেখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তাদের যত এপিটাইট আছে তারা তত প্রশ্ন নেবেন তত উত্তর দেবেন। ইটস আপ টু দেম।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম