Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

ফের হাসপাতালে খালেদা জিয়া

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে শারীরিক কিছু জটিলতার কারণে সোমবার রাত দেড়টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে যুগান্তরকে জানান বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত একজন চিকিৎসক বলেন, সন্ধ্যা থেকে শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থবোধ করায় মেডিকেল বোর্ড হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। হাসপাতালে যাওয়ার পর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা রয়েছে। রাতে থাকার পর মঙ্গলবার সকালে সিদ্ধান্ত হবে তাকে ভর্তি করানো হবে কিনা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেন তিনি। কারাগার থেকে সাময়িক মুক্তির পর থেকে এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো তাকে হাাসপাতালে নেওয়া হলো।

সোমবার রাত ১টায় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘ম্যাডাম শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’

এর আগে পাঁচ দিন হাসপাতালে থাকার পর ৪ মে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই সময়ও মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিল। তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কিছু শারীরিক উপসর্গ থাকার কারণে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে মেডিকেল বোর্ডে থাকা চিকিৎসকরা রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে ভর্তির পরামর্শ দেন। ভর্তি-পরবর্তী তার শারীরিক উপসর্গগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

ওই সময় তিনি আরও জানান, হৃদরোগের জটিলতা, অর্থাৎ হার্টে জটিলতা, ক্রনিক লিভারসিরোসিস, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ আরও যেসব শারীরিক জটিলতা আছে, সেসবের বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। গত বছর এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। সে সময় বাকি দুটি ব্লকে রিং পরানো হয়নি, সেটার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ক্রনিক লিভারসিরোসিসের জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল উচ্চরক্তচাপ কমানোর জন্য। এটা এক ধরনের উচ্চরক্তচাপের বাইপাস। সেই সার্জারি বাংলাদেশে যেমন হয় না, আশপাশের অনেক দেশেও হয় না। সেটার জন্য মাল্টি ডিসিপ্লিনারি আ্যাডভান্স সেন্টারে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড আগেও পরামর্শ দিয়েছিল। অর্থাৎ যেখানে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার সুযোগ আছে। এবারও অ্যানড্রোসকপি করার পর আবারও মেডিকেল বোর্ড বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছে। এখন শুধু উপসর্গগুলো নিরসন করে ওনার কিছুটা সুস্থতার চেষ্টা করা হয়েছে।

গত বছরের ১০ জুন গভীর রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হার্টে একটি রিং বসানো হয়। হার্টের দুটো ব্লক এখনো রয়ে গেছে।

৭৮ বছর বয়সি খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। গত বছরের ২২ আগস্টও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ পর ২৮ আগস্ট ফের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করানো হয়। দুদিন হাসপাতালে থাকার পর ৩১ আগস্ট বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এরপর কয়েক দফা তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম