বিআইডিএসের সেমিনারে বক্তারা
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির দিশারি বঙ্গবন্ধু
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২২, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন ছিলেন রাজনৈতিক মুক্তির মহানায়ক, তেমনই ছিলেন অর্থনৈতিক মুক্তির দিশারি। সদ্যস্বাধীন দেশের গ্রামীণ দরিদ্র্য নিরসনে তিনিই প্রথম ক্ষুদ্রঋণের প্রবর্তন করেছিলেন। বাংলাদেশ রুরাল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিআরডিবি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করা। এর মধ্য দিয়ে গ্রামীণ দারিদ্র্য নিরসনের প্রচেষ্টা শুরু হয়।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে বুধবার এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
‘বঙ্গবন্ধুকে কাছে থেকে দেখা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সময়ের ঢাকার পুলিশ সুপার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাসার কাছে প্রতিবেশী অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ এবং মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও লেখক লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরবিক্রম। সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলে ব্যাংক লুটসহ নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল জাসদ ও সর্বহারা পার্টি। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ষড়ষন্ত্রের কারণে বঙ্গবন্ধুকে খুন হতে হয়েছিল।
ড. মসিউর রহমান বলেন, দেশ স্বাধীনের পর খাদ্য সংকট মোকবিলায় বঙ্গবন্ধু যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সবই নিয়েছিলেন। যেমন রাস্তাঘাট উন্নয়ন, পরিবহণব্যবস্থা সচল করা, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য বিতরণ ও ব্যবস্থায় যত ত্রুটি ছিল সব দূর করা। পরবর্তী সময়ে তিনি টিসিবি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই টিসিবি তখন খুব গুরুত্বর্পূ ভূমিকা রেখেছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ই বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সদস্য হয়েছিল। সেসময় বিশ্বব্যাংক শর্ত দিয়েছিল পাকিস্তান সরকারের নেওয়া ঋণের একটা অংশ বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে শর্ত ছাড়াই তাদের সদস্য পদ দেয়। আইএমএফের শর্ত ছিল মুদ্রা মানের সমন্বয় করার। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন নতুন ফসল না ওঠা পর্যন্ত এটা করা যাবে না। তারপর সমন্বয় করা হলেও মানুষের ওপর খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। বঙ্গবন্ধু পরিকল্পনা কমিশন গঠন করে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন দরিদ্র মানুষের বন্ধু। তিনি সব সময় মানুষের কথা ভাবতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আমাদের ঘুমন্ত আত্মাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাকিস্তান পরাজয় মেনে নিলেও তার দোসর আমেরিকাসহ যেসব দেশ ছিল, তারা পরাজয় মানতে পারেনি। নাসরিন আহমেদ বলেন, ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নম্বর ছিল ৬৭৭ আর আমাদের বাড়িটা ছিল ৬৭৮ নম্বর। প্রথমদিকে দুই বাড়ির মাঝে কোনো দেওয়াল ছিল না। পরবর্তী সময়ে যখন দেওয়াল দেওয়া হয়, তখন মাঝে একটি দরজা ছিল। যেটি সব সময় খোলা থাকত। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আমাদের অবাধ যাতায়াত ছিল।