বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার
রেমিট্যান্সে বিনা শর্তে মিলবে প্রণোদনা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২২, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনা পাওয়ার নীতিমালা আরও শিথিল করা হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে বিদেশ থেকে পাঠানো যেকোনো অঙ্কের রেমিট্যান্সের বিপরীতে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই প্রণোদনার অর্থ দেওয়া হবে। আগে পাঁচ হাজার ডলার বা পাঁচ লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রণোদনা পেতে রেমিটারের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি বিদেশস্থ এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে পাঠানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ নীতিমালা সার্কুলার জারির দিন থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় এ ক্ষেত্রে আগের নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ডলার বা পাঁচ লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্স পাঠালে সেগুলোর বিষয়ে বিদেশে যে এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে পাঠানো হয়েছে সেই হাউজের কাগজপত্র লাগত। ওইসব কাগজপত্র ছাড়া এক দিকে যেমন ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের অর্থ ছাড় করতে গড়িমসি করত, তেমনি এর বিপরীতে প্রণোদনার অর্থ দিত না। এতে করে প্রবাসীর আত্মীয়স্বজনরা নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হতো। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারছে না বলে রেমিট্যান্স আটকে রাখা হয়েছে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর রসিদ ছাড়া অন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করা কঠিন। কেননা তারা রেমিট্যান্স জমা দিলে এর বিপরীতে শুধু একটি রসিদ দিত। এ ছাড়া অন্য কোনো কাগজপত্র তারা নিতও না, দিতও না। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছেও অভিযোগ গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে কিছু রেমিট্যান্স ছাড় করা এবং প্রণোদনা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু যারা অভিযোগ করেননি তাদের রেমিট্যান্স আটকে রয়েছে। ফলে তাদের অনেকে হয়রানি এড়াতে ব্যাংকের পরিবর্তে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এতে করে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। এটি কমায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। কমে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিমালা শিথিল করেছে। ফলে এখন থেকে যেকোনো অঙ্কের রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠালে তার বিপরীতে প্রণোদনার অর্থ ছাড় করতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগবে না।
জানা গেছে, আগে প্রণোদনা পেতে নানাভাবে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আসত। যে কারণে হঠাৎ করেই এ হার বেড়ে গিয়েছিল। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণোদনা দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করেছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করেছেন তারাই আবার সেগুলো রেমিট্যান্স আকারে দেশে ফিরিয়ে আনছেন। এতে এক দিকে অবৈধ অর্থ বৈধ হচ্ছে, অন্য দিকে প্রণোদনার অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত রেমিট্যান্স কমেছে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল ৩৯ শতাংশ।