Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

ডিউআরএসের জরিপ

ঢাবির অনলাইন ক্লাসে সন্তুষ্ট মাত্র ২.৭% শিক্ষার্থী

Icon

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাবির অনলাইন ক্লাসে সন্তুষ্ট মাত্র ২.৭% শিক্ষার্থী

করোনার মধ্যে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনলাইন ক্লাসে মাত্র ২ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের (ডিউআরএস) অনলাইন জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে এই জরিপে। করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাবির শ্রেণিকক্ষে পাঠদান।

এর বিকল্প হিসাবে গত বছরের ১ জুলাই থেকে চলছে আনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পাঠদান। তবে আনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকেই নেটওয়ার্কের সমস্যা, ডিভাইসের অভাব, শিক্ষকদের অনলাইনে পাঠদানের দক্ষতা না থাকাসহ নানা কারণে অনলাইনের ক্লাসের সুফল ভোগ না করতে পারার অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের অভিজ্ঞতা এবং অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মতামতের ব্যাপারে ডিউআরএসের ‘সোশ্যাল সায়েন্স টিম’ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল করিম এবং কমিউনেকশন ডিসঅর্ডারস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন তাওহিদা জাহানের সার্বিক দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধায়নে জরিপটি পরিচালনা করেন ডিউআরএস-এর সোশ্যাল সায়েন্স টিমের মো. তানবীরুল ইসলাম (টিম ম্যানেজার), সুমাইয়া ইমতিয়াজ (কো-অর্ডিনেটর), মো. আতিকুজ্জামান, জাওয়াদ সামস, রাগীব আনজুম, মো. ওমর ফারুক ও সুমাইয়া আহমেদ।

এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের সব বর্ষের (১ম বর্ষ থেকে মাস্টার্স) ৩৭৩০ জন শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। জরিপের তথ্যমতে, অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ৫৩.৭% শিক্ষার্থীর সিলেবাস এখনো শেষ হয়নি। ৮৫.৮% শিক্ষার্থী মোবাইলের মাধ্যমে ১১.৭% ল্যাপটপের মাধ্যমে ক্লাশে অংশ নেয়। ৬৪.১% শিক্ষার্থী মোবাইল ডেটার সাহায্যে ৩৩% শিক্ষার্থী ওয়াইফাই/ব্রন্ডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছেন। শেষ হওয়া অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে মাত্র ২.৭% শিক্ষার্থী ‘সন্তুষ্ট’ এবং ৪৬.৭% শিক্ষার্থী খুব অসন্তুষ্ট বলে মতামত দিয়েছেন।

অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই অনলাইন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মোটামুটি টেকনিক্যাল দক্ষতা আছে এবং ইতঃপূর্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত মিড-টার্ম বা সমমান পরীক্ষায় বিভাগ/ইনস্টিটিউট থেকে ৬২.৮% শিক্ষার্থী সঠিক দিকনির্দেশনা পেয়েছিলেন। ৫২.৭% শিক্ষার্থী অনলাইনে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক এবং তাদের মধ্যে ৮৭.৪% শিক্ষার্থী অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন। পক্ষান্তরে ৪৫% শিক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং প্রধান তিনটি কারণ হিসাবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই নেটওয়ার্কের সমস্যা, ডিভাইসের অপর্যাপ্ততা বা ত্রুটিপূর্ণ ডিভাইস এবং বাড়ির প্রতিকূল পরিবেশের কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনলাইনে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি, পরামর্শ ও মতামত উঠে এসেছে এই জরিপে।

জরিপের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল করিম যুগান্তরকে বলেন, এই জরিপের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের অনুভূতি এবং তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কীভাবে রেসপন্স করবে, সেটা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।

আমাদের সব জায়গায় থ্রিজি নেই, অনেকের ডিভাইস নেই, অনেকের ডেটা কেনার অর্থ না থাকার মতো সমস্যা রয়েছে। যদি আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলো উত্তরণ করতে পারি, তাহলে অনলাইনে পাঠদান ফলপ্রসূ হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি বেশি জোর দিচ্ছি করোনায় ছাত্রছাত্রীদের যে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে, এটাকে আর নষ্ট করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কাজেই আমাদের হাতে আর কোনো বিকল্প উপায় নেই । আর পরিস্থিতি খুব যে আশাব্যঞ্জক হচ্ছে, সেটাও না। তাই আমাদের সামনে যতই চ্যালেঞ্জ থাকুক না কেন, আমাদের অনলাইনভিত্তিক সিস্টেমে যেতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম