
প্রিন্ট: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
রপ্তানি সুবিধা অব্যাহত রাখতে শ্রম আইন সংস্কার জরুরি
এলডিসি উত্তরণ নিয়ে সিপিডির সংলাপ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২১, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সংলাপে বক্তারা বলেছেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে পথে বাংলাদেশ। এর ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে জিএসপি (রপ্তানিতে অগ্রাধিকার খাত) সুবিধা থাকবে না। এক্ষেত্রে নতুন করে জিএসপি সুবিধা পেতে শ্রম আইন ও অধিকার বিষয়ে জোর দিতে হবে। বিভিন্ন আইন, কাঠামোগত দুর্বলতা এবং প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে।’
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বুধবার আয়োজিত এ ভার্চুয়াল সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জম। বক্তব্য দেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রন্সজে তেরিঙ্ক এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পটিয়াইনন, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দীপু, বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
বক্তারা বলেন, এলডিসি উত্তরণে শেষ প্রক্রিয়ায় রয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে সব মানদণ্ড পূরণ হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মতো উত্তরণের সুপারিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। উত্তরণে চূড়ান্ত সুপারিশের পর আরও ৩ বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত থাকবে। তবে গত সপ্তাহে সিডিপির সঙ্গে এক বৈঠকে ৩ বছরের অতিরিক্ত আরও ২ বছর এ সুবিধা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রন্সজে তেরিঙ্ক বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী এলডিসি থেকে উত্তরণের পর উন্নত দেশে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা আর পাওয়া যায় না। ব্যতিক্রম হিসেবে ইইউতে এভরি থিংক বাট আর্মস (ইবিএ) নামের স্টিমে বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা অতিরিক্ত ৩ বছর অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ ২০২৭ সালের পর আর ইইউর দেশগুলোতে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকবে না। তবে ‘জিএসপি পাশ’ নামে নতুন স্কিমের আওতায় এ সুবিধা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, জিএসপি পাশ সুবিধা পেতে বিভিন্ন শর্ত পালন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদ্যোগ এবং অগ্রগতির প্রশংসনীয়। এ প্রসঙ্গে তেরিঙ্ক বলেন, রানা প্লাজা ধসের মর্মান্তিক ছায়া থেকে বের হতে পেরেছে বাংলাদেশ। এ অগ্রগতির সঙ্গে পরিবেশসম্মত উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। জিএসপি পাশ নিয়ে বাংলাদেশ এবং ইইউ একটি যৌথ কমিশন কাজ করছে। একটি রোডম্যাপ হয়েছে।
আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পুটিয়াইনেন বলেন- মানরক্ষা, শ্রম আইন, ইপিজেড এবং এসইজেড শ্রম আইনের বৈষম্য দূর করতে হবে। শ্রম বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সব পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সুশীল সমাজ, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে কার্যকর সামাজিক সংলাপ চালিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যৎমুখী শ্রমনীতি এবং সরকারের এ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আইএলওর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জন্য জিএসপি পাশ যেমন দরকার, একই সঙ্গে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা আরও গুরুত্বপূর্ণ।