ইতিহাস বিকৃতি
অলি আহমদের বই বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইতিহাস বিকৃত করায় এলডিপি সভাপতি অলি আহমদের লেখা ‘রেভোলিউশন, মিলিটারি পারসোনেল অ্যান্ড দ্য ওয়ার অব লিবারেশন ইন বাংলাদেশ’ বইটি নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই বইতে সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে ‘দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তার লেখা অন্য যেসব বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, সেগুলোও নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করতে বলেছেন আদালত। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৭ আগস্ট সাংবাদিক কনক সরওয়ারের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক লাইভে অলি আহমদের সাক্ষাৎকারসহ কনক সরওয়ারের ‘দেশবিরোধী’ সব ভিডিও কনটেন্ট ‘নিষিদ্ধ, বন্ধ, অকার্যকর ও অপসারণ’ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই সাক্ষাৎকারেও জিয়াউর রহমানকে ‘দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে বর্ণনা করেন অলি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে এক আইনজীবীর করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
রুলে কনক সরওয়ারের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক লাইভে অলি আহমদের দেয়া ওই সাক্ষাৎকার নিষিদ্ধ, বন্ধ, অকার্যকর ও অপসারণ করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে ‘সংবিধানের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে’ অলির লেখা ‘রেভোলিউশন, মিলিটারি পারসোনেল অ্যান্ড দ্য ওয়ার অব লিবারেশন ইন বাংলাদেশ’ বইটি বাজেয়াপ্ত করতে এবং তার বিরুদ্ধে ‘যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা’ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আইনজীবী মঞ্জুরুল হক বলেন, “অলি আহমদ মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন। ভবিষ্যত প্রজন্ম এই বই পড়ে বা সাক্ষাৎকারটি শুনে বিভ্রান্ত হবে। শুধু তাই নয়, তার বক্তব্য এবং লেখা আমাদের সংবিধানের ঘোষণাপত্রও লঙ্ঘন করেছে। ফলে আদালত রুলসহ অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছে।” ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে ৭ সেপ্টেম্বর অলি আহমদকে উকিল নোটিশ দিয়েছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ। সেখানে অলি আহমদকে সাক্ষাৎকারের ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছিল। ২০ সেপ্টেম্বর সেই নোটিশের জবাব দেন অলি।