Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

করোনার প্রভাব মোকাবেলায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান

প্যাকেজ বাস্তবায়নে শতভাগ অর্থের জোগান দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নীতি সহায়তায় আরও দেয়ার আশ্বাস

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্যাকেজ বাস্তবায়নে শতভাগ অর্থের জোগান দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে শতভাগ অর্থের জোগান দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানে তারল্যের জোগান বাড়াতে নীতি সহায়তায় আরও ছাড় দেয়া হবে।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় করতে পারছে না।
 

ফলে তাদের বিনিয়োগ করা অর্থ আদায় হচ্ছে না। নতুন আমানতও পাচ্ছে কম। অনেকে আগের আমানত তুলে নিচ্ছে। একদিকে ঋণের অর্থ আদায় করতে না পারা এবং নতুন আমানত না পাওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকটে পড়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আগে থেকেও এসব প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সংকট ছিল। করোনার প্রভাবে তা প্রকট হয়েছে।

এই সংকট মোকাবেলা করতে প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল চাওয়া হয়েছিল।

ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তহবিল দেয়ার প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছে। তবে তাদেরকে অন্যান্য সুবিধা দেয়া হবে। প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৫০ শতাংশ অর্থের জোগান দেয়া হচ্ছে। এ খাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শতভাগ অর্থের জোগান দেয়া হবে। অর্থাৎ তারা প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করতে পারবে সমপরিমাণ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জোগান দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত বড় শিল্প ও সেবা খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের মধ্য থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া হবে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে দেয়া হবে ৮০০ কোটি টাকা।

বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জানানো হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তাদেরকে বিশেষ রেপোর (ট্রেজারি বিল পুনঃক্রয় চুক্তি) আওতায় তহবিলের জোগান দেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫-১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা করবে। তবে এসব অর্থ কোনোক্রমেই জাল-জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বা খেলাপি পরিচালকদের ঋণ দেয়া যাবে না। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নীতি সহায়তায় আরও ছাড় দেয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে নগদ জমা সংরক্ষণে আরও ১ শতাংশ ছাড় দেয়ার বিষয়টি তারা চিন্তাভাববনা করবেন। ইতোমধ্যে নগদ জমা সংরক্ষণে এক শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুর্বল ৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের ব্যাপারে তারা কী ভূমিকা রাখতে পারেন। জবাবে শীর্ষ নির্বাহীরা জানান, তাদের পক্ষে ৫টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে ভূমিকা রাখা কঠিন হবে। তবে একটির ব্যাপারে তারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন। বাকি ৪টির দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংককে নিতে শীর্ষ নির্বাহীরা সুপারিশ করেছেন।

বৈঠকে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় পিপলস লিজিং অবসায়ন, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি ও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের অর্থ ফেরত দিতে না পারার প্রভাব পুরো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়েছে।

এ কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমানত প্রত্যাহারের বাড়তি চাপ ছিল আগ থেকেই। এরপর মার্চ থেকে নতুন করে যুক্ত হয় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো আরও সংকটে পড়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম