সিলেট-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী কে
শফি চৌধুরী ঋণখেলাপি, সালাম বিদেশি, এগিয়ে হক, মাঠে কাইয়ুম
ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও সিদ্ধান্তহীনতায় বিএনপি। এ আসনে বিনপির চারজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে দু’জনের প্রার্থিতা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শফি আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির মামলা এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালামের বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে এ অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফলে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ হক। মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শফি আহমদ চৌধুরী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এলবার্ট ডেভিড (বাংলাদেশ) লিমিটেড পূবালী ব্যাংক রাজধানীর তেজগাঁও শাখার ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালতে মামলা করে ব্যাংক। ওই মামলায় আদালত ঋণ পরিশোধের ডিগ্রিও জারি করেন। আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে শফি চৌধুরী হাইকোর্টে আপিল করে স্থগিতাদেশ চেয়েছেন। রোববার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল আকন্দের বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আদালত মামলাটি না শুনে ১ সপ্তাহ পর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এ মামলায় শফি চৌধুরী ১৯৮৬ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনের আগে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে নির্বাচন করেন। জানতে চাইলে শফি চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, সব কিছু ক্লিয়ার। নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই। ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে আদালতে টাকা জমা দেয়া আছে। নির্বাচন সামনে রেখে জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু মহল শয়তানি করছে। তিনি বলেন, মনোনয়ন পেলে সিলেট-৩ আসনে ধানের শীষ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। লন্ডনের নাগরিক হওয়ায় নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে বিপাকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালাম। সংবিধান অনুযায়ী বিদেশি কোনো নাগরিক সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের বিষয়টি স্বীকার করে ব্যারিস্টার সালাম যুগান্তরকে জানান, অনেক আগেই যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেছি। বর্তমানে আমি সুপ্রিমকোর্ট বারের সদস্য। নিয়মিত ঢাকায় চেম্বার করছি, দলের জন্য কাজ করছি। আমার প্রার্থিতা নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কথা হয় এমএ হকের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, দলের জন্য বহু ত্যাগ শিকার করেছি। সব সময়ই দলের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। জীবনের শেষ সময়ে দল যদি মূল্যায়ন করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হব। মনোনয়নের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে প্রবীণ এ নেতা বলেন, তবে অফিসিয়াল কোনো নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না। একই আসনে বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করছি। দলের সিদ্ধান্ত মেনে সবসময় কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও করব। এলাকার জনগণ ও কর্মী-সমর্থকরা চাচ্ছেন আমি প্রার্থী হই। তাদের চাহিদা পূরণে প্রার্থী হয়েছি, দল মূল্যায়ন করলে বিজয় নিশ্চিত। সিলেট-৩ আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরীকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী এমপি হন। ২০১৪ সালে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন। এবারও মাহমুদুস সামাদ এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী।