নুরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
তবু স্মৃতিতে অমলিন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যমুনা গ্রুপের শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। না ফেরার ফেরার দেশে চলে গেছেন ২০২০ সালের ১৩ জুলাই। তার চলে যাওয়ার দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। তিনি ছিলেন দেশের শিল্পখাতের একজন অনন্য সফল উদ্যোক্তা।
পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও তিনি আজও রয়ে গেছেন তার নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানে, প্রিয় কর্মীদের মাঝে। সবার প্রিয় এই মানুষটি ছিলেন মিডিয়াবান্ধব। তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন দেশের শোবিজ অঙ্গনের কয়েকজন তারকা।
১.করোনার দূর্যোগময় মুহূর্তে তিনি চলে গেছেন পৃথিবী ছেড়ে। ওই সময় আপনজন হারানোর খবর শুনতে শুনতে খুব ক্লান্ত ছিলাম। এক এক করে সবাই চলে যাচ্ছিলেন। আসলেই খুব খারাপ একটা সময় পার করেছি। এখন আবারও করোনার প্রকোপ বাড়ছে। শিল্পাঙ্গন, সংস্কৃতি অঙ্গন- সবকিছুতেই মন খারাপ করা খবর শুরু হবে হয়তো! নুরুল ইসলাম বাবুল ভাই চলে যাওয়ার খবর শুনে সেদিন সত্যিই খুব কষ্ট পেয়েছি। উদ্যোক্তা হিসেবে সফল একজন মানুষ ছিলেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত অসংখ্য মানুষ। মিডিয়াবান্ধবও ছিলেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম ‘যুগান্তর’ ও ‘যমুনা টিভি’কে সব সময় কাছে পেয়েছি। বাবুল ভাইয়ের এভাবে চলে যাওয়া আমাদের কারো প্রত্যাশিত ছিল না। দেশকে আরও অনেক কিছু দেয়ার ছিল তার। দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
- গাজী মাজহারুল আনোয়ার, গীতিকার ও চলচ্চিত্রকার
২. নুরুল ইসলাম বাবুল দেশের অনেক বড় একজন শিল্পোদ্যোক্তা ছিলেন। আজ থেকে দুই বছর আগে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। যদিও তার সঙ্গে আমার কখনোই দেখা হয়নি কিংবা কথা হয়নি, তবু সেদিন তার হঠাৎ চলে যাওয়ার খবর শুনে কষ্ট লেগেছে মনে। দেশের জন্য এটা অবশ্যই অনেক বড় দুঃখজনক সংবাদ ছিল। করোনায় আমরা অনেককেই হারিয়েছি। এই হারানোর শোক কাটিয়ে উঠা খুব কঠিন। করোনার কারণে দেশের অবস্থা এমনিতেই ভালো নয়, বিশেষ করে অর্থনৈতিক অবস্থা। এই অর্থনীতির চাকা সচল রাখার গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে যারা মাঠে ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম নুরুল ইসলাম বাবুল। তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে খেয়ে পরে বেঁচে আছেন দেশের অসংখ্য মানুষ। এভাবে হারানোর ব্যথা সহ্য করা আসলেই কঠিন। আমি তার আÍার মাগফেরাত কামনা করছি।
- রুনা লায়লা, সঙ্গীতশিল্পী
৩. বাংলাদেশের অন্যতম একজন শিল্পোদ্যোক্তা ছিলেন নুরুল ইসলাম বাবুল। যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতিতে বেশ অবদান রেখেছেন। দুই বছর আগে যখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই মানুষটি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তখন থেকেই অবগত ছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তো আলাহ তাকে আমাদের মধ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। কিন্তু তার আর ফেরা হল না। এভাবে এতো বড় একজন শিল্পোদ্যোক্তার চলে যাওয়া, এটা আমাদের জন্য সত্যিই ক্ষতির যেমন কারণ, কষ্টেরও বিষয়। আমার বিশ্বাস, তার রেখে যাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, তার কর্মীদের মধ্যে তিনি বেঁচে থাকবেন। মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা।
- শবনম, চলচ্চিত্রাভিনেত্রী
৪. দুই বছর আগে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল না ফেরার দেশে চলে গেলেন। দেখতে দেখতে দুই বছর পার হয়ে গেল, অথচ মনে হচ্ছে এই তো সেদিনের ঘটনা এটি! করোনা আসলে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি করে গেল! তার এ চলে যাওয়া উদ্যোক্তা মহলের বড় একটা ক্ষতিই। সারা জীবন নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়েই দেশের স্বার্থে কাজ করে গেছেন তিনি। রেখেও গেলেন সব কিছু। চলে যাওয়াটাই নিয়তি। আলাহর ডাক এলে তো আর থাকা যায় না। আমাদেরও চলে যেতে হবে একদিন। বাবুলের চলে যাওয়া অনেক কষ্টের। আলাহ তার ভুল মাফ করুন, জান্নাত দান করুন এটাই দোয়া করি। তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
- সোহেল রানা, চলচ্চিত্রাভিনেতা
৫. করোনা প্রকোপরে সময় দুই বছর ধরে দুঃসংবাদ শুনতে শুনতে মানসিক অবস্থা একেবারেই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রতিনিয়ত মৃত্যু সংবাদ শুনতে হয়েছে। অনেক প্রিয়জন চলে গেছেন। কিন্তু করোনা এখনও যায়নি পৃথিবী থেকে। করোনায় দুই বছর আগে যমুনা গ্রুপের মালিক নুরুল ইসলাম বাবুলও চলে গেছেন। মারা যাওয়ার কিছুদিন আগেও তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। এতই সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন, তাকে দেখলে যে কেউ অবাক হয়ে বলতেন, ৪১ প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি! প্রায় সব অঙ্গনেই তার বিনিয়োগ ছিল এবং সেটা দেশের মধ্যেই। একজন দেশপ্রেমী ব্যবসায়ীই শুধু দেশে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে পারেন। তিনি করে দেখিয়েছেন। এ ধরনের দেশপ্রেমী একজন মানুষের চলে যাওয়া খুব কষ্টের।
- উজ্জল, চলচ্চিত্রাভিনেতা
৬. আমার সঙ্গে নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেবের সরাসরি পরিচয় ছিল না। তবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী হিসাবে তার নাম ও কাজের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তৈরির পাশাপাশি দুটি মিডিয়া হাউস যুগান্তর ও যমুনা টিভি প্রতিষ্ঠা করে রুচিশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। এ দুটি প্রতিষ্ঠান মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তো থাকবেই কিন্তু যমুনা টিভি ও যুগান্তর তাকে অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখবে। তার প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তার গড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই সফল। এ ছাড়া তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। দেশকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। আমি তার জন্য মন থেকে প্রার্থনা করছি। আলাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
- সৈয়দ আবদুল হাদী, সংগীতশিল্পী
৭. ব্যক্তিগতভাবে নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দুই বছর আগে করোনাক্রান্ত হয়ে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। দেশকে ভালোবাসেন এমন একজন ব্যক্তিকে আমরা হারালাম এটা অবশ্যই ক্ষতির কারণ। তার একক প্রচেষ্টায় প্রায় অর্ধশত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেচে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই সফল হয়েছে; যা তাকে ব্যবসায়ী হিসেবে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আরও কয়েকটি প্রকল্প তার পরিকল্পনায় ছিল বলে শুনেছি, সেগুলো যদি তার উত্তরসূরীরা বাস্তবায়ন করেন তাহলে অবশ্যই তার আÍা শান্তি পাবে। মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা।
- আবুল হায়াত, অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা, নাট্যকার
৮. নুরুল ইসলাম বাবুল যে বছর মারা গেছেন সেই বছরের শুরুর দিকে একটি অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। সেদিন তিনি বেশ হাস্যেজ্জ্বল ছিলেন। বেশ বড় মনের মানুষ ছিলেন। তার সঙ্গে দেখা হলেই খোঁজ নিতেন, গানের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইতেন। নিজের একক প্রচেষ্টায় একটি শিল্প গ্রুপ তৈরি করেছেন। অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে তার প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে। শুনেছি মৃত্যুর কিছুদিন আগেও তিনি একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। আজ যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে হয়তো সেই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নও শুরু করতেন। আমি চাইবো, তার ছেলেমেয়েরা যেন তার ইচ্ছাটা পূরণ করেন।
- কুমার বিশ্বজিৎ, সঙ্গীতশিল্পী
৯. হঠাৎ করেই খবর শুনলাম বাবুল ভাই নেই। সেদিন তার মৃত্যুর খবরটা শুনে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ চুপ করে বসেছিলাম। করোনার দাপট যে কতটা কঠিন ছিল যারা ভুক্তভোগী তারা বলতে পারবেন! সেসময় একের পর এক চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছিলাম না। বাবুল ভাইয়ের সঙ্গে মৃত্যুর কিছুদিন আগেও একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল। বেশ হাস্যোজ্জ্বল একজন মানুষ ছিলেন। বেশ কিছুটা সময় তার সঙ্গে নানান বিষয় নিয়ে কথাও হয়েছিল। এতো ব্যস্ত একজন মানুষ হয়েও তিনি আমাদের চলচ্চিত্র পরিবারের খোঁজ খবর রাখতেন, এটাও কম কথা নয়। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। দেশের অন্যতম শিল্পদ্যোক্তা। তাদের মতো মানুষের জন্য বাংলাদেশ আজ অর্থনীতিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি চলে গেছেন আজ দুই বছর হয়ে গেল! আসলে কিছু শূণ্যতা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। তার শূণ্যতাও কখনও পূরন হবে না। তার জন্য দোয়া ও শ্রদ্ধা।
- ববিতা, চলচ্চিত্রাভিনেত্রী
১০. বাবুল ভাই আর নেই, সেদিন খবরটি শোনার পরই আমাদের মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তার মৃত্যুর বছরেই ফেব্র“য়ারি মাসেই বাবুল ভাই ও ভাবির সঙ্গে দেখা হয়েছিল। যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গিয়েছিলাম। সেদিন খুব খুশি হয়েছিলেন আমাদের দেখে। বড় ভালো মানুষ ছিলেন। খুব বেশি মিশিনি, কিন্তু যখনই যেখানে দেখা হয়েছে খুব আগ্রহ নিয়ে কুশলাদি জিজ্ঞেস করেছেন। মনেই হয়নি তিনি এত বড় একজন ব্যবসায়ী। কোনো অহঙ্কার দেখিনি তার মধ্যে। একেবারেই সাধারণ মনে হতো। জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশের জন্য নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করে গেছেন। আসলে আমাদেরও একদিন চলে যেতে হবে। দোয়া করি, বাবুল ভাই ওপারে ভালো থাকুক।
- নাঈম-শাবনাজ, অভিনয়শিল্পী
১১. যমুনা গ্রুপ ও নুরুল ইসলাম বাবুলের কথা জানেন না, দেশে এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। সফল একজন উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। দেশের শিল্পাঙ্গনে ব্যাপক বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মিডিয়ার প্রতিও তার দূর্বলতা ছিল। যে কারণে যুগান্তর ও যমুন টিভির মতো দুটি প্রতিষ্ঠান গড়েছেন নিজ হাতে। সেগুলো মানুষের কাছে জনপ্রিয়ও করে গেছেন। আমি দেখেছি, গণমাধ্যম দুটি সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চষ্টা করেছে। বাবুল ভাই না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন দুই বছর হয়ে গেল! আমাদেরও একদিন যেতে হবে। তাই প্রস্তুতিও নিতে হবে। বাবুল ভাই চলে গেছেন। মৃত্যুবার্ষিকীতে তার আÍার শান্তি কামনা করছি।
- ইলিয়াস কাঞ্চন, চলচ্চিত্রাভিনেতা
১২. সেদিন হঠাৎ যখন নুরুল ইসলাম বাবুল ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদটা শুনলাম, কিছুক্ষণ থমকে গিয়েছিল আমার কাজকর্ম। সারাদিন অফিস শেষে বাসায় যাব, ঠিক এমন সময় এ দুঃসংবাদ শুনি। খুব কষ্ট পেয়েছি। করোনা আসলে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি করে গেছে। অনেক উদ্যক্তা কেড়ে নিয়েছে! তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, জাতির গর্ব; দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের একজন। অর্থনীতিতে তার অবদান দেশ অবশ্যই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। শুধু শিল্পোদ্যোক্ততাই নয়, তিনি ছিলেন বেশ মিডিয়াবান্ধব একজন মানুষ। তার চলে যাওয়া অবশ্যই দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। দ্বিতী মৃত্যুবার্ষিকীতে তার আÍার মাগফেরাত কামনা করছি।
- আমিন খান, চিত্রনায়ক
১৩. ব্যবসায়ীর চেয়েও নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেবের বড় একটি পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সম্পদ। তার মতো একজন সফল শিল্পোদ্যোক্তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগও হয়েছিল তার ছেলে শামীম ভাইয়ের ছেলের জন্ম দিন অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে। কী চমৎকার ব্যবহার তার কাছ থেকে পেয়েছি, সারাজীবন মনে থাকবে আমার। দেশের জন্য এই বিশাল ব্যক্তিত্ব অনেক কিছু করে গেছেন, যা দেশের মানুষ অনেক দিন মনে রাখবেন। এই মানুষটি চলে যাওয়ার দুই বছর পার হয়ে গেল। মৃত্যুবার্ষিকে প্রার্থনা, সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
- রবি চৌধুরী, সংগীতশিল্পী
১৪. সময় যে কীভাবে চলে যায় টেরই পাওয়া যায় না। এই যে নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেব চলে গেছেন, দুই বছর হয়ে গেল! অথচ মনে হচ্ছে যেন সেদিনই তার মৃত্যুর খবর শুনলাম! তিনি শুধু বিজনেসম্যানই ছিলেন না, এ দেশের উন্নয়নের জন্য তার যে চিন্তাধারা ছিল সেটা সত্যিই বড় একটি বিষয়। আমার সঙ্গে সরাসরি তার পরিচয় ছিল না। তবে তার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি, বুঝেছি এবং তার কর্মকাণ্ডগুলো দেখেছি; তাতে মনে হয়েছে ভালো মানুষ ছিলেন তিনি। দেশের মধ্যে তার উন্নয়নের যে চিন্তাধারা ছিল এসব ছোট কোনো বিষয় নয়। দেশপ্রেমিক এই মানুষটিকে মানুষ আরও অনেক দিন মনে রাখবে বলে আমি মনে করি।
- রোজিনা, চিত্রনায়িকা
১৫. যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গেলেই বাবুল ভাইয়ের সঙ্গে আমার দেখা হতো। ২০২০ সালের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যস্ততার জন্য যেতে পারিনি। কে জানতো, আর তার সঙ্গে কখনোই দেখা হবে না! তার সঙ্গে শেষ দেখাও হল না। তার আগের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, বাবুল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা ও কথা হয়েছিল। একেবারই সাদাসিধে মানুষ। কথা বললেই ভালো লাগতো। এ মানুষটা না ফেরার দেশে চলে গেছেন দুই বছর হয়ে গেল! এখনও মনে হয় না যে, তিনি নেই! সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে, কিন্তু মানুষ মনে রাখার মতো কাজ ক’জনই বা করতে পারে। তিনি করতে পেরেছেন। দেশের অর্থনীতিতে ভ‚মিকা রেখেছেন। অনেক কিছু গড়েছেন তিনি। এসব থেকে অনেক মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।
- কনকচাঁপা, সংগীতশিল্পী
১৬. দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বাবুল ভাই চলে গেছেন দুই বছর হয়ে গেল! ২০২০ সালের ফেব্র“য়ারিতে যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এত বড় শিল্পপতি হয়েও তার চালচলন ছিল একেবারেই সাধারণ। মানুষের কল্যাণের জন্য কত কিছুই না করেছেন তিনি। আমার জানামতে তিনিই দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী যিনি তার জীবনের অর্জিত সব অর্থ দেশেই বিনিয়োগ করেছেন। বিদেশে যার কোনো সম্পদ নেই। এর চেয়ে বড় দেশপ্রেম আর হতে পারে না। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, দেশের গর্বিত সন্তান। এমন একজন মানুষের অনুপস্থিতি আসলেই কষ্টদায়ক। বিশেষ করে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য। আলাহ তাকে ওপারে ভালো রাখুক, মৃত্যুবার্ষিকীতে এটাই কামনা করি।
- মনির খান, সংগীতশিল্পী
১৭. দুই বছর আগে নুরুল ইসলাম বাবুল চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে! সময় যে কীভাবে চলে যায়! তিনি ছিলেন আমার নানার দেশের মানুষ। তাকে নানা বলেই ভাবতাম। তার সঙ্গে আমার অনেকবার দেখা হয়েছিল; কথা হয়েছিল অনেক। আসলে ভালো মানুষগুলো আগেই চলে যান। দেশের স্বার্থে বাবুল সাহেব অনেক কাজ করেছেন। পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি তিনি ৪১টি প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন। জীবদ্দশায় অর্জিত সব অর্থ দেশেই বিনিয়োগ করেছেন। দেশি পণ্য তৈরিতে কাজ করে গেছেন। সবচেয়ে বড় অর্জন, তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। করোনা আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছুই কেড়ে নিয়েছে। তাকেও নিয়ে গেছে! আলাহ তার সব ভুল মাফ করে জান্নাত দান করুন, এটাই দোয়া করি।
- ফেরদৌস ওয়াহিদ, সঙ্গীতশিল্পী
১৮. সেদিন বাবুল ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি তো বিশ্বাসই করতে পারিনি। ওই বছর ফেব্র“য়ারিতেই তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে। এই করোনা আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছুই কেড়ে নিয়েছে। গত দুই বছরে করোনায় প্রতিদিনই আপনজন কারও না কারও মৃত্যু সংবাদ শুনেছি। তবে বাবুল ভাইয়ের চলে যাওয়ার খবরে কষ্ট বেশি পেয়েছি। অনেক বড় ভালো মানুষ ছিলেন তিনি। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ছিলেন। দেশের জন্যই কাজ করে গেছেন। দেশ মাতৃকায় ১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। এই প্রিয় মানুষটির জন্য এখন দোয়া করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। দোয়া করি আলাহ তার সব ভুল ক্ষমা করে জান্নাত নসিব করেন।
- আজিজুল হাকিম, অভিনয়শিল্পী
১৯. বাবুল ভাই নেই এটি এখনও বিশ্বাস হয় না আমার! তিনি সত্যিকার অর্থে একজন বড় মনের মানুষ ছিলেন। টাকা পয়সা তো অনেকেরই আছে বা থাকে; সবাই কিন্তু বড় মনের হতে পারেন না। বাবুল ভাই সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এটা শুধু তার শিল্প প্রতিষ্ঠান দিয়ে নয়; গোপনে অনেক মানুষের কাঁধে হাত রাখার চেষ্টা করেছেন। মূলত যারা তার সঙ্গে মিশতে পেরেছেন তারাই বুঝবেন বিষয়টি। তার অনুপস্থিতি বড় রকম একটা ক্ষতি। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। পত্রপত্রিকায় জেনেছি তার বেশ কিছু ইচ্ছা ছিল, যা পূরণ করে যেতে পারেননি। তার উত্তরসূরীরা অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপত্ত করবেন এটাই তাদের কাছে চাওয়া। আলাহ তাকে জান্নাত দান করবেন, এটাই দোয়া করি।
- নূতন, চলচ্চিত্রাভিনেত্রী
২০. আমি একজন ব্যবসায়ী। তাই দেশের অর্থনীতিতে ব্যবসায়ীদের অবদান কতটুকু সেটা যারা এর সঙ্গে জড়িত তারাই বুঝেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যমুনা গ্রুপের ভ‚মিকা অনেক বেশি। আর এর স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল। উনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিল। বিশেষ করে উনার সন্তানদের সঙ্গে আমাদের বলা যায় পারিবারিক সম্পর্ক। অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি তিনি বেশ মিডিয়াবান্ধব ছিলেন। যার প্রমান যুগান্তর পত্রিকা ও যমুনা টিভির প্রতিষ্ঠা। প্রতিষ্ঠান দুটোর মাধ্যমে তিনি বস্তুনিষ্ট সংবাদ বিশ্বের কাছে তুলে ধরার স্বপ্ন দেখেছেন এবং সেটা সফলও হয়েছে। বাবুল ভাই নেই, এখনও এটা বিশ্বাস হয় না। মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
- অনন্ত জলিল, চিত্রনায়ক ও ব্যবসায়ী
২১. যুগান্তরের জন্ম দিনের অনুষ্ঠানে অনেকবারই নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেবের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। প্রতিবারই হাসিমুখে কথা বলেছেন, কুশল বিনিময় করেছেন। তিনি যে এত বড় একজন শিল্পপতি ছিলেন, তা তার ব্যবহারে কখনও প্রকাশ পায়নি। তিনি আজ নেই। চলে যাওয়ার দুই বছর পার হয়ে গেল! তিনি শিল্পদ্যোক্তাদের জন্য একজন পথিকৃৎ। তিনি পৃথিবীকে একটা উদাহরন দিয়ে গেছেন, কী করে সাধারন থেকে অসাধারন হওয়া যায়। এর জন্য তিনি যুগে যুগে মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবেও তিনি ইতিহাসের পাতায় আজীবন লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবেন।
- এসডি রুবেল, সংগীতশিল্পী
২২. করোনা আসার পর কত আপনজন হারালাম তা কল্পনা করতে পারিনি। বাবুল ভাইও চলে গেলেন, তাও দুই বছর হয়ে গেল! ভাবতেই অবাক লাগে! যুগান্তর-যমুনা টিভির সঙ্গে আমার আন্তরিক সম্পর্ক। বাবুল ভাই চেষ্টা করেছেন জনগণের পক্ষে কাজ করার। তিনি মারা গেছেন বলে তার প্রশংসা করতে হবে তা নয়, তিনি আছেন থাকবেন। তার গড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। দেশের অর্থনীতিতে তার ভ‚মিকা অনেক। এগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। বলা যায় দেশপ্রেমের যা কিছু দরকার সবকিছুই তার মধ্যে ছিল এবং তিনি সেটা করেও দেখিয়েছেন।
- আসিফ আকবর, সঙ্গীতশিল্পী
২৩. নুরুল ইসলাম বাবুল ভাইয়ের সঙ্গে আমার মাঝে মধ্যেই দেখা হত ঢাকা ক্লাবে। বেশ প্রাণোচ্ছ¡ল মানুষ ছিলেন তিনি। দেখা হলেই খোঁজ নিতেন। আমার কাজ কেমন চলছে, তা জানতে চাইতেন। তার সঙ্গে দেখা করা ও কথা বলার বিষয়গুলো এখন কেবলই স্মৃতি! চাইলেও আর কখনও তার সঙ্গে দেখা হবে না। যে বছর তিনি মারা যান, সে বছরের শুরুর দিকে দেশের বাইরে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে এয়ারপোর্টে শেষ দেখা হয়। তখনও অনেকক্ষন আমার সঙ্গে কথা বলেন। ব্যক্তিগত জীবনে একজন সফল মানুষ ছিলেন তিনি। যে কাজটাতেই হাত দিয়েছেন সেটাই সফল হয়েছে।
- জাহিদ হাসান, অভিনেতা
২৪. নুরুল ইসলাম বাবুল দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ছিলেন। যদিও আমাদের কখনও দেখা হয়নি, তবে তার কর্মের পরিধি সম্পর্কে আমার যথেষ্ট জানাশোনা আছে। একজন সফল শিল্পপতির পাশাপাশি তিনি ছিলেন সংস্কৃতিমনা। ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন। অসংখ্য পরিবারের কর্মসংস্থানে তিনি যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা এ জাতি যুগ যুগ মনে রাখবে। এ মহান মানুষটিকে আরও অনেক সময় দরকার ছিল বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু মৃত্যু অনিবার্য। সৃষ্টিকর্তার নিয়মের বিষয়ে কারও হাত নেই। তার প্রতি শ্রদ্ধা।
- ধ্র“ব গুহ, সংগীতশিল্পী
২৫. নুরুল ইসলাম বাবুল ভাইয়ের সঙ্গে একবারই আমার মুখোমুখি কথা বলার সুযোগ হয়েছিল যমুনা টিভির উদ্বোধনের আগে। কোনো একটি কাজের জন্যই তিনি আমাকে ডেকেছিলেন। তখন আমাকে বলেছিলেন ‘আপনাদের জন্যই এ টিভি চ্যানেল করেছি’। আমরা যেন যমুনা টিভি এবং যুগান্তরের সঙ্গে যুক্ত থাকি। কিছু কিছু ক্ষতি আসলেই অপূরণীয়। ওনার মতো মানুষের আরও দরকার ছিল বাংলাদেশে। তাহলে আমাদের দেশ সুখ, সমৃদ্ধি ও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তা অব্যাহত থাকত। এ মানুষটির তৈরি করা কর্মগুলোকে যেন তার পরবর্তী প্রজš§ সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান- এ প্রত্যাশাই থাকবে।
- ফেরদৌস, চিত্রনায়ক
২৬. নুরুল ইসলাম বাবুল সাহেবের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও তাকে আমি পরোক্ষভাবে চিনি, জানি। শুধু ব্যবসায়ীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন। তিনি টেলিভিশন চ্যানেল করেছেন, পত্রিকা করেছেন। যুগান্তর ও যমুনা টিভি ছাড়া তার আরও অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। আমি যতটুকু জানি যমুনা ফ্যান দিয়ে তার ব্যবসায়িক অগ্রযাত্রা শুরু হয়। অনেক কষ্ট ও ত্যাগের পর তিনি তার সব প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে এসেছিলেন। যা খুব সহজ কাজ নয়। তার এ কর্মকাণ্ডই তাকে অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখবে। মৃত্যুবার্ষিকীতের তার আÍার মাগফিরাত কামনা করছি।
- রিয়াজ, চিত্রনায়ক
২৭. দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। একদিন আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে। যমুনা গ্রুপের মালিক নুরুল ইসলাম বাবুল ভাই ওপারে চলে গেছেন, দুই বছর হয়ে গেল! সময় কীভাবে চলে যায়! সেদিন তার চলে যাওয়া দেশিয় শিল্প জগতের জন্য খুবই মন খারাপ করা একটি খবর ছিল। আসলে তাকে নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। এ মানুষটি সবসময় চেষ্টা করেছেন দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ভালো একজন উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠানগুলো চালিয়ে নিতে পরিবার সবসময় স্বচেষ্ট থাকবে এটি আশা করি। দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই চাওয়া, তাকে যেন ওপারে শান্তিতে রাখেন।
- হায়দার হোসেন, সংগীতশিল্পী
২৮. বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে যে কজন সফল মানুষ ছিলেন, তাদের মধ্যে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল অন্যতম। করোনা মহামারী এই গুণী মানুষটিকেও নিয়ে গেল! মৃত্যুর দুই বছর পার হয়ে গেলেও তিনি এখনও স্মৃতিতে অমলিন। জীবদ্দশায় তিনি অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। সবকিছুর আগে দেশের কথা ভাবতেন তিনি। তাই তার সব বিনিয়োগ কিংবা কর্মপরিকল্পনা দেশের মধ্যেই পরিচালিত করতেন। যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমি নিয়মিত যেতাম। সেখানে তার সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতেই শুভেচ্ছা বিনিময় হতো। মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা।
- ইমন, চিত্রনায়ক
