হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ
পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তে ডিবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ফারুক হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে গোয়েন্দা সংস্থা ডিবিকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২৮ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য জানান।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা হলেন-বংশাল থানার ওসি মইনুল ইসলাম, সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ। এর আগে মঙ্গলবার ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপি আদালতে মামলার আবেদন করেন। এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার দিন ধার্য ছিল।
অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার স্বামী ফারুক হোসেন লালবাগের খাজা দেওয়ান সিং লেনের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক স্ত্রী হ্যাপিকে ফোন করে জানান, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির পুলিশ আটকে রেখে নির্যাতন করছে। হ্যাপি তৎক্ষণাৎ পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের কাছে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান। তখন এসআই ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক অনেক বড় অপরাধী, তাকে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে এক লাখ টাকা লাগবে। তখন হ্যাপি জানান, তার স্বামী আগে বডি বিল্ডার ছিলেন। তাকে ছেড়ে দিন। পরে এক লাখ থেকে কমিয়ে পুলিশ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। পাশাপাশি হ্যাপিকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ ফারুককে বেদম মারধর করে। তারা জানায়, ফারুক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা কিছু করতে পারবে না। তাদের বড় স্যার জানে কী করবে। এর কিছুক্ষণ পর ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বংশাল থানার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, আর হ্যাপিকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলে। পরদিন হ্যাপি আদালতে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। তখন মারধরের কথা স্ত্রীকে জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন। ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাঁজা রাখার মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারেন হ্যাপি। পরে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। ১৫ জানুয়ারি সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপিকে জানান, ফারুক মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তিনি স্বামীর লাশ দেখতে পান। ফারুকের গলায়, বুকে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল।