ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলা
রাবি অধ্যাপকের শারীরিক অবস্থার অবনতি

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হামলায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম এনামুল জহিরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। শনিবার বিকালে তাকে রামেক হাসপাতালের ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। চোখে গুরুতর জখম, শ্বাসকষ্ট ও তীব্র মাথাব্যথার সমস্যায় রয়েছেন তিনি।
রামেক হাসপাতালের কর্তব্যরত দু’জন চিকিৎসক জানান, চোখে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন তিনি। ডান চোখে রক্ত জমাট বেঁধেছে। মাথার আঘাতে যন্ত্রণায় ভুগছেন। তার মলমূত্র ত্যাগ করতে তীব্র যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া শ্বাসকষ্টও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে আমরা তার সিটি স্ক্যান করিয়েছি। সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিষয়টি দেখভাল করছেন।
হাসপাতালে শিক্ষকের সঙ্গে থাকা হাসান আল বান্না নামের এক শিক্ষার্থী জানান, স্যারের পুরো শরীরে আঘাত করা হয়েছিল। উনি মানসিকভাবে খুব শক্ত হওয়ায় প্রথম দিকে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। তবে এখন পুরো শরীরে মারাত্মক ব্যথা অনুভব করছেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। ডান চোখ ফুলে গেছে, কিছুই দেখতে পারছেন না। সেখানে রক্তও জমাট বেঁধেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার রামেক হাসপাতালের ৩০ নং ওয়ার্ডে অসুস্থ মেয়েকে দেখতে যান এটিএম এনামুল জহির। এ সময় ওই ওয়ার্ডে মেরি প্রিয়াঙ্কা নামে এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার। এতে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক শিক্ষক এনামুল জহিরকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করলে তিনি ‘ননসেন্স’ বলে মন্তব্য করেন। পরে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মেরি প্রিয়াঙ্কা বেশ কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে ডেকে নিয়ে এনামুল জহিরকে বেধড়ক মারধর করেন।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবিতে পরদিন (বৃহস্পতিবার) রাবির প্রধান ফটকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এতে তিন ঘণ্টা ধরে মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাবি ছাত্রলীগ, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকির মুখে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে ক্যাম্পাসে এসে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে রাবি ভিসি অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের আশ্বাসে ফিরে যায় তারা।
অপরদিকে ওইদিন বিকালে রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক কুদরত-ই-খুদা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ঘটনাটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। তবে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি পুলিশ। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। প্রতিবেদন কেন দেয়া হয়নি- এ বিষয়ে জানতে রাজপাড়া থানার ওসি গোলাম মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে দু’দফা ফোন লাইন কেটে দেন। এছাড়া ঘটনাটি তদন্ত করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে শনিবার রামেক কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন অ্যাডভোকেট রাশেদুল হক খোকন।