
প্রিন্ট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
কাউসার মাহমুদের অনুবাদে ‘ঠাণ্ডা গোশত’

হুসাইনুল বান্না
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জৈবিকতা জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি অস্বীকার করার জো নেই। মান্টোর গল্পে এ বিষয়টি কোথাও কোথাও ফুটে ওঠেছে অত্যন্ত নান্দনিকভাবে। মান্টোর ‘ঠাণ্ডা গোশত’ তৎকালীন সমাজের একটি নান্দনিক আয়োজন। ‘ঠাণ্ডা গোশতের’ প্রতিটি গল্পেই মান্টো সমাজকে নাড়া দিতে চেয়েছেন কলমের আঁচড়ে। সমাজকে নাড়াও দিয়েছেন সফলভাবে।
এ গ্রন্থে মান্টো প্রায় ৪২ পৃষ্ঠার একটি বিশাল ভূমিকা লিখেছেন। অনুবাদে যা দাঁড়িয়েছে ৭০ পৃষ্ঠারও উপরে। পাঠকমহলে এ ভূমিকা মান্টো সম্পর্কে নতুন একটি ধারণা দেবে। যারা মান্টোর গল্পে যৌনতা ছাড়া কিছুই দেখেন না। তারাও এ ভূমিকায় মান্টোকে আবিষ্কার করতে পারবেন নতুনভাবে।
মান্টো তার গল্পে সমাজের চিত্র তুলে ধরেছেন সমাজের কাছাকাছি গিয়ে। যৌনকর্মীর জীবনাচারের চিত্র, চোর-ডাকাত বা নিম্নশ্রেণীর মানুষের দাম্পত্য জীবনের কথা তিনি খোলাখুলিভাবে তুলে ধরেছেন। এর সাহিত্যভাব ফোটাতে কোনো ভণিতার আশ্রয় নেননি। গল্পের ঠিক শেষের লাইনগুলোতে তিনি সমাজকে একটি ম্যাসেজ দিতে চেষ্টা করেছেন, মানুষের মানবিকতাকে নাড়া দিয়েছেন। সমাজকে পরিবর্তনের প্রয়াস চালিয়েছেন। তাই মান্টোকে বুঝতে হলে পাঠককে গল্পের শেষ লাইন অব্দি অপেক্ষা করতে হবে।
‘ঠাণ্ডা গোশতের’ অনুবাদক আমার গৌরবের ধন কাউসার মাহমুদ। আনুমানিক প্রায় দশ বছর আগের কথা। দশ-বারো বছরের এক কিশোরের সঙ্গে আমার দেখা হয় ইকরার ক্লাসরুমে। অসাম্প্রদায়িকতা, প্রহসনের ভারত বিভাজন, প্রগতিশীলতা আর সাহিত্য আড্ডা জমতো ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে। দেখতে দেখতে এর মাঝে আরও আট-দশ বছর কেটে গেল। আঠারোর বইমেলায় হঠাৎ একদিন তার কবিতার বই দিয়ে আমায় বিস্মিত করল। পরখ করার দৃষ্টিতে কবিতার বইটি পড়তে আরম্ভ করলাম। কবিতায় তার মুনশিয়ানা দেখে অভিভূত হলাম।
কাউসার মাহমুদের এবারের বইমেলার উপহার মান্টো বিরচিত ‘ঠাণ্ডা গোশত।’ উর্দু সাহিত্যের প্রগতিশীল লেখক সাদত হাসান মান্টোর এ বইটি তৎকালে বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। মান্টোর গল্পের প্রাণ ও আবেদন অন্যভাষায় ফুটিয়ে তোলা সত্যিই দুষ্কর। আমার ধারণায় কাউসার মাহমুদ সে কাজটি সফলতার সঙ্গে করার প্রয়াস চালিয়েছেন। তাই ধন্যবাদ জানাই তাকে।
ঠাণ্ডা গোশত সা’দত হাসান মান্টো
অনুবাদ কাউসার মাহমুদ
প্রকাশক পেন্ডুলাম পাবলিশার্স
প্রচ্ছদ আনজুম শাইখ উচ্ছ্বাস মূল্য ২৯০ টাকা