ছড়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন
১২ জনের নামে মামলা গ্রেফতার ১১, হোতা অধরা
যুগান্তর প্রতিবেদন, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সীমান্তঘেঁষা ছড়া নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনে বালু-পাথর উত্তোলনের অভিযোগে ১২ জনের নামে শনিবার রাতে মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলহোতা অধরা রয়ে গেছে। জব্দ করা হয়েছে বাল্কহেড, ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, খনিজ বালু-পাথরসহ ৭৫ লাখ টাকার মালামাল।
মামলার আসামিরা হলেন-সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের কলাগাঁও গ্রামের মৃত জয়ধরের ছেলে এমরুল হাসান ওরফে ট্রলি এমরুল (এক সময়ের ট্রলিচালক), একই উপজেলার কলাগাঁও গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে হৃদয় মিয়া, সুশীল দাসের ছেলে শুভ দাস, ফুল মিয়ার ছেলে শাহনূর মিয়া, মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে নয়ন মিয়া, মৃত সৈয়দ হোসেনের ছেলে হবি নূর, মৃত ছাবিদ আলীর ছেলে মাহিন মিয়া, আছর আলীর ছেলে সূজন মিয়া, শিরু মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন, রামজীবনপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আরিফ হোসেন ও বাল্কহেড মাঝি এবং সুকানি বরগুনার খাজুরতলা গ্রামের কোব্বাত আলীর ছেলে জামাল আকন্দ ও একই জেলার সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের মৃত হাতেম আলীর ছেলে আব্দুল জলিল। এছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ২ থেকে ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, গ্রেফতার ১১ আসামিকে সুনামগঞ্জ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা যায়, ট্রলি এমরুল দেড় মাস ধরে সরকারি কাজের কথা বলে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ছড়া নদীর তীর কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করছিল। এগুলো ভ্যাট, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করা হতো। এ ধরনের বালু ও পাথর ভর্তি কয়েকটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার শনিবার সকালে জামালগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর নৌকাঘাটসংলগ্ন সুরমা নদীতে নোঙর করে রাখা হয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় জামালগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল বাল্কহেড, দুটি স্টিল বডি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার জব্দ করে। এ সময় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি এ সময় কৌশলে পালিয়ে যান।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ আসামি ট্রলি এমরুলের নিকটাত্মীয় হলেও অপর তিন আসামির মধ্যে একজন নৌপরিবহণ শ্রমিক ও অপর দুই আসামি বাল্কহেডের মাঝি সুকানি।
কলাগাঁও এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেনসহ ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, এক সময়ে ট্রলিচালক ‘ট্রলি এমরুল’ সরকারি কাজের কথা বলে বালু উত্তোলন করে আসছিল। বিষয়টি প্রথমদিকে মানুষ বুঝতে না পারলেও পরে এলাকার লোকজন বুঝতে পেরেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (তাহিরপুর সার্কেল) মো. নাসিম উদ্দিন বলেন, এমরুলের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় আরও একটি মামলা রয়েছে। ছড়া নদী থেকে অবৈধভাবে খনিজ বালু-পাথর উত্তোলনের বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেননি বলে জানান তিনি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা পারভিন বলেন, উপজেলার কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদী থেকে বালু-পাথর উত্তোলনের জন্য সরকারিভাবে ইজারা প্রদান করা হয়নি। অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনে ওই নদী থেকে খনিজ বালু-পাথর উত্তোলনের বিষয়টি তিনি জেনেছেন।