Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সানেমের দুই সেন্টারের যৌথ সেমিনার

জ্বালানি খাত সমন্বয়ে কোনো পলিসি নেই

‘দেশের জ্বালানি নীতিগুলো প্রান্তিক জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করে না’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জ্বালানি খাত সমন্বয়ে কোনো পলিসি নেই

পুরো জ্বালানি খাতে সমন্বয় সাধনের জন্য কোনো গাইডলাইন বা পলিসি নেই। শক্তিশালী নীতিগত ভিত্তির অভাব, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণ না থাকা, সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় ইতোমধ্যে গ্রহণ করা বিভিন্ন পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার মুখে পড়েছে। এজন্য বিশ্বাসযোগ্য এবং সময়োপযোগী তথ্য, একটি সঠিক রোডম্যাপ, একটি সমন্বিত নীতিগত পদ্ধতি, একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগ, রিনিউয়েবল এনার্জি মাস্টারপ্ল্যান, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এবং কৃষি ও জ্বালানি খাতে সৌরশক্তি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট নীতির তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সানেম এসডিজি সেন্টার এবং সানেম পলিটিক্যাল ইকোনমি সেন্টারের যৌথভাবে আয়োজিত সেমিনারে এমন তাগিদ দেওয়া হয়। সোমবার ওয়েবিনারে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওয়েবিনারটি পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা। বক্তব্য রাখেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, ব্রাইট গ্রিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান দীপাল সি বারুয়া, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মো. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. সাকিব বিন আমিন প্রমুখ।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এই খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিমুখী করা জরুরি। তিনি প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন।

সানেমের গবেষণা সহযোগী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ট্রিগার উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য শুধু একটি পলিসি তৈরি করা হয়। এই নীতিটি ১৯৯৬ সালে প্রণীত হয় এবং ২০০৪ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। এরপর অনেক মাস্টারপ্ল্যান, পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু পুরো জ্বালানি খাতে সমন্বয় সাধনের জন্য কোনো গাইডলাইন বা পলিসি নেই। শক্তিশালী নীতিগত ভিত্তির অভাব, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণ না থাকা, সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় এসব পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার মুখে পড়েছে।

ড. সাকিব বিন আমিন বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি নীতিগুলো প্রায়ই প্রান্তিক জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করে না। এজন্য সব ধরনের অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্বচ্ছ, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বিভাজিত জাতীয় জ্বালানি নীতির প্রয়োজন। দিপাল সি. বারুয়া বলেন, সোলারভিত্তিক চার্জিং সিস্টেম, একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য একটি মাস্টার এনার্জি প্ল্যানের প্রয়োজন। এছাড়া জ্বালানি খাতে সোলার ইরিগেশন পাম্পের প্রয়োজন রয়েছে। মো. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, পুরো বিশ্বই এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের জন্য একটি সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যানের প্রয়োজন। ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান বলেন, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতের নীতিগুলো বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং বিস্তৃত গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। নীতি প্রণয়নে বিশেষজ্ঞদের ভূমিকা রাখা দরকার। তবে বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। ফলে সরকার তার অটোনমি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়।

ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, নীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির প্রয়োজন। বিশ্বাসযোগ্য এবং সময়োপযোগী তথ্য, একটি সঠিক রোডম্যাপ, একটি সমন্বিত নীতিগত পদ্ধতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগ, রিনিউয়েবল এনার্জি মাস্টারপ্ল্যান, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এবং কৃষি এবং জ্বালানি খাতে সৌরশক্তি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট নীতি দরকার।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম