Logo
Logo
×

শেষ পাতা

আরও ২৮৮৯ রোগী হাসপাতালে, মৃত্যু ৮

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে পেশাজীবীদের তথ্য নেই

পেশা ও মৃত্যুর কারণ তুলে ধরলে সচেতনতা আরও বাড়বে

Icon

জাহিদ হাসান

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে পেশাজীবীদের তথ্য নেই

ডেঙ্গুতে প্রতিদিনই নানা শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু সংক্রমণবিষয়ক তথ্যে আক্রান্ত ও মৃতদের পেশা উল্লেখ করা হয় না।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ডেঙ্গুর তথ্যে পেশা ও মৃত্যুর কারণ তুলে ধরলে জনসাধারণের মধ্যে পরিস্থিতির বার্তা যাবে। এতে ডেঙ্গুর ব্যাপারে সচেতনতা আরও বাড়বে। নীতিনির্ধারকদের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নেও সহায়ক হবে। তাই ডেঙ্গুতে প্রতিদিন কোন পেশার কতজন আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন তা জানানো জরুরি। এদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত একদিনে আরও ২৮৮৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে মারা গেছেন ৮ জন।

সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, তথ্য যত বিস্তৃত হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও প্রতিরোধ কৌশল ততই সহজ হবে। করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন চিকিৎসকদের এবং নার্স সংগঠনসহ আরও কিছু দপ্তর, সংস্থা তাদের সদস্যদের করোনা আক্রান্ত মৃত্যুর তথ্য রাখত। সেখানে বিভিন্ন পেশাজীবী ছাড়াও আরও অনেক বিষয় উল্লেখ থাকত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা অন্তত সপ্তাহ ও মাসে ডেঙ্গুতে পেশাজীবীদের আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য দিতে পারে। এতে কারা বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছে সেটি নিয়ে গবেষণা ও নীতিনির্ধারণ সহজ হবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই রোগীর অনুমোদন নিতে হবে।

বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র ডা. নিরুপম দাস যুগান্তরকে বলেন, চিকিৎসক-নার্স, সচিব, পুলিশ, সাংবাদিক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন। তাদের পেশা উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলে ডেথ অডিট করা উচিত। কারণ ডেঙ্গুর চিকিৎসায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জাতীয় গাইডলাইন থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে সেটি উপেক্ষিত হচ্ছে। ডেথ অডিট হলে চিকিৎসা, সংশ্লিষ্টদের করণীয় ও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।

গেল ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু : গত একদিনে আরও ২ হাজার ৮৮৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। এ নিয়ে চলতি বছর সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৯ জনে। যাদের মধ্যে ৮৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ২ হাজার ১০০ জন ভর্তি হয়েছেন, ঢাকায় এই সংখ্যা ৭৮৯। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৮ জনের মধ্যে ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে একজনের, বাকিরা মারা গেছেন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায়। বর্তমানে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ২৮০ জন রোগী। এর মধ্যে ঢাকায় ৩ হাজার ৬৯৬ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৫৮৪ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং মৃত্যুর এই সংখ্যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। ব্যুরোর পাঠানো খবর-

ফরিদপুর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ (বিএসএমএমসি) হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের মজিবর মোল্যার স্ত্রী সালেহা বেগম (৬৪) ও একই উপজেলার গট্টি গ্রামের মো. হাফিজুলের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (১৮)। এ নিয়ে গত ৮২ দিনে ফরিদপুরে ডেঙ্গুতে মোট ৪০ জনের মৃত্যু হলো।

বরিশাল : বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রাজ্জাক (৪৫) নামে আরেক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি পটুয়াখালীর দশমিনার আবুল হোসেনের ছেলে। এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে ৮৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৩২৪ জন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহিমা বেগম (৪৭) নামে আরও এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে আইসিইউতে তিনি মারা যান। তিনি বাঘা উপজেলার মনিগ্রামের বাসিন্দা। এ নিয়ে রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ১ হাজার ৬৯৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১৭৭ জন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম