Logo
Logo
×

শেষ পাতা

এইচআরডব্লিউ’র বিবৃতি

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়োগে যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়োগে যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

সোমবার ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের ২৫ জুন বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে।

এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ল্যাক্রোইক্স এমন সময়ে বাংলাদেশ সফর করছেন, যখন সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো দেশের রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন অধিকারকর্মী, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হয়রানি করছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাবাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ সফরকালে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের খোলাখুলি উদ্বেগ জানানো উচিত।

এইচআরডব্লিউ বলছে, জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান সবচেয়ে বেশি। এই অবস্থান ধরে রাখতে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই নীতিমালা যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে, জাতিসংঘের পক্ষে কাজ করা তাদের কোনো নাগরিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত নয়। সফরকালে জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সে এই নীতিমালার ওপর জোর দিতে হবে।

এইচআরডব্লিউ বলছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যেন দেশের বাইরে শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ না নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার-সংক্রান্ত নীতিমালা ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘ শুধু উচ্চপদস্থ কর্তকর্তাদের মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিষয় যাচাই-বাছাই করে।

অন্যদের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর নির্ভর করে। তবে এই সংস্থার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ খুবই সীমিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে এ যাচাই নীতির দুর্বল প্রয়োগ এ বার্তাই দিচ্ছে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত হয়েও জাতিসংঘে কাজ করার সুযোগ থেকে বিরত রাখা যায় না। এটা জাতিসংঘের জন্য একটি নৈতিক সমস্যা।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে র‌্যাবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছে এইচআরডব্লিউ। এইচআরডব্লিউ বলেছে, সামরিক বাহিনী ও পুলিশের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত এই বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কমিটি জানিয়েছিল, জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের এমন অনেক সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা র‌্যাবের হয়ে কাজ করেছেন। বিষয়টি উদ্বেগের। এমন পরিস্থিতিতে একটি নিরপেক্ষ যাচাই-বাছাই ব্যবস্থার সুপারিশ করেছিল জাতিসংঘের ওই কমিটি। ওই যাচাই-বাছাইয়ের উদ্দেশ্য ছিল, নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও গুমসহ অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা ইউনিটকে যেন শান্তি রক্ষা মিশনে নিয়োগ না দেওয়া হয়, সেটা নিশ্চিত করা।

এইচআরডব্লিউ বলছে, জাতিসংঘের উচিত কোনো বাংলাদেশি কর্মকর্তা র‌্যাবের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তা প্রকাশ করা এবং বাহিনী সংশ্লিষ্ট কাউকে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগদানে বিরত রাখা। শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নয়, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয় যাচাই-বাছাই করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন বিভাগকে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের জন্য অখণ্ডতার জন্য একটি হুমকি সৃষ্টি করছে।

এইচআরডব্লিউ জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সরকারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার জন্য তারা যে হুমকি সৃষ্টি করেছে, তা চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ সফরকালে ল্যাক্রোইক্সকে মানবাধিকার যাচাই-বাছাই জোরদারের বিষয়ে প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম