একদিনে ১৪১ ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে
জ্বর হলেই এনএস-১ পরীক্ষার পরামর্শ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪১ ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এটি এ বছর একদিনে সবচেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা। এর আগে বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছিলেন ১১২ জন। সেটি ছিল এ মৌসুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এডিস মশার এ প্রজনন মৌসুমে দিন যত যাচ্ছে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে শনিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত একদিনে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২৮ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন। তবে এ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু হয়নি।
এদিকে জ্বর হলেই দ্রুত এনএস-১ পরীক্ষা এবং বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডেঙ্গি আক্রান্তের প্লাটিলেটের প্রয়োজন হয় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে শনিবার আয়োজিত ‘চেঞ্জিং প্যাটার্ন অব ডেঙ্গি সিনড্রোম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। তারা রোগ প্রতিরোধে এডিস মশা নিধন, ডেঙ্গি জ্বরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাইডলাইন অনুসরণের পরামর্শ দেন এবং রোগ ও রোগীর অবস্থাভেদে চিকিৎসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গির সাধারণ উপসর্গ ছিল জ্বর, কাশি, র্যাশ হওয়া, মাথাব্যথা হওয়া। কিন্তু ২০২১ সালের পর এ উপসর্গ পরিবর্তন হয়। তখন ডেঙ্গিতে নতুন উপসর্গ পেটব্যথা ও পাতলা পায়খানাসহ অন্যান্য পরিবর্তন হয়। এটি এখনো চলছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের ডেঙ্গি চিকিৎসার জাতীয় নীতিমালার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম। সেমিনার শেষে কেবিন ব্লকের সাধারণ জরুরি বিভাগে ডেঙ্গি কর্নারের উদ্বোধন করা হয়।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গি জ্বর ধরা পড়লে পর্যাপ্ত পানি জাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকবেন। এ সময়ে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে প্যানেলিস্ট হিসাবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া, অধ্যাপক ডা. এমএ জলিল চৌধুরী, বিএসএমএমইউর ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও ডেঙ্গি গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার প্রমুখ।