সাপ্তাহিক বাজার দর
রোজার আগে মাংসের বাজারে উত্তাপ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রমজান শুরু হতে এখনো এক মাস ১৮ দিন বাকি। তবে এর আগেই মাংসের বাজারে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি গরুর মাংস ২০ এবং খাসির মাংসের দাম ১০০ টাকা বেড়েছে।
পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা, যা সাত দিন আগে ১৫০ টাকা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ডিমের বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, রোজা শুরুর আগেই বিক্রেতারা পরিকল্পনা করে মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। যাতে রোজা শুরুর আগে বাড়াতে না হয়। এ অবস্থায় বাজারে কঠোর তদারকি দরকার।
খুচরা বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিন আগে ৭০০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১১০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ১০০০ টাকা ছিল। কাওরান বাজারের মাংস বিক্রেতা মো. জাফর বলেন, খামার ও হাটে গরু ও খাসির দাম বেড়েছে। যে কারণে বেশি দামে পশু কিনে বেশি দামে মাংস বিক্রি করতে হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩৫ টাকা বেড়ে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ৪৭-৫০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ৪৫ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকা।
রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. শরীফ বলেন, এক সপ্তাহে সব ধরনের ডাল, ছোলা, তেলের দাম বাড়ানো হলো। আরেক সপ্তাহে সব ধরনের মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। আবার এই সপ্তাহের শেষে বাড়ানো হলো সব ধরনের মাংসের দাম।
তিনি বলেন, এখনো রমজান শুরু হতে দেড় মাসের মতো সময় আছে। তবে অতীতে দেখা গেছে, রোজা আসার আগেই পরিকল্পনা করে অসাধু ব্যবসায়ীরা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এর পরের সপ্তাহে আর কোন কোন পণ্যের দাম বাড়বে, সেটাই দেখার অপেক্ষামাত্র। তবে সরকারের তদারকি সংস্থা মনে হয় এগুলো দেখছে না। তারা অসাধুদের দাম বাড়াতে সুযোগ দিচ্ছে। আর রোজা শুরু হলে লোক দেখানো তদারকি শুরু করবে।
একই বাজারে খুচরা বিক্রেতা মো. সালাউদ্দিন বলেন, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ আছে। চাহিদামতোই মুরগি সরবরাহ করা হচ্ছে। আর ডিমের আড়তেও কোনো সংকট নেই। পার্থক্য শুধু দাম বাড়তি। হঠাৎ করে পাইকাররা দাম বাড়িয়ে দিয়ে বাজার অস্থির করে তুলেছে। গত বছরও তারা একই কাজ করেছিল। সরকারের তদারকিতে তাদের অনিয়ম সামনে এসেছিল। এবার মনে হচ্ছে, রোজায় বেশি টাকা মুনাফা করতে পাইকার ও আড়তদাররা কারসাজি শুরু করেছে।
বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, যা সাত দিন আগে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ২৮ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে লবঙ্গ ১৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।