Logo
Logo
×

শেষ পাতা

কালাইয়ের নান্দাইল দীঘি কলেজ

অধ্যক্ষের ঘুস দাবির অভিযোগ তদন্তে যাচ্ছে মাউশির কমিটি

পাঁচ শিক্ষক-কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ অস্বীকার অধ্যক্ষের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২২, ০১:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অধ্যক্ষের ঘুস দাবির অভিযোগ তদন্তে যাচ্ছে মাউশির কমিটি

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নান্দাইল দীঘি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুল আলম ফকিরের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুস দাবি এবং সিনিয়র স্কেলের তালিকা থেকে সিনিয়রদের নাম বাদ দিয়ে জুনিয়রদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তদন্তে নেমেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ১২ নভেম্বর কমিটি সরেজমিন যাচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এক সদস্যের ওই কমিটির প্রধান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান শাহ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, মাউশির মহাপরিচালকের নির্দেশে গত ৩ আগস্ট এ কমিটি গঠিত হলেও চিঠি পেতে বিলম্ব হয়। এছাড়া বর্তমানে নতুন এমপিওভুক্তির সময় যাচ্ছে। তাই সরেজমিন যেতে বিলম্ব হয়েছে।

জানা গেছে, নান্দাইল দীঘি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক জায়েদুল ইসলাম, ইসলাম শিক্ষার প্রভাষক আজিবুর রহমান, অর্থনীতির প্রভাষক আবু সাদত মো. আব্দুল আউয়াল, সমাজকর্মের প্রভাষক রোজিনা আক্তার এবং প্রদর্শক ফিরোজ হোসেন মন্ডল ১৪ জুন মাউশি মহাপরিচালকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে তারা দাবি করেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘন করে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ও প্রদর্শকদের নাম অন্তর্ভুক্ত না করে দ্বিতীয় সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্তির ফাইল অধ্যক্ষ অগ্রায়ন করেন। ফাইল প্রেরণ বাবদ অধ্যক্ষ তাদের পাঁচজনের কাছে এক লাখ টাকা করে দাবি করেন। বিষয়টি তদন্ত করে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

২০২১ সালের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ডিগ্রি কলেজের প্রভাষকের চাকরির (এমপিওভুক্তির) ১৬ বছর পূর্ণ হলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সহকারী অধ্যাপক হবেন। তবে এজন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি আছে। অধ্যক্ষ ওই কমিটির কাছে নামের তালিকা পাঠাবেন। এখানে অনুপাতসহ কোনো ধরনের শর্ত পূরণের প্রয়োজন নেই।

কলেজটির কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলেজের ১৯ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা দ্বিতীয় সিনিয়র স্কেল পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। তাদের মধ্যে অধ্যক্ষ সামছুলকে টাকা দেননি এমন পাঁচজনের নাম বাদ দিয়ে ১৪ জুন দ্বিতীয় সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্তির ফাইল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার রাজশাহী অঞ্চল প্রধানের কাছে পাঠান তিনি। সেখানে কলেজটির ১৪ শিক্ষক-কর্মকর্তার নাম ছিল। কয়েকজন শিক্ষক অধ্যক্ষকে টাকা দিয়ে ফাইলে নাম উঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন, যা মোবাইল ফোনে অডিও-ভিডিও রেকর্ড আছে বলে একজন শিক্ষক জানিয়েছেন।

পাঁচ শিক্ষক-কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে মতামতসহ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মাউশি ৩ আগস্ট রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার উপপরিচালক (কলেজ) মাহবুবুর রহমান শাহকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

এ বিষয়ে ৩০ আগস্ট যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সামছুল আলম ফকির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাছ থেকে টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের লিখিত রেজুলেশনের ভিত্তিতে ওই পাঁচ শিক্ষক-কর্মকর্তার নাম দ্বিতীয় সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্তির ফাইলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ পাঁচজন কলেজে অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করায় পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা এ অভিযোগ সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেন। তারা জানান, বরং অন্যায়ের প্রতিবাদ ও লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় তারাই এখন পেরেশানিতে আছেন। তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, তদন্ত কাজটি কঠিন কিছু নয়। যে ৫ শিক্ষককে বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়োগপত্র আর তালিকায় যারা আছেন তাদের নিয়োগপত্র মেলালেই প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম